বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডক্টর কিজিলকে হয়তাে আপনারা কেউ কেউ চিনে থাকবেন, লােকটার বিচিত্র আবিষ্কারের নেশা আর উদ্যোক্তা হিসেবে অদ্ভুত সব কাণ্ডে নিজের। এবং অন্যদের জন্য বিপদ আর উটকো ঝামেলা বয়ে নিয়ে আসেন প্রায়ই। তেমন। কয়েকটি রােমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চারময় ঘটনা এ বইয়ে বর্ণনার দায়িত্ব নিয়েছেন তার । সহকারী হাসান। এছাড়াও বইয়ে যুক্ত হয়েছে হাফ ডজনের বেশি নানা আমেজের বৈজ্ঞানিক কল্পগল্প; তার কোন কোনােটি গম্ভীর বা ডিস্টোপিয়ান, কোনটা একদমই হালকা মেজাজের। ভেন্ট্রিলােকুইস্ট এবং মিনিমালিস্ট-এর পর বাতিঘর প্রকাশনী। থেকে মাশুদুল হকের এই বৈজ্ঞানিক কল্পগল্পের জগতে আপনাদের আমন্ত্রণ।
সর্বমোট মৃতের সংখ্যা প্রায় এক কোটি তিন লক্ষ একুশ হাজার। ভবিষ্যত প্রজন্মের এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন উপস্থিত বিজ্ঞানীরা। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে প্রফেসর আকিরা নাকামুরা খুব সন্তর্পণে সামনে রাখা ভার্চুয়াল ফাইলটি গুটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট পদক্ষেপে দরজার দিকে এগিয়ে যান। হতবাক প্রেসিডেন্ট মৃদুস্বরে বলেন, “মিস্টার নাকামুরা, চলে যাচ্ছেন?” দাঁড়িয়ে পেছনে না তাকিয়েই প্রফেসর নাকামুরা বলেন, “আমি সুস্মিতা ব্যানার্জির থিওরি মেনে নিয়েছি। মানুষ তার জ্ঞানের প্রান্তিক সীমায় পৌঁছে গেছে। এর চেয়ে বেশি জ্ঞান অর্জন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়; আর জ্ঞানের প্রান্তিক সীমার কাছাকাছি পৌঁছে মানুষ আত্ম-ধ্বংসে মত্ত হয়ে উঠে। প্রজেক্ট ব্যর্থ হয়েছে।” এতটুকু বলে কিছুক্ষণ দম নেন। তারপর স্পষ্ট করে প্রতিটি শব্দ আলাদা আলাদা করে উচ্চারণ করে বলেন, “মানুষ প্রকৃতি-বিরোধী সৃষ্টি। তার ধ্বংসই প্রকৃতির স্বস্তির একমাত্র পথ।”
সেই অসহনীয় আর্তনাদ...সেই অপার্থিব কি কি শব্দ...এখনাে দুঃস্বপ্নের মাঝে তাড়া করে ফেরে আমায়। যে ভয়াল অস্তিত্ব ছিনিয়ে নিয়েছিল আমার ভালােবাসাকে, সেই অস্তিত্বের জন্ম পৃথিবীতে হয়নি। সত্যটা আমি জানতাম। কিন্তু আমার হাতে প্রমাণ ছিল না। তাই স্মৃতির শৃঙ্খল থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছি পনেরােটি বছর। কিন্তু ড. এডওয়ার্ড খান হাল ছাড়েননি। তাই তাে আজ এতগুলাে বছর পর, কিলিমানজারাের একটি গুহায় অসম্ভব এক সত্যের মুখােমুখি হয়েছি, সাক্ষি হয়েছি লক্ষ বছরের পুরনাে ইতিহাসের। এক লক্ষ বছর আগে ওরা এসেছিল পৃথিবীতে। স্বজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল সেই প্রজাতির তিনজন প্রতিনিধি। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল কিছু প্রাচীন মানুষ। আদিম প্রবৃত্তিকে পুঁজি করে অবতীর্ণ হয়েছিল অসম এক যুদ্ধে। এই গল্প মানুষের গল্প। পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষার এক রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের আখ্যান। আমের আহমেদ আদিম পৃথিবী নিয়ে লিখেছেন ভিন্নধর্মি এই সায়েন্স-ফিকশনটি।
মতিঝিলে গভীর রাতে একটি বাঘ ঢুকে পড়েছে, টহলরত পুলিশের একেবারে সামনে দিয়ে। যেনতেন বাঘ নয়, প্রকাণ্ড রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সেই বাঘটিকে কিছুতেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না। চিড়িয়াখানা থেকেও কোনও বাঘ পালিয়ে যায় নি। সেটা এলো কোথা থেকে? গেল কোথায়? নানা মুনির নানা মতো। এমনকি কোনও বাঘই নয়, কি দেখতে কি দেখেছে, তেমন মন্তব্যও আসতে থাকে। সেই বাঘ খুঁজতে গিয়ে অতর্কিতে আইনশৃংখলা বাহিনীর একাধিক সদস্য হতাহত হয়ে যান। কিন্তু বাঘটিকে মারা সম্ভব হয় না। সেটা আবারও পালিয়ে যায়। ওদিকে ভোর হওয়ার আগেই মানুষ সব জেনে ফেলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় গুজব, আর ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তড়িঘড়ি তৈরি করা হয় ‘বাঘ সঙ্কট নিরসন কমিটি।’ তারা যুক্তিসংগত কোনও ব্যাখ্যাই খুঁজে পাচ্ছেন না। মতিঝিলের চারদিকে বেস্টনী দেয়া হয়। ভারী অস্ত্র নিয়ে রীতিমতো সেনাবাহিনী নেমে পড়ে। বিদেশ থেকে পরামর্শ আসে। কিন্তু অতি ধূর্ত এবং ভয়ংকর বাঘটিকে ধরাও যায় না, মারাও যায় না। বাঘ সঙ্কট নিরসন কমিটির এক সময় মনে হয়, বাঘটার বিশেষ একটা উদ্দেশ্য আছে। এরপরে ঘটনা যেভাবে এগুতে থাকে, তাতে সব কল্পনা হার মেনে যায়।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থার আলোকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্যের তুলনা করে ব্যক্তিগত মতামত দিয়ে লেখা কয়েকটি রস-রচনা। এর কোনোটি গল্পের আকারে বলা প্রবন্ধ, কোনোটি প্রবন্ধের আকারে বলা গল্প, আবার কোনোটি গল্পের কাঠামোয় লেখা বৈজ্ঞানিক তথ্য। অথচ প্রতিটিতেই রসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা গভীর চিন্তার খোরাকও প্রচ্ছন্ন। তাই পড়া শেষ হয়ে গেলেও পাঠকের মনে তার রেশ রয়ে যায়। যে-লেখাগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো পাঠকরা সাদরে গ্রহণ করেছেন ও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। পাঠক-সমালোচকরা এক কথায় লেখাগুলোকে ‘বৈজ্ঞানিক গলপ্রবন্ধ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রচলিত সংজ্ঞায় বইটিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি বলা যেতে পারে।
কোনো এক অজানা সময়ে চিতা সামরিক বাহিনী দখল করে রেখেছিলো সমতল ভূমি। তাদের নির্মমতায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো বিজ্ঞানী, মনিষীদের তিলে তিলে গড়ে তোলা সভ্য এক লোকালয়। চিতা সামরিক বাহিনীর হাত থেকে সমতলকে রক্ষা করতে তরুন প্রটাগনিস্ট ত.যে পথে এগোয় তাতে এক মহাবিশ্ব ভাগ হতে পারে কয়েকটি মহাবিশ্বে। এ রহস্যের মধ্যে দিতা ও তার ঘড়ি। ভিন্ন স্বাদের এই বিজ্ঞান-কল্পকাহিনির রহস্যের বিভিন্ন স্তর উন্মোচন করে পাঠক আনন্দ পাবেন।