এ বইয়ে বিশাল ক্যানভাসে আঁকা হয়েছে সোভিয়েত রাশিয়াকে। এতে রয়েছে ইতিহাস কাঁপানো রুশ বিপ্লব, আনকোরা নতুন সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন, বিভীষিকাময় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, স্নায়ুযুদ্ধের শীতল তিমিরাচ্ছন্ন পঞ্চাশ বছর। রুশ আত্মার সন্ধানে জারতন্ত্রের আদি থেকে শেষ ইতিহাস, তার শিল্প, সাহিত্য, চিত্রকলা, সিনেমা, সংগীত আর দর্শনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। কোনোটাই এখানে বাদ পড়েনি। আছে সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙনের ইতিবৃত্ত, রাজনৈতিক উত্থান–পতন, ব্রেজনেভ, গর্বাচেভ, ইয়েলেৎসিন, পুতিনের মতো রাষ্ট্রনায়কদের গল্প, দুর্নীতি আর অলিগার্কদের উত্থান পবের্র সোজাসুজি বর্ণনা। সব মিলিয়ে বইটি হয়ে উঠেছে যেন নানা বর্ণের মিশ্রণে রুশ সমাজ ও ইতিহাসের রামধনতুল্য।
আকাশ নামক এক ছেলে জাপানে পড়তে যায়। পিএইচডি শেষ করে বাংলাদেশে ফেরার জন্য বিমানে চড়ে। বিমানটিতে একটি যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পাইলট চলন্ত অবস্থায় ত্রুটিটিকে ফিক্স করতে চান। বিমানটিতে তেল আছে ৫৫ মিনিটের। বাংলার দুই পাইলট মিলে এই পদ্ধতি ঐ পদ্ধতি চেষ্টা করছেন। বিমানটি নীড় হারা পাখির মতো ঢাকার আকাশে ঘুরছে। সারা দেশ বিমানটির দিকে তাকিয়ে হাত তুলে প্রার্থনা করছে। ১৯৮ জন যাত্রীর প্রাণ দুই জন পাইলটের হাতে। যারা বিমানের ভেতরে আছেন, তাদের মনে কী অবস্থা, যারা নিচে বসে প্রার্থনা করছেন তাঁদেরই বা কী অবস্থা? জাপানি ভাষায় সোরা মানে আকাশ। আকাশ নিজেকে সোরা বলে ডাকে। সোরার মা সোরার একটা পুরনো গেঞ্জি কামড়ে ধরে বসে আছে। সোরা কি পারবে মায়ের কোলে ফিরতে? নাকি সোরা থাকবে আকাশে, সোরাকাশে।
জন্মেছিলেন পঞ্চাশ দশকের বরিশালে। শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঐ মফস্বল শহরেই। তারপর লেখাপড়া ও কর্মসূত্রে বাস করেছেন নানান শহরে এবং ঘুরেছেন নানান দেশে। কিন্তু কখনও ভোলেননি বরিশালকে- যে শহর তাঁর হৃদয়ে গাঁথা হয়ে গিয়েছে স্বপ্নের ও স্মৃতির শহরে। তাঁর স্মৃতির শহরকে তিনি দেখেছেন তাঁর শৈশব আর কৈশোরের চোখ দিয়ে। সে স্মৃতিতে উঠে এসেছে কিছু মায়াময় ঘটনার কথা, কিছু অনন্যসাধারণ মানুষের কথা, তাঁর পারিপার্শ্বিকতার কথা। বড় মমতার সঙ্গে এক স্বাদু গদ্যে তিনি লিখেছেন সে সব কথা। তাঁর বর্ণনায় মূর্ত হয়ে উঠেছে সেই সময়টিও। সব কিছুর সঙ্গে তিনি ধরেছেন পঞ্চাশ-ষাটের দশকের সময়কেও। পঞ্চাশ-ষাটের দশকে যাঁদের বড় হয়ে ওঠা সেদিনের বরিশালে, তাঁরা এ গ্রন্থস্থিত লেখাগুলোর সঙ্গে একটি একাত্মতা খুঁজে পাবেন। যাঁরা বরিশালের বাইরের, তাঁদের কাছেও এ সব লেখার প্রাসঙ্গিকতা অনেক। কারণ সে সময়ে বাংলাদেশের জেলা শহরগুলোর যাপিত জীবনের ধারার অভিন্নতা লক্ষ্যণীয়। স্মৃতির তাড়না থেকে নয়, বরং স্মৃতির চালনা থেকে উদ্ভূত এ সব লেখা থেকে বর্তমান ও ভদেশে-বিদেশে ড. সেলিম জাহানের পরিচিতি একজন কৃতবিদ্য অর্থনীতিবিদ হিসেবে। কিন্তু তাঁর রয়েছে একজন কথাশিল্পীর চোখ আর সংবেদনশীল মন। লিখতে পারেন খুব কাব্যিক আর আকর্ষক গদ্য, পাঠককে যা সহজে টেনে নেয়। এ বইয়ে তিনি ফিরে গেছেন তাঁর শৈশব-কৈশোরের স্মৃতির শহর বরিশালে এবং তুলে ধরেছেন তাঁর হিরণ্ময় স্মৃতি, যা অন্যদেরও স্মৃতিমেদুর করে তোলে। বিষ্যৎ প্রজন্ম অতীতের জীবন ও জগৎ সম্পর্কে একটি বড় মায়াময় গুরুত্বপূর্ণ চালচিত্র পাবেন।
জীবনের বন্ধুর পথে ছয় দশকের বেশি সময় পার হয়ে কবি শরীফ আস্-সাবের পেছন ফিরে তাকিয়েছেন। ধুপছায়া এক গ্রামে, বাবার হাত ধরে হাঁড়িধোয়া নদীর সাথে তার পরিচয়। যে নদীর পারে ছুটে বেড়িয়েছেন মুক্ত বাতাস হয়ে, যে নদীর গভীর জলে ডুবসাঁতার কেটে চঞ্চল মাছের মতো ছেলেবেলা কাটিয়েছেন সেই নদীর প্রতি নিবিড় ভালোবাসার প্রতিফলন তিনি ঘটিয়েছেন তাঁর কাব্যগ্রন্থ হাঁড়িধোয়া ভালোবাসায়। অকপট সারল্যে কবিতাযাপিত সংবেদনা বিস্তার করে কবি সৃজন করেছেন। এক মোহন বেদনালোক।
দাড়ি, কমা, সেমিকোলন, প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসায় মস্তিস্ক। কিন্তু মস্তিস্কের ওপরে শক্তিশালী কোন জিনিষ থাকে, যা হল আমাদের হৃদয়! তাইতো দিনশেষে অন্য কোন বিরাম চিহ্ন নয়, বসিয়ে দিলাম হৃদয়বোধক চিহ্ন। তেরটি গল্প নিয়ে এ বছর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে আমার বই- ‘হৃদয়বোধক চিহ্ন’। এই বইয়ের বেশীরভাগ গল্পের পটভূমিতে যেমন নিউইয়র্ক শহর আছে, আছে আমার জন্মভূমি বাংলাদেশের কথাও। এসেছে করোনা মহামারীকাল, এসেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, আছে রহস্য রোমাঞ্চ, প্রেম, ব্যর্থতা, মিল আর অমিলের গল্প। আমাদের ব্যর্থ আকাঙ্খার মাঝে কুসুমিত স্মৃতি হয়ে থাকা কিছু মুহূর্ত এই গল্পের বিষয়বস্তু।
সতেরো বছরের প্রিসিলা নিউইয়র্কে নাচ, গান, অভিনয় ও মডেলিং এ প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে সবকিছু বাদ দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখছেন সমাজ সেবায়। ফেইসবুক ও ইউটিউবে নিয়মিত বিশিষ্ঠ ব্যক্তিদের নিয়ে শিক্ষামূলক লাইভ প্রোগ্রাম করেন প্রতি রবিবার বাংলাদেশ সময় রাত আটটার পর। প্রিসিলার লাইভ প্রোগ্রামে এ পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিগণ অংশগ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশে প্রিসিলা নিজ অর্থে নিয়মিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। খাবার, চিকিৎসা, শীতের কাপড়, টিউবঅয়েল, সেলাই মেশিন, হুইল চেয়ার, আর্থিক সাহায্য, শিক্ষা সামগ্রী, শিশুদের খেলনা ইত্যাদি প্রিসিলার নিজস্ব টিমের মাধ্যমে নিয়মিত দেশের বিভিন্ন জেলায় বিতরণ করছেন প্রিসিলা। ফেইসবুক ও ইউটিউব মিলে প্রিসিলার ফলোয়ার প্রায় পঞ্চাশ লক্ষের বেশি যাদের বড় একটা অংশ কলেজ এবং ভার্সিটির ছাত্র ছাত্রী। প্রিসিলার বিভিন্ন লাইভ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য থাকে তরুণদের উৎসাহ দেয়া, অনিয়মের বিরুদ্ধে, দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা। চলতি বছরের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন প্রিসিলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। প্রিসিলার পছন্দ ব্রডকাস্টিং জার্নালিজম নিয়ে পড়াশুনা করা এবং পরে সম্ভব হলে আইন বিষয়ে পড়তে চান। একজন ভাল উপস্থাপক হয়ে সমাজের অনিয়মগুলো উপস্থাপনের পাশাপাশি নিজেকে সামাজিক কাজে ব্যাস্ত রাখতে চান। যতদিন বেঁচে থাকবেন, থাকতে চান অসহায় মানুষের পাশে। আমেরিকায় রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ পেলেও এখনও সিদ্ধান্ত নেন নি। তবে বাংলাদেশে কোন রাজনীতিতে জড়াতে চান না কোনদিন । কাজ করতে চান সবার সাথে ।
নিত্য চলার পথে আমাদের জীবনে কত কি-ই ঘটে যায়। গল্পের আড়ালে গল্প থাকে, সে গল্পে যুদ্ধ থাকে, সৈনিক থাকে, কৌশলও থাকে। বুদ্ধিমান -কৌশলী কেবল সে যুদ্ধে জিতে যাওয়ার উপায় জানেন। উপায়হীন মানুষ মাছের দরদামে ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিতে অস্বীকার করেন। ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সংবিধান লঙ্ঘনে মানবতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। নৈতিকতা-ন্যায়বিচারে ব্যর্থ আমরা মনুষ্যবোধ থেকে বিচ্ছুত হই। দাপাদাপিতে কে কার আগে, তা নিয়ে বিচলিত.......
বাংলা সাহিত্যে লেখকরা নারীদের বহু রঙে এঁকেছেন। কখনো সে একেবারে শ্বাশত বাঙালি নারী। কখনোবা প্রথা ভাঙা, সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখানো প্রতিবাদী চরিত্র। কখনো প্রেমময়, কখনো কঠোর। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক রওশন হক তাঁর 'আমি প্রেমে পড়িনি' ছোটগল্পের সংকলনে বলতে চেয়েছেন, নারী- পুরুষের লিঙ্গভিত্তিক পার্থক্য আছে কিন্তু সামাজিক অবস্থানের পার্থক্য নেই। তাঁর গল্পে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বাঙালি মধ্যবিত্ত নারীদের অসহায়ত্ব, প্রত্যাখ্যান, বঞ্চনা ও দ্রোহ যেমন প্রকাশ পেয়েছে তেমনি দেখানো হয়েছে নারীরা বেশিরভাগই সাহসী, সংগ্রামী ও প্রেমিকা। তাঁর লেখনিতে প্রবাসে নারী চরিত্রগুলোর বৈচিত্র্যপূর্ণ বিন্যাস করা হয়েছে। প্রেমের বাঁধন ছেড়ার গল্পে হয়তো অনেক প্রেম পরিণয় পর্যন্ত গড়ায় না। প্রেম ও বিরহ যেন একই মুদ্রার দুই পিঠ। তখন বিয়ে ও সংসার যাপনে হতাশা, দুঃখের প্রকাশ ঘটে কিন্তু পরক্ষণেই সমাজের নিন্দাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সেই চিরচেনা নারীই নতুন জীবনকে আলিঙ্গন করে-এমন বিষয়গুলে
ঘটনা প্রবাহ: রাতের যেমন সৌন্দর্য আছে, তেমনি আছে তার কদর্যতা। কোনো কোনো রাত থাকে রহস্যময়তায় ভরা। রাত যত গভীর হয়, ততই রহস্যময় হয় তার গভীরতা। একদিকে ঘুমিয়ে পড়ে শহর। অন্যদিকে জেগে ওঠে আরেকটি শহর। আঁধারে ঢেকে থাকা সে শহরের কথা আমরা অনেকেই জানি না। যা থেকে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। রাতের গভীরতার সাথে বাড়তে থাকে আঁধারের ঘনত্ব। তার সঙ্গে বৃদ্ধি পায় পৃথিবীর রহস্যময়তা! রাতের নগরীতে গন্তব্যহীন পথ চলায় ক্রনিক ইনসমনিয়ার রোগী রাতুলের পরিচয় ঘটে রাফিদ, নীরা, রিয়া, শর্মি, আরমান, ওসি মাশরুফ সহ আরো অনেকের সাথে। মুখোমুখি হয় এক একটা ঘটনাবহুল অধ্যায়ের। উন্মোচিত হতে থাকে রহস্য। সেই সাথে জানা হয় অজানা-অচেনা মানুষ ও জীবনের গল্প। আর এইসব ঘটনার খণ্ডচিত্র নিয়েই বিস্তৃত হয়েছে এই উপন্যাসের পটভূমি।
"বেশকাল পর টানা সুরে তোমার সুনাম রচনা করিতে বসে কিছুই আসে না মনে... বেগম আখতার বারবার না না করে কাঁপিয়ে দিচ্ছেন নির্জন বিকাল...কান ওদিকে ঘুরেছে ঠিক মন তবু টানা সুরে তোমার কিছুটা ছায়া গেয়ে যেতে বাসনা বেঁধেছে... তবে হোক গান শুধু শীতরাত দূর কোনো পাহাড়ের বনে... কেমন প্রশান্ত মাঠ... ভাটিয়ালি সুরে তারে কত না সহজে বলো বাঁধা যেত যদি সুর আয়ত্তে থাকিত তবু আমি সুর বাঁধি কথা বেশ কমেটমে সুরেলা সুবাস হয়ে ফুটে রয় এখানে সেখানে... তাতে আমি অযথা জড়াই না তো বেদনার রঙ... এই বলে বাইরে তাকিয়ে দেখি শিশুরা খেলছে বল... রোদের ভিতর কত শিশুকাল এমনি লুকিয়ে আছে... ঠিক যেন তুমি আছ সকল গানের মাঝে গান হয়ে হয়তো বলতে চাই বনের ভিতর যত বন হয়ে শীতের শুরুতে সব ফুলের উপাধি জানা খুব বেশি উপকারি নয়...এর মাঝে হারানো বনের দিন লুকানো রয়েছে... আমি কি তাতেই মজে টানা সুরে বেঁধে যেতে এ গান মনের কাছে আর্জি রেখেছি... আসলে হদিস জানা নাই।" এই প্রকার বহু কবিতা মুজিব ইরম প্রণীত উত্তরবিরহচরিত গ্রন্থে পাওয়া যাবে।
কোনো কোনো গল্পের শুরু থাকে না, সমাপ্তিও নেই। কারো কারো জীবনের মতো বলা নেই কওয়া নেই সময়টা ঝরে পড়ে। কেউ কেউ আবার এদের নাম রেখেছেন আদর করে 'ঝুরো গল্প'। সবখানেই মানুষের ভিড় থাকে তবুও মানুষ একলা মানুষ। ভিড়ের মাঝেই মিশে যেতে যেতে মানুষ আরও একাকী হয়, শূন্যে মিলিয়ে যায়। একার ভিড়ে সে কি ভাবে? ক. কোনো মানুষ যদি নিজেকে কষ্ট দেয়, সেটা থেকে তাকে বের করে আনবার উপায় কি? খ. কেউ যদি কাউকে মিস করে সেটা সে তাকে যথার্থ বোঝাবে কী করে? গ. মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার সবচেয়ে সহজ উপায় কী? ভুল জিনিস চিন্তা করা বন্ধের উপায়? কাউকে ভুল না বোঝার উপায়? কাউকে বিশ্বাস করার পন্থা কী? ঘ. পজিটিভ কিছুকে পজিটিভ ভাবার ক্ষমতা কীভাবে গ্রো করে? হয়তো এর কিছুই ভাবে না। এ রকম ছোট ছোট কিছু গল্পের সম্মেলন এই 'একার ভিড়ে একা। পড়তে পড়তে থমকে গিয়ে হয়তো ভাবতে পারেন এ তো আমারই গল্প। আর সেই একাত্মতাটুকু যদি না হয়, তবুও ভেবে নিন না যে; আমিও একার ভিড়ে একা।
লেখক সায়েন্সের ছাত্র, ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত, কেমিস্ট বা লেবরেটোরি অ্যানলিস্ট ওয়ার্কার। পুরো করোনাকালে তাঁর কাজ করতে হয়েছে। এ বই তাঁর অভিজ্ঞতালব্ধ। এতে চমৎকার সব ঘটনা আছে। আছে মানুষের কথা, করোনায় মৃতের পরিবারের বেদনার কথা। আছে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের কাহিনি। ভাষা অতি সাধারণ, অথচ প্রাঞ্জল। আশা করি, বইটি সকলের উপকারে আসবে।
লাতিন কথাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান লেখক হুয়ান কার্লোস ওনেত্তি। উরুগুয়ের এই ঔপন্যাসিকের বিশ্বনন্দিত উপন্যাস 'এল গোসো' (কুয়ো) প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৩৯ সালে। উপন্যাসের চরিত্রগুলো যতটা না বাস্তব, তার চেয়ে বেশি অশরীরী। কাল্পনিক স্মৃতিতে বেঁচে থাকা কতগুলো মানুষের গল্প এটি। এর প্রধান চরিত্র লিনাসেরো একজন ব্যর্থ মানুষ, বেঁচে থাকার অনাগ্রহ থেকে সে স্বপ্ন দেখে। ওনেত্তি মার্কেস থেকে ভিন্ন এক কণ্ঠস্বর। এমনকি লাতিন আমেরিকার অন্যান্য কণ্ঠস্বর হুয়ান রুলফো, কার্পেন্তিয়ের, বোর্হেস, য়োসা কারও সঙ্গে ঠিক মেলে না। আবার এ-ও ঠিক, লাতিন সাহিত্যের ঐতিহ্য নির্মাণে তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য। য়োসা যে কারণে বলেছেন: লাতিন আমেরিকার উপন্যাসের জন্ম উরুগুয়ের ঔপন্যাসিক হুয়ান কার্লোস ওনেত্তির প্রথম উপন্যাস 'এল পোসো' প্রকাশের পর থেকে।' তাই ওনেত্তিকে বাদ দিয়ে বাংলা ভাষায় যে লাতিন আমেরিকার সাহিত্য পাঠ ও চর্চা, সেটি অসম্পূর্ণ ও খণ্ডিত। বাংলা ভাষার পাঠকেরা উপন্যাসটি পাঠ করে সাহিত্যের নতুন ধরনের গঠন ও নির্মিতি সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
মনিকা লিউনস্কি। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রেমিকা। দেখতে আহামরি সুন্দরী নন, তবু ক্লিনটন তাঁর প্রেমে পড়েন। প্রেমিকার জন্য প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন তাঁর রাজত্ব হারাতে বসেছিলেন। শোনা যায়, হিলারি নাকি তখন রেগে-মেগে ক্লিনটনকে কিলঘুষি মেরে বলেছিলেন, 'এই মেয়ের জন্য তুমি প্রেসিডেন্সি খোয়াবে?' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিল ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেঁচে থাকবেন। তাঁর সাথে বেঁচে থাকবেন তাঁর প্রেমিকা মনিকা লিউনস্কি।
গণমাধ্যম আধুনিক জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ। আর পেশা হিসেবেও সাংবাদিকতার রয়েছে গৌরবময় অবস্থান। একদিকে গণমাধ্যম আমাদের প্রতিদিনের জীবনে তথ্যের যোগানদাতা, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। জানাচ্ছে কখন, কী করতে হবে। গণমাধ্যম তাই বাতাসের মতোই মিশে আছে আমাদের জীবনে। আজকের দিনে উন্নয়ন, সুশাসন, জবাবদিহিতা, জনমত সৃষ্টি কিংবা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের রয়েছে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা।
ইংরেজি তাে তার না বােঝার কিছু নেই কিন্তু ভাবনা ওই একসেন্ট নিয়ে। সেদিক থেকে নিহাই ভালাে বন্ধু হবে। এক ধরনের আপনজনও তাে সে। পরিচিত। ছেলে তাে প্রথম দিনেই কোনাে এক কমেডিয়ানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে একসেন্টের সমস্যায় কি কি হয়েছে এই আমেরিকায়। বলেছে কোনাে এক মহিলা এয়ারপাের্টে নেমেছে। তাকে সিকিউরিটির লােকজন জিজ্ঞেস করল, কেন এসেছ? মহিলা জানাল, টুরিস্ট সে। কিন্তু ওরা শুনল টেররিস্ট। ব্যাস হাতকড়া।। আরেকজন নেমেছে বিশাল বিশাল যন্ত্রপাতি নিয়ে। তাকেও জিজ্ঞেস করুল, কি করতে এসেছ? সে বলল, স্যুট করতে। কি স্যুট করতে? বিশাল বিশাল বিডিং। ধর ধর করে তাকেও আটকাল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সে আসলে বলতে চেয়েছিল বিশাল বিশাল বিল্ডিংয়ের ছবি তুলবে।
নদীর মতন বৈচিত্র্যময় মানব জীবনের বাকে বাকে নানানরকম ঘাত-প্রতিঘাত। যার ধরনধারন হিসেব করা বড়ই দুরূহ ব্যাপার। কোথাও জীবন সদা চঞ্চল হরিণীর মতন। কোথাও খাঁচায় বন্দী পাখি। কোথাওবা স্বপ্ন-সুখে ভরা যেন আকাশ ভরা তাঁরা। কোথাও হঠাৎ পথ হারিয়ে দারুণ দিশেহারা। "চতুর্ভুজ" চারটি সমকালীন গল্পের সমাহার। "আজ তুষির জ্বর" তুষি, ছোট্ট এক বালিকা। যার বিশেষত্ব সে সব জানে, সব। আর এই সবজান্তা স্বভাবের কারনেই তাকে পরতে হয় রোমাঞ্চকর ও ভয়ানক অভিজ্ঞতার মধ্যে। "ডানাকাটা পরি"-হ্যা, পরিই বটে। অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে। নামে পরি হলেও এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর আঘাতে আঘাতে তার জীবন করেছে বিভীষিকাময়।" একটি নীলমগ এবং ভালোবাসা" হাজারো মানুষের ভীড়ে ভীষণ একা লিটু। তার জীবনে আসে এক রুপকথার রানি। যে পরম ভালোবাসা আর বন্ধুত্বে আপন করে নেয় লিটুকে। দূর করে দেয় তার সকল একাকিত্ব। কিন্তু মহাবিশ্বের নির্মম শৃঙ্খলের কারনে তারা এক হতে পারে না। "ছেলেটি বাদাম ছিলিত মেয়েটি বাদাম গিলিত"-কবির, একজন স্বপ্নবাজ নাটক নির্মাতা। যার ব্যক্তিজীবনের ভালোবাসা ও কর্মজীবন উভয়ক্ষেত্রে যথেষ্ট ইতিবাচক মানসিকতার সাথে সফল হবার বাসনা। সেই আশার ঘরে হঠাৎ উভয়মুখী ঝড়ের আঘাত সবকিছু তছনছ করে দেয়। অজস্র জীবনের সংখ্যাতীত অভিজ্ঞতা কোনো গল্পেই যেন সম্পূর্ণতা পায় না। তারপরেও চতুর্ভুজে'র চারটি কোনে চারটি ভিন্নধর্মী গল্পের মাধ্যমে আসলে এই জীবন গঙ্গার অসীমতাকেই একত্রিত করার আন্তরিক প্রচেষ্টা।