বিরক্তির সাথে আরেকবার ঘড়ি দেখলাে তুলি। ডিউটি শেষ হতে আরাে প্রায় একঘন্টা বাকি। সময়টা যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না আজ। এই সময়ে ইমার্জেন্সিতে রােগির ভিড় কমই থাকে কিন্তু আজ একেবারেই নেই। বিগত পাঁচঘণ্টা ধরে বসে বসে বই পড়া ছাড়া অন্য কোন কাজই ছিল না। ওর। আজ দু-সপ্তাহ ধরে ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাও ডি-অ্যাকটিভ করে রেখেছে, তাই ফেবুতেও ঢােকার কোন ইচ্ছে নেই। ইমার্জেন্সিতে ডাক্তারদের রুমে একটা এলসিডি টিভি থাকলেও ওটা ছাড়তে এতােটুকু ইচ্ছে করছে না। ওর সাথে একজন দেখা করতে আসার কথা, সে-ও আসেনি। ভেবেছিল মানুষটা এলে, কথা বললে, ভালাে লাগবে। এমনিতেই গত কয়েকদিন ধরে মনটা অসম্ভব খারাপ, তার ওপর বিরক্তিকর সময় কাটানাের কারণে অসহ্য লাগছে। বইটা ডেস্কের ওপর উল্টে রেখে রুমের এক কোনায় রাখা ইলেকট্রিক কেটলিটা অন করে দিলাে ও। বয়াম থেকে দু-চামচ কফি মগে নিয়ে তার সাথে এক চামচ চিনি নিলাে। এই মুহূর্তে মন খারাপের একমাত্র ঔষধ-কড়া কফি। তুলির অন্য কোন নেশা নেই কিন্তু সে ভয়াবহ কফি আসক্ত। দিনে অন্তত ছয়-সাত কাপ কফি না হলে ওর চলে না। কফিটাও হতে হয় মনমতাে, একটু কড়া। মেশিনের কফি কখনােই খায় না সে, সুযােগমতাে নিজেই বানিয়ে নেয়। বাসায় অফিসে সবখানে ওর কফি বানানাের ব্যবস্থা আছে।
'ড্রেসডেন ফাইসের স্রষ্টা হিসেবে সারাবিশ্বে পরিচিত জিম বুচার ১৯৭১ সালে আমেরিকার মিসৌরিতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে অসুখের সময় তার বোন তাকে দ্য লর্ড অব দি রিং এবং দ্য। 'হান সোলো অ্যাডভেঞ্চার্স উপন্যাস দুটো পড়তে দেয় সময় কাটানোর জন্য। সেই থেকে ফ্যান্টাসি আর সায়েন্সফিকশনের প্রতি আগ্রহ জন্মে তার। টিনএজ বয়সেই নিজের প্রথম উপন্যাস লিখেছিলেন তিনি, ঠিক করেছিলেন লেখক হবেন। দীর্ঘদিন প্রচলিত ধারার ফ্যান্টাসি লেখা লিখে প্রকাশকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে লিখে ফেলেন হ্যারি ড্রেসডেন নামক এক জাদুকরের কাহিনী নিয়ে ড্রেসডেন ফাইন্স সিরিজের প্রথম বইটি। আধুনিককালের শিকাগো শহরের পটভূমিতে লেখা বইটি দারুণ জনপ্রিয়তাই শুধু পায়নি, সেই সঙ্গে জিম বুচারকে দিয়েছে প্রবল জনপ্রিয়তা।