বিশ্বের বিখ্যাত যত ভাষণ বিশ্বনেতারা দিয়েছেন, সবই ছিল লিখিত, পূর্ব প্রস্তুতকৃত ভাষণ। আর ৭ই মার্চের ভাষণসহ বঙ্গবন্ধুর সকল ভাষণই ছিল সম্পুর্ন, সতঃস্ফুর্ত, উপস্থিত বক্তৃতা । তাঁর ভাষণ ছিল একজন নেতার দীর্ঘ সংগ্রামের অভিজ্ঞতা ও আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা । একটা যুদ্ধের প্রস্তুতি । যে যুদ্ধ এনে দিয়েছে বিজয়। বিজয়ের রূপরেখা ছিল এসব বক্তৃতায়, সাত কোটি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলো।
নানা ঘাত-প্রতিঘাত, আবেগ-উত্তেজনা পেরিয়ে অবশেষে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু।মেলবন্ধন ঘটিয়েছে পদ্মার দুই পাড়ের।অথচ এই সেতু নির্মানের উদ্যোগ মুখ থুবরে পড়বে,ব্যর্থ হবে সরকার এমন মন্তব্যও ছড়িয়েছিলো।শুধু কি তাই,নির্মানাধীন সময়ে 'মাথা কাটা'সহ নানা গুজবও চলছে। শংকা ছিল,আমাজন নদীর পর দ্বিতীয় খরসস্রোতা নদী পদ্মায় সেতু নির্মানের চ্যালেঞ্জ এর ধরন নিয়েও।তবে সময়ের সাথে সব চ্যালেঞ্জ, গুজব আর ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় শতভাগ সফল বাংলাদেশ। এককালে যে দেশকে বলা হয়েছিলো 'তলাবিহীন ঝুড়ি' সেই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন বিশ্ববাসীর বিস্ময়।বাংলাদেশ সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিল, 'আমরাও পারি' পদ্মা সেতুর স্বপ্ন থেকে বাস্তবতা,পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন নানা বিষয়ের লেখা ও ছবি উঠে এসেছে "আমাদের অর্থে আমাদের পদ্মা সেতু" বইটিতে।
স্বাধীনতার পঞ্ছাশ বছরে বাংলাদেশ এগিয়েছে বহুদূর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তের উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড়াতে পেরেছে । একজন সফল কূটনীতিক হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্মন্ত্রী ড. এ.কে আব্দুল মোমেন গভীর বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এ গ্রন্থে সন্নিবেশিত প্রবন্ধ ও নিবন্ধের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সেই সফলতার গল্পসমুহ। গ্রন্থটি স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে ।
জীবনের শেষ বিকেলে অকস্মাৎ ‘কুড়িয়ে পাওয়া ধন’ আমার ভাইটির একটি একটি করে আঙ্গুল টিপে দিতে থাকি আমি। এই বাক্যটা লিখতে গিয়ে ওর সেই হাতের উষ্ণতা এখনো যেন টের পাই। চোখের সামনে ভাসে, একটি আঙ্গুল শেষ না হতেই আরেকটি আঙ্গুল বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাত শেষ হয়ে গেলে খাটের ওপর একটু নাড়াচাড়া করে এগিয়ে দেয় পা।” এই কটি কথা মধ্য দিয়েই ফুটে ওঠে নিউইয়র্কে হুমায়ূন আহমেদের চিকিৎসার সময়ে তাঁর সঙ্গে পূরবী বসুর কী গভীর হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার প্রথম থেকে বেলবিউ হাসপাতালের শেষ দিন পর্যন্ত পূরবী বসু প্রায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাঁর সংস্পর্শে ছিলেন। ঐ সময়ে তাঁর চিকিৎসা ও অসুস্থতা সক্রান্ত সমস্ত কথা , সকল শারিরীক জটিলতার খুঁটিনাটি পূরবী বসুর মতো প্রায় আর কারোরই জানা নেই। মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে এক সময়ে কর্মরত চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষক পূরবী বসু একজন পাঠক-নন্দিত প্রথিতযশা গল্পকারও । বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রবাদ পুরুষ হুমায়ূন আহমেদের শেষ ঐ শেষ দিনের কথা-তাঁর অসুস্থতা,যন্ত্রণা, আনন্দ আর স্বপ্নের কথা পূবরী বসুর অনবদ্য রচনায় পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে যাবে, তাকে কাঁদাবে, আমরা নিশ্চিত।