বি-ঔপনিবেশিকতা নিয়ে মুসা আল হাফিজের বয়ান আলাদা। জ্যাক দেরিদা, ফ্রানৎস ফাঁনো, মিশেল ফুকো, নোয়াম চমস্কি কিংবা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক-এর ভাষা ধার করে বি-উপনিবেশের তাত্ত্বিক বয়ান তৈরির মধ্যে আরেক ধরনের উপনিবেশ থাকে, যার নাম ইউরোপকেন্দ্রিকতা। মুসলিম জাহানে যে বুদ্ধিজীবীরা এ ধারায় কথার ওপর কথামালা সাজিয়েছেন, তাদের ভাষ্যের কোন জায়গায় অন্তঃসারশূন্যতা-সেটা চোখে চোখ রেখে দেখিয়ে দেন মুসা আল হাফিজ। ইউরোপকেন্দ্রিকতার বাইরে গিয়ে ঔপনিবেশিকতার মোকাবিলার আদর্শিক, জ্ঞানতাত্ত্বিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বাণীভাষ্য কী হবে, কেমন হবে-সে প্রস্তাবনা আছে তার ‘মনের উপনিবেশ মনের মুক্তি’ গ্রন্থে। একজন স্বাধীন বুদ্ধিজীবীর বিশ্বাসী চোখ কীভাবে চলতি পৃথিবীর অধিপতি চিন্তা-স্রোতকে চ্যালেঞ্জ করে এবং মুক্তির পথ প্রস্তাব করে, তার লেখ্যচিত্র দেখা যেতে পারে কবি ও দার্শনিক মুসা আল হাফিজের এই গ্রন্থে।
বিশ্বসভ্যতা নির্মাণের একচ্ছত্র দাবিদার পশ্চিমারা। সেই দাবিকে ফোকাস করে তাদের হাতে নির্মিত ইতিহাসে একপাক্ষিক ভাষ্যের জয়জয়কার। খুব সচেতনভাবে তারা এড়িয়ে গেছেন মুসলমানদের অবদান। এই ধরনের অভিব্যক্তি মূলত ইতিহাসের জঘন্যতম বিকৃতি। তবে পশ্চিমারা ইতিহাসের লম্বা একটি সময়কে যতই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, ইতিহাস কখনোই নীরব ছিল না; থাকার সুযোগও নেই।এর বিপরীতে আমাদের যদি সভ্যতা বিনির্মাণে ইসলাম ও মুসলমানদের অবদান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকে, তাহলে পশ্চিমা জগতের জাহেলিয়াতি ও মিথ্যা দাবিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারর। সেইসঙ্গে মুসলমানদের সম্বন্ধে যে ধরনের সহিংস, বর্বর ও অসভ্য ভাবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে একটি মোক্ষম জবাব দিতে সক্ষম হব। দেখাতে পারব আমাদের অসংখ্য সুপার হিরো কী পরিমাণ পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, বিবেচনাবোধ ও পেশাদারিত্বের মধ্য দিয়ে নিজেদের কাজগুলোকে সম্পন্ন করে গেছেন। ‘বিশ^সভ্যতা বিনির্মাণে মুসলমানদের অবদান’ বইটি তারই ক্ষুদ্রতম প্রয়াস।
মুক্তচিন্তা ও ইসলাম (হার্ডকভার) - মুক্তচিন্তার দার্শনিক ভিত্তি এবং ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি মুক্তির আকাক্সক্ষা সবখানে, সর্বত্র। সামগ্রিক মুক্তির প্রথম ধাপ মনের মুক্তি। তাই চিন্তার সাথেও যুক্ত হয়েছে একটা টার্ম- ‘মুক্তচিন্তা’। চিন্তা সংকীর্ণ হতে পারে, সুদূরপ্রসারী হতে পারে, শুদ্ধ কিংবা অশুদ্ধ হতে পারে, কিন্তু সে চিন্তা কি মুক্ত হতে পারে? যদিও হয়, এর সাথে শুদ্ধাশুদ্ধির কোনো সম্পর্ক আছে কি? মুক্তচিন্তা কি শুধুই সত্যের পথ দেখায়? নাকি মরীচিকার পেছনেও হাঁকিয়ে নিয়ে যায়? গ্রন্থকার এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন মলাটবদ্ধ পাতাগুলোতে। বলা যায়, মুক্ত মনে মুক্তচিন্তার এক সাবলীল ব্যবচ্ছেদের নাম ‘মুক্তচিন্তা ও ইসলাম’ গ্রন্থ।
বিশ্বাসীদের মা (হার্ডকভার) - উম্মুল মুমিনিনের জীবনী থেকে আমাদের পাথেয় নবিজির সম্মানিতা স্ত্রীগণ কেমন ছিলেন? কেমন ছিল নবিজির পারিবারিক জীবন? বয়স, মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা কিংবা আচরণের ভিন্নতা সত্ত্বেও তাঁরা কীভাবে নবিজির জীবনকে পূর্ণতা ও প্রশান্তিতে ভরিয়ে রেখেছিলেন? এই মহীয়সী পূত স্ত্রীগণের জীবনচরিত আজকের দিনেও কেন আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক? শাইখ ইয়াসির ক্বাদি ‘Mothers of Believers’ নামের এক ধারাবাহিক লেকচার সিরিজে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন; যা আমরা বিশ্বাসীদের মা শিরোনামে বাংলায় আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি।
পৃথিবীতে মানব সন্তানদের ক্রমবিকাশের প্রথম পর্যায় থেকেই কলহ চলমান। যুদ্ধ-বিগ্রহ করেই মানব অস্তিত্ব টিকে আছে সুখের আশায়। অন্ধকার সময়কে পেছনে রেখে পৃথিবীকে মানুষ করেছে অতি আধুনিক। সময়ের তালে ভূ-পৃষ্ঠের সকল অন্যায়কে অপরাধ বলতে শিখেছে মানুষ। মানুষের অধিকারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতিসংঘসহ নানান মানবাধিকার সংগঠন। তারপরও এক শ্রেণির মানুষ প্রতিনিয়ত হচ্ছে নিগৃহীত। পৃথিবীর সর্বত্র নিগৃহীত সেইসব মানুষদের একটাই পরিচয়, তারা মুসলমান। ফিলিস্তিন থেকে কাশ্মীর-আফগানিস্তান-ইরাক-লিবিয়া-সুদান-বসনিয়া-চেচনিয়া-ইয়েমেন থেকে আরাকানে ধ্বনিত হচ্ছে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হাহাকার। কিন্তু কেনো এই মানুষগুলোর এই মানুষগুলোর ওপর এত নিপীড়ন-নির্যাতন? রোহিঙ্গাদের ওপর কেনো নেমে এলো এই নির্মম নির্যাতন? এই প্রশ্নের উত্তর এবং ব্যাখ্যা নিয়ে লেখক আসাদ পারভেজ রচনা করেছেন ‘নাফ নদীর ওপারে’ বইটি। এই গবেষণা এবং অনুসন্ধানমূলক ‘নাফ নদীর ওপারে’।