“জোছনায় ফুল ফুটেছে" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ এক ফাল্গুন মাসে আমি গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি । রাতে অপূর্ব জোছনায় পৃথিবী ভেঙে পড়ছে । শত শত নক্ষত্রও জেগে উঠেছে । পৃথিবী তার সমস্ত সৌন্দর্যের রূপ নিয়ে দাড়িয়ে আছে । জানালা খুলে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । ঘুম ভাঙল গভীর। রাতে । দরজা খুলে নিঃশব্দে আঙিনায় এসে দাঁড়িয়েছি । জোছনায় গাছপালা প্লাবিত । আমের মুকুল, বাতাবি লেবু আর শাদা ফুলের গন্ধ মন পাগল করে তুলছে। কোনাে এক প্রান্ত থেকে হুতুম পেঁচার ডাক ভেসে আসছে—হুদ হুদ হুতুম হুদ । অদ্ভুত এবং একরকম ভয় জাগানিয়া শব্দ । জোছনা, গন্ধ। সব মিলিয়ে বিচিত্র একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে । আমার মন হু হু করে উঠছে। মনে হচ্ছে শব্দ করে কেঁদে উঠি । সুন্দর এই পৃথিবীতে একদিন আমি থাকব না । কিন্তু পৃথিবী তার সমস্ত রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে । আম গাছের ডালের ভিতর দিয়ে অবাক জোছনার কী রহস্য! মুগ্ধ হয়ে দেখছি । মনে হচ্ছে—জোছনায় যেন ফুল ফুটেছে ।
মানুষ স্বপ্ন দেখে প্রতিনিয়ত। স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে পুরো জীবন অতিবাহিত করে। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে কেউ জীবনের প্রতিটি স্তর সৌখিনতায় সাজিয়ে তোলে। আবার কেউ-বা শুধুই দুবেলা পেট ভরে খাবার খেতে পাওয়ার স্বপ্ন দেখে। স্বপ্ন দুটোই, কিন্তু পার্থক্য বিশাল। প্রত্যেকটা স্বপ্নই যার যার কাছে অনেক বড়ো। সেই স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে আসে কেউ অসংখ্য বাধা অতিক্রম করে। আবার কেউ-বা বাধাহীনভাবে স্বপ্ন পূরণ করে অবলীলায়। পৃথিবীর হাজারো পথ-পরিক্রমার মধ্যে দিয়ে কিছু ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘কয়েকটি গল্প’।
এক পশলা বৃষ্টির পর পুব আকাশে হেসে উঠা ‘রংধনু’আমাদের মন ভরে দেয়। ভিন্ন ভিন্ন সাতটি রংয়ের মিশেলে রংধনু হয়ে উঠে অপরুপ, রঙিন। আমাদের এই জীবনটাও ঠিক রংধনুর মত। হাসি-আনন্দ, দুঃখ-কান্না, প্রেম-ভালোবাসা, বিরহ-মিলন, চিন্তা, বোধ, দর্শন...জীবনের এত এত রুপ প্রতিনিয়ত আমাদের দোলা দেয়। শিহরণ জাগায়। জীবনের রকমফের’কালির ক্যনভাসে আঁকা জীবনের ছবি। ফিচার, রম্য, গল্পের মিশেলে এতে আছে জীবনের ভিন্ন ভিন্ন অনুভুতির স্বাদ। প্রিয় পাঠক, প্রেম-ভালোবাসা, হাসি-কান্না, চিন্তা-বোধের এই জগতে আপনাকে স্বাগতম। তবে আর দেরি কেন? চলুন, ডুব দেওয়া যাক...
গড় অঙ্কের গরমিলে’ মাসুমা মায়মুরের দ্বিতীয় গল্প-সঙ্কলন। বিভিন্ন সময় রহস্যপত্রিকায় প্রকাশিত গল্পের বাইরেও ‘যুগে যুগে হৈমন্তী’ ও ‘গড় অঙ্কের গরমিলে’ নামে আরও দুটি গল্প সহ মোট সাতটি গল্প ঠাই পেয়েছে এই সঙ্কলনে। গল্পগুলোতে রয়েছে সামাজিক অবক্ষয়, নারী অধিকারের কথা, আছে স্বার্থের জন্য নিজ রক্তকেও উপেক্ষা করার করুণ কাহিনী। আশা করি গল্পগুলো পাঠকদের ভাল লাগবে।
পথগুলো জীবনের। গল্পগুলো আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া নিত্য সময়ের। যেখানে যন্ত্রণা আছে, কষ্ট আছে, স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা আছে। নেই শুধু মুক্তি। “লাবণ্য কথা” আমাদের আক্ষেপের প্রতিচ্ছবি।
একজন নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজতে গিয়ে অন্য একজন নিখোঁজ হলেন। দুজনের কেউই জানে না, তারা হারিয়ে গেছে। এ রকম একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছি। মাঝে মধ্যে দুজনকে একই মানুষ মনে হবে। মাঝেমধ্যে মনে হবে, ওরা আসলে দুজন না। ওরা তিনজন। মনস্তাত্ত্বিক বিভ্রমের নানান স্তরের কর্মকান্ড থেকে এক একটি চরিত্র ধার করা হয়েছে। একটা মানুষ যখন তার কল্পনাকে সত্য মনে করে তখন তার চিন্তা করার সিস্টেমগুলো কেমন করে কাজ করে? কিংবা সমস্যা যখন আরও জটিল হয়? সত্যকে তিনি কল্পনা মনে করছেন!! চারপাশের সবকিছু অ্যাবস্ট্রাক্ট ছবির মতো-অর্ধেক বস্তু অর্ধেক কল্পনা।
হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো একটি সূক্ষ্ম পুষ্পরেণুও কোনো কোনো মানুষের দৃষ্টি এড়ায় না। সবুজ ঘাসের পাতায় পাতায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু আর অবাক মেঘের উড়ানে কেউ কেউ খুঁজে পান জীবনের সুন্দরতম অবয়ব, নিজের পরিপাটি ভুবন রেখে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখেন সময়ের ঘাত-প্রতিঘাত। মানুষের দৃষ্টিসন্ধিতে জমে থাকা পরশপাথরও চুর চুর করে ভেঙে পড়ে তার জাদুকরী আঙুল স্পর্শে। তেমনই অন্তদ অন্তর্দৃষ্টি আর মমতায় জীবনের গল্প রচে চলেন গল্পকার স্মৃতি ভদ্র। পালক নরম শব্দের বুনন, দুর্দান্ত কল্পনাশক্তি আর নিগূঢ় মমত্ববোধ দিয়ে গল্পকার স্মৃতি ভদ্র 'এলেনা বেলেনা' গল্পগ্রন্থের ষোলোটি গল্প নির্মাণ করেছেন। এই গল্প- সংকলনের গল্পগুলোতে দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের নানা অবক্ষয় মূর্ত হয়ে উঠেছে।
এই পাঁচটি বছরে প্রতিবারই প্রকৃতিতে ফাগুন এসেছে, বসন্তও এসেছে— জানো তো? ফাগুন মাসেই জন্মেছিলাম কিনা, তাই ফাগুনকে ভুলতে পারি না। শুধু সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটির দেখা পাইনি— একটি বারের জন্যও না; মনেও করেনি সে। —এভাবে বলো না, প্লিজ! —তা ঠিক, এভাবে বলে আর কী লাভ? কিন্তু খুব মিস করি, জানো? বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললে, ‘আজও মনে আছে তোমার?’ —থাকবে না কেন? আমি তো কিছু ভুলতে চাইনি। চাইলে হয়তো ভুলে যেতাম।
অশ্রুত একুশ’ বাংলাদেশের মফস্বল শহরের এক প্রতিভাদীপ্ত তরুণের আশ্চর্য আত্মবীক্ষণ। লেখক শাকিল রেজা ইফতি এই আত্মকাহিনীতে বর্ণনা করেছেন ঝাবিক্ষুব্ধ উত্তাল সমুদ্রে হালবিহীন ভাঙা জাহাজের এক বিপর্যস্ত নাবিকের দুঃসাহসী
বাংলাদেশের এক যুবকের কথা ভাবি যে দূরের ছােট্ট দ্বীপ দেশ কিউবার দিকে কৌতূহলে তাকায়। মাত্র বছর বত্রিশের এক তরুণ ক্যাস্ত্রো তার সহযােদ্ধাদের নিয়ে পরাক্রমশালী আমেরিকার একেবারে নাকের ডগায় ঘটিয়ে ফেলেছিলেন এক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব। তারপর আমেরিকার অবিরাম বিরােধিতা আর চোখ রাঙানির ভেতরও টিকিয়ে রেখেছেন সেই বিপ্লবের মন্ত্রকে। একসময় নদীর পাড় ভাঙার মতাে পৃথিবীর চারদিকে এক এক করে শােনা গেল সমাজতান্ত্রিক চরাচরের ভাঙনের শব্দ; কিন্তু তবু ক্যাস্ট্রো তার নিঃসঙ্গ দ্বীপটিতে জ্বালিয়ে রাখলেন সেই পুরনাে স্বপ্নের বাতিঘর। যুবকের জানতে ইচ্ছা হয় কী করে পারলেন তিনি? ক্যাস্ট্রোর নিজ মুখে সে তখন শােনে নাগরদোলায় চড়া তার আশ্চর্য জীবনের গল্প।
এই গ্রন্থে আমার পাঁচ বছরের ইস্তাম্বুল-জীবনের কিছু মুহূর্তকে কখনো গদ্যে, কখনো পদ্যে, কখনোবা স্বপ্নের ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছি। জেগে থেকে ইস্তাম্বুলের যা কিছু দেখেছি, তার পাশাপাশি এই শহরে ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নগুলোর কদর না করলে এই স্মৃতিকথা অপূর্ণ থেকে যেত। বিশেষ করে এই পাঁচ বছরের প্রায় অর্ধাংশ আমাকে চলনশক্তিহীন জীবন যাপন করতে হয়েছে, এখনো তা-ই। হুইলচেয়ারে করে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ ইদানীং আর খুব একটা হয় না। তাই লুসিড ড্রিমিং অনেকটা ভরসা…
প্রবাস জীবনের নানাবিধ ঘটনার সমন্বয়ে লিখিত বই 'আমার প্রবাস মনের প্রাপ্তি'। এখানে ব্যাক্তিগত সুখ, দুঃখ ও বেদনার পাশাপাশি লেখক সুনিপুনভাবে তুলে ধরেছেন প্রবাস জীবনের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সমাধান। পারিবারিক, সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিভাবে একজন মানুষ বিদেশ বিভূইয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকে, অনেক অপ্রাপ্তির মাধ্যেও প্রাপ্তি খুজে পায়- তার সরল উপস্থাপনায় রঙ্গিন হয়েছে 'আমার প্রবাস মনের প্রাপ্তি'।
বাংলাদেশ থেকে আসা ইমিগ্র্যান্ট পরিবারগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন দেশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার সংগ্রাম থেকে উত্তরণের আগেই তাদের সন্তানদের নিয়ে আবর্তিত হয় নতুন সংকটে। সেই সংকট নানাবিধ। মা-বাবার হোম সিকনেস যেমন দেশের প্রতি আত্মিক টানকে জিইয়ে রাখে, সন্তানদের হৃদয়ে তেমন কোনো অনুভব টেরই হয় না। বরং তারা ক্রমশ মিশে যেতে চায় আমেরিকার সমাজে।বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের দূরত্ব তৈরি হতে থাকে পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের চাপ তাদের বাঙালি এবং মুসলমান (যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী) করে রাখার জন্য, আর তাদের স্বতঃস্ফূর্ততা থাকে আমেরিকান হওয়ার। এই দুই টানাপোড়নে তাদের যে মানসিক ক্ষরণ ও দ্ব›দ্ব তা অনেকের পক্ষে বোঝা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আমেরিকায় জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। তারা স্কুল-কলেজ ও কর্মজীবনে মোটা দাগে সাফল্য অর্জন করছে। কিন্তু তাদের পরিচয় নিয়ে তারা অনেকটা বিভ্রান্ত থাকে। বাংলা বলতে না পারার জন্য তারা নিজেরাও সংকুচিত হয়ে থাকে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে, আবার কিছু কিছু বড় শহর ছাড়া অন্যত্র বাংলা শেখাটাও সহজ নয়। এইসব ছেলেমেয়েদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নিয়েও শুরু হয় অন্যরকম জটিলতা। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে সন্তানদের স্বপ্ন যেন ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। ঘরে এবং বাইরে নানা মাত্রার অশান্তি বাংলাদেশ থেকে আসা ইমিগ্র্যান্ট বা-বাবা এবং এদেশে জন্ম নেয়া তাদের সন্তানদের নিজ নিজ সংকট ও মনোবেদনা তাদের আর্থিক সাচ্ছন্দকে অনেকটাই আড়ালে ফেলে দেয়। মিজান রহমান আমেরিকায় আমাদের নতুন প্রজন্ম বইটিতে এইসব সংকট ও মনোবেদনার স্বরূপ অনুসন্ধান করেছেন।
কৈশোর ও যৌবনকালের রোমান্টিক সম্পর্কের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ নিয়ে রচিত একটি উপন্যাস। সাদা এবং কালো, অথবা ভালো এবং মন্দ, অথবা আলো এবং আঁধারের বাইরেও একটি জগৎ আছে। এর বিস্তৃতি মোটা দাগের সাদা ও কালোর চেয়েও অনেক বেশি, যার হদিস আমরা খুব কমই পাই। তেমনি মোহ বা ইনফাচুয়েশন থেকে ভালোলাগা এবং প্রেম-ভালোবাসার পার্থক্য করাও কঠিন। ফলে সৃষ্টি হতে পারে দুঃখ, ঘৃণা ও প্রতিহিংসার মতো পরিস্থিতি। বইটিতে এসবই বর্ণিত হয়েছে কয়েকটি চরিত্রের মাধ্যমে একটিমাত্র গল্পের কাঠামোয়। কাজেই ভালো-মন্দের তাত্ত্বিক বিচার ছাড়াই শুধু উপন্যাসের স্বাদ পাওয়া যাবে বইটিতে।
বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।