কবি রফিক আজাদের নির্বাচিত ১০০ কবিতার গ্রন্থটি হাতে আসার পর এই ইচ্ছেটি আমার মধ্যেও উঁকি দেয়, এই রকম একটি বই আমারও হতে পারে। শুধু "নির্বাচিত কবিতা" হলে কবির নিজের পক্ষে কবিতা নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়ে। কোথায় বা কততে গিয়ে রেখাটি টানবেন তা নিয়ে কবি বড়ো বিপদে পড়ে যান। এই ১০০ কবিতাই যে আমার লেখা কবিতাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো কবিতা এ-কথা বলা যাবে না। তবে ভালো কবিতাগুলোর মধ্যে ওরা আছে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। কবিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নানানজনের সহযোগিতা নেন অনেকেই। আমিও আমার স্ত্রী মুক্তি জহিরের সাহায্য নেবার চেষ্টা করেছি। তিনি কবিতা সমগ্র ১ এবং ২ থেকে পেন্সিলে মার্ক করে কিছু কবিতা প্রাথমিকভাবে বেছে দিয়েছেন। বাকি কাজ আমি নিজেই করেছি। আমার অনেক কবিতা যেহেতু আবৃত্তিশিল্পীরা আবৃত্তি করেছেন এবং প্রতিনিয়ত আরো নতুন নতুন কবিতা তারা আবৃত্তি করছেন, বাছাই করার সময় তাদের কন্ঠ কানে বাজছিল। পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে আবৃত্ত কবিতাগুলোর ওপর গিয়ে থেমে পড়ছিলাম। এই প্রভাব থেকে মুক্ত হবার চেষ্টা করেছি যদিও কিন্তু পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। চেষ্টা করেছি বিভিন্ন গ্রন্থের প্রতিনিধিত্ব রাখতে, কিছু কবিতা আছে গ্রন্থের শেষের দিকে, যেগুলো এখনো গ্রন্থবদ্ধ হয়ে বের হয়নি তবে বেরিয়ে যাবে ২০২২ এর বইমেলায়। আমি বিশ্বাস করি এই গ্রন্থটি পাঠের মধ্য দিয়ে গত সাড়ে তিন দশকে আমার কাব্যচর্চার একটি ধারাবাহিক প্রবাহ উপলব্ধি করা যাবে। আমি কেমন কবিতা লিখি বা লিখেছি এটা যদি কেউ খুঁজতে চান এই গ্রন্থটি তাদের সাহায্য করবে।
বর্ণাঢ্য অভিজ্ঞতার ঝুলি তার কাঁধে, তিনি ছুটছেন এক। ভূ-খণ্ড থেকে অন্য ভূ-খণ্ডে। সে-তাে অনেক পুরনাে। কথা, আজ, এখন, পঞ্চাশ পেরিয়ে এসে বদলে গেছে। তঁার দেখার চোখ। এখন এই পৃথিবীকে তিনি দেখেন। ধর্ম, বর্ণ, মতবাদ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ। আবাস হিশেবে। তিনি বলেন, নিজের জাত-ধর্মকে। ভালােবাসায় কোন দোষ নেই, অন্যের জাতকে ছােট। করাই অপরাধ। এটাই সাম্প্রদায়িকতা। তিনি এক । জাদুকরী ভাষায় পথ চলার গল্প বলতে বলতে আমাদের জানিয়ে দেন কোথায় কি অন্যায় হচ্ছে, এর থেকে। পরিত্রাণের কি উপায়। তাই তার গদ্য শুধু সুখপাঠ্যই। নয়, এই পৃথিবীর জন্য উপকারী। দাগচিত্র’ গ্রন্থে তিনি। দক্ষ চিত্রকরের মতাে অক্ষর, শব্দ, বাক্য দিয়ে নির্মাণ। করেছেন, অসাধারণ সব চিত্রকর্ম।