এ উপন্যাস গণিত নিয়ে। এর প্রধান দুই চরিত্র গণিতবিদ মেজোকাকু এবং ‘গণিতের রানি’ বলে খ্যাত নাম্বার থিওরি। বইটি হাতে নিলে পাঠক হারিয়ে যাবেন গণিতের আনন্দময় এক রাজ্যে।
"এ অঞ্চলের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা হয় পনেরো শতকের শেষ দিকে, যখন ইউরোপীয়রা ভারতবর্ষে আসতে শুরু করে। তারা নিজেদের মধ্যে বাজার ও ভূখণ্ড দখলের প্রতিযোগিতায় নামে। তাদের পক্ষে-বিপক্ষে থাকে এদেশীয় সামন্ত শাসকেরা। একপর্যায়ে অঞ্চলটি হয় ব্রিটিশ উপনিবেশ। পরস্পর-বিচ্ছিন্ন রাজ্যগুলোকে একসঙ্গে জুড়ে তারা আধুনিক ভারত রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করে। প্রায় দু’শ বছর রাজত্ব করে তারা চলে যায়। আমাদের ইতিহাসের এ পর্ব নানান উত্থান-পতনের সাক্ষী—ষড়যন্ত্র, যুদ্ধ, বিদ্রোহ আর বিয়োগান্ত ঘটনায় ভরা। সেটা ছিল মধ্যযুগের শেষ আর আধ্ুনিক যুগের শুরু। এ সময়ের তিনটি ঘটনা ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়—১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধ, ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ এবং ১৯৪৭ সালে ভারতভাগ, যার পরম্পরায় জন্ম হয় পাকিস্তান নামে নতুন এক রাষ্ট্রের। এ ঘটনাক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানান সামাজিক শক্তির ক্ষয় ও বিকাশ। নানান সূত্র ঘেঁটে এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে সেসব ইতিহাস। "
পুলিশ ভেঙে ফেলল ১৯৫২ সালের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি। শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি পেলেন ফরিদপুর কারাগার থেকে অনশন ধর্মঘট করার পর। তাঁর আব্বা তাঁকে নিয়ে গেলেন গ্রামের বাড়িতে। সেখানেই মুজিব জানতে পারলেন তাঁর নেতা সোহরাওয়ার্দীর মনোভাব—বাঙালিদেরও উর্দু শিখতে হবে। এবার কী করবেন মুজিব? তাজউদ্দীনরা ভাবছেন, একটা আলাদা দল করতে হবে। গণতন্ত্রী দল গঠনের তৎপরতার সঙ্গে খানিকটা যুক্ত থাকলেন তিনি। মওলানা ভাসানী কারাগারে। সেখান থেকে শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়া, তাজউদ্দীনের আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া, যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, এ কে ফজলুল হকের প্রধানমন্ত্রী হওয়া আর শেখ মুজিবের মন্ত্রিত্ব লাভ এবং মন্ত্রীর বাড়ি থেকে সোজা জেলযাত্রা। তিনটি শিশুসন্তান নিয়ে রেনুর অকূলপাথারে পড়ে যাওয়া। রাজনীতির ডামাডোল ওলটপালট করে দেয় ব্যক্তিমানুষেরও জীবন। এই রাজনীতির গতি-প্রকৃতি কেবল একটি দেশের নেতা বা জনগণ নির্ধারণ করে না, তা নির্ধারণের চেষ্টা চলে ওয়াশিংটন থেকেও। ব্যাঙ্গমা আর ব্যাঙ্গমি তো তা-ই বলতে চায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মানুষের ইচ্ছাই কি জয়ী হয় না?
১৯৭৫ সাল বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অস্থির সময়। বাকশাল গঠন, সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর সপরিবার নির্মমভাবে নিহত হওয়া, নভেম্বরে আবার সামরিক অভ্যুত্থান, জাতীয় চার নেতার হত্যা, পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান—সব মিলিয়ে বছরটি ছিল বাংলাদেশের একটি গভীর সংকটের কাল। এত অল্প সময়ে এত সব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর ঘটেনি। ঘটনাগুলো নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক। কিন্তু কোথাও এই সময়ের একটি পুরো চিত্র পাওয়া যায় না। এ বইয়ে ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ ও মতামত তুলে ধরা হয়েছে। সঙ্গে আছে দেশি ও বিদেশি নানা দলিল। সংশ্লিষ্টদের জবানবন্দি, সাক্ষাৎকার ও কাছ থেকে দেখা ব্যক্তিদের স্মৃতিকথা হিসেবে লেখাগুলো বহু সময় ধরে বহু চেষ্টায় সংগ্রহ করা হয়েছে। পঁচাত্তরের অস্থির সময়ের পুরো চিত্র তুলে ধরেছে এ বই।
The Siliguri Conference held on 5 and 6 July 1971, is an entirely undiscussed chapter of the Liberation War of Bangladesh. This conference eliminated much of the confusion and aided in the formulation of the policies used during the war. This, in turn, generated cohesion, expedited the war, and led to a swifter victory. Detailed descriptions and official proceedings of the conference have not been conserved anywhere. This book, for the first time, contains along with a detailed introduction a crucial part of the formal meetings proceedings and informal discussions which took place during the conference.
রাত্রি ১২টা। ক্রিং ক্রিং। হাজি মোরশেদ ফোন ধরলেন, ‘হ্যালো।’ ‘হ্যালো, বলধা গার্ডেন থেকে বলছি।’ ‘আমি শেখ মুজিবের বাড়ি থেকে বলছি।’ ‘মেসেজ পাঠানো হয়ে গেছে। মেশিন কী করব?’ ‘আপনি একটু ধরেন। মুজিব ভাইকে জিজ্ঞেস করে আসছি।’ হাজি মোরশেদ দৌড়ে গেলেন বঙ্গবন্ধুর কাছে। ‘মেসেজ পাঠানো হয়ে গেছে, মেশিন কী করবে জানতে চায়।’ মুজিব বললেন, ‘মেশিন ভেঙে ফেলে পালিয়ে যেতে বলো।’ হাজি সাহেব বুঝলেন, বলধা গার্ডেন একটা কোড। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মেসেজ পাঠানো হয়ে গেল।শেখ মুজিব টুঙ্গিপাড়া চলেছেন বড় একটা লঞ্চ নিয়ে। নদীর দুধারে বিপুল জনতা টের পেয়ে গেছে এই লঞ্চে আছেন তাদের প্রিয়তম বঙ্গবন্ধু। তারা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে আসছে নেতাকে একনজর দেখবে বলে। এই ভালোবাসার জবাব কেমন করে দেবেন মুজিব? আইয়ুব খান বিদায় নিলেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। চীন দাবার ঘুঁটি চালছে, আমেরিকা তৎপর। নির্বাচন এল। মুজিবের নির্দেশে তাজউদ্দীন সক্রিয় দেশের সেরা অর্থনীতিবিদ আর আইনবিদদের নিয়ে, ৬ দফার ভিত্তিতে নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো রচনায়। ভাসানীর মতিগতি বোঝা যাচ্ছে না; তিনি স্লোগান দিচ্ছেন, ভোটের আগে ভাত চাই। নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়লাভ করল আওয়ামী লীগ। ভুট্টোর সঙ্গে লারকানায় পাখি শিকার করার নামে লাখো বাঙালি হত্যার নীলনকশা প্রস্ত্তত করলেন ইয়াহিয়া। এল একাত্তরের মার্চ। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আলোচনা ভেস্তে গেল। বাঙালি পুলিশ, ইপিআর, সৈনিকদের বঙ্গবন্ধু আদেশ দিলেন, অস্ত্র গোলাবারুদ হাতে নাও, প্রতিরোধ গড়ো। সবাই অনুরোধ করছে, মুজিব ভাই, ওরা আপনাকে মেরে ফেলবে। আপনি পালান। মুজিব হাসছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। আমি পালাব না। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশকালের ছবি আঁকা রইল এই উপন্যাসে।