যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল - সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলাের অন্ধকার জগতের চিত্রায়ন: মুহিব ভেবেছিলাে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। প্রেমিকা, পরিবার, বন্ধু এবং বান্ধবিদের নিয়ে উনিশ বছরের সুখি জীবন। প্রশাসনের দুর্নীতি আর অনিয়মের মধ্যেও জীবনটা মানিয়ে নিতে শুরু করেছিলাে যখন, ক্যাম্পাসের একটি খুন পাল্টে দিলাে সবকিছু। পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলতেই যেন যােগ দিলেন একজন ক্যালটেক ফেরত শিক্ষক, ভদ্রলােকের বাম-হাতটা কনুইয়ের নিচ থেকে কাটা কেন? ছাত্রনেতারা রাজনীতির নামে কোন অন্ধকার জগতে পা বাড়িয়েছে? এই কেসে কমিউনিস্ট পাটির আগ্রহটা ঠিক কোথায়? পুলিশ এবং প্রশাসনের নীরবতার কারণ কি? আন্দোলনরত শিক্ষার্থিদের ক্ষোভের উৎপত্তিস্থল কোনটি? মুহিব জানে সে আর পিছিয়ে আসতে পারবে না। পড়াশােনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে -আসা ছেলেমেয়েগুলাে কোন পরিস্থিতিতে হাতে অস্ত্র তুলে নেয় টের পেলাে হাড়ে হাড়ে। যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলাের অন্ধকার জগতের চিত্রায়ন। কৌতুহলের কাছে সতকর্তার হার মেনে যাওয়া মানব-চরিত্রের সহজাত বৈশিষ্ট্য। এ এক হার মেনে নেওয়া উপাখ্যান। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সাধারণদের না পেরে ওঠার গল্প। তারুণ্যের শক্তি-আদর্শের লড়াই আর মতবাদের সংঘর্ষ। অধিকার আদায়ে বেপরােয়া চিরায়ত বাঙালি ছাত্রদের স্তবগান। সাধারণ এক ছাত্রের জীবন বিশ্ববিদ্যালয়ের আঁধারস্পর্শে ধীরে ধীরে পাল্টে যাওয়ার উপাখ্যান। এক মিথস্ক্রিয়ার পর মৃগতৃষায় যে কিশাের পাশা ইমনকে পেয়েছিল পাঠক, এবারও তাকে পাবে বৃহৎ কলেবরের যে হীরকখণ্ডে ঘুমিয়ে কুকুরদল উপন্যাসে।
যুগলটির বয়স বেশি না। ছেলেটির ঠেলেঠুলে ঊনিশ, মেয়েটির সতের। বিল্ডিংয়ের পেছনে কোন মানুষ নেই। তিনটি গাড়ি সুন্দর করে পার্ক করা। পার্কিংলট হিসেবে বাড়ির পেছনের জায়গাটুকু ব্যবহারের উদাহরণ ঢাকায় বিরল। ব্যাকডােরটা হা-করে খােলা থাকে রাত এগারােটা পর্যন্ত। বাসিন্দারা গাড়ি পার্ক করে ওপথে সুন্দর করে ঢুকে যেতে পারে। | রাত এগারটার পর আধঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে। দরজা বন্ধ থাকায় পার্কিংলটে এখন কেউ নেই। গাড়ি থেকে আস্তে করে বের হয়ে সাবধানে দরজা লাগাল রুহান। ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তার, তবে গাড়ি ভালই চালায়। আজকে ছােটখাটো একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে অবশ্য। এ মুহূর্তে ফ্রন্ট বাম্পারের নড়বড়ে অবস্থা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস গােপন করলাে সে। বাবা যখন দেখবে খবর হয়ে যাবে। অন্যপাশে এসে প্যাসেঞ্জার সিটের দরজা খুলে দিল। আপাতত দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই, সময়েরটা সময়ে দেখা যাবে। রুহান চিন্তার ছাপ সরিয়ে মুখে চমক্কার হাসিটা ফুটিয়ে হাত বাড়িয়ে দিল প্রেমিকার দিকে। কাঁধ পর্যন্ত কাটা চকচকে চুল দুলিয়ে ওর দিকে ঘুরে তাকালাে অরনী, তারপর হাত ধরে গাড়ি থেকে বের হয়ে এলাে। বের হয়েও হাতটা ছাড়লাে না মেয়েটি। রুহান ওকে দেওয়ালের দিকে নিয়ে গেলাে। চোখ বন্ধ করে ফেললাে অরনী। ঠোঁটের কাছে রুহানের ঠোঁটের স্পর্শ পেতে চুপচাপ গ্রহন করলাে আদরটুকু। অরনীর ঘন ভ্রুর দিকে তাকায় রুহান। “ভেবে দেখ, বাসায় কেউ নেই। এখন কি তােমার যাওয়াটা খুবই দরকার?” রুহানের গলা জড়িয়ে ধরে অরনী। “আম্মু মেরে ফেলবে...আরেকদিন। এখন একটু ধরে থাকো।” বিকট অথচ ভোঁতা শব্দটার সাথে ছিটকে এলাে কাঁচ। ভারি জ্যাকেটের কারণে রুহানের পিঠের কোন ক্ষতি হলাে না অবশ্য। ছিটকে দেওয়ালের দিকে সরে গেছে অরনী, দুই চোখ বিস্ফারিত। রুহানের কাঁধের ওপর দিয়ে তাকিয়ে আছে আতঙ্কিত চোখে। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালাে রুহান। এক নজর দেখেই বুঝতে পারলাে, বাম্পার নিয়ে চিন্তা করার আর কোন কারণ নেই। বাবার চোখ ওদিকে পড়ার কথা নয় আর। গাড়িটার ছাদের ওপর এসে পড়েছে একটি মানবদেহ। সাততলা বিল্ডিংয়ের হাদের ওপর থেকে এই পতন। দেখামাত্রই বুঝতে পারলাে রুহান। ঝট করে তাকালাে ওপরের দিকে। বিশালদেহের কেউ দাঁড়িয়ে ছিলাে ওখানে, তাকানােমাত্রই নিমেষে উধাও হয়ে গেলাে সে। কাঁপা পায়ে সামনে এলাে রুহান, গাড়ির ছাদ তুবড়ে দিয়ে পড়ে থাকা মানুষটির মাথা থেকে ঘিলু বেরিয়ে এসেছে, রক্তের ধারা গড়িয়ে উইন্ডশিল্ডের ওপর দিয়ে নেমে এসেছে বনেটের ওপর। ছড়িয়ে গেছে অনেকটা। পেছনের কাঁচ ভাঙলেও উইন্ডশিল্ডটা টিকে গেলাে কিভাবে সেটা একটা বিস্ময়। পড়ে থাকা দেহটার মুখের অবশিষ্টাংশ দেখে আঁতকে উঠলাে। “মাই গড!” বিড় বিড় করে বলে রুহান। ওপর থেকে পড়া দেহটির মাথা সামনের কাঁচের ওপর দিয়ে ঝুলে গেছে। উন্মুক্ত গলায় মানুষের দাঁতের কামড়ের চিহ্নটা চোখ এড়ায়নি ওর।
সুরক্ষিত পেন্থাউজে বাস করে সে, কারও সাতে-পাঁচে নেই। আপাতদৃষ্টিতে নিতান্তই গােগাবেচারা একজন। কঠোরভাবে মেনে চলে কয়েকটি অনুশাসন, অনুসরণ করে নিজস্ব কিছু নীতি। এর বাইরে তার যে পরিচয় সেটি খুব বেশি মানুষ জানে না। জীবন-মরণ সমস্যায় নিপতিত মানুষজন তার সাহায্য কামনা করে তাদের কাছে সে কেবলই একজন ‘নােহােয়ার ম্যান।’ প্রতিপক্ষের চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকে সব সময়, অতিমাত্রায় সতর্ক একজন মানুষ। কঠোর প্রশিক্ষণ কাজে লাগায় অসহায় মানুষের পক্ষে। কিন্তু সর্বশেষ মিশনটি সবকিছু ওলটপালট করে দেয়, ছক থেকে বের হয়ে আসতে হয় তাকে। অনুশাসনের বলয় থেকেও সরে আসে ধীরে ধীরে। প্রতিপক্ষের সুচতুর চাল উন্মােচিত করে দিতে থাকে তার মুখােশ। তবে কি কেউ জেনে ফেলেছে তার গােপন পরিচয়টি? জীবনে প্রথমবারের মতাে কি ব্যর্থ হতে চলেছে ‘অরফান এক্স’? বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিলাে ইভান স্মােক। অন্ধের মতাে ঝাঁপ দিলাে অতল এক গহ্বরে-নাকি পেতে রাখা ফাঁদে? গ্রেগ হুরউইজের অসাধারণ সৃষ্টি ‘অরফান এক্স’ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলােচিত আর জনপ্রিয় একটি থৃলার। খুব শিঘ্রই হলিউড মুক্তি দিতে যাচ্ছে অরফান এক্স সিনেমাটি কিন্তু বাংলাভাষাভাষি পাঠককে আগেভাগেই এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে বাতিঘর প্রকাশনী।
বাংলাদেশের অনিয়ম আর অবিচারের সমাজ বদলে দেওয়ার জন্য নানা মুনির আছে নানা মত। কেউ মনে করেন গণতন্ত্রের সঠিক প্রয়োগ জনগণকে এ থেকে মুক্তি দেবে, কেউ ভাবেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রই একমাত্র সমাধান। বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া দুই ছাত্র মনে করলো ভিন্ন কিছু। তাদের বিশ্বাস, নষ্ট হয়ে যাওয়া সিস্টেমকে একেবারে ধ্বংস করেই গড়ে তুলতে হয় নতুন কিছু। দেশ যখন উত্তাল নানা চেতনার ফেরিওয়ালাদের তর্জনীর ইশারায় অথবা বিশ্বাসে অন্ধ মেজরিটির অঙুলিহেলনে, ওরা বেছে নিলো স¤পূর্ণ নতুন পথ। গড়ে তুললো গুপ্তসঙ্ঘ জাদুঘর। সিস্টেমকে একেবারে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য হাত নোংরা করতে হয়। হাত ওরা নোংরা করলোও। রক্ত ঝরলো। অপবিত্র রক্ত! রাজধানীর দেওয়ালে লেখা হলো বিখ্যাত শিশুতোষ ছড়ার বিকৃতরূপ। জাদুঘর পাতা আছে এই এখানে রক্তের ঝিকিমিকি আঁকা যেখানে...!
খুন হয়ে গেল ছদ্মনামে লেখালেখি করা জনৈক ‘নাস্তিক’ ব্লগার। হােমিসাইড ডিপার্টমেন্টের ডিটেক্টিভ আসিফ আহমেদ সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়লাে মাঠে। কল্পনাও করতে পারেনি কাদের বিরুদ্ধে লাগতে যাচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার আসিফের পছন্দ নয়, অথচ ভবিতব্য এড়াতে পারলাে কই? প্রাণ বাঁচাতে ট্রিগার চাপতে বাধ্য হলাে। একুশ বছরের এক মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। নিরুপায় বাবা শরণাপন্ন হলেন উঠতি এক প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের। জোহান লস্কর যখন কেসটা নিলাে, ব্যক্তিগত জীবনেও চলছে তার টানপােড়ন। কাঞ্চনপুরে পা রাখতেই শুনতে হলাে হুমকি-‘সময় থাকতে চইলা যান। পরে জান লইয়া ভাগতে পারতেন না’। একাত্তরে অসমসাহসী যুদ্ধ করেছে টাইগারবাহিনী, কিন্তু রাজাকার হায়দারের সাথে মুক্তিযােদ্ধা কিবরিয়ার দহরম মহরম হয় কী করে? পরিস্থিতি আরও ঘােলাটে করতে চিত্রপটে এলাে মুরং ওঝা, রহস্যময় আশ্রয়দাতা হাজীসাহেব, নিটোল সৌন্দর্যের অধিকারিণী সুমি। একাত্তরে কাঞ্চনপুরে কি ঘটেছিলাে যার জের টেনে আজকের দিনেও প্রাণভয়ে ছুটে পালাতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাধারণ ছাত্রকে? ক্যামেরা নিয়ে মাঠে নামলাে ছিচকে রিপাের্টার জন, পেছনে লাগলাে নির্মম, চৌকস এক সংগঠন। পড়তে শুরু করলাে লাশ! দেশবাসীর চোখ তখন আটকে আছে মাহেন্দ্রপুরের মহাযুদ্ধে। মাত্র ছয়জন যােদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে স্রেফ প্রখর বুদ্ধিমত্তা সঙ্গি করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আস্ত এক কোম্পানি সৈন্যের বিরুদ্ধে অসম লড়াইয়ে নামলাে টাইগার। দিনশেষে বুঝতে পারলাে ষড়রিপুর বিরুদ্ধে যুদ্ধটা বন্দুকযুদ্ধের চেয়েও অনেক অনেক বেশি কঠিন। মুষ্টিমেয় কিছু সিভিলিয়ান শক্তভাবে দাঁড়ালাে প্রশিক্ষিত এক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। ছারপােকা : দ্য ব্যাটল অভ মাহেন্দ্রপুর বইটি খুলতে যাচ্ছে এমন এক অধ্যায় যা বাংলাদেশে স্মরণ করা নিষিদ্ধ হয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধকে পণ্য বানানাের পর থেকে।
ব্যালকনি থেকে আছড়ে পড়ে মারা গেলেন রিয়েল স্টেট মােঘল ম্যাথু স্টার। খুন নাকি আত্মহত্যা—প্রশ্নটার জবাব পাওয়ার আগেই ঘটতে শুরু করল একের পর এক নাটকীয় ঘটনা। তদন্তের দায়িত্ব পড়ল ডেটেক্টিভ নিকি হিটের ওপর। পেছনে ছায়ার মত লেগে রইল বিখ্যাত সাংবাদিক জেমসন রুক। পুরােদমে তদন্ত এগিয়ে যেতে থাকে। পরিপূর্ণ পুলিশওয়ার্ক বলতে যা বােঝায়, তাই করে চলল ডিটেক্টিভ হিট। ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকল সত্য আর মিথ্যের ফারাক। পার্সন অফ ইন্টারেস্ট হিসেবে চিহ্নিত মানুষগুলাে মিথ্যে বলছে কেন? ম্যাথু স্টারের প্রকৃত পরিচয় কি? ব্যবসায়িক কারণে খুন হয়ে গেলেন, নাকি এর পেছনে আরও কিছু কারণ আছে? পার্সন অব ইন্টারেস্টদের সাথে ভিক্টিমের সম্পর্ক কি ছিল? এক্ষেত্রেও প্রশ্নগুলাের উত্তর পাওয়ার আগেই ডিটেক্টিভ হিট এবং জার্নালিস্ট রুকের সম্পর্কে এল নাটকীয় পরিবর্তন। সত্য অনুসন্ধানের লক্ষ্যে রেইড চলছে, চলছে একের পর এক ইন্টারভিউ, হাতকড়া উঠছে একের পর এক অপরাধীর হাতে, বাতাসে শিস কাটছে বুলেট, কিন্তু প্রমাণ জুটছে না। নাগালের বাইরেই রয়ে যাচ্ছে খুনি। নিকি হিট কি পারবে সত্যিকারের খুনিকে ধরতে?