যারা আমার, অর্থাৎ অ্যালান কোয়াটারমেইনের নাম শুনেছেন, তাঁরা হয়তো ভাবতে পারেন, ফুলের সঙ্গে এই লোকের কী সম্পর্ক। বিশেষ করে তা যদি হয় আবার অর্কিড। কিন্তু অতীতে একবার এমন চমকপ্রদ এক অর্কিড অভিযানে আমি অংশ নিয়েছিলাম যে, আমার মনে হয় তার বিস্তারিত বর্ণনা না লিখে রাখাটা অন্যায় হবে। পাঠক, যাবেন নাকি আমার সঙ্গে লিমপোপো নদীর উত্তরে সেই দুর্গম অঞ্চলে হাজারো বিপদের মুখোমুখি হতে? নেবেন সেই বিস্ময়কর অভিযানে অংশ? চলুন তা হলে। কথা দিতে পারি, নরখাদক রহস্যময় পঙ্গো জাতির হাতে বেঘোরে খুন হয়ে যাবেন না।
স্যাবটাজ ১৯৪৩ সাল। আফ্রিকা-বিজয়ের পর সিসিলি হয়ে আসতে চাইছে মিত্রবাহিনী ইউরোপের অধিকৃত মেইনল্যাণ্ডে। কিন্তু তার আগে ক্যারিডি নামের বিশাল এক জার্মান ট্রেন ফেরি ডুবাতে না পারলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে সমস্ত আক্রমণ। বার কয়েক ব্যর্থ চেষ্টার পর স্যাবটাজ-টিমের নেতৃত্বের ভার পড়ল মেজর রাহাতের ওপর। রওনা হলো সে অসাধ্য সাধনে, যেমন করে হোক ডুবিয়ে দেবে ক্যারিডি। বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স-চিফের যুবক বয়সের এক রোমহর্ষক কাহিনি। দাগী আসামী দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ চলছে।আজকের মেজর জেনারেল (অব.) রাহাত খান তখন এক তরুণ মেজর। হঠাৎ এক দায়িত্ব চাপল কাঁধে-কোর্টমার্শালে সাজা পাওয়া বারোজন কয়েদিকে দক্ষ করে তুলতে হবে স্যাবটাজে। সুইসাইড স্কোয়াড হিসেবে নাৎসি লাইনের পেছনে কাজ করবে এরা। নেতৃত্বে থাকতে হবে তাকে। ভয়ঙ্কর সব লোকজন; খুনে, বদমাশ। পারবে রাহাত ওদের বাগে আনতে?
বাস্তুহারা হয়ে লন্ডনে এসে কপালগুণে ধনী ব্যবসায়ী হয়ে গেল হুবার্ট অভ হেস্টিংস, কিন্তু অভিজাত বংশের সুন্দরী অথচ রহস্যময়ী ব্লাশকে ভালোবেসে সব হারাতে হলো। পালিয়ে চলে গেল সে তাভানতিনসুয়ু-তে (পেরু), হয়ে গেল “সমুদ্র-দেবতা”। পরিচয় হলো কুইলার সঙ্গে, প্রেম আবার এল জীবনে, কিন্তু বিদ্রোহের আগুন আলাদা করে দিল দুজনকে। বাধল চ্যাকা-য়ুক্কা বনাম ক্যাছুয়া যুদ্ধ, ঝলসে উঠল হুবার্টের তরবারি “শিখা-তরঙ্গ”, ক্যাছুয়াদের সিংহাসনে বসার সুযোগ পেল কারি। একদিন এই লোকের জীবন বাঁচিয়েছে হুবার্ট, কিন্তু আজ রাজা হয়ে সেই কারিই বলছে দরকার হলে কুইলাকে পুড়িয়ে মারবে তারপরও কোনোদিন তুলে দেবে না হুবার্টের হাতে। পাতা হলো নিশ্ছিদ্র ফাদ, অপহৃত হলো মেয়েটা, ওকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠল হুবার্ট। কিন্তু শেষ রক্ষা বোধহয় হলো না, মৃত্যু-উপত্যকায় সদলবলে হাজির হলো প্রতিশোধপরায়ণ কারি। সুতরাং আরও একবার শিখা-তরঙ্গ হাতে নিতে হলো হুবার্টকে। হ্যাগার্ড এর আরেকটি চমকপ্রদ উপন্যাস। নিয়তির কাছে মানুষের অসহায় আত্মসমর্পণের আরেকটি অনন্যসাধারণ কাহিনি।
কথা ছিল, চিরশত্রু ফাংদের কবল থেকে আমার অপহৃত ছেলেকে উদ্ধার করবেন আবাটিদের রানি, তবে তার আগে ফাংদের সিংহ-মাথার দেবতার বিশাল মূর্তিটা গুঁড়িয়ে দিতে হবে। ফিরে এলাম লণ্ডনে। খুঁজে বের করলাম পুরনো এক বন্ধুকে, সঙ্গে জুটে গেল আরও দুজন। রাইফেল আর ডিনামাইটের বহর নিয়ে আমরা চারজন রওয়ানা হয়ে গেলাম মিশরের উদ্দেশে। কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করে বসল পথপ্রদর্শক শ্যাডর্যাক, ধরা পড়ল আমার বন্ধু, সিংহের মুখে ছুঁড়ে দেয়া হলো ওকে। ওদিকে রানির প্রেমে বুঁদ হয়ে গেল আমাদের দলনেতা অলিভার, শোধ নিতে প্রস্তুত হলো রানির হবু স্বামী সেনাপতি যশুয়া, গভীর রাতে অলিভারের ঘরে ছুরি নিয়ে ঢুকল আততায়ী। মাহেন্দ্রক্ষণে ফাঁস হলো ষড়যন্ত্র: সরিয়ে নেয়া হয়েছে প্রহরীদের, এবার অপহৃত হয়ে যেতে পারেন রানি নিজেই। শুরু হয়ে গেল আবাটিদের গৃহযুদ্ধ, রানির প্রাসাদে লাগল আগুন, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভি্যোগে বিচারের সম্মুখীন হলাম আমরা, যার রায় হতে পারে একটি-মৃত্যুদণ্ড। বজ্রাহতের মতো প্রত্যক্ষ করলাম আমরা রানীর ছলনাময়ী রূপ। তারপর?
আফ্রিকায় এলাম । কেন এলাম? চট করে সে উত্তর দিতে পারব না । তবে টাকার কথা দিয়ে আরম্ভ করতে পারি । আমি ধনী। বাবার কাছ থেকে পাই তিরিশ লাখ ডলার। কিন্তু আমার চালচলন ভবঘুরের মত। …জীবনের অর্থ খুঁজতে আফ্রিকায় এল হেণ্ডারসন। তারপর জড়িয়ে পড়ল নানা ধরনের রোমাঞ্চকর ঘটনায়। বন্দি হলো আদিবাসীদের হাতে। শেষ পর্যন্ত কি প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারল সে? সংগ্রহে রাখার মত একটি বই। প্রাঞ্জল অনুবাদ। টানটান উত্তেজনায় ঠাসা।
আ টেল অভ টু সিটিজ প্যারিস ও লণ্ডন-দুই নগরীর কাহিনি নিয়ে এই বিশ্ববিখ্যাত বই। অভিজাত শ্রেণীর অনাচার ও অত্যাচারে বীতশ্রদ্ধ তাদেরই একজন, চার্লস এভরেমঁদে, ফ্রান্স থেকে চলে এসেছে ইংল্যান্ডে। এরপরেই ঘটল ফরাসী বিপ্লবের। অভিজাতদের ধরে ধরে চড়ানো হচ্ছে গিলোটিনে। এমনি সময়ে চিঠি এল, সে না ফিরলে ফাঁসী হয়ে যাবে চার্লসের এক নিরপরাধ কর্মচারীর। কাউকে কিছু না বলে ফ্রান্সে ফিরে এল এভরেমঁদে। কিন্তু প্যারিস পৌছবার আগেই ধরা পড়ে গেল বিপ্লবীদের হাতে। এবার? টম জোনস পালক পুত্র টম জোনসকে ভারি ভালবাসেন মি, অলওয়ার্দি। টমও তাঁকে সাঙ্ঘাতিক শ্রদ্ধা করে। কিন্তু মুশকিল হলো, একটা না একটা ঝামেলা সব সময় বাধিয়েই রাখে টম। তার দুরন্তপনায় লোকে অতিষ্ঠ। ভাগ্নে ব্লিফিলের প্ররোচনায় মি. অলওয়ার্দি একদিন বাড়ি থেকে বের করে দিলেন টমকে। অকূল পাথারে পড়ল টম। কারণ, ইতোমধ্যে সে প্রতিবেশীর কন্যা সোফিয়া ওয়েস্টার্নকে ভালবেসে ফেলেছে। কিন্তু ওর মত এক কপর্দকহীন যুবকের কাছে কিছুতেই মেয়ের বিয়ে দেবেন না সোফিয়ার বাবা। তিনি মেয়ের বিয়ে দিতে চান মি, অলওয়ার্দির ভাগ্নে ব্লিফিলের সঙ্গে। কিন্তু এ বিয়েতে সোফিয়ার বিন্দুমাত্র মত নেই। কী করে ঠেকাবে সে ব্লিফিলকে? কিংকং বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ডেনহ্যাম তাঁর দর্শকদের ভিন্নধর্মী অ্যাডভেঞ্চার সিনেমা উপহার দেয়ার জন্য চলে এলেন ‘খুলি দ্বীপ’ নামে সুমাত্রার এক প্রাগৈতিহাসিক দ্বীপে। ওই দ্বীপে বাস করে এক মহাদানব-কিংকং। একে নিয়েই ছবি বানানোর পরিকল্পনা করেছেন ডেনহ্যাম। কিন্তু মূর্তিমান আতঙ্কটির হাতে বন্দি হলো ছবির নায়িকা অ্যানডোরা। জীবনবাজি রেখে অ্যানডোরাকে শুধু উদ্ধারই নয়, কিংকংকে কৌশলে নিউ ইয়র্কে ধরে নিয়ে এলেন দুঃসাহসী ডেনহ্যাম। তারপর? সে এক রুদ্ধশ্বাস কাহিনি।