কে প্রথম কাছে এসেছি/কে প্রথম চেয়ে দেখেছি, কিছুতেই পাই না ভেবে কে প্রথম ভালোবেসেছি তুমি? না আমি? দু'জনের যে কেউ একজন প্রেমের এই প্রদীপখানি তুলে ধরতেই পারে জীবনপথের সরণিজুড়ে। যে প্রেম হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে দাঁড়ায় অলক্ষে তার, সে তো চিরকালের সামগ্রী।
বাংলাদেশের এক যুবকের কথা ভাবি যে দূরের ছােট্ট দ্বীপ দেশ কিউবার দিকে কৌতূহলে তাকায়। মাত্র বছর বত্রিশের এক তরুণ ক্যাস্ত্রো তার সহযােদ্ধাদের নিয়ে পরাক্রমশালী আমেরিকার একেবারে নাকের ডগায় ঘটিয়ে ফেলেছিলেন এক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব। তারপর আমেরিকার অবিরাম বিরােধিতা আর চোখ রাঙানির ভেতরও টিকিয়ে রেখেছেন সেই বিপ্লবের মন্ত্রকে। একসময় নদীর পাড় ভাঙার মতাে পৃথিবীর চারদিকে এক এক করে শােনা গেল সমাজতান্ত্রিক চরাচরের ভাঙনের শব্দ; কিন্তু তবু ক্যাস্ট্রো তার নিঃসঙ্গ দ্বীপটিতে জ্বালিয়ে রাখলেন সেই পুরনাে স্বপ্নের বাতিঘর। যুবকের জানতে ইচ্ছা হয় কী করে পারলেন তিনি? ক্যাস্ট্রোর নিজ মুখে সে তখন শােনে নাগরদোলায় চড়া তার আশ্চর্য জীবনের গল্প।
বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।
এই পৃথিবীতে অনেক মানুষই এসেছে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে। আর কিছু মানুষ এসেছে ইতিহাসকে বদলে দিতে। সেই কিছু মানুষের একজন বখতিয়ার খলজি। অথচ তার সম্পর্কে কতটুকুই বা লেখা আছে ইতিহাসের পাতায়? যা লেখা আছে, তাও বখতিয়ারের মৃত্যুর অর্ধশতাব্দী পরে তারই এক সহযোদ্ধার কাছে থেকে শুনে। বৃদ্ধ সেই সহযোদ্ধার বর্ণিত ইতিহাস লিখে রেখে গেছেন পারস্য দেশীয় ইতিহাসবিদ, মিনহাজ-ই-সিরাজ, তার ‘ত্ববাকত-ই-নাসিরী’ গ্রন্থে। স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতি এবং শ্রুতিনির্ভর ইতিহাসে থাকে অসামঞ্জস্য, থাকে ভুল। থাকে অনিচ্ছাকৃত বর্জন কিংবা প¶পাতদুষ্ট অতিরঞ্জন। থাকে লেখকের ব্যক্তিগত মতামত ও ধর্মীয় মতবাদের প্রতিফলন। আর সেই কারণেই ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের কাছে বখতিয়ার হয়ে উঠেছে এক অন্যতম বিতর্কিত চরিত্রের নাম। প¶ে ও বিপ¶ে হয়েছে প্রচুর বিতর্ক। হয়েছে অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ। আমি ইতিহাসবিদ কিংবা গবেষক নই। সেই সব বিতর্ক ও বিশ্লেষণের প্রতি কোনো আগ্রহ নেই আমার। আমি খোঁজার চেষ্টা করেছি সেই উচ্চাভিলাষী বখতিয়ারকে, যে প্রায় নিঃস্ব অবস্থায় আফগানি¯—ান থেকে এসে তৎকালীন মগধ ও গৌড়ের অধিপতি হয়েছিল। আমি দেখার চেষ্টা করেছি সেই অদম্য অশ্বারোহীকে, যে বাংলা ও বিহারে ধূমকেতুর মতো উদয় হয়েছিল, আবার উল্কার মতোই হারিয়ে গিয়েছিল। আমি বোঝার চেষ্টা করেছি একজন মানুষ বখতিয়ারকে, যার জীবনের সুখ দুঃখ, হাসি কান্না, প্রেম ভালোবাসার কথা কেউ বলেনি। ব্যক্তি বখতিয়ারের বর্ণাঢ্য সেই জীবনকে ধরতে গিয়ে, আমাকে বুঝতে হয়েছে তৎকালীন ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট। পড়তে হয়েছে প্রথতযশা সব লেখকদের প্রচুর বইপত্র। কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ একটা নির্ঘণ্ট পরিশিষ্টে যুক্ত করা হলো। সব শেষে বলি, আমি কোনো ইতিহাস লিখিনি। ঐতিহাসিক চরিত্র নিয়ে উপন্যাস লিখেছি। তবে চেষ্টা করেছি, ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রাখার। চেষ্টা করেছি, বর্ণিত সকল ঐতিহাসিক চরিত্রের প্রতি নির্মোহ ও নিরপেক্ষ থাকার। কতটুকু সার্থক হয়েছি, সে বিচারের ভার রইল বিদগ্ধ পাঠকের উপর।
কখন স্যার বেরিয়ে যান টের পাই না। আমি ঠায় বসে থাকি। ছেলেরা পরের ক্লাসের জন্য ছােটে। কেন জানি আজ আর আমার ক্লাসে যাবার কোনাে তাড়া থাকে না। সব শেষে আমি বের হই । শূন্য বুকে এলােমেলাে হাঁটি করিডােরে। - শুনুন। চমকে পিছন ফিরি । দেখি, নীলা দাঁড়িয়ে করিডােরে। একা। নীরবে তাকাই ওর দিকে। ডাগর কালাে চোখ মেলে অভিমানী সুরে বলে, এই এক সপ্তাহ আসেননি কেন? আমি যেন হঠাৎ জীবনানন্দ দাশ হয়ে যাই। সামনে দাড়িয়ে শ্রাবস্তির কারুকাজ করা মুখের বনলতা সেন। যেন বলছে; "এতদিন কোথায় ছিলেন? পাখির নীড়ের। মতাে চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।" বিএল কলেজের করিডােরে দাঁড়িয়ে, সতেরাে বছরের এক কিশাের তারই এক সহপাঠিনীর মুখে দেখেছিল শ্রাবস্তীর কারু কাজ। তার ডাগর কালাে চোখে দেখেছিল ছেলেবেলায় গ্রামের বাড়িতে দেখা কাজলদিঘি। যে দিঘিতে সাঁতার না জানা বালকের মতাে সে শুধুই তলিয়ে যেত। কল্পনায় সেই কিশােরীকে কখনাে সে ভাবত পুরুরবার প্রেমে পাগল উর্বশী, কখনাে বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভাঙানাে মেনকা কিংবা বুকে ঝড় তােলা ছন্দে চলা মন্দাকিনী, কখনাে বা পাখির নীড়ের মতাে চোখের বনলতা সেন। ভৈরবের তীরে বসে সেই দুই কিশাের কিশােরী রচেছিল এক অসম্ভব প্রেমের মহাকাব্য। তীরে পৌছুবে না জেনেও দুর্বল হাতে সেই নদীতে বেয়েছিল এক মায়াবী প্রেমের পানসিনাও। বনলতা এমনই দুই কিশাের-কিশােরীর কষ্ট মধুর প্রেমকাহিনি।
এই গ্রন্থে আমার পাঁচ বছরের ইস্তাম্বুল-জীবনের কিছু মুহূর্তকে কখনো গদ্যে, কখনো পদ্যে, কখনোবা স্বপ্নের ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছি। জেগে থেকে ইস্তাম্বুলের যা কিছু দেখেছি, তার পাশাপাশি এই শহরে ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নগুলোর কদর না করলে এই স্মৃতিকথা অপূর্ণ থেকে যেত। বিশেষ করে এই পাঁচ বছরের প্রায় অর্ধাংশ আমাকে চলনশক্তিহীন জীবন যাপন করতে হয়েছে, এখনো তা-ই। হুইলচেয়ারে করে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ ইদানীং আর খুব একটা হয় না। তাই লুসিড ড্রিমিং অনেকটা ভরসা…