"সুন্দরবনে বাঘের সন্ধানে" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ চিড়িয়াখানায় গিয়ে বাঘের চোখের দিকে তাকিয়েছেন কখনো? কল্পনা করুন, ওই বাঘ আর আপনার মাঝখানে কোনো লোহার বেড়া নেই। শুধু একজোড়া জ্বলজ্বলে সোনালি চোখ তাকিয়ে আছে আপনার দিকে। সে চাউনির যে কী মহিমা-একমাত্র বাঘের নিজের রাজ্যে দাড়িয়ে দেখলে তা বুঝতে পারবেন। সুন্দরবনের বাঘ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে লেখক মনিরুল খান অনেকবার গিয়েছেন সে রাজ্যে। মুখোমুখি হয়েছেন সুন্দরবনের রাজাধিরাজের। শৈশবে বাবা সাদত আলী খানের মুখে বুনো বাঘ দেখার অভিজ্ঞতা শুনে রোমাঞ্চিত হয়েছেন বারবার। এখন মানুষ তার কাছে বাঘ দেখার গল্প শুনতে চায়। গল্পের মতো অভূতপূর্ব সব স্মৃতিচারণা মূলত সেই বাঘেরই মহিমাকীর্তন।
মানুষ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে অন্য প্রাণীর ওপর প্রভুত্ব বিস্তার করে আসছে। বিভিন্ন পরিবেশে মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন প্রাণীর একধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মানুষের বন্ধুবান্ধব প্রাণীরা। মানুষের কল্যাণে প্রাণীদের অবদান কম নয়। পৃথিবীর স্থলভাগে এবং বিশাল জলরাশিতে ছড়িয়ে আছে হরেক রকমের অমেরুদণ্ডী ও মেরুদণ্ডী প্রাণী। ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় সর্বত্রই প্রাণীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। উভয় পরিবেশে পৃথিবীজুড়ে প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষধিক। মানুষই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুদে প্রাণীদের বুদ্ধি দেখে অবাক হই। স্বাধীনভাবে বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়, আবার নিজেরাই আত্মরক্ষার কৌশলও রপ্ত করে। সকল প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সাথে খাপ খাওয়াবার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। বাসা বানাতে, খাবার সংগ্রহে, শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে যে কায়দা-কানুন তারা অবলম্বন করে তা দেখে মানুষেরও তাক লেগে যাবে। চালাকিতেও খুদে প্রাণীরা তৎপর। শিকারের পেছনে দৌড়ে কিভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয় খুদে প্রাণীদের কাছ থেকে তা আমরা জানব। খুদে পাখিরা তাদের শারীরিক কসরত দেখিয়ে আমাদের আনন্দ দেয়।
বনফুল রয়েছে আমাদের চোখের সামনে, কিন্তু কাছের এই ফুলগুলো খুব ভালোভাবে দেখা বিশেষ হয়ে ওঠে না। পথের ধারে, মাঠে-প্রান্তরে, বাড়ির আঙিনায় কতোরকম গাছে কতো ধরনের বনফুলই না ফোটে। যত্ন করে কেউ এসবের পরিচর্যা করে না, নিজের শক্তিতেই তাদের জন্ম আর বিকাশ। অথচ আমাদের জীবনে নানা উপকারে আসে এইসব বনফুল। বিশেষ করে বিভিন্ন রোগ উপশমে বনফুলের রয়েছে বহু ধরনের কার্যকারিতা। তাই বনফুল মোটেই অবহেলা করার নয়। বাংলার অজস্র বনফুল থেকে মাত্র চব্বিশটিকে বাছাই করে এখানে একটা স্তবক তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমনি আরো কতক স্তবক ক্রমে ক্রমে কিশোর-কিশোরীদের হাতে তুলে দেয়া হবে। এই পরিচিতি যদি তাদের মনোযোগী করতে পারে বনফুলের প্রতি, যত্ন নিতে শেখায় বনফুলের এবং সর্বোপরি প্রকৃতির প্রতি দরদ ও ভালোবাসায় মন ভরিয়ে তুলতে পারে তবেই সার্থক হবে লেখকের পরিশ্রম। তাই আমরা আশা করবো আরো গভীরভাবে কিশোর- কিশোরীরা তাকাবে বনফুলের দিকে, জানতে চাইবে এর পরিচয় আর বৈশিষ্ট্য, দেখবে এর গড়ন আর বাহার। তাহলেই তো বুঝতে পারবে প্রকৃতি আমাদের কতো পরম বন্ধু, আর কতোই-না আনন্দ ও শিক্ষা মেলে ধরেছে আমাদের সবার জন্য। বনফুল বিষয়ে বাংলায় অনন্য এই বইয়ের ছবি ও লেখা সাজিয়েছেন নওয়াজেশ আহমদ, নিজে যিনি প্রকৃতি-বিজ্ঞানী ও নিসর্গপ্রেমী এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রগ্রাহক। এমন বইয়ের তুলনা আর কোথায় মিলবে।"
প্রাচীনকাল থেকে মানুষের মনে মীমাংসাহীন এক প্রশ্ন, মহাকাশের পর আর কী আছে? মহাকাশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য কোনো জগৎ তো থাকতেও পারে। আশার আলো জ্বেলে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এবং অন্য গ্রহ-গ্রহান্তরেও তা থাকার সম্ভাবনা আছে। নাসার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০১৮ সাল নাগাদ মঙ্গলে মানব-মিশনের কাজের অগ্রগতি হবে। আমরাও ক্রমে নিশ্চিত হতে থাকব, মহাবিশ্বে আমরা একা নই, রয়েছে আমাদের আরও দোসর, সহোদর। এসব বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালোচনাই এ বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য।