চারজন মানুষ মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছে। একমুখী যাত্রা। যাওয়া যাবে কিন্তু ফেরা যাবে না। সেই দলে রয়েছে একজন বাংলাদেশি নারী, নাম সাবিনা আক্তার শিমু। মঙ্গলে অক্সিজেন নেই, পানি পাওয়া কঠিন, তেজস্ক্রিয় রশ্মির ভয় আছে। গাছপালা নেই। বৃষ্টি নেই। যাত্রাপথও সহজ নয়। ২৭০ দিন লাগবে শুধু যেতেই। সেখানে গিয়ে এই অভিযাত্রীরা থাকবে, এরপর ২৬ মাস পরে যাবে আরও চারজন। এভাবে মঙ্গলে গড়ে উঠবে মানববসতি। এক হাজার বছর পর মঙ্গল হয়ে উঠবে সুজলা-সুফলা। সাবিনা আক্তার শিমু মঙ্গলে যাত্রার আগে ঢাকায় এসে দেখা করল মা-বাবার সঙ্গে। 'ফিরে গিয়ে তারা রওনা হলাে ‘মার্স হােপ ১ নামের নভােযানে। বিপৎসংকুল শ্বাসরুদ্ধকর সেই অভিযাত্রায় অজানা শঙ্কার সঙ্গে আছে প্রেম, ভালােবাসা, হাসি-কান্না, ঈর্ষা-দ্বেষ। প্রিয় পাঠক, সাবিনা আক্তার শিমু ও আরও তিন অভিযাত্রীর সঙ্গে আপনিও চলুন প্রিয় এই পৃথিবী ছেড়ে।
ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের প্রফেসর নিয়াজী গবেষণা করছিলেন সময় পরিভ্রমণ নিয়ে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সময়কে যেভাবে দেখি আমরা, সময় তেমন নয়। সময়ের প্রকৃত রূপ বুঝতে হলে ডাইমেনশনগুলোকে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে হবে। তবে সেটা কি মানব সভ্যতার জন্য ভালো হবে? নাকি আমাদের চেনা-জানা রিয়েলিটিকে বদলে দেবে চিরতরে? ওদিকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র আবীর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রহস্যময় এক ধরনের মানুষের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে। দেখতে অনেকটা মানুষের মতো হলেও তাদের মাথা অস্বাভাবিক রকমের বড়। ক্যাম্পাসের পাহাড়ে, ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে তারা। বের হয় অন্ধকার নামলে। এই প্রাণীগুলো আসলে কী? কোথা থেকে এসেছে? কেন এসেছে?
তানজিরুল ইসলামের জন্ম লালমনিরহাট জেলায়। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন। তিনি শৈশব থেকে লেখালেখির প্রতি আগ্রহ। ধূলার-সাহিত্যের প্রতি রয়েছে আলাদা ঝোঁক। অনুভূতিহীন’ নামক তার একটি সাই-ফাই গল্প প্রথম প্রকাশিত হয় কলেজ-ম্যাগাজিনে। এরপর বাতিঘর প্রকাশনীর থুলার গল্পসঙ্কলন-৪ ছাড়াও ‘গল্পের আসর’ এবং ‘বিসর্গ’সহ কিছু সঙ্কলনে তার বেশ কয়েকটি মৌলিক গল্প প্রকাশিত হয়েছে। মার্কিন থৃলার লেখক হারলান কোবেনের টেল নাে ওয়ান তার প্রথম অনুবাদ গ্রন্থ। 'প্রজাপতি বসে আছে মাত্রায় তার প্রথম মৌলিক সায়েন্সফিকশন উপন্যাস।
ভেবে দেখুন, বাংলাদেশের প্রথম নভােচারি আপনি, উৎসাহে টগবগ করছেন আর কদিন পরেই রকেটে চড়ে বসার জন্য। কিন্তু ঠিক এই সময়েই আবিষ্কার করলেন একটা খুনের দায়ে ফাঁসানাে হচ্ছে আপনাকে, স্পেস স্টেশনের বদলে হয়তাে যেতে হবে জেলে। লাশ গুম করবেন কিভাবে? আর স্পেস স্টেশনে যেতে পারলেও শান্তি নেই—আপনি জানেন না আমেরিকান এবং রাশিয়ান নভােচারিরা কি গােপন মিশন নিয়ে এসেছে, তারা মহাকাশেই একে অন্যকে মারার জন্য উঠেপড়ে লাগবে কিনা। অভিনব কোনাে বিধ্বংসী মারণাস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে কি তারা? কেনই বা আপনার এক সহকর্মী উদ্ভট আচরণ করতে শুরু করলাে? মহাকাশ থেকে আসা রহস্যময় কোনাে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে কি? বিভং কাকে বলে? এদিকে, যে মহাশক্তিধর অশুভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের হাত থেকে কয়েক দিন আগেই মুক্তি পেয়েছে মানুষ, সে আবার ফেরার চেষ্টা করছে না তাে? পৃথিবীব্যাপী তার সমর্থকরা কিসের আশায় বিশৃঙ্খলা চালাচ্ছে? সবচেয়ে বড় কথা, সবকিছু বিগড়ে গেলে কিভাবে নিজেকে বাঁচিয়ে পৃথিবীতে ফিরবেন আপনি? সুপারন্যাচারাল-থলার শ্বাপদ সনে দিয়ে শুরু, তারপর স্পাইথুলার বাজিকর আর বাজি দিয়ে পাঠকপ্রিয় লেখক নাবিল মুহতাসিম এবার টান টান উত্তেজনার সায়েন্সফিকশন-থৃলার বিভং নিয়ে হাজির পাঠকের সামনে।
শাফায়েত জেনেটিক্সের ছাত্র। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। এমন সময় তার সামনে এলাে অনাকাঙ্খিত এক সুযােগ। কিন্তু সে কি ধারণা করেছিল সুযােগটার সাথে জড়িয়ে থাকবে তার জীবনের ভয়াবহ এক অধ্যায়?। ড. নাওয়াজ রহমান বিশ্বখ্যাত এক জীববিজ্ঞানী। খ্যাতি আর প্রতিপত্তির নেশায় সে কি বিসর্জন দিয়েছে নিজের মূল্যবােধ? তার মতাে একজন সম্মানীত বিজ্ঞানী কি নামতে পারে এতটা নিচে?। মােহাম্মদপুরের এক কবরস্থানের কাছ থেকে অপহৃত হলাে এক পথশিশু। কেন? কী পরিণতি তার? গভীর রাতে গােরস্থানে সদ্যমৃত কিশােরির লাশ তুলতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লো ‘খুচরা আফসার। পুলিশ তার কাছে যা শুনলাে, তা শুনে যারপরনাই বিস্মিত। কী করবে তারা। এখন? সাবের বুকের ভেতরে বয়ে বেড়ায় বিষন্নতার সমুদ্র। কিন্তু কেন? ঘটনাক্রমে শাফায়েত পড়ে যায় ভয়াবহ বিপদে। কী করে পরিত্রাণ মিলবে ওর? প্রজাপতি বসে আছে মাত্রায়-এর পর তানজিরুল ইসলাম এবার হাজির হয়েছেন টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এক সায়েন্স-ফ্যান্টাসি উপন্যাসিকা নিয়ে।
বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডক্টর কিজিলকে হয়তাে আপনারা কেউ কেউ চিনে থাকবেন, লােকটার বিচিত্র আবিষ্কারের নেশা আর উদ্যোক্তা হিসেবে অদ্ভুত সব কাণ্ডে নিজের। এবং অন্যদের জন্য বিপদ আর উটকো ঝামেলা বয়ে নিয়ে আসেন প্রায়ই। তেমন। কয়েকটি রােমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চারময় ঘটনা এ বইয়ে বর্ণনার দায়িত্ব নিয়েছেন তার । সহকারী হাসান। এছাড়াও বইয়ে যুক্ত হয়েছে হাফ ডজনের বেশি নানা আমেজের বৈজ্ঞানিক কল্পগল্প; তার কোন কোনােটি গম্ভীর বা ডিস্টোপিয়ান, কোনটা একদমই হালকা মেজাজের। ভেন্ট্রিলােকুইস্ট এবং মিনিমালিস্ট-এর পর বাতিঘর প্রকাশনী। থেকে মাশুদুল হকের এই বৈজ্ঞানিক কল্পগল্পের জগতে আপনাদের আমন্ত্রণ।
সর্বমোট মৃতের সংখ্যা প্রায় এক কোটি তিন লক্ষ একুশ হাজার। ভবিষ্যত প্রজন্মের এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন উপস্থিত বিজ্ঞানীরা। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে প্রফেসর আকিরা নাকামুরা খুব সন্তর্পণে সামনে রাখা ভার্চুয়াল ফাইলটি গুটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট পদক্ষেপে দরজার দিকে এগিয়ে যান। হতবাক প্রেসিডেন্ট মৃদুস্বরে বলেন, “মিস্টার নাকামুরা, চলে যাচ্ছেন?” দাঁড়িয়ে পেছনে না তাকিয়েই প্রফেসর নাকামুরা বলেন, “আমি সুস্মিতা ব্যানার্জির থিওরি মেনে নিয়েছি। মানুষ তার জ্ঞানের প্রান্তিক সীমায় পৌঁছে গেছে। এর চেয়ে বেশি জ্ঞান অর্জন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়; আর জ্ঞানের প্রান্তিক সীমার কাছাকাছি পৌঁছে মানুষ আত্ম-ধ্বংসে মত্ত হয়ে উঠে। প্রজেক্ট ব্যর্থ হয়েছে।” এতটুকু বলে কিছুক্ষণ দম নেন। তারপর স্পষ্ট করে প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদা করে উচ্চারণ করে বলেন, “মানুষ প্রকৃতি-বিরোধী সৃষ্টি। তার ধ্বংসই প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ।”
আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে অদ্ভুত কিছু উল্কা । শখের জ্যোতির্বিদ নামিরা বুঝতে পারে এগুলো মোটেই সাধারণ উল্কা নয় । ওদিকে মিশরে নানারকম গুজব ছড়িয়ে পড়েছে । জনমনে আতঙ্ক । ফারাওদের অভিশাপের মতো কিছু কি আসছে? প্রলয়কালের পূর্বাভাস দেওয়ার যন্ত্রটাও খারাপ কিছুর সংকেত দিচ্ছে। তারপর? ভয়াবহ সংঘাতের মুখে পড়ল পৃথিবী ।
দুর্ঘটনাক্রমেই গত শতাব্দীর মাঝামাঝি দুই মার্কিন বিজ্ঞানী পেনজিয়াস ও উইলসন আবিষ্কার করেন কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন। একে বলা হয় মহাবিশ্বের প্রথম আলো। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ। এই আবিষ্কার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে কসমোলজির। এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে সেই আবিষ্কার এবং এর সঙ্গে জড়িত একদল বিজ্ঞানীর আপ্রাণ প্রয়াসের প্রায় অনুপুঙ্খ বিবরণ। বস্ত্তত, বহু যুগ ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা আবিষ্কার এবং সেই সঙ্গে আমাদের মহাবিশ্বেরও বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে এ বইয়ে। মহাবিশ্বের রহস্য উদ্ঘাটন করতে চাওয়া অদম্য একদল বিজ্ঞানীর গভীর অনুসন্ধানের কাহিনিও বলা চলে এ বইকে।
এখন তো সবাই টাইম মেশিনে মহাবিশ্ব ঘুরে বেড়াতে চায়। আবার এটাও জানতে চায়, বর্ষায় বাজ থেকে বাচার উপায় কী। জেমসওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো মহাবিশ্বের সাম্প্রতিক সাড়া জাগানো ছবি গুলো আমাদের নিয়ে গেছে বিগব্যাংয়ের আরও কাছে। বিজ্ঞানের সবকিছু জানা বোঝার আগ্রহ এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। সে জন্যই বইটি সবার হাতে হাতে থাকতে পারে।
তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের লেখা আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম সর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞান বই। বইটি লাখো কপি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ পাঠকই তার গবেষণা বা আবিষ্কার সম্পর্কে পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি। এ বই মহাবিশ্ব, মহাবিস্ফোরণ ও কৃষ্ণগহব্বর সম্পর্কে তার মৌলিক গবষণার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।
একদিন সকালে আমজাদ আলী নামের সাধারণ এক দোকানের ম্যানেজার আবিষ্কার করে তার হাতের লেখা, টিপসই, এমনকি রক্তের গ্রুপ পর্যন্ত পাল্টে গেছে। হাওরের জেলে হাসন মিয়ার জালে উঠে আসতে থাকে বিরল প্রজাতির সব মাছ। ওদিকে বাংলাদেশের প্রাণিবিজ্ঞানী নিকিতা গবেষণার কাজে ইন্দোনেশিয়া গিয়ে ভয়ানক বিপদে পড়ে। ভয়ংকর অগ্ন্যুত্পাতের কবল থেকে কিনাবালু পর্বতের আদিবাসীদের সুরক্ষা দেয় প্রকৃতি। এসব রহস্য ও তার শিহরণ জাগানো ব্যাখ্যা নিয়ে বিজ্ঞান কল্পগল্পের এ বই।
প্রলয় একজন ফেরারী আসামী। সে কখনও কারো সাথে প্রতারণা করেনি, এছাড়া এমন কোনো অপরাধ নেই যেটি সে করেনি। সে ধরা পড়বে কখনও ভাবেনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে। দুর্ভেদ্য কারাগারে তার বাকী জীবন কাটাতে হবে — অন্তত সেটাই সবাই ভেবেছিল। কিন্তু প্রলয়ের মস্তিষ্ক অবিশ্বাস্য ক্ষুরধার। কারাগারের চার দেওয়ালের মাঝখানে সে কী আসলেই বাকী জীবন কাটিয়ে দেবে? কাটানো উচিৎ?
মৃতপ্রায় পৃথিবী। চাঁদ ততদিনে গ্রহটি থেকে আরো অনেক দূরে চলে গেছে। জলভাগে বিশাল পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ প্রতিকূল। আগে থেকেই পৃথিবী ছেড়ে এ্যান্ড্রোমিডার দূর গ্রহগুলোতে রিকান কিংবা রায়নার মতো পাড়ি জমিয়ে ফেলেছে অনেকে। বাকি যারা, তারা পৃথিবীতে পড়ে থাকে একরকম ভাগ্যহত হয়ে। এমন প্রায় পরিত্যক্ত এক পৃথিবী আর তার সূর্যের দিকে দৃষ্টি পড়ে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির। পৃথিবীকে সত্তাটি নিজের আবাস বানাবে আর সূর্যের চারপাশে ডাইসন স্ফিয়ার তৈরি করে মেটাবে নিজের জ্বালানী চাহিদা। নিজেদের শেষ সম্বল একটি রকেট নিয়ে এই অসম্ভব ক্ষমতাধর সত্তাটিকে থামাতে অভিযান শুরু করে পৃথিবীর চারজন আনকোরা তরুণ তরুণী – নোরা, কিরা গ্রুস আর ক্রিক। সাথে থাকে একেবারেই অদক্ষ একজন পাইলট— উরু। ব্যর্থ হবার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে এগোতে থাকা দলটি একটা সময়ে গিয়ে মেশে রিকান আর রায়নার ঘটনাপ্রবাহে। বুদ্ধিমান রিকান আর দুঃসাহসী রায়না ততদিনে নাম লিখিয়েছে আন্তঃনাক্ষত্রিক চুরি-ডাকাতির খাতায়। দলটি বুঝতে পারে যে পৃথিবীর দিকে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির শুরু করা ধ্বংসযাত্রা থামাতে রিকান আর রায়নাকে তাদের অনেক বেশি প্রয়োজন ।তারা সবাই মিলে কি শেষমেশ পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবে?
বহুকাল আগে পৃথিবী আর গ্রহগুলো সূর্যের অংশ ছিল। সূর্য ছিল জলন্ত অগ্নিকুণ্ড আর প্রচণ্ড গরম। একদিন গ্রহগুলো সূর্য থেকে ছিটকে ছোটো ছোটো টুকরো হয়ে আকাশে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু ছিটকে পড়া টুকরোগুলো পরস্পরকে ছেড়ে গেল না। এরা সূর্যের চারপাশে ঘুরে বেড়াতে থাকল। পৃথিবী তখন ছিল আগুনের ফুলকির মতো। উত্তপ্ত সূর্য ঠান্ডা হতে শুরু করল। তখন পৃথিবীও শীতল হতে থাকল। সূর্যের চেয়ে পৃথিবী ছোটো। তাই তার ঠান্ডা হতে সময় কম লাগল। ধীরে ধীরে পৃথিবী যথেষ্ট ঠান্ডা হয়ে গেল। যখন পৃথিবী অনেক বেশি ঠা ্ডা হয়ে এলো, বাতাসের জলীয়বাষ্প তখন পানিতে রূপান্তরিত হলো। তারপর বৃষ্টি এলো। একটানা দীর্ঘসময় বৃষ্টি হলো। একসময় পৃথিবী আরও বেশি ঠান্ডা হলো। ঠান্ডা হতে হতে পৃথিবী হিমশীতল হয়ে গেল। পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে পরম শূন্যের কাছাকাছি চলে এলো। একসময় পৃথিবীর তাপমাত্রা স্থায়ী হয়ে গেল হিমাঙ্কের নিচে।
বিজ্ঞানকে সামগ্রিকভাবে যতই দেখেছি ততই একে একটি ব্যতিক্রমী মহাকাব্যের মত মনে হয়েছে। বিজ্ঞানের সঙ্গে কাব্যের মিলটি খুঁজে পাই উভয়টিতেই কল্পনার ও সৃষ্টিশীলতার গুরুত্ব থাকার মধ্যে- যদিও উদ্দেশ্য আলাদা। বিজ্ঞানের নানা তত্ত্বের উদাহরণে আমরা দেখবো বিজ্ঞান কেন মহাকাব্যিক। মহাকাব্যের পরিধি বড়,তার সবকিছুই বড় বড় মানুষ,বড় নীতি,বড় সাধনা বড় যুদ্ধ,বড় হতাশা,বড় ট্র্যাজেডি। নানা খণ্ডে এলেও বিজ্ঞানও আসলে একটানা একটিই কাহিনী,যার শেষ নেই। এক প্রান্তে ক্ষুদ্রতম মৌলিক কণিকা ও অন্য প্রান্তে সর্ব-সমষ্টি প্রসারমান বৃহৎ মহাবিশ্বকে নিয়ে পরম বাস্তবতার এই কাহিনী,যার সবকিছুর সঙ্গে সবকিছু সাযুজ্যপূর্ণ হতে হয়। বিজ্ঞানীর ভাবনায় তৈরি তত্ত্ব আর বাস্তবের কষ্টিপাথরে পরীক্ষা- এই দুইয়ের যুগলবন্দীতে ক্রমান্বয়ে চলে বিজ্ঞানের সঙ্গীত,যা প্রকৃতির চরম জটিলতার মধ্য থেকে সরল ও সুন্দর নিয়ম নিংড়ে আনতে পারে । বৈজ্ঞানিক কল্পনায় সৃষ্ট কণিকা,তরঙ্গ,চার্জ ইত্যাদির মত একই অদৃশ্য জিনিস যখন এক চাবিতে শত দরজা খোলার মত প্রকৃতির সব দিকের দৃশ্যমান বাস্তবের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে তখন সেই কল্পিত চাবিকেও বাস্তব বই অন্যকিছু ভাবার সুযোগ রাখেনা। সেই সঙ্গে এই মহাকাব্য জীবনকে সচ্ছন্দ করার জন্য নিত্য নতুন প্রযুক্তিরও সৃষ্টি করছে। এই মহাকাব্যের লেখক-পাঠকদের নিয়ে বিশ্ব-বিজ্ঞান-সমাজই পারে সেই প্রযুক্তিকে কল্যাণকর রাখতে।
কালের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে নিজের বোধ-বুদ্ধির সম্পর্ক স্থাপন করতে পারলে প্রতিটি শিশুই তার নিজেকে নতুন করে চিনতে শুরু করে এবং তার নিজের বিকাশের দিগন্ত তার সামনে একেবারে অনাবৃত হয়ে উঠে। সেরকম কয়েকটি শিশু তার পরিবারের অনান্য সদস্যদের কাছ থেকে কিভাবে প্রতিদিন তার পারিপার্শ্বিক এবং নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে,এই বইটিতে সুচারু রূপে তারই অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। আর তার সাথে কিভাবে আমাদের এই পৃথিবীতে উড়োজাহাজ আবিষ্কার হলো তার বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি এই বইয়ের পাঠক জানতে পারবে কিভাবে কোথা থেকে উড়োজাহাজ আমাদের পৃথিবীতে আবিষ্কার হলো।
মানববিদ্যার প্রধান অলিন্দগুলির সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশেই আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর অধিবাস। এ বিদ্যার স্তরূপে স্বীকৃত হয়ে আছে মানববিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের সামাজিক ভূগোল । আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর আজন্ম সাধনা মানবকল্যাণ। এবং এই কামনার ব্যবহারিক উদ্যান মানুষের জীবন-তিনি এই জীবনের স্বাচ্ছন্দ্যসাধনের লক্ষ্যে এক নিবেদিত হৃদয়। আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর বিচিত্রতর বহুবর্ণ জীবন বয়ে গেছে অসংখ্য স্রোতধারায়, সব স্রোত এক ও অলঙ্ঘ লক্ষ্যের দিকে মানবহিতৈষণা। ভাষা, দেশ, জাতি, শিক্ষা, প্রশাসন কূটনীতি—জীবনের সকলক্ষেত্রেই ছিলেন অক্লান্ত সংশপ্তক, দ্ব্যর্থহীন অধিনায়ক। তিনি আজন্ম বিশ্বাসী একটি শোষণহীন, সমতাভিত্তিক ন্যায়ধর্ম-সমন্বিত মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রাষ্ট্রব্যবস্থায়। পীড়িত জনতার আর্তনাদ, অতএব, তাঁর জীবনজিজ্ঞাসায় বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে-আলোড়ন তুলেছে তাঁর কর্ম ও জীবন-যাপনে। মসৃণ ও বন্ধুর—উভয় জীবনপথেই তিনি ভ্রমণশীল এক অক্লান্ত পথিক; দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী অকুতোভয় আত্মমর্যাদা ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব-বিশ্ববীক্ষা ও সমাজচেতনার ।