প্রাচীনকাল থেকে মানুষের মনে মীমাংসাহীন এক প্রশ্ন, মহাকাশের পর আর কী আছে? মহাকাশের সীমানা ছাড়িয়ে অন্য কোনো জগৎ তো থাকতেও পারে। আশার আলো জ্বেলে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এবং অন্য গ্রহ-গ্রহান্তরেও তা থাকার সম্ভাবনা আছে। নাসার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০১৮ সাল নাগাদ মঙ্গলে মানব-মিশনের কাজের অগ্রগতি হবে। আমরাও ক্রমে নিশ্চিত হতে থাকব, মহাবিশ্বে আমরা একা নই, রয়েছে আমাদের আরও দোসর, সহোদর। এসব বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালোচনাই এ বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য।
১৯৭৫ সাল বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অস্থির সময়। বাকশাল গঠন, সেনা অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর সপরিবার নির্মমভাবে নিহত হওয়া, নভেম্বরে আবার সামরিক অভ্যুত্থান, জাতীয় চার নেতার হত্যা, পাল্টা সামরিক অভ্যুত্থান—সব মিলিয়ে বছরটি ছিল বাংলাদেশের একটি গভীর সংকটের কাল। এত অল্প সময়ে এত সব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর ঘটেনি। ঘটনাগুলো নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক। কিন্তু কোথাও এই সময়ের একটি পুরো চিত্র পাওয়া যায় না। এ বইয়ে ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ ও মতামত তুলে ধরা হয়েছে। সঙ্গে আছে দেশি ও বিদেশি নানা দলিল। সংশ্লিষ্টদের জবানবন্দি, সাক্ষাৎকার ও কাছ থেকে দেখা ব্যক্তিদের স্মৃতিকথা হিসেবে লেখাগুলো বহু সময় ধরে বহু চেষ্টায় সংগ্রহ করা হয়েছে। পঁচাত্তরের অস্থির সময়ের পুরো চিত্র তুলে ধরেছে এ বই।
The Siliguri Conference held on 5 and 6 July 1971, is an entirely undiscussed chapter of the Liberation War of Bangladesh. This conference eliminated much of the confusion and aided in the formulation of the policies used during the war. This, in turn, generated cohesion, expedited the war, and led to a swifter victory. Detailed descriptions and official proceedings of the conference have not been conserved anywhere. This book, for the first time, contains along with a detailed introduction a crucial part of the formal meetings proceedings and informal discussions which took place during the conference.
“একাত্তরের চিঠি”বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ এত গৌরবময়, এত বেদনাময় বছর বাঙালির জীবনে আগে কখনাে আসেনি। বছরটি ১৯৭১। এই একটি বছরের। মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব বাংলাদেশকে জানল, চিনল এবং বুঝতে পারল সবজ শ্যামল প্রকৃতির কাদামাটির মতাে নরম বাঙালি প্রয়ােজনে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। কোনাে সন্দেহ নেই, বাঙালি বর্ষাকালে যেমন কোমল, গ্রীষ্মে তেমনই রুক্ষ ও কঠিন। কে ভাবতে পেরেছিল, ‘ভেতাে বাঙালি' নামে অভিহিত, কাপুরুষ' পরিচয়ে পরিচিত বাঙালি জাতি। পাকিস্তান নামের অবাস্তব একটি রাষ্ট্রের জন্মের ছয় মাস। যেতে না যেতেই আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠায়, মাতৃভাষার অধিকার অর্জনে সােচ্চার হয়ে উঠবে? পৃথিবীতে এমন দৃষ্টান্ত বিরল যে শুধু ভাষার জন্য সংগ্রাম করে, স্বাধীনতা অর্জনের বীজটি বপন করে, ২৩ বছর অতিক্রান্ত হতে না হতেই একটি প্রদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল । এর জন্য সেই প্রদেশের অধিবাসীদের সশস্ত্র যুদ্ধ করতে হয়েছে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে; এবং অবিশ্বাস্য সত্য হচ্ছে, 'ভীরু, অলস, কর্মবিমুখ, কাপুরুষ, ভেতাে, যুদ্ধবিদ্যায় অনভিজ্ঞ এই বাঙালিই মাত্র নয় মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। স্বাধীনতার জন্য প্রাণের আবেগ। যখন দুর্দমনীয় হয়ে ওঠে, তখন পৃথিবীর যত ভয়ঙ্কর। মারণাস্ত্রই ব্যবহার করা হােক না কেন, সেই আবেগের কাছে। তা তুচ্ছ হয়ে যায় । তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি আমেরিকাভিয়েতনামের যুদ্ধে। বিশ্ববাসী সেই প্রমাণ পুনরায় প্রত্যক্ষ। করেছে ১৯৭১ সালে, বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধকালে লিখিত চিঠিগুলাে শুধু লেখক-প্রাপকের। সম্পর্কে সীমাবদ্ধ নয়; যেন রক্ত দিয়ে রচিত এই কথামালা যেমন সবার সম্পদে পরিণত হয়, তেমনি পরিগণিত হবে। ইতিহাসের এক অনন্য সম্পদরূপে
প্রত্যেক মানুষের জীবনের গল্প আলাদা। ভিন্ন তাদের সংকটের ধরনও। এ বইয়ের গল্পগুলো সংকটে জর্জরিত এমন কিছু মানুষকে ঘিরে। যাদের জীবন পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচল, বিরূপ সামাজবাস্তবতা, মহামারির প্রকোপ, সাংসারিক টানাপোড়েন ও মানসিক হতাশার মধ্যে হোঁচট খায় পদে পদে। প্রত্যেক মানুষের জীবন যেন একেকটা আলাদা গল্প নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আমাদের চারপাশে। এই গল্পগুলোও তেমনই। এখানে দেখা মেলে নানা সমস্যায় জর্জরিত বিহ্বল কিছু মানুষের জীবনের নানামাত্রিক ছবি, বেঁচে থাকার মর্মস্পর্শী কাহিনি। পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচল, বিরূপ সমাজবাস্তবতা, মহামারিসহ আধিব্যাধির আক্রমণ, সাংসারিক টানাপোড়েন এসব মানুষের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু মানুষ কি হেরে যায় এসব প্রতিকূলতার কাছে? পরাজয়ই কি জীবনের চরম সত্য? বইয়ের গল্পগুলোর মধ্যেই পাঠক এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
নানা কারণে একাত্তরের যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। একদিকে ছিল একটি জনগোষ্ঠীর কোটি কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা। অন্যদিকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর বহুমাত্রিক দ্বন্দ্ব ও সমীকরণ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এর গন্তব্যে পৌঁছেছে। একাত্তরের এই গতিধারা ও ইতিহাসের খুব অল্পই এখন পর্যন্ত জানা গেছে। একাত্তরের যুদ্ধ শুধু ঢাকা আর ইসলামাবাদের মধ্যে আটকে ছিল না। বাংলাদেশকে নিয়ে বিবদমান পরাশক্তিগুলোর মধ্যে হয়েছিল ছায়াযুদ্ধ। অনেক দৌড়ঝাঁপ হয়েছে কলকাতা, দিল্লি, ওয়াশিংটন, মস্কো আর বেইজিংয়ে। কূটনৈতিক লড়াই হয়েছে জাতিসংঘে। এর একটি বড় অনুষঙ্গ ছিল প্রচারযুদ্ধ। সব ছাপিয়ে উঠে এসেছে ভারতের ভূমিকা। অনেক ঐতিহাসিক দলিলের সূত্র ধরে লেখা এ বই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বাকমুক্তির প্রক্রিয়ায় এক অনন্য সংযোজন, যা পাঠকের কৌতূহল বাড়িয়ে তুলবে।