গম্ভীরদর্শন, ওই প্রকাণ্ড ফ্রেঞ্চ দুর্গ থেকে তিশাকে নিয়ে লেজ তুলে পালাচ্ছে রানা। কিন্তু ঘিরে ফেলেছে শত্রুরা । শেষে উঠতে হলো এক এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে। ওখানেই জানল, ম্যাজেস্টিক-১২ কাউন্সিলের মাস্টার প্ল্যান। ওরা দখল করবে গোটা দুনিয়া। একের পর এক নিউক্লিয়ার মিসাইল দিয়ে উড়িয়ে দেবে মস্ত সুব শহর। রানার এখনই চাই টাচলক-৯ ইউনিট। ..ওদিকে কী চলছে আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে? রানার পথে বাধা হয়ে উঠল শত শত যুদ্ধ-বিমান। মক্কা শহরে পড়বে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল । কখনও লাভ হয় মিসাইলের পিছু নিয়ে? তবু শেষ চেষ্টা করল রানা। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল কুয়াশা। কী করে বাঁচাবে ওরা লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে? নিশ্চিত মৃত্যুকে পরোয়া করল না ওরা। এবারই বুঝি চিরবিদায় নিতে চলেছে আমাদের মাসুদ রানা ও মহৎহৃদয় কুয়াশা।
ভাঙা একটা কাঁচের বোতল। তাতে এক উড়ন্ত মৌমাছির রহস্যময় ছবি। অদ্ভুত ওই প্রতীকটা বিপাকে ফেলে দিল রানা-সোহানাকে। একের পর এক মৃত্যুফাঁদ পাতা হচ্ছে ওদের জন্যে। কারণ, ভয়ঙ্কর এক মাফিয়াসর্দারের বিরাগভাজন হয়েছে। কৌশলে বিপদ এড়িয়ে যাচ্ছিল ওরা দুজনে। ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি: যাকে সুহৃদ ভেবেছে, তারই বিশ্বাসঘাতকতায় ধরা পড়তে চলেছে ওরা শত্রুপক্ষের হাতে। এমন এক জায়গায় যেখানে গোর দেওয়া হয়েছে রহস্য সমাধানের চাবিকাঠি। শত্রু প্রবল, ওরা মাত্র দুজন। কী হয়, কী হয়!
মেলিখানের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ল না রানা-সোহানা।বরং কোডবুকটা নিয়ে চলে এল নিরাপদে। এবার রহস্যভেদের পালা। কিন্তু একটা বোতল সিদোরভের কাছে। কোডটাও। রানা-সোহানা সিদ্ধান্ত নিল, হানা দেবে সিংহের গুহায়। কৃষ্ণসাগরের তীরে সুরক্ষিত তার ম্যানসন- ঝুঁকিটা বোধহয় বেশিই হয়ে গেল। ট্রেজারম্যাপটা কোথেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ওদেরকে? শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি রানার নিয়ন্ত্রণে থাকল না। পাচার হয়ে গেল গোপন খবর কে জানত, রানাকে একহাত দেখে নিতে অবশেষে স্বয়ং হাজির হয়ে যাবে মাফিয়াসদার?
রানা জানতে চাইছে, সিআইএ-র কর্মকর্তা ডক্টর ডেভিড গ্রেবারের রহস্যময় ওই ল্যাবে কী আছে। ওদিকে ওরা জানে, ভয়ঙ্কর হিংস্র, রক্ত-পিশাচ ওই দানব আসছে ধেয়ে। গলা শুকিয়ে গেছে সবার। কেউ জানে না, একশ’ জনেরও বেশি সশস্ত্র সৈনিক ওটাকে ঠেকাতে পারবে কি না।…প্রাণ বাঁচাতে চলল ওদের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি! আবারও কি রাতের আঁধারে শুরু হবে নিষ্ঠুর গণহত্যা, ভিজে যাবে মাটি অসংখ্য মানুষের তাজা রক্তে? ওই রাক্ষস-বধ করতে এবং সিআইএ-র কুটিল পরিকল্পনা ঠেকাতে গিয়ে শেষে মস্ত ঝুঁকি নিল রানা – দানবের মুখোমুখি হবে বলে চলে গেল আদিম যুগের বিশাল এক উত্তপ্ত মৃত্যু-গুহায়!
কেন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত? তবে কি আসছে মারাত্মক খরা, তারপর ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ? এ বিষয়ে রিসার্চ করতে গিয়েই গায়েব হয়ে গেল নুমার তিনজন গবেষক। রানা-সোহেল তখন ছুটিতে। বন্ধু রাহাত খানের সহায়তা চাইলেন নুমা চিফ অ্যাডমিরাল জর্জ হ্যামিলটন। মালদ্বীপে কার্যত বাতিল হলো রানা ও সোহেলের ছুটি। বিসিআই চিফের নির্দেশে তৎপর হয়ে উঠল ওরা। রানা জানতে চাইল, কেন এক অদ্ভুত সুন্দরী চোখ রেখেছে। ওদের ওপর । কিডন্যাপারদের কাছ থেকে মেয়েটাকে উদ্ধার করেই ছুটল ভাসমান এক দ্বীপের পিছনে, সেখান থেকে ছুটল দুই বন্ধু সুদূর ইয়েমেনে। পৌছেও গেল শত্রু-শিবিরে, দেখল ন্যানোবটের কারখানা, কিন্তু কিছু করার আগেই ফেলে দেয়া হলো ওদেরকে গভীর এক মৃত্যু-কূপে!
সত্যিই সবুজ-শ্যামল-মায়াময় এই বাংলাদেশ হয়ে যাবে ধূ-ধূ মরুভূমি? কিছুতেই না! ইয়েমেনের মৃত্যু-কূপ থেকে মুক্ত হয়ে দুনিয়ার দুই দিকে ছুটল রানা ও সোহেল। শত্রু বিমান দখল করার পরও আকাশের বহু ওপর থেকে জ্বলন্ত বিমান ছেড়ে ঝাঁপ দিতে বাধ্য হলো রানা। তারপর বন্দি হলো রূপকথার মত অদ্ভুত এক সভ্যতা বিবর্জিত দেশে। ওদিকে শত্রু-ট্রাকে চেপে পৌছুল সোহেল মিশরে । খুনি জায়েদের ন্যানোবটগুলো নাসের হরদের প্রকাণ্ড আসওয়ান ড্যাম উড়িয়ে দেয়ার আগেই তা ঠেকাতে হবে! একা পারবে সোহেল? অবশেষে নৃশংস একদল খুনির মোকাবিলা করতে ভাসমান দ্বীপে গিয়ে উঠল রানা। সেখানে ওকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে চায় সর্বভুক নরকের কীট!