ড. নবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণরসায়নে বিএসসি (অনার্স) এবং এমএসসি, জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টোরাল। '৭০ দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এবং প্রথম সিনেটের সদস্য। ১৯৮০ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস। পেশায় বিজ্ঞানী, বর্তমানে একটি বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ স্থানীয় বিজ্ঞানী হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। ড. নবীর পেটেন্টকৃত আবিষ্কার এবং পাবলিকেশনের সংখ্যা ৫৫। ৮০-র দশকে আমেরিকায় ইউনাইটেড মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ এবং ৯০-এর দশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও '৭১-এর ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি প্রতিষ্ঠায় ও নেতৃত্বে প্রধান ভূমিকা, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র-এর প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক এবং বর্তমান সভাপতি, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ নিউ জার্সি-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন সভাপতি, বাংলাদেশ। অ্যাসোসিয়েশন অফ নিউ জার্সি-এর পৃষ্ঠপোষক, ফোবানার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান, এউ এস এ কমিটি ফর সেকুলার অ্যান্ড ডেমোক্রেটিক বাংলদেশ-এর সভাপতি, অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক প্রবাসী'র প্রেসিডেন্ট ও সম্পাদক। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা বই 'বিশ বছর পর'-এর প্রকাশক। ড. নবী ২০০৭ সাল থেকে নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের প্লেইন্সবোরো শহরের নির্বাচিত কাউন্সিলম্যান। ড. নবীর স্ত্রী ড. জিনাত নবীও একজন বিজ্ঞানী। দুই পুত্র মুশফিক নবী ও আদনান নবী। নবী পরিবার বর্তমানে প্লেইন্সবোরো শহরে স্থায়ীভাবে বাস করছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার কবি শামসুর রাহমান বাংলা কাব্যজগতে এক জ্যোতিষ্ক হয়ে আছেন। তাঁর সমসাময়িককালে তিনিই ছিলেন উভয় বাংলার শ্রেষ্ঠ কবি। বাংলাদেশে আধুনিক কবিতার ধারা তিনিই সূচনা করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি ছিলেন সোচ্চার। স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে চাকরি হারিয়ে বেকারত্ব গ্রহণ করতে দ্বিধা করেননি। তাঁর এই প্রতিবাদী ভূমিকার কথা রয়েছে এই বইয়ে । তিনি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে 'হাতির শুঁড়' নামে একটি কবিতা লিখেছেন। সাহস করে আর একটি কবিতা লিখেন বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে বন্দি। বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ্য করে কবি শামসুর রাহমান একটি অসাধারণ কবিতা 'টেলেমেকাস' লিখেন। প্রবাসে স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন লেখক। বাংলাদেশে চলমান সে আন্দোলনে কবি শামসুর রাহমান কবিতায়, রাজপথে এবং মিছিলে মিটিং-এ সোচ্চার ছিলেন। কবির এই সংগ্রামী মনোভাবের কারণে তাঁর সাথে একাত্মতাবোধ করছিলাম। এই প্রতিবাদী কবিকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসি। তিনি আমাদের বাসগৃহে দীর্ঘদিন অতিথি ছিলেন। আমাদের সৌভাগ্য হয়েছিল কবিকে খুব কাছ থেকে জানার এবং বোঝার।সুযোগ হয়েছিল তাঁকে সেবা করার। কবি শামসুর রাহমান দু'দফায় প্রায় ছয় মাস আমেরিকায় অবস্থান করেন। অনেকেই কবি শামসুর রাহমানের এই ছয় মাসের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত নন। লেখক এ গ্রন্থে পাঠকদের জন্যে কবি শামসুর রাহমানের চারিত্রিক গুণাবলি, স্বাধীনতার কবি হিসেবে তাঁর একনিষ্ঠতা এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর ছয় মাসের কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ করেছি।
দুই মেরুর দুই নদী ও দেশ এই গ্রন্থকে ঋদ্ধ করেছে। বস্তুত নিউইয়র্ক নগরে বসবাসরত বাঙ্গালির যাপিত জীবন, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি এ গ্রন্থের পাতায় পাতায় স্থান করে নিয়েছে। দুই নদীর তীরে গড়ে ওঠা দুই সভ্যতার আলোকে জীবনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, সন্তোষ-অসন্তোষ নিয়ে পথচলা অন্তহীন পথিকের জীবন ভাষ্য 'ইছামতি থেকে ইস্ট রিভার' ।
অধ্যাপক কবীর চৌধুরী একজন শিক্ষাবিদ, লেখক, অনুবাদক হিসেবে খ্যাতিলাভ ছাড়াও তিনি অসাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে আজন্য সোচ্চার ছিলেন। তিনি শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক হিসেবে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজকে বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা গড়তে শিখিয়েছেন। তিনি প্রশাসক হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আধুনিকীকরণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ে তিনি বহু মৌলিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। অনুবাদক হিসেবে বিশ্বসাহিত্যকে বাঙালিদের দোরগড়ায় এনেছেন। তেমনই বাংলা সাহিত্যের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য রচনা তিনি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে বিশ্বসাহিত্য জগতে বাঙালির সাহিত্যকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। অধ্যাপক কবীর চৌধুরী আজন্ম অসাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে লিখেছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন, মাঠে ময়দানে মিটিং-মিছিলে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করেছিল। এইসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে শহিদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গঠিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নেতা ছিলেন অধ্যাপক চৌধুরী। জাহানারা ইমামের মৃত্যুর পর স্পষ্ট নেতৃত্ব শূন্যতা পূরণ করতে এগিয়ে এসেছিলেন অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। সুদীর্ঘ ও বৈচিত্র্যময় কর্মজীবনে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিশ্বশান্তি প্রভৃতি সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এই উপলক্ষে তিনি বিশ্বের বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিশ্ববাসীর সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে জেনে তিনি তাঁর ছাত্রদেরকে বিশ্বনাগরিক হতে শিখিয়েছেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পাওয়া। তিনি আমাকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে অধ্যাপক চৌধুরীকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে।যুক্তরাষ্ট্রেও তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। এই মহান শিক্ষাবিদকে খুব কাছে থেকে দেখার যে অভিজ্ঞতা তা লিপিবদ্ধ করেছি এই গ্রন্থে। নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় এই ক্ষণজন্মা শিক্ষাবিদকে আমরা যেন ভুলে না যাই, তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিই, এই উদ্দেশ্যেই এই গ্রন্থটি লিখেছি। এ গ্রন্থটি রচনা করতে আমাকে নানাভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছেন আমার স্ত্রী ড. জিনাত নবী ও আলোকচিত্র শিল্পী এম এ তাহের। এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্স-এর এম ই চৌধুরী শামীম এই গ্রন্থটি প্রকাশ করে কৃতজ্ঞবোধে আবদ্ধ করেছেন। তাঁদের তিনজনকেই আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
বদলে যাচ্ছে আমাদের সমাজ কাঠামো। আধুনিক মানুষের মন ও মননেও লেগেছে দ্রুত পরিবর্তনের দোলা। চলছে ভাঙ্গা-গড়ার সুক্ষ্ম খেলা। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আটপৌঢ়ে নাগরিক জীবনের সেই সুর ও ছন্দ এখন আর নেই। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ঢিমেতালে চলা মধ্যবিত্ত। নানা রকম জটিলতার কারণে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হচ্ছে নানা টানাপড়েন। পাল্টে যাওয়া এই জীবনযাত্রা ও সামাজিক চালচিত্রের অন্যতম রূপকার হলেন তরুণ ও প্রতিভাবান লেখক দর্পণ কবীর। ঢাকার নাগরিক জীবনের অনেক কাহিনীর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি। ঘটনার ধারাক্রম উপলব্ধি করেছেন সন্ধানী দৃষ্টি দিয়ে। প্রবাস জীবন বেছে নেয়ার পর তিনি বিনি সূতোয় মালা গাঁথার মতো করে একের পর এক বুনে চলেছেন ফেলে যাওয়া নাগরিক জীবনের সেই আখ্যান। 'বসন্ত পথিক'-এর কাহিনী গড়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের নানা দোলাচলকে ঘিরে। মৃদুল রায়হানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে কাহিনীর বিন্যাস। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বিন্দু, মলি, তিথি, শারমীন, আফজাল, মাহবুব, নাজমা, নীতা, সুমি, অপু, রাসেল, রাশেদ, শাহেদরা। এই মানুষগুলোর আবেগ- উচ্ছ্বাস, প্রেম, বিরহ, ভালবাসা, যন্ত্রণা, বৈষম্যগুলো নিপুণ কারিগরের মতো তুলে ধরেছেন দর্পণ কবীর। দর্পণের কলমে প্রতিবিম্বিত হয় অন্যরকম এক জীবনবোধ। রোমান্টিক এই লেখক ভালবাসার চিরায়ত মূল্যবোধে আস্থা রাখলেও তার বলার ভঙ্গিটি একদমই অন্যরকম। শব্দের বুনন চমৎকার। নির্মেদ ও ঝরঝরে ভাষা। একটা কাব্যিক মেজাজ পাওয়া। শুরু থেকেই পাঠককে অনায়াসে টেনে নিতে পারেন।
উভয় বাংলার জনপ্রিয় লেখক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রনির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখকের সহপাঠী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে। হুমায়ূন আহমেদ হঠাৎ করেই অসময়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর সামনে ছিল অমিত সম্ভাবনা। তিনি বেঁচে থাকলে বাংলা সাহিত্য আরও সমৃদ্ধ হতো। এই বহুমুখী প্রতিভাবান লেখককে খুব কাছ থেকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল লেখকের। তাঁর চারিত্রিক গুণাবলি দেখেছে নিবিড়ভাবে। তাঁর সঙ্গে লেখকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা অনেকের অজানা। হুমায়ূন আহমেদের রহস্যময় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পাঠকদের জন্য লিপিবদ্ধ এ গ্রন্থ যা তাঁর অসমাপ্ত জীবনকে পরিপূর্ণভাবে পাঠকদের কাছে উন্মোচিত করবে। এক অচেনা হুমায়ুন আহমেদ সমন্ধে তার বন্ধুর বয়ান ।
যেহীন আহমদ স্মরণে স্বরণিকাটি হচ্ছে এক সাধারণ মানুষের অসাধারণ গুণাবলিকে সংক্ষিপ্তভাবে ধরে রাখার এক ক্ষুদ্র প্রয়াস। যেহীন আমাদের বন্ধু এবং এক আদর্শের প্রতীক। জীবনকে অতি সহজসরলভাবে পরিচালনা করে নিজ অসাধারণ কর্ম প্রেরণা দিয়ে সর্বস্ব ত্যাগ করে উপেক্ষিত গরিব জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করা ছিল তাঁর প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা। মৃদুভাষী একজন অসাধারণ জ্ঞানী ব্যক্তি দীর্ঘ দিন সমাজসেবামূলক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এফআইভিডিপি'র প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে দীর্ঘ ৩০ বৎসর বিশেষ করে সিলেটের মানুষের দুঃখ-কষ্টে নিজেকে সামিল করে তাদের উন্নতিকল্পে তাঁর অবদান অপরিসীম। পারিবারিক সূত্রে শিক্ষা নিয়ে কাজ করা, গবেষণা ছিল তাঁর একটি আকর্ষণ। যেহীনের কাছে ছিল কবিতা ও সংগীতের এক অফুরন্ত ভান্ডার। ছাত্র থাকা সময়েও যেহীন আমাদেরকে তাঁর পরশে আলোকিত করেছে। ক্লাসিক্যাল মিউজিক, গজল, ভজন ছিল তাঁর দৈনন্দিন কর্মতৎপরতার এক চালিকাশক্তি। কর্মজীবন, তাঁর নিজ সংগঠন, সহকর্মী ও বন্ধু বান্ধবরাই ছিল তাঁর সংসার। যেহীনের নিজ পরিবার গঠনে ছিল সম্পূর্ণ অনীহা। তিনি তাঁর জীবনের সমস্ত কর্মক্ষমতা ও সময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছিলেন। গরিব মানুষের কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য "কিডনি ফাউন্ডেশন সিলেট" স্থাপনায় তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তার সাহায্য সহযোগিতায় এই প্রতিষ্ঠান আজ দৃশ্যমান এবং অগ্রসরগামী। যেহীন আহমদ স্মরণে এই স্বরণিকাটি যেহীনকে আমাদের স্মৃতিতে ধরে রাখবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। সম্পাদনা পরিষদ
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বিভাস রচিত হয়েছে ৫৬টি কবিতা দিয়ে। কবিতাগুলোতে বিধৃত হয়েছে বাংলাদেশের প্রকৃতি, ঋতুচক্র, এই জনপদের মানুষের জীবন-যুদ্ধ, ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম, স্বাধীনতা-উত্তর সময়কালের আর্থ-সামজিক অবস্থা, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ। কবি কাজী জহিরুল ইসলামের এ-যাবৎ প্রকাশিত গ্রন্থগুলো থেকে ৫৬টি বাংলাদেশ বিষয়ক কবিতা বেছে নেবার ঘটনাটি কাকতালীয় বা দৈব নয়, এটি প্রায় পরিকল্পিতই। ২০২৩ এর ফেব্রুয়ারিতে যখন পালিত হচ্ছে কবির ৫৬ তম জন্মদিন তখন তারই রচিত ৫৬টি দেশপ্রেমের কবিতা-সংকলনের চেয়ে বড়ো উপহার আর কী হতে পারে? এনআরবি-স্কলারস পাবলিশার্স প্রতিনিধিত্ব করে দেশের বাইরে বসবাসরত বাঙালি লেখকদের। তাদের পক্ষ থেকে কবির জন্য এই উপহার। সততা, মানবতা, দেশপ্রেম এবং নান্দনিকতা এই চার স্তম্ভের ওপর নির্মিত কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতার উজ্জ্বল প্রাসাদ। “ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল” সেই প্রাসাদেরই একটি সার্থক রেপ্লিকা।
এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে বিচিত্র বিষয়ে লেখকের উপলব্ধ অভিজ্ঞতা। তাঁর প্রজ্ঞা ও মনীষা সে অভিজ্ঞতাকে ঋদ্ধ করেছে জ্ঞান, তথ্য ও তত্ত্বে। গদ্যকার নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক থেকে তন্ময় ও মন্ময়ধর্মী প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন। যার মধ্যে লেখক-মানস অনুপস্থিত থাকেনি। এখানে সমকালের সঙ্গে অতীত অর্চনাও করেছেন তিনি। ফলে মুক্তগদ্যের এই পরম্পরায় পাঠক আত্মবোধে সঞ্চালিত হবে-এমন প্রত্যাশা অসংগত নয়।
মহান ভাষা আন্দোলনের উত্তাল মিছিলে নিজে আহত হয়েও অমর শহিদ আবুল বরকতের লাশ দেখতে গিয়েছিলেন ঢাকা কলেজের তরুণ ছাত্র আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। আর সেই লাশ দেখেই আবেগ-তাড়িত হয়ে লিখেছিলেন একটি কবিতা, পরের বছরই প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ ভাষা-সৈনিক আবদুল লতিফ তার সেই কবিতা সুরারোপ করে একটি সংগীতানুষ্ঠানে গেয়েছিলেন। সেই গানে পরে মুক্তিযুদ্ধে অমর শহিদ, সংগীতজ্ঞ আলতাফ মাহমুদও সুরারোপ করেন। এই গান দেশের সীমানা ডিঙিয়েছে অনেক আগেই, যেখানে বাঙালি সেখানেই এই গান : 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি।' জনপ্রিয় কথাশিল্পী আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত কলামিস্ট। ভাষা-সৈনিক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও শব্দ- সৈনিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী কবিতা রচনায় ইতি টানেননি কখনোই। বর্ণাঢ্য জীবনের আবেগ-অনুভূতি এবং স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের কথাটিও রাষ্ট্র করেছেন কবিতায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য 'সময়ের ঘড়ি' তাঁর প্রথম কবিতার বই।
"Born in Bengal" is a chronology of events from 1950 to 1970-the period that molded our desire and feeling in a movement for free- dom. As the author himself says "I was born and raised at the crossroads of Bangladesh history" he has, as a conscientious son of the soil, has very closely witnessed the events and times he individually came across. And these are the stuff that have woven the fabric of our history. This is the tale of our growing self-awareness, our increasing patriotism, our heightening sense of self-sacrifice. With all this addition our movement for freedom ultimately culminated in a struggle for liberation. "Born in Bengal" being an intimate personal account of events I hope the esteemed reader would find it interesting to take an easy passage through the history of realizing our nationhood.