যে কোন নির্মাণকাজের জন্য নির্মাতাকে পূর্ব প্রস্তুতকৃত কোন মডেল অনুসরণ করতে হয়। মডেল যত নিখুঁত ও সুন্দর হয়, নির্মাণকাজও তত সুন্দর ও অনুপম হয়। বস্তুগত কোন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য যেমন মডেল অনুসরণ করতে হয়, ঠিক তেমন একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে নির্মাণ করতেও মডেল মানুষের দরকার হয়। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত, মানুষ নির্মাণের অনুপম মডেল ‘উসওয়াতুন হাসানা’ বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সা.)। যারা নিজেদের সত্যিকারের মানুষ হিসেবে বিনির্মাণ করতে চান, তাদের অবশ্যই বিশ্ব মানবতার মডেল রাসূলুল্লাহ (সা.)-র অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। রাসূল জীবনের পরিপূর্ণ আয়না হচ্ছে সীরাত গ্রন্থ। আলহামদুলিল্লাহ্, দুনিয়াব্যাপী রাসূল সা. এর সীরাত নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, লেখালিখি হচ্ছে, প্রবন্ধ হচ্ছে, গ্রন্থ রচিত হচ্ছে। বাংলা সাহিত্যেও সীরাত নিয়ে প্রচুর কাজ হয়েছে। অনেক সম্মানিত শায়েখ ও ওলামায়ে কিরাম সীরাত গ্রন্থ লিখেছেন। পৃথিবীর সেরা সীরাত গ্রন্থগুলোর বাংলা অনুবাদও হয়েছে। বিভিন্ন মুহতারাম শায়েখবৃন্দ রাসূলের জীবনীর ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটকে সামনে এনে লিখেছেন। প্রত্যেকটি প্রেক্ষাপটে লিখা সীরাত গ্রন্থ উম্মাহর জন্য অতি মূল্যবান হীরকখণ্ড। সীরাত নিয়ে শত কাজের ভিড়ে ‘প্রশ্নোত্তরে সীরাতুন্নবী (সা.)’ গ্রন্থটি একটি নতুন সংযোজন। প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে রাসূল (সা.)-এর জীবনী অধ্যয়নের এই ভিন্ন ধাঁচের গ্রন্থ সীরাতপ্রেমী মানুষদের হৃদয়ে নতুন করে দোলা দিবে ইনশাআল্লাহ। ‘প্রশ্ন’ হলো কৌতূহলের বহিঃপ্রকাশ। আর ‘উত্তর’ হলো উদ্ভূত কৌতূলের নিবৃত্তি। প্রশ্ন এবং তার উত্তর খুঁজে বের করার মাধ্যমে মূলত টেকসই জ্ঞান অর্জিত হয়। যেসব কৌতূহলী পাঠক রাসূল (সা.)-এর জীবন প্রণালী থেকে জ্ঞান অর্জন করতে চান, এ গ্রন্থটি তাঁদের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
মুসা আলাইহিস সালাম (পেপারব্যাক) - নবিদের গল্প-১: মুসা আলাইহিস সালাম। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন কর্তৃক মনোনীত নবি। উপাধি কলিমুল্লাহ। কুরআনুল কারিমে মুসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে খুব গোছানো কথা আছে।বাংলাভাষী শিশু-কিশোরদের জন্য আমরা সেই কথামালাকে সাজিয়ে বই আকারে তুলে ধরছি। আগামীদিনের ভবিষ্যৎ শিশুদের কাছে নবিদের ব্যাপারে কিছু তথ্য তুলে ধরার একটা প্রচেষ্টা দেখতে পাবেন এই সিরিজে। গল্পে গল্পে নবিজিদের সম্পর্কে জানবে আমাদের শিশুরা ইনশাআল্লাহ্।
আর্মেনিয়ার দিভিন উপত্যকায় দশ হাজার সদস্যের একটা মুসিলম জনপদ আজ বিপন্ন। সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবির বংশধরদের সর্বশেষ শাখা এরা। অদৃশ্য এক ষড়যন্ত্র এসে ঘিরে ধরেছে তাদের। তদন্ত করতে গিয়ে চার দক্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নির্মমভাবে নিহত। আহমদ মুসা ছুটল আর্মেনিয়া সীমান্তে। দিভিন সংকটের সমাধান শেষে আহমদ মুসা ছুটল সব ষড়যন্ত্রের হোতা সেন্ট সেমভেলের সন্ধানে। সবচেয়ে সুরক্ষিত, ভয়ংকর বিপজ্জনক সে ঘাঁটিতে আহমদ মুসার অভিযান। কী ঘটবে সেখানে? দুই লাখ মানুষের নিউ ট্রেজার আইল্যান্ড- গুপ্তধন সঞ্চিত নতুন রত্ন দ্বীপ। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের দ্বীপটা যেন শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের প্রতি”ছবি। ধীরে ধীরে শুরু হলো অবিশ্বাস আর বিভেদ। সামনে এগোতে গিয়ে আহমদ মুসা দেখল অদৃশ্য ষড়যন্ত্র অনেক গভীরে! ওদের দেশ নেই, নাম নেই, পরিচয় নেই। ছায়ার সঙ্গে শুরু হলো ভয়ংকর লড়াই। রত্নদ্বীপের ওপর ঘনিয়ে এলো মহাবিপদ, যে বিপদ ধুলায় মিশিয়ে দেবে রত্নদ্বীপকে। ঘটনাস্রোত আহমদ মুসাকে আবার নিয়ে এলো হুই-উইঘুরদের দেশে। মৈত্রী ও সমঝোতার অবস্থা ভেঙে পড়ায় উইঘুররা আবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ভয়ংকর শক্তিশালী সন্ত্রাসীরা চীনা রাজতন্ত্রের উত্তরসূরি এবং বাইরের সমর্থনপুষ্ট। এদের লক্ষ্য নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। এরা একদিকে উইঘুরদের উসকানি দিচ্ছে, অন্যদিকে সরকারকে উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। কীভাবে হুই-উইঘুরদের রক্ষার মিশন নিয়ে এগোচ্ছে আহমদ মুসা?
‘থ্রি জিরো’ নামের ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী টার্গেট করেছে ওআইসির গোপন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আইআরটি’-কে। আইআরটি আবিষ্কার করেছেন ‘সোর্ড’ নামের একটি মানবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। থ্রি জিরোর টার্গেট সোর্ড-এর ফর্মুলা হাত করা। আহমদ মুসা এই ষড়যন্ত্রের কণ্ঠরোধে যে ডালেই বসেছে, সে ডালই ভেঙে পড়ছে। সোর্ড অস্ত্রের জনক বিজ্ঞানী আন্দালুসিকে কিডন্যাপ করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা প্রেসিডেন্টকে পণবন্দি করার পরিকল্পনা করল। তারপর... টার্কিস ‘আরা আরিয়াস’ এলাকায় পাঁচশো পরিবারের বাস। হঠাৎ করেই এই এলাকায় মাফিয়া-সন্ত্রাসের উদ্ভব। আজদা আয়েশা জার্মানি থেকে পিএইচডি করে দেশে ফিরে দেখল তার ভাই আতা সালাহ উদ্দিনের যাবজ্জীবন জেল। ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখা গেল গভীর ষড়যন্ত্রের এক গুঞ্জন। অন্যদিকে পূর্ব আনাতোলিয়া ঘিরে একটা ষড়যন্ত্র নিয়ে এগোচ্ছে গোপন সংগঠন হোলি আরারাত গ্রুপ। সেনাবাহিনীর এক জেনারেল ষড়যন্ত্রের গোড়ায়। সংঘাত-সংঘর্ষ পাড়ি দিয়ে সেখানে আবারও ফিরে এলো আহমদ মুসা। ওদের ষড়যন্ত্র কি সফলতার দ্বারপ্রান্তে? প্রতিভাধর কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত নিখোঁজ হচ্ছে দুনিয়া থেকে। এ নিয়ে হইচই হচ্ছে, কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। এগিয়ে এসেছে আহমদ মুসা। কিন্তু চারদিকে শুধুই অন্ধকার? ‘ব্ল্যাক সান সিন্ডিকেট’-এই নামটাই সে শুধু পেয়েছে। গোটা দুনিয়ায় ওদের হাত, ওদের উপস্থিতি। অবশেষে সে জানতে পারল, কোনো এক ‘অ্যাটল দ্বীপ’ তাদের ঠিকানা। কোথায় সে দ্বীপ, তারই সন্ধানে আহমদ মুসার নতুন যাত্রা।
একজন দাঈ ও বিচারকের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য আছে। বিচারককে অবশ্যই মানুষের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে খুঁটিনাটি অনুসন্ধান করতে হয়, যেন পক্ষে বা বিপক্ষে রায় দিতে পারেন। সেজন্য বিচারককে বিচারাধীন মানুষজন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণ প্রয়োগ করতে হয়, তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে হয়। কারণ, অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ হলে বিচারক তাদের নির্দোষ ঘোষণা করতে কিংবা দোষী হলে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারেন। অন্যদিকে একজন দাঈর কর্তব্য হলো-তিনি সবাইকে আহ্বান করবেন, সবার কাছে তাঁর বার্তাগুলো পৌঁছে দেবেন, সবাইকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবেন। একজন দাঈ ইসলামের বাণীকে সমগ্র মানবজাতির কাছে সাধ্যমতো ছড়িয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করবেন-যাতে একজন পথভ্রষ্ট ব্যক্তি পথ খুঁজে পায়, পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তওবা করে ফিরে আসে, মূর্খ ব্যক্তি শেখার সুযোগ পায়; এমনকী একজন অমুসলিম ব্যক্তিও যেন ইসলামকে সাদরে গ্রহণ করার আগ্রহ অনুভব করে। কোনো ভুলকারীর শাস্তি কী হবে, সেটি নিয়ে কখনো দাঈ কাজ করে না; বরং কীভাবে সেই ভুলকারী ব্যক্তিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা যায়, সে বিষয় নিয়েই দাঈ কাজ করে। একজন দাঈ কখনো মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ করার জন্য মুরতাদ খুঁজে বেড়ায় না; বরং একজন মুরতাদকে ইসলামের সংরক্ষিত আঙিনায় ফিরিয়ে আনার প্রয়াস চালানোকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব মনে করে।
মুহাম্মাদ ﷺ দ্যা ফাইনাল ম্যাসেঞ্জার (হার্ডকভার) - বিশ্ব সিরাত প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকারী সর্বাধিক আলোচিত সিরাতগ্রন্থ: প্রিয় নবিজিকে নিয়ে দুনিয়াব্যাপী প্রতিটি মুহূর্তে আলাপ চলমান এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা অবিরাম চলতেই থাকবে। নবিজির শানে গান-কবিতার মালা গাঁথা হয়েছে কত শত। নবিজীবনের ছবি আঁকতে কলম রাঙিয়েছে কত হাজার পৃষ্ঠা! তবুও যেন শেষ হয় না তাঁর বর্ণনা। তবুও ফুরোয় না তাঁকে আরও গভীরভাবে জানার আকুতি! তাঁর জীবন-পাতায় পরিভ্রমণের অর্থ—একজন অনুপম চরিত্র ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী, শান্তিকামী, অধিকার সচেতন, পরমত সহিষ্ণু, বিশ্বস্ত বন্ধু, সুহৃদ বাবা, সোহাগি ও মনোযোগী স্বামী, স্নেহবৎসল নানা, ধৈর্যের উপমা, প্রেরণার উৎস, ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তার অধিকারী, লক্ষ্যজয়ী, সফল সমরনায়ক ও দূরদর্শী নেতার সাথে সাক্ষাৎ করা। তাঁকে পাঠের অর্থ হলো—একটি সার্থক বিপ্লব ও সোনালি সভ্যতার নির্মাণকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা। তাঁকে খোঁজার অর্থ হলো নিজেকে ভেঙে নববি ছাঁচে নতুন করে গড়ার আকাক্সক্ষা। সেই আকাক্সক্ষা থেকেই আয়োজিত হয়েছিল বিশ্বে সিরাতগ্রন্থ রচনা প্রতিযোগিতা—১৯৭৬। রাবেতায়ি আলামে ইসলামি কর্তৃক আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় সারা বিশ্বের প্রথিতযশা সিরাতবেত্তাগণ জমা দিয়েছিলেন ১১৮২টি সিরাত গবেষণাকর্ম। বিশ্বে আয়জনের সেই বিশাল সমাহার থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী সিরাত গ্রন্থের নাম ‘খাতামুন-নাবিয়্যিন (Muhammad ﷺ The Final Messenger)। সেই অমূল্য রত্নেরই বাংলা অনুবাদ ‘মুহাম্মাদ ﷺ দ্যা ফাইনাল ম্যাসেঞ্জার’।