ওদের মা কখনো গান করেননি কেন? মাকে ওদের মনে পড়ে না। শুধু চরাচর ভেঙে যখন জ্যোৎস্না নামে, তখন মায়ের শাড়ির আঁচলের গন্ধ পায় ওরা। টিনে ছাওয়া বাংলো ধরনের বাড়ি, বাড়ির সামনে বাগান, কাঁটামেহেদির বেড়া, কামিনী ফুলের পাগল-করা গন্ধ—এ-ই ছিল সত্তরের দশকের মফস্সল শহরগুলো। তেমনই এক শহরে দুই মায়ের সংসারে বড় হচ্ছিল চার ভাইবোন। চোরকাঁটাভরা মাঠে খেলা, বৃষ্টিতে তুমুল ভেজা শৈশব। টিউবওয়েলের নিচে গোসল, কয়লা দিয়ে দাঁত-মাজার শৈশব। কিন্তু ওদের মুক্তিযোদ্ধা বাবা সরকারি চাকরি হারান অন্যায়ের কাছে নতি স্বীকার না করার অপরাধে। কারাগারে যেতে হয় বাবাকে। বড় ভাই বাবুল সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন নিজের ভবিষ্যৎ বিসর্জন দিয়ে। কিন্তু এর চেয়েও ভয়াবহ সংবাদ দেন ছোটমা, হাসপাতালে শেষ শয্যায়। জানিয়ে যান, কেন মা কখনো গান করেননি। কে তাঁর কণ্ঠ থেকে গান নিংড়ে বের করে নিয়েছিল!
একদা মাছেরও মাংস হতো। খামখেয়ালির মধ্যে একটা আরবি, আরেকটা ফারসি শব্দ। জাঁদরেল কি আসলে জেনারেল? দীর্ঘদিন ব্যবহারে চারপাশের আরও সব শব্দের ধাক্কায় শব্দের আদি অর্থ পাল্টে যায়। কোনো কোনো শব্দের অর্থ পাল্টে হয়ে যায় একেবারে উল্টো। কিছু শব্দ আমাদের ভাষায় কোথা থেকে এল, তার হদিস খুঁজে পাওয়া যায় না। এ রকম কত গল্প আর ইতিহাস শব্দের মধ্যে লুকিয়ে আছে! শব্দের অর্থ কখনো জটিল, কখনো রোমাঞ্চকর। শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ইতিহাস। আমাদের খুব চেনা, প্রতিদিন আমাদের মুখে মুখে ফেরে এ রকম কিছু শব্দের মজার গল্প নিয়ে এ বই।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসের এক মহাকাব্যিক চরিত্র সিরাজুল আলম খান। তাঁকে নিয়ে অনেক আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্ক, কৌতূকহল এবং বিভ্রান্তি। অনেকের কাছে তিনি রাজনীতির রহস্যমানব। তিনি ছিলেন একঝাক তরুণের স্বপ্নের সওদাগর। তাঁর নাটকীয় উত্থান ও বিয়োগান্ত পরিণতির অন্তরঙ্গ বিবরণ আছে এ বইয়ে।
প্রাচীনকাল থেকে মানুষের মনে মীমাংসাহীন এক প্রশ্ন, মহাকাশের পর আর কী আছে? মহাকাশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য কোনো জগৎ তো থাকতেও পারে। আশার আলো জ্বেলে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এবং অন্য গ্রহ-গ্রহান্তরেও তা থাকার সম্ভাবনা আছে। নাসার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০১৮ সাল নাগাদ মঙ্গলে মানব-মিশনের কাজের অগ্রগতি হবে। আমরাও ক্রমে নিশ্চিত হতে থাকব, মহাবিশ্বে আমরা একা নই, রয়েছে আমাদের আরও দোসর, সহোদর। এসব বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালোচনাই এ বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য।
“একাত্তরের চিঠি”বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ এত গৌরবময়, এত বেদনাময় বছর বাঙালির জীবনে আগে কখনাে আসেনি। বছরটি ১৯৭১। এই একটি বছরের। মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশকে জানল, চিনল এবং বুঝতে পারল সবজ শ্যামল প্রকৃতির কাদামাটির মতাে নরম বাঙালি প্রয়ােজনে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। কোনাে সন্দেহ নেই, বাঙালি বর্ষাকালে যেমন কোমল, গ্রীষ্মে তেমনই রুক্ষ ও কঠিন। কে ভাবতে পেরেছিল, ‘ভেতাে বাঙালি' নামে অভিহিত, কাপুরুষ' পরিচয়ে পরিচিত বাঙালি জাতি। পাকিস্তান নামের অবাস্তব একটি রাষ্ট্রের জন্মের ছয় মাস। যেতে না যেতেই আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠায়, মাতৃভাষার অধিকার অর্জনে সােচ্চার হয়ে উঠবে? পৃথিবীতে এমন দৃষ্টান্ত বিরল যে শুধু ভাষার জন্য সংগ্রাম করে, স্বাধীনতা অর্জনের বীজটি বপন করে, ২৩ বছর অতিক্রান্ত হতে না হতেই একটি প্রদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল । এর জন্য সেই প্রদেশের অধিবাসীদের সশস্ত্র যুদ্ধ করতে হয়েছে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে; এবং অবিশ্বাস্য সত্য হচ্ছে, 'ভীরু, অলস, কর্মবিমুখ, কাপুরুষ, ভেতাে, যুদ্ধবিদ্যায় অনভিজ্ঞ এই বাঙালিই মাত্র নয় মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। স্বাধীনতার জন্য প্রাণের আবেগ। যখন দুর্দমনীয় হয়ে ওঠে, তখন পৃথিবীর যত ভয়ঙ্কর। মারণাস্ত্রই ব্যবহার করা হােক না কেন, সেই আবেগের কাছে। তা তুচ্ছ হয়ে যায় । তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি আমেরিকাভিয়েতনামের যুদ্ধে। বিশ্ববাসী সেই প্রমাণ পুনরায় প্রত্যক্ষ। করেছে ১৯৭১ সালে, বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধকালে লিখিত চিঠিগুলাে শুধু লেখক-প্রাপকের। সম্পর্কে সীমাবদ্ধ নয়; যেন রক্ত দিয়ে রচিত এই কথামালা যেমন সবার সম্পদে পরিণত হয়, তেমনি পরিগণিত হবে। ইতিহাসের এক অনন্য সম্পদরূপে
প্রত্যেক মানুষের জীবনের গল্প আলাদা। ভিন্ন তাদের সংকটের ধরনও। এ বইয়ের গল্পগুলো সংকটে জর্জরিত এমন কিছু মানুষকে ঘিরে। যাদের জীবন পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচল, বিরূপ সামাজবাস্তবতা, মহামারির প্রকোপ, সাংসারিক টানাপোড়েন ও মানসিক হতাশার মধ্যে হোঁচট খায় পদে পদে। প্রত্যেক মানুষের জীবন যেন একেকটা আলাদা গল্প নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আমাদের চারপাশে। এই গল্পগুলোও তেমনই। এখানে দেখা মেলে নানা সমস্যায় জর্জরিত বিহ্বল কিছু মানুষের জীবনের নানামাত্রিক ছবি, বেঁচে থাকার মর্মস্পর্শী কাহিনি। পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচল, বিরূপ সমাজবাস্তবতা, মহামারিসহ আধিব্যাধির আক্রমণ, সাংসারিক টানাপোড়েন এসব মানুষের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু মানুষ কি হেরে যায় এসব প্রতিকূলতার কাছে? পরাজয়ই কি জীবনের চরম সত্য? বইয়ের গল্পগুলোর মধ্যেই পাঠক এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।