"আমাদের পাখির রাজ্য" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ
‘আমাদের পাখির রাজ্য’ বইটি মূলত দেশের কিশাের ও নবীনদের জন্য।
এতে আছে পাখি সম্পর্কে সাধারণ ধারনা, পাখির পরিযায়ন এবং দেশের স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখিদের বিষয়ে তথ্য।
বিভিন্ন দেশি-বিদেশি টিভি চ্যানেল বা ইন্টারনেটে ছাত্রছাত্রীরা যেসব তথ্য পায় তার প্রায় সবই ভিনদেশি পােখাপাখালি বিষয়ক।
ফলে, দেশের শিক্ষাঙ্গনে দেশি পাখি বিষয়ক তথ্যের বেশ ঘাটতি আছে।
সেদিক চিন্তা করে লেখক তার তিন যুগের বেশি সময় ধরে দেশের পাখি ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক মাঠগবেষণা এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে বইটি রচনা করেছেন।
বইটি ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ পাঠসহায়ক হবে। বাংলাদেশে সচরাসচর দেখা যায় এমন প্রায় ২০০ ???
প্রজাতির পাখির উপর নানাবিধ তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে যা অনেক স্তরের পাঠ্যসূচির আওতায় আসবে।
তাতে তরুণতরুণীরা সহায়ক পুস্তক হিসেবে এ বইটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি পাখি বিষয়ক প্রাথমিক জ্ঞানার্জনেও সাহায্য করবে।
বইটি প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত। অসংখ্য ছবির সাহায্যে পাখিবিষয়ক পঠন সহজ করা হয়েছে। আর দেশের পাখির সাথে ছবির মাধ্যমেও বেশ একটি পরিচিতি ঘটবে বলে আমরা আশা করছি।
আমরা মনে করি, বড়রাও অনেক তথ্য ব্যবহার করতে ও দেশি পাখি চিনতে এ বইয়ের সহযােগিতা নিতে পারবেন।
মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে অন্য প্রাণীর ওপর প্রভুত্ব বিস্তার করে আসছে। বিভিন্ন পরিবেশে মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন প্রাণীর একধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মানুষের বন্ধুবান্ধব প্রাণীরা। মানুষের কল্যাণে প্রাণীদের অবদান কম নয়। পৃথিবীর স্থলভাগে এবং বিশাল জলরাশিতে ছড়িয়ে আছে হরেক রকমের অমেরুদণ্ডী ও মেরুদণ্ডী প্রাণী। ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় সর্বত্রই প্রাণীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। উভয় পরিবেশে পৃথিবীজুড়ে প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষধিক। মানুষই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুদে প্রাণীদের বুদ্ধি দেখে অবাক হই। স্বাধীনভাবে বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়, আবার নিজেরাই আত্মরক্ষার কৌশলও রপ্ত করে। সকল প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সাথে খাপ খাওয়াবার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। বাসা বানাতে, খাবার সংগ্রহে, শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে যে কায়দা-কানুন তারা অবলম্বন করে তা দেখে মানুষেরও তাক লেগে যাবে। চালাকিতেও খুদে প্রাণীরা তৎপর। শিকারের পেছনে দৌড়ে কিভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় খুদে প্রাণীদের কাছ থেকে তা আমরা জানব। খুদে পাখিরা তাদের শারীরিক কসরত দেখিয়ে আমাদের আনন্দ দেয়।
ছোটদের বিজ্ঞানপিডিয়া' মজার মজার তথ্য, রঙিন চিত্র, মজার মজার গল্প এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় ঠাসা। এসব কিছুই তোমাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আনন্দে ডুবিয়ে রাখবে। বইয়ের ভেতরের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কলাকৌশলে বেশ কিছু কার্টুন চরিত্র বারবার ব্যবহৃত হয়েছে। আনা হয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত বেশ কিছু গল্পের চরিত্রও। আদিম পৃথিবীর ভয়ঙ্কর ডাইনোসর সম্পর্কে জানতে চায় প্রতিটি শিশু। যেমন জানার ইচ্ছে আছে তোমারও। কীভাবে পৃথিবীতে ডাইনোসরের আবির্ভাব হয়েছিল, তাদের চালচলন কেমন ছিল এবং তারা কীভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেল তার সব কাহিনী আছে এই বইটিতে। আশা করি তোমাদের ভালো লাগবে।
"পৃথিবীর কোনো মানুষ কখনো ডাইনোসর নামের প্রাণীটিকে দেখেনি। প্রাগৈতিহাসিক এই প্রাণী সম্পর্কে আমরা যা জানি তার পুরোটাই বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত ডাইনোসরের জীবাশ্মে পরিণত হওয়া ফসিল থেকে। আনুমানিক ২৩০ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর বুকে ডাইনোসরের বিচরণ শুরু, আর ডাইনোসরের সর্বশেষ সদস্যের বিলুপ্তি ঘটেছে আনুমানিক ৬০ মিলিয়ন বছর আগে।
পৃথিবীর বুকে বিশালাকৃতির ডাইনোসরের অনেক প্রজাতিই বন্ধুসুলভ দানব হিসেবে বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত ৩৫০ প্রজাতির ডাইনোসরের কথা বলেছেন। বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, ডাইনোসর খুব একটা চালাক প্রাণী ছিল না। কিন্তু তারপরও তারা বছরের পর বছর পৃথিবীতে টিকে ছিল। সম্ভবত ডাইনোসররা পৃথিবীর ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, অতিরিক্ত ঠাণ্ডাসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেনি। আর সে কারণেই পৃথিবী কাঁপিয়ে বেড়ানো ডাইনোসরদের একসময় বিদায় নিতে হয়েছে।
মানুষের কাছে যুগ যুগ ধরে ডাইনোসর একটি রহস্যময় প্রাণীর নাম। বিজ্ঞানীরা সে রহস্যের সমাধানে হয়তো কোনোদিনই পৌঁছাতে পারবে না। তবুও ডাইনোসর নামটি বোধকরি বর্তমান পৃথিবীর কোনো মানুষেরই অজানা নয়।
পোষা পাখি সম্বন্ধে বিদেশি বইগুলি আজ অবধি শুধু হিমমণ্ডলের (Temparate) আবহাওয়ার ভিত্তিতে পাখির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে কথা বলে এসেছে। লেখক তাঁর দুই যুগাধিক কালের পাখি পোষার অভিজ্ঞতা ও তৎসম্বন্ধীয় পড়াশুনাকে ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করে, গ্রীষ্মমণ্ডলের আবহাওয়ায় পোষাপাখির রক্ষণাবেক্ষণ সম্বন্ধে এক কার্যকরী এবং সময়োপযোগী সচিত্র গাইড বুক উপহার দিয়েছেন। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত এই বিষয়ের উপর লেখা প্রথম বইটি নবীন ও জিজ্ঞাসুদের প্রয়োজন মেটাবে।
আঠার শিশিতে একটা তেলাপোকা পড়েছে। কী করা যায় সেটা নিয়ে ভাবছেন গোপালচন্দ্র। রাজ্যের কীটপতঙ্গ নিয়ে তাঁর কারবার। ঘরে যিনি পোকামাকড় পোষেন, তাঁর ঘরে তেলাপোকার বাড়বাড়ন্ত থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক।বৈজ্ঞানিক গোপালচন্দ্র তেলাপোকাসহ আঠাগুলো ফেলে দিলেন ঘরের এক কোণে। কিছুক্ষণ পরে দেখেন একদল লাল বিষপিঁপড়া ভিড় জমিয়েছে আঠার চারপাশে। গোপালচন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করল ব্যাপারটা। দেখলেন, কয়েকটা পিঁপড়া আঠার ভেতর হাবুডুবু খাচ্ছে।আর কয়েকটা আবার দোনামোনা করছে কী করবে না করবে। বিজ্ঞানী মুচকি হাসলেন পিঁপড়াদের দুর্দশা দেখে। এরপর ভুলে গেলেন তেলাপোকা আর পিঁপড়ার কথা। আধাঘণ্টা পর আবার মনে পড়ল সে কথা।
এ ধরনের ঘটনা কি আমাদের চোখে পড়ে? অথচ সারা বছর চারপাশে পোকামাকড়ের জগতে ঘটে চলেছে বিচিত্র সব ঘটনা। সেসব ঘটনা পাক্কা গবেষকের চোখে সারা জীবন দেখে গেছেন গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য। সেসব কীর্তি কাহিনি লিখে গেছেন তাঁর বিখ্যাত বই বাংলার কীটপতঙ্গতে। বিজন পল্লিতে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন পিঁপড়াদের কীর্তিকলাপ, পোকামাকড়ের লড়াই দেখতে। প্রজাপতির ডিম থেকে কিভাবে শুঁয়াপোকা হয়, সেই শুঁয়াপোকা কিভাবে খেয়ে খেয়ে নধর হয়, তারপর একসময় ঘুমিয়ে পড়ে পরিণত হয় মূককীটে, কিভাবে রেশম পোকা তন্তু বোনে—বনেবাদাড়ে, মাঠে-প্রান্তরে ঘুরে ঘুরে সেসব দেখেছেন গোপালচন্দ্র ভট্টাচার্য।
মানুষ ভিনড়ব অন্যান্য প্রাণীরও আছে ভাষা। তারা ভাব বিনিময় করে নানা উপায়ে। শব্দ করে, নানা অঙ্গভঙ্গি করে। সেসব নিয়েই ওরাও কথা বলে। কিশোরদের জন্য চমৎকার এ বইতে বড়দেরও আছে জানার নানা বিষয়।
"১৯৯৪ সালে যখন দ্বিজেন শর্মার 'গহন কোন বনের ধারে' বই আকারে বেরিয়েছিলো তখন ক্লাস ফোরের ছাত্র আমি। তখনও তিন গোয়েন্দার সন্ধানই পাই নি, দ্বিজেন শর্মার এই বইয়ের সন্ধান পাওয়া তো বাতুলতা। পড়ার গন্ডি তখন কেবল ইত্তেফাকের 'টারজান' কার্টুনে এসে পৌঁছেছে। আরো দুই বছর পরে ক্লাস সিক্সে উঠে সর্বপ্রথম মহস্বল শহরের একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরীতে যাই; 'আউট বই' পড়ার বদঅভ্যাসের গোড়াপত্তন এখান থেকেই। 'গহন কোন বনের ধারে'-এর প্রথম প্রকাশের প্রায় দুই দশক পরে দিন কয়েক আগে যখন বইটি পড়ি, তখন লেখার ঢং দেখে বুঝতে কষ্ট হয় নি এই বই
মূলত আরো বছর তেরো আগেই হাতে পাওয়া উচিত ছিলো। কিশোর-তরুণদের প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে আগ্রহী করার নৈতিক তাড়না থেকেই বইটি প্রকাশ করেছিলেন লেখক। বিজ্ঞানের খটখটে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত লেখক এমন মমত্ব মিশিয়ে স্বকীয় স্টাইলে উপস্থাপন করেছেন যে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। ফলে ঠিক যে বয়েসের উপযোগী করে বইয়ের লেখনী- সে বয়স বহু আগে পেছনে ফেলে বহুদুর পথ চলার পরও বইটি শেষ না করা পর্যন্ত শান্তি পাই নি, যেন এক নিমিষে ফিরে গিয়েছিলাম ফেলে আসা কৈশোরে। মোট তিনটি আলাদা স্বাদের লেখা নিয়ে এ বই। প্রথম লেখা 'সুদূর কোন নদীর পারে'-তে ছোটখাটো একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মোড়কে পৃথিবীতে প্রাণসৃষ্টির আদিপর্ব, বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধি, ওজনস্তরের বিপর্যয়, বিগত শতাব্দীগুলোতে পরিবেশদূষণের তুনলনামূলক মাত্রা, ফুকুয়োকার চাষপদ্ধপদ্ধতি ইত্যাদি চমকপ্রদ বিষয়সমূহ আলোকপাত করা হয়েছে। বইয়ের মূল চরিত্র 'তজব তরফদার' প্রত্যন্ত গ্রামের এক স্কুল শিক্ষক, যিনি প্রকৃতি- পরিবেশ সম্পর্কে বেশ সচেতন। তবে এ গল্পকে 'নির্ভেজাল বিজ্ঞান কল্পকাহিনী' বলতে লেখক নিজেই অনেকটা সন্দিহান; কেননা গল্পে যে 'সুদূর কোন নদীর পারে'র কথা বলা হয়েছে লেখন সেখানে বিচরণ করেছিলেন ১৯৬৫ এর শীতকালে। আর গল্পে এখানে বিচরণ করতে গিয়েই লেখকের সাথে পরিচয় ঘটে অদ্ভুত চরিত্র 'তজব তরফদার'-এর। ... গল্পচ্ছলে কত-শত অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব-তথ্যের সন্ধান পায় আমাদের কিশোর মন!"
"অপরাজিতা ফুলের মত ঝকঝকে নীল আকাশে সাঁই সাঁই ডানা মেলে দিয়ে অবিরাম উড়তে থাকে কত ধরনের পাখি। তাদের পাখসাটে পরিবেশ মুখরিত হয়। সোনালি রোদের আলোতে তাদের পালকগুলো ঝিকিয়ে ওঠে। গাছের শাখায় বসে কিচির মিচির করে তারা বুঝি ঝণ্ডার তোলে। উড়াল দিয়ে কত দূরে চলে যায় পাখিরা। বাতাসে যখন শীতের ছোঁয়া লাগে তখন বহু দূরের পথ পেরিয়ে এদেশে বিল-হাওরে চলে আসে পরিযায়ী পাখিরা । হিমশীতল দেশ থেকে তারা আসে। জলজ উদ্ভিদের মাঝে তাদের অবাধ ওড়াওড়ি।
এমনিভাবে এক নিবিড় রহস্যের ভূবন গড়ে তোলে পাখিরা। আমাদেরকে চারপাশে সে রহস্যের কাঁপন যায় ছড়িয়ে। ভিজে মেঘের দুপুরে সোনালি ডানার চিলের করুণ ডাক শুনে অনেকেই উদাসী হয়।
লোক কবি আকুল হয়ে লেখেন-
’উইড়া যায়বে হংস পঙ্খি
পইরা রয়বে ছায়,
দেশের বন্ধু দেশে যাইব
কে করিবে মায়া।’
দোয়েলের জীবন জানতে আগ্রহী হয় কেউ। জলপায়রাদের ঝাঁক গাঙ পেরিয়ে ধূধূ চরে যায়। এইতো পাখিদের নিবিড় আশ্চর্য, সুন্দর জগত। আর এভাবেই বুঝি পাখিরা আমাদের আয়েসে জানিয়ে দেয় ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা...’
পাখিদের বিচিত্র ভুবনকে আবিষ্কার করতে চেয়েছেন লেখক। পাখিরা যেন তার কাছে তাদের জীবনের রহস্য প্রকাশ করেছে।
লেখক সর্বদা কান পেতে থাকেন পাখিদের ডাক শোনার জন্য । পাখিরা তাকে বেঁচে থাকার আনন্দের আস্বাদ দিয়েছে। ‘পাখিদের নিয়ে’ সেই কথকতায় পূর্ণ।"
জানা-অজানা প্রাণবৈচিত্রে্যর এক সমৃদ্ধ ভান্ডার পার্বত্য চট্টগ্রাম। এর কোনো বিস্তারিত জরিপ আজও হয়নি। লেখক সেই প্রাণবৈচিত্রে্যর সন্ধানে চষে বেড়িয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়শ্রেণি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করেছেন নিবিড় পর্যবেক্ষণ, তুলেছেন বহু ছবি। পেয়েছেন বাংলাদেশের জন্য নতুন অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণীর সন্ধান। আবার চোখের সামনেই প্রাণবৈচিত্রে্যসমৃদ্ধ অনেক প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হতেও দেখেছেন তিনি। দেখেছেন কীভাবে সেখানকার বন্য প্রাণীরা ক্রমে তাদের আশ্রয় হারাচ্ছে। লেখকের সে অভিযানের অভিজ্ঞতা নিয়ে এ বই। প্রকৃতি আর তার মাঝে বাস করা মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য মমতায় সিক্ত রচনাগুলো পাঠককে শখের ভ্রমণের গণ্ডি পেরিয়ে অভিজ্ঞতার এক নতুন জগতে নিয়ে যাবে। সে আগ্রহ ও সচেতনতা দেশের প্রাণবৈচিত্রে্যকে ধ্বংস থেকে রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের জন্য নতুন বেশ কয়েক প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেই দুর্গম অরণ্য-পাহাড়ে লেখকের দুঃসাহসিক অভিযানের কাহিনি নিয়ে এ বই।
গভীর সমুদ্রের নিচে নিকম কালো অন্ধকার। সূর্যের আলো সেখানে পৌছায় না। সেই ঘন অন্ধকারে দেখা যায় আলােজুল মাছদের। এদের বলে দীপক মাছ। সমুদ্রের ২০০ থেকে ৭০০ মিটার গভীরতায় এই ধরনের মাছ দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্রের নিচের নিকক্ষ অন্ধকারের মাঝে বিচিত্র আকৃতির প্রাণীরা ঘুরে বেড়ায়। তাদের একটি। হলাে আলােড়লা মাছ। এদের দেখলে মনে হয় আলাের বাতি জ্বালিয়ে ঘুরছে মাছগুলাে। আলাের মালা যেন ভাসছে। এসব মাছদের চোখের নিচে, পেটের নিচে এবং লেজের কাছে আলাে জ্বলতে দেখা যায়। ঘন অন্ধকারে খাদ্য শিকারের জৈবিক প্রয়ােজনেই তাদের দেহে এমন করে আলাে জ্বলে।
গভীর সমুদ্রের নিচে নিকম কালো অন্ধকার। সূর্যের আলো সেখানে পৌছায় না। সেই ঘন অন্ধকারে দেখা যায় আলােজুল মাছদের। এদের বলে দীপক মাছ। সমুদ্রের ২০০ থেকে ৭০০ মিটার গভীরতায় এই ধরনের মাছ দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্রের নিচের নিকক্ষ অন্ধকারের মাঝে বিচিত্র আকৃতির প্রাণীরা ঘুরে বেড়ায়। তাদের একটি। হলাে আলােড়লা মাছ। এদের দেখলে মনে হয় আলাের বাতি জ্বালিয়ে ঘুরছে মাছগুলাে। আলাের মালা যেন ভাসছে। এসব মাছদের চোখের নিচে, পেটের নিচে এবং লেজের কাছে আলাে জ্বলতে দেখা যায়। ঘন অন্ধকারে খাদ্য শিকারের জৈবিক প্রয়ােজনেই তাদের দেহে এমন করে আলাে জ্বলে।
আমার বাবা ছিলেন একজন নেশাদার পাখি শিকারি। সরকারি চাকরি করতেন তিনি। চাকরিসূত্রে যেখানেই থাকতেন, মূল্যবান বন্দুকটা সেখানেই রাখতেন। মায়ের কাছে শুনেছি আমি, ঘুমের ভেতরও বাবা পাখি শিকার করতেন এবং চিৎকার দিয়ে বিছানায় উঠে বসতেন, 'পাখি পাখি, মানিকজোড়-মদনটাক-গগনবেড় পাখি'। তাঁর ভাগ্যটাও পক্ষে ছিল। সারা জীবন চাক্রি করেছেন সুন্দরবন ঘেষাঁ শরণখোলা, রায়েন্দা, মোরেলগঞ্জ, চালনা (মংলা), দাকোপ, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা), মোল্লাহাট ও ফকিরহাটে। যেখানেই তিনি ছিলেন, সেখানেই জুটিয়ে নিয়েছিলেন শিকারি বন্ধুদের। এমনকী চাক্রির মায়া ত্যাগ করেও শিকারে বেরুতেন তিনি। সুন্দরবনে ঢুকতেন চোরা শিকারি বন্ধুদের সাথে, শিকার করতেন হরিণ, বনমোরগ, সুন্দরী হাঁস, মদনটাক, মানিকজোড় পাখি। বাল্য-কৈশোরে তাঁর সাথে সুন্দরবনে শিকারে যাবার সুযোগ আমার বহুবার হয়েছিল। বাবার বন্দুকটা ছিল ইংল্যান্ডের। বাবার টার্গেটও মিস হতো না সহজে। বন্যপ্রাণী আইন তখনো ছিল, কিন্তু কড়াকড়ি ছিল না মোটেই। সুন্দরবনের নেশাটা তাই আমাকেও পেয়ে বসেছিল ভালভাবে। তাই সুযোগ পেলে এমনকী স্কুল কামাই করেও আমি চলে যেতাম শরণখোলা বা মোরেলগঞ্জে। বাবা হাসতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ চোরা শিকারি বন্ধু (আমার শিকারি কাকা) বুঝে ফেলতেন আমার মতলবটা।
বনফুল রয়েছে আমাদের চোখের সামনে, কিন্তু কাছের এই ফুলগুলো খুব ভালোভাবে দেখা বিশেষ হয়ে ওঠে না। পথের ধারে, মাঠে-প্রান্তরে, বাড়ির আঙিনায় কতোরকম গাছে কতো ধরনের বনফুলই না ফোটে। যত্ন করে কেউ এসবের পরিচর্যা করে না, নিজের শক্তিতেই তাদের জন্ম আর বিকাশ। অথচ আমাদের জীবনে নানা উপকারে আসে এইসব বনফুল। বিশেষ করে বিভিন্ন রোগ উপশমে বনফুলের রয়েছে বহু ধরনের কার্যকারিতা। তাই বনফুল মোটেই অবহেলা করার নয়। বাংলার অজস্র বনফুল থেকে মাত্র চব্বিশটিকে বাছাই করে এখানে একটা স্তবক তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমনি আরো কতক স্তবক ক্রমে ক্রমে কিশোর-কিশোরীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। এই পরিচিতি যদি তাদের মনোযোগী করতে পারে বনফুলের প্রতি, যত্ন নিতে শেখায় বনফুলের এবং সর্বোপরি প্রকৃতির প্রতি দরদ ও ভালোবাসায় মন ভরিয়ে তুলতে পারে তবেই সার্থক হবে লেখকের পরিশ্রম। তাই আমরা আশা করবো আরো গভীরভাবে কিশোর- কিশোরীরা তাকাবে বনফুলের দিকে, জানতে চাইবে এর পরিচয় আর বৈশিষ্ট্য, দেখবে এর গড়ন আর বাহার। তাহলেই তো বুঝতে পারবে প্রকৃতি আমাদের কতো পরম বন্ধু, আর কতোই-না আনন্দ ও শিক্ষা মেলে ধরেছে আমাদের সবার জন্য। বনফুল বিষয়ে বাংলায় অনন্য এই বইয়ের ছবি ও লেখা সাজিয়েছেন নওয়াজেশ আহমদ, নিজে যিনি প্রকৃতি-বিজ্ঞানী ও নিসর্গপ্রেমী এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রগ্রাহক। এমন বইয়ের তুলনা আর কোথায় মিলবে।"
"এই সুন্দর পৃথিবীতে নানান রঙের প্রায় ৩৯৩ প্রজাতির টিয়া পাখির বসবাস। তন্মধ্যে হলুদ, নীল, সাদা, বেগুনী ও জলপাই রঙের টিয়া পাখি বাসা-বাড়িতে পোষা পাখি হিসেবে লালিত-পালিত হয়। বুদ্ধিমান এই টিয়া পাখি বছরের পর বছর ধরে ভ্রাম্যমাণ ক্রীড়া-প্রদর্শনীতে (circuses) তাদের সক্রিয় সঙ (active antics), নৈপুণ্যপূর্ণ খেলাধূলা ও নিপুণ কৌশল দেখিয়ে এবং মানুষের স্বরকে নকলকরত বিচক্ষণ কথাবার্তা বলে আমাদেরকে নিয়ত আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে ইতোমধ্যে অনেকেই সখের পাশাপাশি ব্যবসা হিসেবে এভিয়ারী (aviary) শিল্পকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো বাজারে বাংলা ভাষায় এ সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য বই নাই বলা না গেলেও আছে বলাও মুশকিল। এহেন অভাবে ক্লিষ্ট পোষাপাখিপ্রেমী ও খামারীদের কথা বিবেচনায় রেখে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনারেল এনিম্যাল সাইন্স এন্ড এনিম্যাল নিউট্রিশন বিভাগের প্রফেসর ডঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির সচিত্র তেরটি অধ্যায়ে বাহারি টিয়া পাখি পালন বইটিতে টিয়া পাখির বাসস্হান ও ব্যবস্থাপনা, খাদ্য খাওয়ানো কর্মসূচি, প্রাত্যহিক যত্নাদি, টিয়া পাখি প্রজননের মৌলিক বিষয়াদি, টিয়া পাখিকে পোষ মানানো ও প্রশিক্ষণ দেয়া, ঋতুভিত্তিক টিয়া পাখির ব্যবস্থাপনা, টিয়া পাখির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (রোগ-ব্যাধি) ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, খামারী এবং সাধারণ শিক্ষাসম্পন্ন যেকোনো মানুষই বইটি পড়ে উপকৃত হবেন বলে আমি মনে করি। সবাইকে বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি ।
সবার জন্য শুভ কামনা।"