কাব্যযাত্রার শুরু থেকে আপাত শেষের আটটি কাব্যগ্রন্থ ধারাবাহিকভাবে অর্ন্তভূক্ত হলো। এরপরে সংকলিত তিনটি কাব্যগ্রন্থ যথাক্রমে প্রেমের কবিতা 'নির্বাচিত কবিতা এবং নারী 'সংহিতা' সংযুক্ত থাকলো। ইতোমধ্যে বাংলা একাডেমির প্রমিত বানানরীতি অনুসরণ করে কিছু বানানের ক্ষেত্রে চন্দ্রবিন্দু উঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যেমন দাড়ানো দৌড়ানোতে এখন আর চন্দ্রবিন্দু ব্যবহারের প্রচলন নেই। আমিও এ ক্ষেত্রে তা অনুসরণ করেছি। কিন্তু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে পুরোনো বানানে রয়ে গেছি। যেমন ঈদ বানানে কিছুতেই আমি হ্রস্ব-ই ব্যবহারের সায় পাইনি মন থেকে কাজেই আমার 'ঈদ' বানানে দীর্ঘ- ঈ কার আছে। পরিশেষে স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, সর্বত্র বানানের সমতা তবুও রক্ষা করা যায়নি। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, নিজগুনে পড়ে নেবেন। এই প্রসঙ্গে ধন্যবাদ জানাতে চাই- অনন্যা প্রকাশনীর মনিরুল হক ভাইকে তার সার্বিক সহযোগিতা ও অর্ন্তময়তা না পেলে এই দুরূহ কাজটি আমার পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব হতো না। কবিতা সমগ্র দ্বিতীয় সংস্করণের প্রচ্ছদ এঁকেছেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী সৈয়দ ইকবাল তাকে অশেষ কৃতজ্ঞাতা ও ভালোবাসা জানাই।
হাসানআল আব্দুল্লাহ সম্পর্কে সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন ওঁর কবিতায় বিষয়কে নতুন করে দেখার চোখ আছে। শামসুর রাহমান বলেছিলেন তিনি (হাসানআল আব্দুল্লাহ) কবিতার ব্যাপারে এতো নিবেদিত, এতো নিষ্ঠাবান যে প্রত্যেক কবির, প্রত্যেক সমালোচকেরই তাঁর এই গুণটির প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার কারণ আছে। আল মাহমুদঃ হাসানআল আব্দুল্লাহ আমার কবিতারও তীব্র সমালোচক। আমি এই সমালোচনার সব সময় মূল্য দিয়ে এসেছি।... আমেরিকার কবিদের সংস্পর্শে তার মধ্যে একটা জগৎ বাস্তবতার স্বরূপ প্রত্যক্ষ করার অভ্যাস গড়ে উঠেছে। এটা আমাদের কবিতাকে সাহায্য করবে। শহীদ কাদরীঃ বাংলা ছন্দের সাথে সপ্রাণ পরিচয়ে হাসানআল আব্দুল্লাহর কবিতার ছন্দর চেয়ে ভালো কোনো গ্রন্থ আমার পড়া নেই।...এ-কথা স্বীকার করতেই হয় যে সাম্প্রতিক কালে কবিতাকে যাঁরা ঐশ্বর্যবান করে তুলেছেন, হাসানআল আব্দুল্লাহ তাঁদের অন্যতম। মীনাক্ষী দত্তঃ দুঃসাহসিকতা, উচ্চাশা ও পরিশ্রমের অসাধারণ ক্ষমতা নিয়ে ধাপে ধাপে শৃঙ্গে আরোহণ করেছে হাসান আল আব্দুল্লাহ। বাংলা ছন্দের দেবী [তাঁকে] মালা পরিয়েছেন। সিল্ক রুট কবিতা উৎসবে পৃথিবীর দরবারেও সে স্বীকৃতি পেল। হাসানআল ব্যস্তকবিতা নিয়ে। কবিতা লেখা, কবিতা অনুবাদ, কবিতার গড়নপেটন, ছন্দ, মাত্রা নিয়ে ভাবনাচিন্তা, লেখালেখি, কবিদের জীবন, কবিতার বই প্রকাশ, কবিতাপত্রিকা প্রকাশ, এই সব কিছু নিয়েই তাঁর বেঁচে থাকা। আগে আমি কলকাতায় এই ধরনের কবিতা-অন্তপ্রাণ মানুষ দেখেছি। -নবনীতা দেবসেন। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের মানুষের সাথে এবং রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের কবিতার সাথে আমার পরিচয়ের প্রধান সূত্র হাসানআল আব্দুল্লাহ, যিনি নিজেও বাংলা কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। -স্ট্যানলি এইচ বারকান। হাসানআল আব্দুল্লাহর কবিতা সম্পর্কে আমি উচ্চ ধারণা পোষণ করি। ভাবার্থের সাথে কোনো প্রকার আপোষ ছাড়াই তিনি যেমন লিরিক্যাল, ঠিক তেমনি কৌতুক উদ্দীপক ও গম্ভীর; এইসব অনুভূতির ভেতর দিয়ে মননকে জাগিয়ে তোলেন। -হল সরুইটজ। কল্পনার ব্যবহারে যেমন তিনি রোমান্টিকতায় আস্থাবান, ঠিক তেমনি আধুনিক ব্যঙ্গ বিদ্রূপ ও উত্তরাধুনিক নির্মাণ শৈলীকে অনায়াসে কবিতায় একাকার করে দিতে পারেন। কাব্যক্ষেত্রে এটি তাঁর যথেষ্ট শক্তির পরিচায়ক। -নিকোলাস বার্নস।