মেলিখানের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ল না রানা-সোহানা।বরং কোডবুকটা নিয়ে চলে এল নিরাপদে। এবার রহস্যভেদের পালা। কিন্তু একটা বোতল সিদোরভের কাছে। কোডটাও। রানা-সোহানা সিদ্ধান্ত নিল, হানা দেবে সিংহের গুহায়। কৃষ্ণসাগরের তীরে সুরক্ষিত তার ম্যানসন- ঝুঁকিটা বোধহয় বেশিই হয়ে গেল। ট্রেজারম্যাপটা কোথেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওদেরকে? শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি রানার নিয়ন্ত্রণে থাকল না। পাচার হয়ে গেল গোপন খবর কে জানত, রানাকে একহাত দেখে নিতে অবশেষে স্বয়ং হাজির হয়ে যাবে মাফিয়াসদার?
রানা জানতে চাইছে, সিআইএ-র কর্মকর্তা ডক্টর ডেভিড গ্রেবারের রহস্যময় ওই ল্যাবে কী আছে। ওদিকে ওরা জানে, ভয়ঙ্কর হিংস্র, রক্ত-পিশাচ ওই দানব আসছে ধেয়ে। গলা শুকিয়ে গেছে সবার। কেউ জানে না, একশ’ জনেরও বেশি সশস্ত্র সৈনিক ওটাকে ঠেকাতে পারবে কি না।…প্রাণ বাঁচাতে চলল ওদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি! আবারও কি রাতের আঁধারে শুরু হবে নিষ্ঠুর গণহত্যা, ভিজে যাবে মাটি অসংখ্য মানুষের তাজা রক্তে? ওই রাক্ষস-বধ করতে এবং সিআইএ-র কুটিল পরিকল্পনা ঠেকাতে গিয়ে শেষে মস্ত ঝুঁকি নিল রানা – দানবের মুখোমুখি হবে বলে চলে গেল আদিম যুগের বিশাল এক উত্তপ্ত মৃত্যু-গুহায়!
কেন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত? তবে কি আসছে মারাত্মক খরা, তারপর ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ? এ বিষয়ে রিসার্চ করতে গিয়েই গায়েব হয়ে গেল নুমার তিনজন গবেষক। রানা-সোহেল তখন ছুটিতে। বন্ধু রাহাত খানের সহায়তা চাইলেন নুমা চিফ অ্যাডমিরাল জর্জ হ্যামিলটন। মালদ্বীপে কার্যত বাতিল হলো রানা ও সোহেলের ছুটি। বিসিআই চিফের নির্দেশে তৎপর হয়ে উঠল ওরা। রানা জানতে চাইল, কেন এক অদ্ভুত সুন্দরী চোখ রেখেছে। ওদের ওপর । কিডন্যাপারদের কাছ থেকে মেয়েটাকে উদ্ধার করেই ছুটল ভাসমান এক দ্বীপের পিছনে, সেখান থেকে ছুটল দুই বন্ধু সুদূর ইয়েমেনে। পৌছেও গেল শত্রু-শিবিরে, দেখল ন্যানোবটের কারখানা, কিন্তু কিছু করার আগেই ফেলে দেয়া হলো ওদেরকে গভীর এক মৃত্যু-কূপে!
সত্যিই সবুজ-শ্যামল-মায়াময় এই বাংলাদেশ হয়ে যাবে ধূ-ধূ মরুভূমি? কিছুতেই না! ইয়েমেনের মৃত্যু-কূপ থেকে মুক্ত হয়ে দুনিয়ার দুই দিকে ছুটল রানা ও সোহেল। শত্রু বিমান দখল করার পরও আকাশের বহু ওপর থেকে জ্বলন্ত বিমান ছেড়ে ঝাঁপ দিতে বাধ্য হলো রানা। তারপর বন্দি হলো রূপকথার মত অদ্ভুত এক সভ্যতা বিবর্জিত দেশে। ওদিকে শত্রু-ট্রাকে চেপে পৌছুল সোহেল মিশরে । খুনি জায়েদের ন্যানোবটগুলো নাসের হরদের প্রকাণ্ড আসওয়ান ড্যাম উড়িয়ে দেয়ার আগেই তা ঠেকাতে হবে! একা পারবে সোহেল? অবশেষে নৃশংস একদল খুনির মোকাবিলা করতে ভাসমান দ্বীপে গিয়ে উঠল রানা। সেখানে ওকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে চায় সর্বভুক নরকের কীট!
কাজী আনোয়ার হোসেন সহযোগীঃ কাজী মায়মুর হোসেন অসুস্থ রানা ভাবতেও পারেনি, আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাবে এই জটিল ষড়যন্ত্রের জালে। যে হারিয়ে গেছে দশ হাজার বছর আগে, নতুন করে আবারও কি ফিরল সেই দানব? নির্মমভাবে খুন করছে সৈনিক, বিজ্ঞানী ও তাদের সহকারীদের। ইউ.এস. আর্মির অনুরোধে ভয়ঙ্কর বেপরোয়া ওই নৃশংস জানোয়ারের পিছু নিল রানা, সঙ্গে দক্ষ ক’জন সশস্ত্র যোদ্ধা। কিন্তু হাড়ে হাড়ে বুঝল ওরা, বৃথা ওসব আধুনিক অস্ত্র! অনায়াসেই আলাস্কার তুষারাচ্ছন্ন অরণ্য-পর্বতে ওদেরকে হত্যা করছে। ওটা! ধাওয়া খেয়ে পালাতে লাগল ওরা। তারপর আঁধার গিরিখাদে আহত রানার মুখোমুখি হলো ওই নিষ্ঠুর পশু অন্তরের গভীরে রানা বুঝে নিল, আর কোনও উপায় নেই!
সোহানাকে কথা দিয়েছিল রানা, পেনাং দ্বীপের ‘পেস্তা পুলাউ’ উৎসবে দেখা হবে দু’জনের। দিনে ডুব দেবে ওরা বাটু ফারেঙ্গী সৈকতের সমুদ্র গভীরে-ড্রাগনস্পটে, রাতে ডুব দেবে একে অপরের মনের গহীন গভীরে; তুলে আনবে মণি-মুক্তো যে যা পায়। ড্রাগনস্পটে ডুব দিয়ে সোহানা তুলে আনল ছুরি, কাঁটা চামচ-ঘর-সংসারের সামগ্রী। আর রানা? রানা তুলে আনল ছোট্ট একটি অ্যাম্পুল। কীসের অ্যাম্পুল ওটা? ভয় দেখাতে চাইছে কেন ওদের দুর্ধর্ষ বুকিত নাসেরী?