আর্মেনিয়ার দিভিন উপত্যকায় দশ হাজার সদস্যের একটা মুসিলম জনপদ আজ বিপন্ন। সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবির বংশধরদের সর্বশেষ শাখা এরা। অদৃশ্য এক ষড়যন্ত্র এসে ঘিরে ধরেছে তাদের। তদন্ত করতে গিয়ে চার দক্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নির্মমভাবে নিহত। আহমদ মুসা ছুটল আর্মেনিয়া সীমান্তে। দিভিন সংকটের সমাধান শেষে আহমদ মুসা ছুটল সব ষড়যন্ত্রের হোতা সেন্ট সেমভেলের সন্ধানে। সবচেয়ে সুরক্ষিত, ভয়ংকর বিপজ্জনক সে ঘাঁটিতে আহমদ মুসার অভিযান। কী ঘটবে সেখানে? দুই লাখ মানুষের নিউ ট্রেজার আইল্যান্ড- গুপ্তধন সঞ্চিত নতুন রত্ন দ্বীপ। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের দ্বীপটা যেন শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের প্রতি”ছবি। ধীরে ধীরে শুরু হলো অবিশ্বাস আর বিভেদ। সামনে এগোতে গিয়ে আহমদ মুসা দেখল অদৃশ্য ষড়যন্ত্র অনেক গভীরে! ওদের দেশ নেই, নাম নেই, পরিচয় নেই। ছায়ার সঙ্গে শুরু হলো ভয়ংকর লড়াই। রত্নদ্বীপের ওপর ঘনিয়ে এলো মহাবিপদ, যে বিপদ ধুলায় মিশিয়ে দেবে রত্নদ্বীপকে। ঘটনাস্রোত আহমদ মুসাকে আবার নিয়ে এলো হুই-উইঘুরদের দেশে। মৈত্রী ও সমঝোতার অবস্থা ভেঙে পড়ায় উইঘুররা আবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ভয়ংকর শক্তিশালী সন্ত্রাসীরা চীনা রাজতন্ত্রের উত্তরসূরি এবং বাইরের সমর্থনপুষ্ট। এদের লক্ষ্য নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। এরা একদিকে উইঘুরদের উসকানি দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকারকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। কীভাবে হুই-উইঘুরদের রক্ষার মিশন নিয়ে এগোচ্ছে আহমদ মুসা?
‘থ্রি জিরো’ নামের ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী টার্গেট করেছে ওআইসির গোপন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আইআরটি’-কে। আইআরটি আবিষ্কার করেছেন ‘সোর্ড’ নামের একটি মানবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। থ্রি জিরোর টার্গেট সোর্ড-এর ফর্মুলা হাত করা। আহমদ মুসা এই ষড়যন্ত্রের কণ্ঠরোধে যে ডালেই বসেছে, সে ডালই ভেঙে পড়ছে। সোর্ড অস্ত্রের জনক বিজ্ঞানী আন্দালুসিকে কিডন্যাপ করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা প্রেসিডেন্টকে পণবন্দি করার পরিকল্পনা করল। তারপর... টার্কিস ‘আরা আরিয়াস’ এলাকায় পাঁচশো পরিবারের বাস। হঠাৎ করেই এই এলাকায় মাফিয়া-সন্ত্রাসের উদ্ভব। আজদা আয়েশা জার্মানি থেকে পিএইচডি করে দেশে ফিরে দেখল তার ভাই আতা সালাহ উদ্দিনের যাবজ্জীবন জেল। ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখা গেল গভীর ষড়যন্ত্রের এক গুঞ্জন। অন্যদিকে পূর্ব আনাতোলিয়া ঘিরে একটা ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে গোপন সংগঠন হোলি আরারাত গ্রুপ। সেনাবাহিনীর এক জেনারেল ষড়যন্ত্রের গোড়ায়। সংঘাত-সংঘর্ষ পাড়ি দিয়ে সেখানে আবারও ফিরে এলো আহমদ মুসা। ওদের ষড়যন্ত্র কি সফলতার দ্বারপ্রান্তে? প্রতিভাধর কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত নিখোঁজ হচ্ছে দুনিয়া থেকে। এ নিয়ে হইচই হচ্ছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। এগিয়ে এসেছে আহমদ মুসা। কিন্তু চারদিকে শুধুই অন্ধকার? ‘ব্ল্যাক সান সিন্ডিকেট’-এই নামটাই সে শুধু পেয়েছে। গোটা দুনিয়ায় ওদের হাত, ওদের উপস্থিতি। অবশেষে সে জানতে পারল, কোনো এক ‘অ্যাটল দ্বীপ’ তাদের ঠিকানা। কোথায় সে দ্বীপ, তারই সন্ধানে আহমদ মুসার নতুন যাত্রা।
হোটেল ডায়মন্ড ড্রপ-এর অ্যাপে· রেস্টুরেন্টে বন্দি হলো আহমদ মুসা। ‘মতু’ শব্দ থেকে মতুতুংগা অ্যাটল দ্বীপের সন্ধান পেল সে। এর অভ্যন্তরেই ব্যাক সান সিন্ডিকেট-এর হেড কোয়ার্টার। সুরক্ষিত ভয়ংকর সে দুর্গে আহমদ মুসাকে প্রবেশ করতে হবে সম্পূর্ণ একা। কিন্তু কীভাবে? ক্লোন ষড়যন্ত্র- বিজ্ঞানের এক ভয়ংকর অপব্যবহার। বছরের পর বছর ধরে চলা এ ষড়যন্ত্র ধরা পড়ল এক নারীর চোখে। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে সেই নারী তার ডায়েরি তুলে দেয় আহমদ মুসার হাতে। কী করবে আহমদ মুসা? একটা ক্ষীণ সন্দেহ সামনে রেখে অ্যারেন্ডসি যাত্রা। উন্মুক্ত হবে কি ভয়াবহ ক্লোন ষড়যন্ত্র? আহমদ মুসা যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে, সেই সময় খবর এলো আমেরিকায় তার পরিবারের ওপর ভয়াবহ বিপদ। পুরোনো শত্রুরা একজোট হয়েছে তার স্ত্রী-সন্তানকে গিনিপিগ বানিয়ে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার। আহমদ মুসা ছুটল ওয়াশিংটনে। সামনে এলো নতুন এক ষড়যন্ত্র? সন্ত্রাসী ‘এইচ থ্রি’-র কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে আহমদ মুসা। এই মুক্তিটাই আবার সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে তার এবং আমেরিকান সরকারের জন্য। আহমদ মুসা সব গোপন তথ্য আমেরিকান সরকারকে জানিয়ে দিলে আমেরিকা অ্যাকশনে আসবে এই ভয়ে ‘এইচ থ্রি’ আমেরিকার ওপর ভয়ংকর গোপন অস্ত্র প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা। ...এরপর আমেরিকার ওপর তিন দিনের আল্টিমেটামের মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা। কী করবে আহমদ মুসা?
শাহ আলমগিরের সন্ধানে রস দ্বীপে এসে বন্দি হলেন আহমদ মুসা। পালাতে গিয়ে আহত আহমদ মুসা গ্যাসের প্রভাবে সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে গেলেন জঙ্গলে। এসময় হাজির ড্যানিশ দেবানন্দ ও ডা. সুস্মিতা বালাজি। এদিকে মহাগুরু সংকরাচার্যের আল্টিমেটাম। বারো ঘণ্টার মধ্যে আহমদ মুসা আত্মসমর্পণ না করলে শাহ বানু ও শাহারা বানুর ভাগ্যে জুটবে লোমহর্ষক পরিণতি। এক ডুবো পাহাড়ের কারণে শাহ আমলগিরকে উদ্ধারে পা বাড়াতেই পারছে না সে। তাহলে কি উদ্ধার হবে না শাহ আলমগির? একদিকে শাসকশ্রেণি, অন্যদিকে অজানা সন্ত্রাসী- এ দুয়ের মধ্যে পড়ে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী শাহ পরিবারের নির্মম বিপর্যয়। বন্দি হন পরিবারের শীর্ষ ব্যক্তি জাবের জহির উদ্দিন। কোনো উপায় না দেখে পাত্তানি শাহজাদি জয়নব জোবায়দা আল্লাহর নামে সাগরের বুকে এক খোলা চিঠি ভাসিয়ে দিলো। শুরু হলো অপরূপ এক কাহিনি... জাবের জহির উদ্দিনকে উদ্ধার করতে গিয়ে থাই গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু ব্ল্যাক ইগল। তাদের নির্মূলে ঘটনার গভীর স্রোতে হাবুডুবু খেতে থাকল আহমদ মুসা। টিআইটির নিরাপত্তাবলয় দুর্বল হয়ে পড়ছে। রহস্যজনকভাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় ডাক পড়ে আহমদ মুসার। আসতে না আসতেই উপর্যুপরি আক্রমণে দিশেহারা তিনি। শুরু হলো অন্ধকারের যাত্রা। অবশেষে সন্ধান পেল ঘরের শত্রু বিভীষণ আয়েশা আজিমার। সব মিলিয়ে ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের এক কালো থাবা।
জেনারেল শ্যারন হাতে বন্দি আহমদ মুসাকে বাঁচাতে নিজ ধর্ম আর পিতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় সাগরিকা সেন। শেষ মুহূর্তে আহমদ মুসার পাশে এফবিআই প্রধান জর্জ আব্রাহামকে দাঁড়াতে দেখে পাগলপ্রায় শ্যারন ছোবল হানল সারা জেফারসনের ওপর। মার্কিন কোর্টের রায় শ্যারন-জোনস চক্রের বিরুদ্ধে যাওয়ায় আমেরিকা থেকে অক্টোপাসের বিদায় ঘণ্টা বেজে ওঠে। ‘মাসুস’ এবং ‘সুরিনাম পিপলস কংগ্রেস’ সুরিনামে মুসলমানদের মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। একদিকে ফাতিমা নাসমুন আত্মসমর্পণ না করলে তার হবু স্বামীকে হত্যার হুমকি, অপরদিকে নির্দিষ্ট তারিখে নমিনেশন পেপার জমা না দিলে মুসলিমশূন্য হয়ে পড়বে সুরিনামের রাজনীতি। এমতাবস্থায় আহমদ মুসার আহমদ হাত্তাকে নিয়ে সুরিনামে প্রবেশ। সামনে আসে ঐতিহ্যবাহী টেরেক পরিবারের গুপ্তধনের স্বার্থ। নির্বাচনে আহমদ হাত্তার বিজয় এবং স্বর্ণ উদ্ধারের নৈপথ্যের নায়ক আহমদ মুসাকে ধ্বংস করতে চায় মাসুস। ভাড়া করে মাফিয়াদের। সংঘাতের চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে লিন্ডা লেরেন নামের এক নিষ্পাপ বালিকাকে বাঁচাতে গিয়ে বন্দি হয় আহমদ মুসা। কে এই লিন্ডা লেরেন? সুরিনাম মিশন শেষ হতেই ট্রাসবার্গে আহমদ মুসা। উদ্দেশ্য টুইন টাওয়ার ধ্বংসের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনকারী সাত গোয়েন্দাসহ স্পুটনিক ধ্বংসের শিকড়ে যাওয়া। কিন্তু সেখানে ঘটতে থাকে এক রক্তক্ষয়ী ঘটনা। এসব মাড়িয়ে আহমদ মুসা কি পারবে স্পুটনিক ধ্বংসের গোড়ায় পৌঁছতে?
এবার সাউথ টার্কস দ্বীপে হোয়াইট ইগলের মুখোমুখি আহমদ মুসা। টার্ক দ্বীপ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেলেও হোয়াইট ইগলের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বন্দি হলো সে। বন্দি আহমদ মুসাকে বিলিয়ন ডলারে ইজরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে বিক্রি করে করে দিতে চায় হোয়াইট ইগল। একদিকে হোয়াইট ইগল, ক্লু-ক্ল্যাক্স-ক্লান ও সিনবেথ অন্যদিকে আহমদ মুসা, শিলা সুসান, মেরি রোজ ও সান ওয়াকার। শুরু হলো নতুন চমক। লায়লা জেনিফা ও মার্গারেটকে উদ্ধারের পূর্বেই আহমদ মুসাকে ছুটতে হলো নিউ মেক্সিকোর সবুজ পাহাড়ে। বন্দি কারসেন ঘানেমকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেই বন্দি হয়ে এক নতুন রহস্য ও সংকটের মুখোমুখি আহমদ মুসা। এমন ঘোর অমানিশায় পরিচয় ঘটে সান্তা আনা পাবলো এবং ‘ফ্রি আমেরিকান’ নেতা বেঞ্জামিন বেকনের সঙ্গে। আর আত্মরক্ষা নয়, এবার আক্রমণের পালা। পালটা আক্রমণের অস্ত্র শানিয়েই আহমদ মুসা অগ্রসর হয় চরম শত্রু হয়ে উঠা র্জজ আব্রাহামকে বন্ধু বানানোর জন্য। তার দেওয়া তথ্যে ইহুদিদের বীভৎস রূপ দেখে কেঁপে উঠে মার্কিন প্রশাসন। শুরু হয় ইহুদিবাদীর বিরুদ্ধে আরেক যুদ্ধ। অপরদিকে মন্টিসলোতে বিপদের সম্মুখীন সারা জেফারসন। আবার শ্যারনের শেষ ছোবল গিয়ে আঘাত হানে মার্কিন প্রশাসনকে। কে জিতবে এই দ্বন্দ্বে? ষড়যন্ত্র নাকি দেশপ্রেম?