বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত দুঃসাহসী স্পাই গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে। বিচিত্র তার জীবন। অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি। কোমলে-কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর-সুন্দর এক অন্তর। একা। টানে সবাইকে, কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না। কোথাও অন্যায় অবিচার অত্যাচার দেখলে রুখে দাঁড়ায়। পদে পদে তার বিপদ শিহরণ ভয় আর মৃত্যুর হাতছানি। আসুন, এই দুর্ধর্ষ চির-নবীন যুবকটির সঙ্গে পরিচিত হই। সীমিত গণ্ডিবদ্ধ জীবনের একঘেয়েমি থেকে একটানে তুলে নিয়ে যাবে ও আমাদের স্বপ্নের এক আশ্চর্য মায়াবী জগতে। আপনি আমন্ত্রিত। ধন্যবাদ।
শত্রু ভয়ঙ্কর আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে রানা। ইস্তাম্বুলের সাধারণ বিচারকক্ষে বিচার হচ্ছে ওর। খুনের আসামী সে। RCD শিপ বিল্ডিং করপোরেশনের প্রথম জাহাজ এম.ভি. রুস্তম এবং রাশিয়ার নব আবিষ্কৃত আণবিক অস্ত্র Lenin M-315-কে ঘিরে সৃষ্টি হলো এক ভয়ঙ্কর ঘটনাচক্রের আবর্ত। তুফান উঠল ভূমধ্যসাগরে। মাসুদ রানা জড়িয়ে পড়ল এক প্রচণ্ড প্রাণঘাতী সংঘর্ষে। অরক্ষিত জলসীমা মায়ানমার, ইয়াংগন। পাকিস্তান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের শাখা অফিস। বার্মিজ জেনারেল উ নিমুচি-র ভাইপোকে খুন করে ওখান থেকে পালাল শারমিন, ডকুমেন্টটা আগেই সরিয়ে ফেলেছে। ব্যাপারটা কী নিয়ে তা বুঝতে পেরে জ্বলে উঠল রানা। কর্নেল হুদা ও জেনারেল উ নিমুচি বাংলাদেশের কোথায় হাত দিতে যাচ্ছে শুনলে আপনারও ব্রহ্মতালু জ্বলে উঠবে।
ফ্রান্স সরকারের মৃত্যু-পরোয়ানা ঝুলছে মাথার উপর, হেড অফিসের নির্দেশে তাই লুকিয়ে আছে রানা আর্কটিকে, গবেষণার ছুতোয়। আচমকা এল বিসিআই চিফের নির্দেশ: ‘রানা, এক্ষুনি রওয়ানা হয়ে যাও। রাশার পোলার আইল্যাণ্ডে গিয়ে ঠেকাতে হবে রাফিয়ান আর্মির অ্যাটমোসফেরিক হামলা। নইলে ভস্ম হয়ে যাবে আফ্রিকা, আমেরিকা, এশিয়া ও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ। পুড়ে ছাই হয়ে যাবে বাংলাদেশও। ক্যাপ্টেন নিশাত, দুই মেরিন, রানা নিজে ও তিনজন গবেষক- এই সাতজন চলল শীতল মৃত্যুদ্বীপে। বিপক্ষে দুইশো বেপরোয়া, খুনি যোদ্ধা। আর ফ্রান্স থেকে আসা কমাণ্ডোরা। হামলা শুরু হতেই দিশেহারা হয়ে পড়ল রানা। সফেদ বরফের রাজ্যে কোথাও পালাবার রাস্তা নেই, মৃত্যু নিশ্চিত। কিছুই পরোয়া না করে পাল্টা আক্রমণে গেল রানা। কিন্তু স্বপ্নেও ভাবেনি, এমন হঠাৎ করে মৃত্যু ঘটতে চলেছে ওর। কে আছে, যে মরণের ওপার থেকে ফিরিয়ে আনতে পারবে আমাদের প্রিয়, দেশপ্রেমিক, নিঃস্বার্থ রানাকে?
গম্ভীরদর্শন, ওই প্রকাণ্ড ফ্রেঞ্চ দুর্গ থেকে তিশাকে নিয়ে লেজ তুলে পালাচ্ছে রানা। কিন্তু ঘিরে ফেলেছে শত্রুরা । শেষে উঠতে হলো এক এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে। ওখানেই জানল, ম্যাজেস্টিক-১২ কাউন্সিলের মাস্টার প্ল্যান। ওরা দখল করবে গোটা দুনিয়া। একের পর এক নিউক্লিয়ার মিসাইল দিয়ে উড়িয়ে দেবে মস্ত সুব শহর। রানার এখনই চাই টাচলক-৯ ইউনিট। ..ওদিকে কী চলছে আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে? রানার পথে বাধা হয়ে উঠল শত শত যুদ্ধ-বিমান। মক্কা শহরে পড়বে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল । কখনও লাভ হয় মিসাইলের পিছু নিয়ে? তবু শেষ চেষ্টা করল রানা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল কুয়াশা। কী করে বাঁচাবে ওরা লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে? নিশ্চিত মৃত্যুকে পরোয়া করল না ওরা। এবারই বুঝি চিরবিদায় নিতে চলেছে আমাদের মাসুদ রানা ও মহৎহৃদয় কুয়াশা।
ভাঙা একটা কাঁচের বোতল। তাতে এক উড়ন্ত মৌমাছির রহস্যময় ছবি। অদ্ভুত ওই প্রতীকটা বিপাকে ফেলে দিল রানা-সোহানাকে। একের পর এক মৃত্যুফাঁদ পাতা হচ্ছে ওদের জন্যে। কারণ, ভয়ঙ্কর এক মাফিয়াসর্দারের বিরাগভাজন হয়েছে। কৌশলে বিপদ এড়িয়ে যাচ্ছিল ওরা দুজনে। ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি: যাকে সুহৃদ ভেবেছে, তারই বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়তে চলেছে ওরা শত্রুপক্ষের হাতে। এমন এক জায়গায় যেখানে গোর দেওয়া হয়েছে রহস্য সমাধানের চাবিকাঠি। শত্রু প্রবল, ওরা মাত্র দুজন। কী হয়, কী হয়!