একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের মাটিতে হলেও সে যুদ্ধের আড়ালে রয়েছে অনেক যুদ্ধ যা সংঘটিত হয় বাংলার মাটি থেকে দূরে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, অথচ কত জানা-অজানা মানুষ সে যুদ্ধে আমাদের পক্ষ নিয়ে লড়াই করেছে। এই গ্রন্থে রয়েছে সেই সব কিছু জানা-অজানা মানুষের কথা। রয়েছে সেই যুদ্ধের পেছনে যুদ্ধের কিছু কাহিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে, জানুয়ারি ১৯৭১-এ একটি ভারতীয় বিমান হাইজ্যাকের কাহিনি দিয়ে এই গ্রন্থের শুরু। আমরা সেই হাইজ্যাকের কথা অনেকেই মনে রাখিনি, কিন্তু সমর কৌশলবিদেরা একমত, সেই ঘটনা মুক্তিযুদ্ধের ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলেছিল। এছাড়াও রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের পক্ষে সােভিয়েত কূটনীতিক ইয়াকভ মালিকের সাহসী ভূমিকার বিবরণ, বাংলাদেশের গণহত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী মার্কিন কূটনীতিক আর্চার ব্লাডের প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি, একাত্তরের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী মার্কিন সাংবাদিক সিডনি শ্যানবার্গের একটি সাক্ষ্যভাষ্য ও মার্কিন নৌ-বন্দরে পাকিস্তানি অস্ত্রবাহী জাহাজ অবরােধের অবিশ্বাস্য কাহিনী।
“ঔপনিবেশিক ভারতে বিলাতি নারীরা” বইয়ের ফ্ল্যাপের কথা: নথিপত্র অনুযায়ী ১৬১৭ সালে মিসেস হাডসন এবং তার কাজের মেয়ে ফ্রান্সেস ওয়েব প্রথম ভারতে আসা দুই বিলাতি নারী । তবে আঠারাে শতকের শুরু থেকেই বিলাতি নারীরা বিভিন্ন কারণে ভারতে পারি জমান। ভারতে তারা কখনাে কারাে স্ত্রী, কখনাে প্রেমিকা, কখনাে হাসপাতালের সেবিকা হিসেবে, আবার কেউ মিশনারির কাজ, আবার কেউ রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পরেছিলেন সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন কাজের সাথেও যুক্ত ছিলেন ভারতে অবস্থানরত এই বিলাতি নারীরা ছিলেন ঠিক আমাদের মতই রক্তমাংসের মানুষ। বিভিন্ন রকম ছল-চাতুরী, লােভ-হিংসা-বিদ্বেষ, কাম-প্রেম-ভালােবাসায় তাদের জীবন ছিল সিক্ত। এক চিলতে সুখের খোজে এই বিলাতি নারীরা যখন ভারতে পারি জমান তখন তাদের চোখ ভরা ছিল স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন কারাে জীবনে সত্য হয়ে ধরা দিয়েছিল আবার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে গিয়ে কেউ কেউ জীবনসংগ্রাম থেকে ছিটকেও পরেছিলেন। তবে এ কথা বলা যায় যে, তাদের জীবন ছিল নানান মাত্রায় বৈচিত্রতায় ভরপুর। ঔপনিবেশিক ভারতে বিলাতি নারীরা গ্রন্থটিতে ঔপনিবেশিক ভারতে বিলাতি নারীদের জীবন চিত্রটি অঙ্কন করার চেষ্টা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে আসা ইমিগ্র্যান্ট পরিবারগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন দেশের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার সংগ্রাম থেকে উত্তরণের আগেই তাদের সন্তানদের নিয়ে আবর্তিত হয় নতুন সংকটে। সেই সংকট নানাবিধ। মা-বাবার হোম সিকনেস যেমন দেশের প্রতি আত্মিক টানকে জিইয়ে রাখে, সন্তানদের হৃদয়ে তেমন কোনো অনুভব টেরই হয় না। বরং তারা ক্রমশ মিশে যেতে চায় আমেরিকার সমাজে।বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের দূরত্ব তৈরি হতে থাকে পরিবারের সঙ্গে। পরিবারের চাপ তাদের বাঙালি এবং মুসলমান (যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী) করে রাখার জন্য, আর তাদের স্বতঃস্ফূর্ততা থাকে আমেরিকান হওয়ার। এই দুই টানাপোড়নে তাদের যে মানসিক ক্ষরণ ও দ্ব›দ্ব তা অনেকের পক্ষে বোঝা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আমেরিকায় জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। তারা স্কুল-কলেজ ও কর্মজীবনে মোটা দাগে সাফল্য অর্জন করছে। কিন্তু তাদের পরিচয় নিয়ে তারা অনেকটা বিভ্রান্ত থাকে। বাংলা বলতে না পারার জন্য তারা নিজেরাও সংকুচিত হয়ে থাকে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে, আবার কিছু কিছু বড় শহর ছাড়া অন্যত্র বাংলা শেখাটাও সহজ নয়। এইসব ছেলেমেয়েদের বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন নিয়েও শুরু হয় অন্যরকম জটিলতা। মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে সন্তানদের স্বপ্ন যেন ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। ঘরে এবং বাইরে নানা মাত্রার অশান্তি বাংলাদেশ থেকে আসা ইমিগ্র্যান্ট বা-বাবা এবং এদেশে জন্ম নেয়া তাদের সন্তানদের নিজ নিজ সংকট ও মনোবেদনা তাদের আর্থিক সাচ্ছন্দকে অনেকটাই আড়ালে ফেলে দেয়। মিজান রহমান আমেরিকায় আমাদের নতুন প্রজন্ম বইটিতে এইসব সংকট ও মনোবেদনার স্বরূপ অনুসন্ধান করেছেন।