দীঘদিন জীবনযাপন পশ্চিমে। কত সব লেখা, বই, পড়া, কতসব সিনেমা, থিয়েটার নাটক দেখা, কতসব টেলিভিশনের রাতজাগা প্রোগ্রামে নিদ্রাহীন। এইসব দেখতে দেখতে পড়তে পড়তে কতসব লেখালিখির মানুষের কথা জানা। জেনে চুপ করে বসে থাকবেন তাই কি হয়। সেসব নিয়ে লেখালেখি। সিলভিয়া প্লাথ, ডিলোন টমাস, ডিকেন্স, মার্ক ডি সাদ, জেফানাইয়া, ভ্যান গফ, গঁগা আরো কত কে। মনে কত প্রশ্ন। – কেন কান কাটলেন ভ্যান গফ, কেন তাহিতিতে পালানের গাঁগা, কেন ডিকেন্সকে দেখা দিলেন না প্রথম প্রেম বৃদ্ধা মারিয়া বিডনেল, কেন জন ফাাওলস নোবেল পেলেন না, কেন বিয়ট্রিক্স পটার সারাজীবন নরম্যান ওয়েনের আংটি পরে রইলেন, স্বামী তাঁকে সে আংটি খুলতে দিলেন না? কেন কেটলিন ম্যাকনামারা সুখ খুঁজে পেলেন একজন সাধারণ মানুষে ডিলোন টমাসে নয়। ভিভিয়েন হে উড কেন কাটালেন জীবনের অনেকগুলে বছর পাগলা গারদে একা? এমনি সব অসংখ্য প্রশ্ন আর উত্তর খোঁজা। যে দেশে জলভরা মেঘ আর হঠাৎ নামা ঝুপ ঝুপ বৃষ্টি। সেগুলো ছাপা হলো নানা জায়গায়। দেশের ও বিদেশের পত্রপত্রিকায়। সেগুলো কুড়িয়ে দেখলেন পরিমান একমুঠো। সেগুলো মালার মত গেঁথে রচনা করলেন একটি বই। সুহ্রদ উদয় শংকর দূর্জয় সেগুলো পাঠিয়ে দিল ঢাকার অনুপ্রাণন প্রকাশনীতে। যেখান থেকে ওর দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে। আমার সেইসব লেখা এবার দুই মলাটে বন্দী হবে। একটি বই হবে। ভাবতেও আনন্দ। চলুন পাঠক লন্ডনের বৃষ্টিভেজা ঘাসের মাঠে একবার। দেখা যাক কি আছে সেখানে। এলিয়টের ভাষায় বলি- লেটস গো দেয়ার দেন ইউ এ্যান্ড আই।
মানুষ যখন তার জীবনের সাথে কোন ঘটনার সাথে মিল খুজে পায়, তখন সেটা সম্পর্কে কৌতহলী হয়ে ওঠে। হাসি, কান্না, ভুলভ্রান্তি, ভালোবাসা, কষ্ট, সবারই থাকে। কেউ এসবের বাহিরে নয়। বইটি প্রবাসী মানুষের নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানো, অভিজ্ঞতা নিয়ে। জীবন যুদ্ধে পজেটিভ চিন্তা-ভাবনা বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাবার যাপিত জীবনের গল্প। আর মাতৃভূমিকে কাছে পাবার তীব্র বাসনার গল্প। কানাডায় প্রাত্যহিক জীবনের ছবি ফুটিয়ে তোলার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। সাথে সেখানকার কিছু রম্য গল্প।
এগারাে জন পশ্চিমের এবং একজন আমাদের, এদের নিয়ে বারাে জন শিশু সাহিত্যিকের মালা গেঁথেছেন সালেহা চৌধুরী। সংক্ষিপ্ত পরিচয়, কিছু লেখালেখির নমুনা বা স্যাম্পল। এ দেশের ক্ষুদে পাঠক এ গ্রন্থে সমৃদ্ধ হবে বলে বিশ্বাস। এগারাে জনের গল্পগুলাে সালেহা চৌধুরী নিজে অনুবাদ করেছেন। ব্যবহার করেছেন সেই সব গল্প সংক্ষিপ্ত জীবনের সঙ্গে। এই বই পড়ার কারণে ক্ষুদে পাঠকদের বিশ্ববরেণ্য শিশু সাহিত্যিকদের বই বেশি করে পড়বার বিষয়ে আগ্রহী হবে বলে আমার বিশ্বাস।