রম্য না থাকলে বাঙালির জীবন পূর্ণ হয় না। রম্যের আশ্রয়ে থাকে কটাক্ষ, শ্লেষ, ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ ও ইঙ্গিত— সাহিত্যে যেগুলোর ক্ষমতা অকিঞ্চিৎকর। আবেদনও প্রবল। কাল্পনিক সংলাপের মধ্য দিয়ে এগুলো প্রকাশ হলেও এসব বাস্তবেরই প্রতিভূ। চলমান সমাজের সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতির বেশ খানিকটা চিত্র পাঠকের চোখে ফুটে উঠবে যখন তিনি এই রম্যগ্রন্থে নাট্যরূপের পর্বগুলো পড়বেন। চরিত্রগুলো যেন অনেক চেনা। রাজনীতিক, কাল্পনিক মন্ত্রী, নেতা, কবি, শিল্পী থেকে শুরু করে এমনকি নিক্সন-ইয়াহিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত । একটি স্বাধীন দেশে বাস করলেও বাকস্বাধীনতা বর্ষার আকাশের মতোই অস্বাচ্ছন্দ্যকর—কখন যে বদলায় তা বলা কঠিন। তাই রম্য ও কল্পসংলাপের আশ্রয়ে সমাজের অসঙ্গতিকে উন্মোচন করা প্রয়োজন। লেখক সে রকম একটা তাগিদ থেকেই পর্বগুলো তৈরি করেছেন। পাঠক তা অনুধাবনে এবং এর রস আস্বাদনে আনন্দ পাবেন—রম্য গ্রন্থের এই পরিবেশনা থেকে।
গণমাধ্যম আধুনিক জীবনের অনিবার্য অনুষঙ্গ। আর পেশা হিসেবেও সাংবাদিকতার রয়েছে গৌরবময় অবস্থান। একদিকে গণমাধ্যম আমাদের প্রতিদিনের জীবনে তথ্যের যোগানদাতা, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। জানাচ্ছে কখন, কী করতে হবে। গণমাধ্যম তাই বাতাসের মতোই মিশে আছে আমাদের জীবনে। আজকের দিনে উন্নয়ন, সুশাসন, জবাবদিহিতা, জনমত সৃষ্টি কিংবা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের রয়েছে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা।
রহস্য, ভয় ও রোমাঞ্চে ভরা থাকে গোয়েন্দা কাহিনি। আলম সিদ্দিকীর গোয়েন্দা গ্রুপ উপন্যাসও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রেক্ষাপট আমেরিকার নিউইয়র্ক। সেখানে হেইট ক্রাইম বেড়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। বাঙালি ভদ্রলোক জামান খান খুন হন আততায়ীর ছুরিকাঘাতে। প্রায় এক বছর চেষ্টা করেও আমেরিকান পুলিশ ধরতে পারেনি খুনিকে। আততায়ী যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। খুনিকে খুঁজে বের করার প্রতিজ্ঞা নেয় জামান খানের কিশোর ছেলে আয়ান। স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলে গোয়েন্দা গ্রুপ। তাদের প্রথম অভিযান চলে নিউইয়র্কের ব্রাদার আইল্যান্ডে। যেখানে গেলে কেউ জীবিত ফিরে আসে না। সেই মৃত্যুপুরীতে গোয়েন্দারা বিশ্বের দশ দেশের সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের মুখোমুখি হয়। কাহিনির শেষে গোয়েন্দা আয়ান খুঁজে পায় তার বাবার হত্যাকারীকে। ঘটনা এটুকুই, কিন্তু গল্পের পরতে পরতে রয়েছে রোমাঞ্চ। আছে ভয়। মৃত্যুর আশঙ্কা। একদিকে রহস্য ভেদ করার জন্য বুদ্ধির দীপ্তি, অন্যদিকে মানবিক আবেগ-সব মিলিয়ে আলম সিদ্দিকীর এই কাহিনি মনোমুগ্ধকর।
থ্রিলার বা রোমাঞ্চ উপন্যাসের ঘটনাতে থাকে ভয়, শঙ্কা, উত্তেজনা এবং রহস্য উদ্ঘাটনের কাহিনি। নজরদারি উপন্যাসে রয়েছে তেমনই সড়বায়ু আলোড়িত করা ঘটনা। দু-দিনে দুজন শিল্পপতি খুন হয়েছে শিল্পনগরী কাঁচপুরে। একজন প্রকাশ্যে, আরেকজন গোপনে, লোকচক্ষুর আড়ালে। প্রকাশ্য খুনের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শীর্ষ সন্ত্রাসী ডালিম মুন্সি এই খুনটা করেছে, ভিডিওতে তা স্পষ্ট। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করছে না কেন পুলিশ? ওদিকে গোপন-খুনের রহস্যও কেউ জানে না। এলাকার শিল্পপতিদের মাঝে ভয়, উৎকণ্ঠা বেড়েই যাচ্ছে দিন দিন। দুটো খুনের তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছেন নতুন গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফাহিম। তিনি কি রহস্যের কূলকিনারা করতে পেরেছিলেন? এমনই রোমাঞ্চকর টানটান ঘটনা নজরদারি উপন্যাসে। আপাত সরল ও নাটকীয় ভাষায় রচিত রোমহর্ষক ঘটনাবহুল থ্রিলার।
সুখের পেছনে ছুটতে ছুটতে অসুখ তৈরি করার নামই কি সুখ? তা না হলে সুখের সন্ধানে সুদূর আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েও কেন সুখের অসুখ হলো নাহিমের? বৈধ হয়েও কেন ডিপোর্টেশনের লেটার পেতে হয়েছিল তাকে? কিন্তু আমেরিকা থেকে ডিপোর্ট করতে পারেনি সরকার। রহস্যটা কী? কোন্ শক্তিতে আমেরিকায় থেকেছিল সে? পরির মতো সুন্দরী তরুণীর প্রেমেও পড়েছিল নাহিম। সেটাই কি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল? কেন রহস্যময় হয় তার চলাফেরা? কেনইবা অস্ত্র তুলে নেয় হাতে? এসব জটিল সমীকরণের হিসাব মেলাতে পড়তে হবে আলম সিদ্দিকীর রহস্যোপন্যাস সুখবিলাসী।