"দুর্জয়-13" বইয়ের কথাঃ ভাল জিতবে, মন্দ হারবেই - এটা রুপকথা। যোগ্যের কাছে অযোগ্যে পরাজিত - এইটাই বাস্তব। ভাল আর মন্দের লড়াইয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মত আসে সে। শুধুমাত্র যোগ্যেতার বলে তছনছ করে সবাইকে। মাফিয়ার হাতে নির্যাতনের ফসল, এক সময়কার কিকবক্সিং ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়া কিশোর কবির মনসুর আজকের আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রেতাত্মা দুর্জয়। তার অস্তিত্বকে গুজব ভাবে সবাই। কিন্তু পুলিশ আর মাফিয়া উভয়েই জানে, অজানা কোনো তৃতীয় পক্ষ আছে, যে ক্রমশ এক এক করে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের স্তম্ভগুলো। সমাজে ত্রাস সৃষ্টিকারী মাফিয়া ডনদের গুম করে ফুটপাথের পঙ্গু ভিখারী বানাতে পারে সে। ইস্পাতের দেহ, নরপশুর আত্মা। প্রচন্ড গোঁয়ার, ঘাড়তেড়া। চাহনিতে শুকিয়ে যায় কালকেউটের রক্ত। জায়গামত পিশাচ, জায়গামত দরবেশ। সম্পূর্ণ আলাদা। তার জীবনদর্শন। মাফিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে একা।
ঢাকা কমিক্সের প্রথম সুপার নেচারল কমিক্সের শেষ অংশ এটি। ভয়ঙ্কর পিশাচ মহা ডামর ক্বালের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে সাধুরা। চাইছেন যুদ্ধ শেষের পিশাচকে আটকে ফেলেবেন এক নারীদেহে । কিন্তু সেই নারীদের তাঁরা পাবেন কোথায়? শেষ মেষে কি পিশাচকে দমন করতে পেরেছিলেন তাঁরা?
রাঙ্গামাটির তবলছড়িতে বেড়ে ওঠা দুরন্ত কিশোর জুমো। দারুণ ভাব মামার সাথে। ছোটবেলা থেকেই মামা তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। একটু বড় হবার পরে মামা হঠাত সন্ন্যাসজীবন বেছে নিলেন। ধ্যান করা দেখে দেখে জুমোরও শখ হত মামার সাথে ধ্যানে বসতে। ভালই চলছিলো সব। এমন সময় একদিন হঠাতই সড়ক দূর্ঘটনায় মামা নিহত হলেন। আর সেই সময়েই জুমো আবিষ্কার করল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। তাহলে কি মামার সাথে করা সেই ধ্যান কাজে লেগেছিলো? আর হঠাত উদয় হওয়া 'সুলো' নামের এই লোকটাই বা কী বলছে? তিন খণ্ডে সমাপ্য মৌলিক এক গল্পে দারুণ করে বলা সব্যসাচী চাকমার কমিক্স 'জুম' এর প্রথম পর্ব।
দুর্জয়ের চতুর্দশ সংখ্যা, বান্তং মাজলান আর দুর্জয় এখন একই শহরে, ওদিকে বিল্পব আচমকাই সমূর্ন অপ্রত্যাশিত এক পরিস্থিতে নিজেই আটকা পড়ে গেছে। নীহারিকা তার সংসারী রুপের মধ্য থেকে আবার নতুন করে পেশাদারি সাহায্য করতে চাইছে দুর্জয়কে। পুলিশ অফিসার এমদাদ আটকে আছেন জীবনের এক জটিল টানাপোড়েনে, নিজের শিশুকন্যা আর বনাম গোটা দেশ সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তাঁর। দুর্জয় কি পারবে সেই জটিল পরিস্থিতি থেকে তাকে বাঁচাতে? সে কি পারবে শেষমেশ বিপ্লবের মুখোমুখি হতে?
বিপ্লব এখন নিজেই ক্রাইম লর্ড, জেঁকে বসেছে সে সব সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে। তাকে শায়েস্তা করতে ধীরে ধীরে জাল পাতছে কবির মনসুর ওরফে দুর্জয়। তারই অংশ হিসেবে একদল বড়লকের বখে যাওয়া ছেলেদের পিছু করে সে ঢুকলো একটা শপইং মলের ফুড কোর্টে। সব ঠিকঠাক মতই এগোচ্ছিলো হঠাৎ আশ্চর্য একোটা ঘটনা দুর্জয়ের এতদিনের সব ধারনা ওলটপালট করে দিল। এই প্রথম বসে বসে দেখা ছাড়া খুব বেশি কিছু করতে পারলো না সিরিজের নায়ক। কেন? জানতে হলে চলে আসুন বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম ক্রাইম ফিকশন কমিক্স দুর্জয়ের ইউনিভার্সে।
দুর্জয় সিরিজের ১৬ নম্বর বই। ড্রাগ লর্ড বিপ্লব এবার পুরোদমে অপারেশনে নেমেছে, ওদিকে দুর্জয় তার গোপন সেলে তুলে এনেছে কিছু ক্ষমতাশালীদের ছেলেদের। এর মাঝে অপসরীর কুংফু ডেমন্সট্রেশন ক্লাসে আচমকা ঢুকে পড়েছে ওরা কারা? আর দর্শক সারিতে কে বসেছিলো? নাহ্ পুরোটা বলে দেবার চাইতে নিজের চোখে দেখে নেয়াই ভালো।
ভূমিকা ছোট থাকতে আমরা সবাই কমিক্স পড়েছি। ছেলেমানুষী কার্টুন চরিত্র থেকে শুরু করে গুরুতর চিরায়ত সাহিত্যর কমিক্স কিছুই বাকী ছিল না। মনে আছে জুল ভার্নের 2000 leagues under the sea এর কমিক্সটি যখন দেখেছিলাম তখন সেই চরিত্রগুলো এবং সেই রহস্যময় জলযান সবকিছুই আমার সামনে নূতন জগত খুলে দিয়েছিল। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে আমি খুব অর্থাভাবে ছিলাম,নিজের খরচ চালানোর জন্য পত্রিকায় কার্টুন এঁকেছি, সাথে সাথে কমিক স্ট্রিপ এঁকেছি। 'মহাকাশে মহাত্রাশ' নামে আমার একটা সায়েন্স ফিকশন আসলে আমার একটা কমিক স্ট্রিপের কাহিনী। আজকাল সারা পৃথিবীতে সাহিত্য এবং চিত্রশিল্পের এই সমন্বিত রূপটি একটি নূতন রূপ নিতে যাচ্ছে। এখন শুধু কমবয়সী শিশু কিশোরদের কার্টুন-কমিক্স হয় না, রীতিমত বড় মানুষের জন্য গ্রাফিক্স নভেল নামে এই নূতন মাধ্যমটি শিকড় গেড়ে বসতে শুরু করেছে। আমাদের বাংলাদেশেও তার আয়োজন শুরু হয়েছে। কিছু তরুণ শিল্পী আমার রুহান রুহান নামের সায়েন্স ফিকশনটিকে এই গ্রাফিক্স নভেলে রূপ দিতে যাচ্ছে জেনে আমি খুব আগ্রহ নিয়ে সেটি দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। আমি তাদের সাফল্য কামনা করি। মুহম্মদ জাফর ইকবাল
জুমো- রাঙ্গামাটির স্থানীয় অতি সাধারণ ছেলে, ছোটবেলা থেকেই মামার সাথে সাথে ঘুরে বেড়ায়। মামা তার ভাগ্নের সাথে খেলাধুলার পাশাপাশি দীক্ষা দেয় কিভাবে ধ্যানমগ্ন থেকে প্রকৃতির কাছ থেকে শিখতে হয়। অনেক চেষ্টা করেও অস্তিরমতি জুম সেটা পারে না। এভাবেই সময় কাটার মাঝে হঠাতই একদিন খবর আসে মামা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত! এবং সেদিনই জুমো আকস্মিকভাবে টের পায় সেই ধ্যানের ফলাফল। সে চাইলেই যে কোন গাছের মত রুপ ধারন করতে পারে, আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে অরণ্যের শক্তিকে। এই শক্তি নিয়ে কি করবে বুঝে ওঠার আগেই তার ওপর এল অতর্কিত হামলা। কেন এই হামলা আর কিভাবেই তার মামা আসল মারা গিয়েছিলো এই নিয়ে রহস্য দানা বাঁধলো। জুম ২ এ এবারে সেই রহস্যের কিনারার সূত্রপাত।
নিজের অনিয়ন্ত্রিত অলৌকিক শক্তির কথা জেনে জনমানুষ থেকে লুকিয়ে আছে ইব্রাহীম, সে চায় না তার মাধ্যমে আর কারো ক্ষতি হোক। নিজের মত নিশ্চিন্তে সহজ সাধারণ এক জীবন কাটাচ্ছে সে বান্দরবানের এক জঙ্গলের কাছে। কিন্তু সেখানেও পৌঁছে গেল মানুষের লোভ-ঘৃণা আর হিংসার ছোবল। কি করবে ইব্রাহীম, চোখের সামনে এভাবে নিরীহ মানুষকে নিহত হতে দেবে? নাকি সবার ক্ষতি হতে পারে জেনেও আমার আবির্ভূত হবে? আর তার সব কর্মকাণ্ড আড়াল থেকে কে-ই বা দেখে চলেছে সারাক্ষণ? ঢাকা কমিক্সের সুপারহিরো সিরিজ ইব্রাহীমে এবার কাহিনি একেবারেই মোড় নিতে যাচ্ছে অন্যদিকে।
অতলান্ত অন্ধকারাচ্ছান্ন স্মৃতি-বিস্মৃতির অতল গহীনে তলিয়ে যাওয়া এক ভ্রান্তিময় ও রক্তাক্ত উপাখ্যান। মাহাতাব রশীদের লেখা ও আঁকায় ঢাকা কমিক্স থেকে প্রকাশিত এম রেটেড ডার্ক ফিকশন।
অন্তহীন ভয়ের উৎস কোথায় মানুষ জানে না, অজান্তেই সে তার জীনে বহন করে চলেছে আদিমতম এই অনুভূতি। যুক্তিবাদিরা মুখে যতই কথা বলুক না কেন, অন্তরের অন্তস্থলে সেও জানে অতিপ্রাকৃত সব ইশারার কথা। শখের গোয়েন্দা কৌশিক সেরকম একটি অলোউকিক ঘটনা শুনে তদন্তে নেমে টের পেতে থাকে তার জ্ঞানের বাইরের এক শক্তির কথা, যে একই সাথে বাস্তব ও অবাস্তব রুপে আমাদের চারপাশেই আছে, সমাধানে নেমে নিজেই কী জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছেন কৌশিক ? এদিকে একের পর এক নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সবাই কি সত্যি চলে গেলেন অন্য কোন মাত্রায়? গা শিউরান অনুভূতির জন্ম দেয়া গল্পে আহসান হাবীব চিত্রিত করেছেন এক দারুণ হরর গল্পের।
বছর ঘুরে ফিরে এসেছে বাংলার সুপারহিরো- লুঙ্গিম্যান। নিজের শহর তুফান নগরে ফিরে দেখে কিছুই আর আগের মত নেই। চারিদিকে কোন ক্রাইসিস নেই, সবাই হাসিমুখে পজিটিভ এনার্জি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সবারই জীবন পজিটিভ, এমনকি নেগেটিভ সব বিষয়কেও সবাই পজিটিভলি নিচ্ছে। ব্যাপারাটা অস্বাভাবিক ভেবে এর কারণ খুঁজতে গিয়ে লুঙ্গিম্যান খুঁজে পেল মোটিভেশন ভাইকে! মুখোমুখি হতে শুরু হল আশ্চর্য সব ঘটনা। জিতল কে? নিজেই দেখুন।
অনেক বছর পর আবার সোহেল ভাইয়ের কাছে এসেছে দুর্জয়। কিন্তু এরকম একটা সময়ে হয়ত দেখা না হলেই ভাল ছিল। একদল ভাড়াটে ষণ্ডা হঠাত চলে এল অপ্সরীদের কুংফু ক্লাসে। এবং এসেই শুরু করে দিল মার। এবং বোঝা গেল এরা হাইলি ট্রেইন্ড পার্সোনাল আর্মি। কিন্তু দুর্জয় কী করছে? এই এত হট্টগোলের মধ্যে সে কি পুরোটা সময় শুধু ঘুমোবে? দেখা যাক।