সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের ‘ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজম’ শীর্ষক এক গবেষণাতে বলা হয়, ১৮-২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ২৮ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে সংবাদের মূল উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। পাশাপাশি ২৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী সংবাদের জন্য টেলিভিশনের বিকল্প হিসেবে সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যম ব্যবহার করেন। শুধুই তরুণ প্রজন্মের কাছেই সংবাদ উৎস হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি— ৫১পার্সেন্ট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই সংবাদ উৎস হিসেবে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। বিশ্বের ২৬টি দেশের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের ওপর চালানো জরিপের ফলাফলে বলা হয়, বৈশ্বিকভাবে সংবাদ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর দ্বিতীয় ধাপের একটি ভাঙন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিষয়টি ভবিষ্যৎ নিউজ প্রোডাকশন ও প্রকাশক উভয়ের জন্যই সম্ভাব্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এ কারণে অনেক পুরনো গণমাধ্যমও এখন অনলাইনের দিকে ঝুঁকছে। অনেকেই প্রিন্ট সংস্করণের পাশাপাশি অনলাইন সংস্করণ চালু করতে বাধ্য হচ্ছে। ‘গণমাধ্যম: সনাতন ও নতুনের জয় পরাজয়’ গ্রন্থে লেখক অত্যন্ত প্রাঞ্জলভাষায় দুটি ধারার গণমাধ্যমের গতিপথ বিশ্লেষণ করেছেন।
বিশ শতকের (গত শতকের নব্বইয়ের দশক ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের বা বিক্ষু এক পরিবেশ। রাজনীতির এ ভাবটা আমরা গণমাধ্যমেও দেখতে পাই। দেশের গণমাধ্যম দীর্ঘ সামরিক শাসনের রোষানলে পরে তখন অনেকটা নির্বীর্ষ এ সময় ফিরে আসে গণতন্ত্র, কিন্তু দেখা গেল 'গণমাধ্যম' নামক পাখিটি এখন আর উড়তে পারছে না। গণমাধ্যমে তখন নানা উত্থান-পতন ঘটছিল। পুনর্গঠন কাজ চলছিল নানা সংবাদ মাধ্যমে। নতুন নতুন বার উন্মোচিত হচ্ছিল গণমাধ্যমের জন্য। কিন্তু রাজনৈতিক বেড়াজালকে গণমাধ্যম এড়িয়ে যেতে পারেনি, বরং নানারকম মতাদর্শে বিভক্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশের গণমাধ্যম। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের অস্থির এ চিত্রের দলিল ড. মোহাম্মদ হাননানের বাংলাদেশের গণমাধ্যম: ১৯৯০-১৯৯৯ গ্রন্থখানি। এ গ্রন্থে একই সঙ্গে স্থান পেয়েছে সারা সমসাময়িক গণমাধ্যম চিত্র। এ সময় পশ্চিমা গণমাধ্যমের মিথ্যাচার ও অসততার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এশিয়ার রাজনৈতিক নেতারা। রয়টারের মতো সংবাদসংস্থার সাংবাদিকদের গোয়েন্দা বিভাগের চর হিসেবে কাজ করার বিষয়টি ফাঁস হয় এ সময়তেই। বিবিসি ভোয়া প্রভৃতি পশ্চিমা গণমাধ্যম অভিযুক্ত হয় খণ্ডিত চরিত্রের পরিবেশনার জন্য। ড. হাননান বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে বুঝতে এসব বিষয়কেও তাঁর গ্রন্থে আধেয় হিসেবে ব্যবহার করেছেন।