দুর্ঘটনাক্রমেই গত শতাব্দীর মাঝামাঝি দুই মার্কিন বিজ্ঞানী পেনজিয়াস ও উইলসন আবিষ্কার করেন কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন। একে বলা হয় মহাবিশ্বের প্রথম আলো। মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ। এই আবিষ্কার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে কসমোলজির। এ বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে সেই আবিষ্কার এবং এর সঙ্গে জড়িত একদল বিজ্ঞানীর আপ্রাণ প্রয়াসের প্রায় অনুপুঙ্খ বিবরণ। বস্ত্তত, বহু যুগ ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা আবিষ্কার এবং সেই সঙ্গে আমাদের মহাবিশ্বেরও বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে এ বইয়ে। মহাবিশ্বের রহস্য উদ্ঘাটন করতে চাওয়া অদম্য একদল বিজ্ঞানীর গভীর অনুসন্ধানের কাহিনিও বলা চলে এ বইকে।
১৯৫১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের কাছে লেখা চিঠিপত্রের সংকলন এ বই। স্বজন-বন্ধু থেকে শুরু করে বিখ্যাত সব ব্যক্তিদের এই পত্রাবলির মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে একটি জাতির জাগরণ, নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, সংগ্রামে বিজয় এবং সেই বিজয়কে ধরে রাখার প্রয়াসের ইতিহাস।
দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নিরেট বাস্তবতার মানেও কখনো পাল্টে গিয়ে নতুন অর্থ তৈরি করে। আর তার সামনে হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়াই আমরা। এই বইয়ের ৭৬টি ছোট ছোট গল্প তেমনই। আমাদের যাপিত জীবনের, চারপাশের আটপৌরে বাস্তবতার এই সব গল্প পাঠককে রূঢ় সমকালীনতার স্পর্শ দেবে। একই সঙ্গে দেবে আয়নায় নিজেকে দেখার সুযোগও।
গল্পগুলো ছোট, সহজ ও সাবলীল। লেখকের গল্প বলার ভঙ্গিও চমৎকার। এগুলো সহজেই কিশোর পাঠকের মনে ভাষাশিক্ষার সঙ্গে আনন্দেরও সঞ্চার করবে। এককথায় বইটিকে বলা যায় ভাষা শেখার আনন্দপাঠ। বইটি কিশোর পাঠকদের ভালো লাগবে।
মওলানা ভাসানী আমাদের জাতীয় নেতাদের অন্যতম। শতাব্দীর সমান বয়সী এই মানুষটির জীবন যেমন ছিল ঘটনাবহুল, তেমনি বৈচিত্র্যময়। সাধারণ গ্রামীণ কৃষিজীবী পরিবার থেকে উঠে এসে তিনি আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন গণমানুষের নেতা। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তাঁর ত্যাগ-তিতিক্ষা, সাধারণ মানুষের স্বার্থের সঙ্গে একাতÄতাবোধ ও সাদামাটা জীবনপ্রণালি তাঁকে ‘মজলুম জননেতা’র পরিচয়ে পরিচিত করে তোলে। সৈয়দ আবুল মকসুদ রচিত ভাসানীচরিত বইটিতে মওলানার বাল্যজীবন থেকে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত সময়ের বিবরণ, মানুষের অধিকারের জন্য তাঁর লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অবিভক্ত ভারতের আসাম পর্বের মতো ভাসানী জীবনের তুলনামূলক কম আলোচিত অধ্যায় সম্পর্কে এ বইটিতেই প্রথমবারের মতো আবুল মকসুদ বিশদ আলোচনা করেছেন। তেমনি পরবর্তী পাকিস্তান আন্দোলন, আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা, স্বায়ত্তশাসনের জন্য সংগ্রাম, বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক, ন্যাপ প্রতিষ্ঠা, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম, স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি—এই পর্বগুলোও তথ্যনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মওলানার ব্যক্তিজীবন ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে গিয়ে লেখক তাঁর দৃষ্টিতে যাকে মওলানার সীমাবদ্ধতা বা স্ববিরোধ বলে মনে হয়েছে, তার উল্লেখ করতেও দ্বিধা করেননি।
এখন তো সবাই টাইম মেশিনে মহাবিশ্ব ঘুরে বেড়াতে চায়। আবার এটাও জানতে চায়, বর্ষায় বাজ থেকে বাচার উপায় কী। জেমসওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো মহাবিশ্বের সাম্প্রতিক সাড়া জাগানো ছবি গুলো আমাদের নিয়ে গেছে বিগব্যাংয়ের আরও কাছে। বিজ্ঞানের সবকিছু জানা বোঝার আগ্রহ এখন অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। সে জন্যই বইটি সবার হাতে হাতে থাকতে পারে।
তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের লেখা আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম সর্বকালের অন্যতম সেরা বিজ্ঞান বই। বইটি লাখো কপি বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ পাঠকই তার গবেষণা বা আবিষ্কার সম্পর্কে পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি। এ বই মহাবিশ্ব, মহাবিস্ফোরণ ও কৃষ্ণগহব্বর সম্পর্কে তার মৌলিক গবষণার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।
This volume by three outstanding scholars in the field of education provides both evidence and analyses of the malfunctions and inequity which underlie South Asia’s school system. It argues for an educational agenda for the region which can contribute to challenging the poverty, inequality, and exclusion which originate in an unjust social order. Its insightful suggestions for remedial action need to be invested with a political economy perspective. The volume should be made mandatory reading not just for education specialists but for development practitioners, policymakers, and political leaders at the national, regional, and global levels.
These 50 years have not been easy for us. We have faced many obstacles, but we have achieved many of our goals for which we are proud. Save the Children International has also been in Bangladesh for 50 years. There is a saying that children are the future of a nation but we also want to say that children represent the present moment of a nation children are our first priority.
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর যেমন, তেমনি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরও বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাস তৎপর হয়ে উঠেছিল? কী ঘটেছিল সে সময়টায়? এরশাদের পতনের সম্ভাবনা কি সিআইএ আগেই আঁচ করেছিল? অবমুক্ত হওয়া মার্কিন দলিল থেকে সেসব তথ্যই বিশ্লেষণ করা হয়েছে এ বইয়ে। বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে আগ্রহীদের জন্য এক অবশ্যপাঠ্য বই।
১৯৪৭-এর দেশভাগ, যার অসহায় শিকার হতে হয়েছে উপমহাদেশের লাখ লাখ মানুষকে। দেশভাগ নিয়ে উর্দু ও হিন্দি ভাষায় অনেক কালজয়ী সাহিত্য রচিত হয়েছে। গুলজারের এ উপন্যাস তেমনি একটি রচনা। ১৯৪৬ সালের শীতকাল। দেশভাগ আসন্ন। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে ‘বর্ডার’ আর ‘রিফিউজি’র মতো কিছু নতুন শব্দ, যার অর্থ পরিষ্কার নয় অনেকের কাছেই। দেশভাগের ফলে প্রায় দেড় কোটি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারায়। দাঙ্গায় নিহত হয় বিশ লাখ। ক্যাম্বেলপুর এলাকা থেকে মানুষভর্তি একটা ট্রাক রওনা হয়। ট্রাকের আরোহীরা কেউ জানে না তারা কোথায় যাবে। কোথায় হবে তাদের পরবর্তী ঠিকানা।
কবি-সাহিত্যিকেরা বেশির ভাগই মজার মানুষ। হুমায়ূন আহমেদ, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কিংবা নির্মলেন্দু গুণের রসবোধের কোনো তুলনা হয় না। তাঁদের রসিকতাগুলো দেশবিখ্যাত এবং চিরন্তন আনন্দ ও শিক্ষার উত্স। আবার রসবোধে খ্যাতি তেমন নেই, এমন মানুষও ঘটিয়ে থাকেন মজার মজার ঘটনা। শুধু মজার ঘটনা তো নয়, লেখক-কবিদের জীবনে ঘটে অনেক দুঃখের ঘটনা; আর সারাক্ষণই তাঁদের পোড়াতে থাকে শিল্পের আগুন। সমকালীন সাহিত্যের অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিককে কাছে কিংবা দূর থেকে দেখেছেন আনিসুল হক। লেখকদের নিয়ে আনিসুল হকের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা, কৌতুক, আনন্দ-বেদনা আর হাহাকারের গল্পগুলো ধরা থাকল এই বইয়ে। এই লেখাগুলো একই সঙ্গে স্মৃতিচারণা, সাহিত্যের উদ্যাপন, লেখকদের প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সাহিত্যিক মূল্যায়নের রেখাচিত্র।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো জটিল এক হিসাব কষেছিল। কেবল পক্ষ বা বিপক্ষের সোজা হিসাবের বাইরে কাজ করেছিল আরও নানা সমীকরণ; ঘটনার পরম্পরা ও প্রভাব-প্রতিক্রিয়া। আর তার রেশ কেবল নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। অবমুক্ত হওয়া মার্কিন গোপন দলিলের তথ্য বিশ্লেষণ করে লেখা বইটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহীদের জন্য অবশ্যপাঠ্য।
মান্টো যেন গালিবের পরিণতি। সাদত হাসান মান্টোর লেখা মির্জা গালিব এক অনন্যসাধারণ গল্পকারের কলমে উর্দু সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিকে নিয়ে চিত্রনাট্য। সঙ্গে আছে দুজনের জীবন ও জগত্ নিয়ে আলোচনা। মোগল ভারতের শ্রেষ্ঠতম অর্জন উর্দু-ফারসি কবি মির্জা গালিব (১৭৯৭-১৮৬৯)। ১৮৫৭ সালের ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতাসংগ্রামের প্রত্যক্ষ সাক্ষী তিনি। আর ১৯৪৭ সালের দেশভাগ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্য দিয়ে ইংরেজ শাসনের অবসানের সাক্ষী সাদত হাসান মান্টো। মির্জা গালিবের একান্ত অনুরক্ত ছিলেন মান্টো। নিজের সমাধিফলক লিখেছেন গালিবের কবিতা দিয়ে। মান্টো গালিবকে নিয়ে একটি সিনেমার কাহিনিও লিখেছিলেন। দাঙ্গাবিক্ষুব্ধ বোম্বেতে সেই ছবি কেউ বানাতে রাজি হয়নি। অনেক পরে তৈরি সেই ছবি বক্স অফিস মাতায়। ঠিক যখন কিনা মান্টো মারা যান কপর্দকশূন্য অবস্থায়। মূল উর্দু থেকে সেই ছবির চিত্রনাট্যের অনুবাদ এই বই। সঙ্গে আছে চিত্রনাট্যের প্রসঙ্গ ধরে ব্যক্তি গালিব ও মান্টো আর তাঁদের সময়ের ভারতবর্ষের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা।
আমি, শহীদুল ইসলাম, কারও রূপ দেখে মুগ্ধ হব, ভাবিনি। এ কথাও তো সত্য যে প্রেমে মানুষ পড়ে, পতিত হয়; প্রেমে কেউ ওঠে না, আরোহণ করে না। আমিও হঠাৎ করেই পড়ে গেলাম। পড়ে গেলাম এবং ডুবে গেলাম।
একদিন সকালে আমজাদ আলী নামের সাধারণ এক দোকানের ম্যানেজার আবিষ্কার করে তার হাতের লেখা, টিপসই, এমনকি রক্তের গ্রুপ পর্যন্ত পাল্টে গেছে। হাওরের জেলে হাসন মিয়ার জালে উঠে আসতে থাকে বিরল প্রজাতির সব মাছ। ওদিকে বাংলাদেশের প্রাণিবিজ্ঞানী নিকিতা গবেষণার কাজে ইন্দোনেশিয়া গিয়ে ভয়ানক বিপদে পড়ে। ভয়ংকর অগ্ন্যুত্পাতের কবল থেকে কিনাবালু পর্বতের আদিবাসীদের সুরক্ষা দেয় প্রকৃতি। এসব রহস্য ও তার শিহরণ জাগানো ব্যাখ্যা নিয়ে বিজ্ঞান কল্পগল্পের এ বই।
একদিকে পুরো দেশ কাঁপিয়ে তুলছেন বিদ্রোহী কবি, অন্যদিকে প্রেমিক কবির সঙ্গে বিভিন্ন নারীর নানামাত্রার সম্পর্ক তাঁর স্ত্রীর জীবন করে তুলছে যেন অপার সমুদ্রে এক দিশাহীন জলযান। নজরুলের উত্থান-পতনময় জীবনে চির-অবিচ্ছেদ্য নাম আশালতা।
বাংলায় একটি প্রবচন আছে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। আসলে, শিশুরাই জাতির বর্তমান। শিশু অধিকার–বিষয়ক প্রবন্ধ সংকলনের এ বইটি পাঠ করলে বাংলাদেশের শিশুচিত্র কিংবা শিশুদের বাংলাদেশচিত্র আমরা একনজরে দেখে ফেলতে পারব। সকল সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে, প্রতিবন্ধকতা জয় করে, ব্যর্থতাগুলো নিরসন করে আমরা কীভাবে শিশুদের বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব, সে ব্যাপারে বইটি ‘ডাইজেস্ট' বা ‘গাইড’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
দেশের নামে যুদ্ধ হয়। আর সে যুদ্ধ করে বাস্তবের ব্যক্তি মানুষ। সম্মুখযোদ্ধা ছাড়া আরও কত রকম মানুষের ভূমিকা থাকে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি বড় ঘটনার পেছনে। বলাযায় ছোট ছোট অনেক যু্দ্ধ এক হয়ে একটি বড় যুদ্ধ তৈরি হয়। কিন্তু ছকবাঁধা কাঠামোর বাইরে অবস্থান করায় সেই সব মানুষের অনেকে আমাদের পরিচিত বয়ানের বাইরে রয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধ কালের নারী সেই বয়ানের বাইরে থাকা এক চরিত্র। সম্মুখ যুদ্ধে অংশ না নিয়েও যারা নানা ভাবে এই যুদ্ধকে সম্ভব ও সফল করে তুলেছে। প্রথাগত ইতিহাসের কোথাও নারীরা এই যুদ্ধের উল্লেখ থাকেনা। এই বইয়ের গল্প গুলো মূলত সে রকম কয়েকজন নারীর।