বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামকে যারা লেখনীর মাধ্যমে ত্বরান্বিত করেছেন, তাঁদেরই অন্যতম আবদুল গাফফার চৌধুরী। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন ও ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। কিভাবে পাকিস্তানি শৃঙ্খল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে সেসব ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী তিনি। তার অসংখ্য লেখায় তিনি এসব ঘটনার বিশ্বস্ত বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন যা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। আবদুল গাফফার চৌধুরী বাঙালির অনির্বাণ বাতিঘর ও নির্ভীক কলমযোদ্ধা হিসেবেই নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশের যেকোনো দুঃসময়ে তাঁর কলম প্রতিবাদী হয়ে ওঠেছে। এ জন্য তাঁকে অনেক সময় বাংলাদেশবিরোধী গোষ্ঠীর অত্যাচার-অপমানও সহ্য করতে হয়েছে। তবু তিনি বাংলাদেশের পক্ষে তার অবস্থান অনড় রেখেছেন। লোভ, ভয় বা অপশক্তির চোখে রাঙানিতে কখনোই তিনি নতজানু হননি। বলতে দ্বিধা নেই, আবদুল গাফফার চৌধুরীর মতো দৃঢ়চেতা সাংবাদিক-কলামলেখক বর্তমান বাংলাদেশে বিরল। অসংখ্য পাঠকের আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা বিবেচনা করেই আবদুল গাফফার চৌধুরীর ‘বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির পথ’ গ্রন্থটি প্রকাশ করা হলো।
‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ একটি মঞ্চ নাটক। প্রথম অভিনীত হয় ২০০৪ সালের মার্চ মাসে। তারপর নিউইয়র্কে। মঞ্চ নাটকের অধিকাংশ বৈশিষ্ট্য বজায় রেখেই এটিকে চলচ্চিত্রে রূপায়িত করা হয়েছে। এই নাটক মঞ্চায়নে ও চলচ্চিত্রে রূপায়নে আমাকে। অনেক বাধা বিঘ্নের সম্মুখিন হতে হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক খ্যাতনামা অভিনেতা-অভিনেত্রী সরকারী রােষের ভয়ে এই নাটকে ও তার ছায়াছবিতে অভিনয়ে রাজি হন নি । তবু যারা সাহসের সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। পলাশীর যুদ্ধ ও সিরাজউদ্দৌল্লাকে হত্যার ঘটনা নিয়ে নাটক লেখা হয়েছিল ঘটনার | পৌনে দু’শ বছর পর। আমি বঙ্গবন্ধু-হত্যা নিয়ে এই নাটক লিখেছি মাত্র ঊনত্রিশ বছর পর । এই কাহিনীর অধিকাংশ চরিত্র এখনাে বেঁচে আছেন, ফলে আমাকে অনেক সতর্কতার সঙ্গে ঘটনাবিন্যাস। ঘটাতে হয়েছে। যতদূর সম্ভব আমি ঘটনার বাস্তব সত্যের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করেছি। এজন্যে নিজের সংগৃহীত তথ্য, নির্ভরযােগ্য সূত্রের তথ্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় যে রায় প্রকাশিত হয়েছে তার উপর নির্ভর করেছি। ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনাে চরিত্রকে মসি মলিন করার চেষ্টা করিনি। সেদিক থেকে এটিকে একটি ডকুড্রামা বলা চলে।