জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শ্রেষ্ঠ অবদান বাংলাদেশ রাষ্ট্র অর্জনে সাহসী ও বীরােচিত নেতৃত্ব দান এবং এই রাষ্ট্রের সংবিধান প্রণয়ন। অতীতে বহুভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর এই উজ্জ্বলতম কীর্তিকর্ম নিয়ে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম তাঁর রচিত বঙ্গবন্ধু: সংবিধান আইন আদালত ও অন্যান্য গ্রন্থে ভিন্ন ধরনের বর্ণনাভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণ দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে চিহ্নিত করেছেন। এই গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ১৫ টি প্রবন্ধের মধ্যে লেখকের নিজের ব্যক্তিগত স্মৃতিতে উজ্জ্বল জাতির পিতার ব্যতিক্রমী দার্শনিক ব্যক্তিত্বের পরিচয় যেমন দিয়েছেন তেমনি সংবিধানে প্রতিফলিত জাতির পিতার দর্শন-স্বপ্ন, ধর্মবিশ্বাস, ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনা সম্পর্কে বিশ্লেষণ প্রদান করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় অবস্থান, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘােষণার বিষয়টি গণপরিষদ ও সংবিধানে কীভাবে গৃহীত হয় সে সম্পর্কে পর্যালােচনা স্থান পেয়েছে এই বইয়ে। সেই সাথে আইন-আদালত ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা এবং তাঁর সংসদ জীবনের শেষ দিনের বর্ণনাও প্রদত্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ঘাতক কর্তৃক বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তার হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। এই বইয়ের লেখক শৈশবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষদর্শী ও স্নেহধন্য। তাঁর পিতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের সহযাত্রী ও অনুসারী। লেখক সেই অলিখিত ইতিহাসকে প্রকাশ করেছেন এই গ্রন্থে। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন-আদর্শ-চিন্তার বিভিন্ন জানা-অজানা দিক উন্মােচন হয়েছে। সে বিচারে গ্রন্থটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। গ্রন্থটি পাঠে পাঠক সমৃদ্ধ হবে।
বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানটি রচিত হয়েছিল গণপরিষদের ৮ মাসের প্রচেষ্টায়। সে সময় বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, ড. কামাল হোসেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ চার শতাধিক গণপরিষদ সদস্যের আলোচনা ও বিতর্ক লিপিবদ্ধ হয়েছিল পরিষদের কার্যবিবরণী ও অন্যান্য দলিলপত্রে। এই গ্রন্থে প্রথমবারের মতো এসব দলিল বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই বিশ্লেষণ বলে দেয়, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর আমরা কেমন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম, আমাদের ভুলটা কোথায় হয়েছে,আর কোথায়ই-বা আমাদের সম্ভাবনা।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তাদের বিচার করার সিদ্ধান্ত দ্ধান্ত নেয়। এরই অংশ হিসেবে ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার শুরু করে। এজন্য ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আওয়ামীলীগ সরকার। এপর্যন্ত (২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত) ৪৭টি মামলার রায় ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। এসব মামলায় দণ্ডিত অপরাধীর সংখ্যা ১১৬ জন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও 'রায়' বইয়ে জামায়াতের শীর্ষনেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা, মীর কাসেম আলী ও বি এন পি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার বিবরণ দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ও আপিলের রিভিউ মামলার রায় সন্নিবেশিত করা