বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।বইটিতে ইরানের সংস্কৃতির একটা সম্মখ ধারণা পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন ইরানে কাজ করার সুবাদে লেখক ইরানের যাপিত জীবনের খুটিনাটি খুব কাছ থেকে খেয়াল করেছেন।
আশির যখন জাপানে পড়তে গিয়েছিল ও তখন ছাত্র। পুরো আলাদা একটা সংস্কৃতিক থেকে সেখানে গিয়ে সে দেশের নানা কিছু দেথে ও স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়েছে। বিচিত্র বিষয় নিয়ে ব্যক্তিগত ঢঙে লেখা এই বইয়ের ছোট ছোট রচনাগুলো ওর সেই অবাক হওয়ার গল্প। জাপানি জীবনের নানা ব্যাপার দেখে ও একাই শুধু অবাক হয়েছে তা নয়, ওর স্বাদু চিত্তাকর্ষক আর আমেজি লেখার মৌতাতে পাঠক হিসেবে আমরাও যেমন কিছুটা অবাক হয়েছি। লেখাগুলো ছোট মজাদার বুদ্ধিদীপ্ত ও গতিশীল। বিচিত্র তথ্যে ভরা। লেখার এই প্রসাদগুণ দিয়ে আশির ছোট ছো বেশকিছু মানবিক গল্পের পাশাপাশি জাপানি জীবনের নানা পরিচয়- ওখানকার মানুষের আত্মহত্যা, তাদের ভূতে বিশ্বাস, ফিউনারালের পরিপাটি ব্যবস্থা, শ্মশান, কাস্ট সমস্যা, কুসংস্কার, সামাজিক শিক্ষা, ভাষা, মিডিয়া- এমনি হরেক বিষয়কে রমণীয় করে তুলেছে। দেশটিকে ও টুরিস্টদের মতো বাইরে থেকে দেথেনি- দেখেছে একজন বিদেশি হিসেবে যে বহুদিন সে দেশে থাকতে থাকতে নানা বাস্তব ও মানবিক অভিজ্ঞতায় ভরে উঠেছে। এ বই তারই উষ্ণ সজীব বিবরণ। এজন্যে বইটিতে জাপানের অন্তর্জীবনের খবর মেলে। বছর আট-দশ আগে জাপানে বেড়াতে গিয়ে আমি ওদেশের ওপর একটা ভালো বই নিয়ে এসেছিলাম। কিন্ত বইটি পড়ে জাপানকে যেন জেনেছি তার চেয়ে বেশি। এর কারণ এ গল্প জাপানের একেবারে ভেতরের গল্প। লেখকের ব্যক্তিগত রসবোধ, চাউনি, বর্ণনাভঙ্গি একে প্রাণবন্ত করেছে। বইটি আমাকে জাপানের বাসিন্দা করে তুলেছে। পড়ার সময় মনে হয়েছে সব পাঠকেরই হয়তো তাই মনে হবে। -- আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
কখন স্যার বেরিয়ে যান টের পাই না। আমি ঠায় বসে থাকি। ছেলেরা পরের ক্লাসের জন্য ছােটে। কেন জানি আজ আর আমার ক্লাসে যাবার কোনাে তাড়া থাকে না। সব শেষে আমি বের হই । শূন্য বুকে এলােমেলাে হাঁটি করিডােরে। - শুনুন। চমকে পিছন ফিরি । দেখি, নীলা দাঁড়িয়ে করিডােরে। একা। নীরবে তাকাই ওর দিকে। ডাগর কালাে চোখ মেলে অভিমানী সুরে বলে, এই এক সপ্তাহ আসেননি কেন? আমি যেন হঠাৎ জীবনানন্দ দাশ হয়ে যাই। সামনে দাড়িয়ে শ্রাবস্তির কারুকাজ করা মুখের বনলতা সেন। যেন বলছে; "এতদিন কোথায় ছিলেন? পাখির নীড়ের। মতাে চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।" বিএল কলেজের করিডােরে দাঁড়িয়ে, সতেরাে বছরের এক কিশাের তারই এক সহপাঠিনীর মুখে দেখেছিল শ্রাবস্তীর কারু কাজ। তার ডাগর কালাে চোখে দেখেছিল ছেলেবেলায় গ্রামের বাড়িতে দেখা কাজলদিঘি। যে দিঘিতে সাঁতার না জানা বালকের মতাে সে শুধুই তলিয়ে যেত। কল্পনায় সেই কিশােরীকে কখনাে সে ভাবত পুরুরবার প্রেমে পাগল উর্বশী, কখনাে বিশ্বামিত্রের ধ্যান ভাঙানাে মেনকা কিংবা বুকে ঝড় তােলা ছন্দে চলা মন্দাকিনী, কখনাে বা পাখির নীড়ের মতাে চোখের বনলতা সেন। ভৈরবের তীরে বসে সেই দুই কিশাের কিশােরী রচেছিল এক অসম্ভব প্রেমের মহাকাব্য। তীরে পৌছুবে না জেনেও দুর্বল হাতে সেই নদীতে বেয়েছিল এক মায়াবী প্রেমের পানসিনাও। বনলতা এমনই দুই কিশাের-কিশােরীর কষ্ট মধুর প্রেমকাহিনি।
কে প্রথম কাছে এসেছি/কে প্রথম চেয়ে দেখেছি, কিছুতেই পাই না ভেবে কে প্রথম ভালোবেসেছি তুমি? না আমি? দু'জনের যে কেউ একজন প্রেমের এই প্রদীপখানি তুলে ধরতেই পারে জীবনপথের সরণিজুড়ে। যে প্রেম হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে দাঁড়ায় অলক্ষে তার, সে তো চিরকালের সামগ্রী।
এই গ্রন্থে আমার পাঁচ বছরের ইস্তাম্বুল-জীবনের কিছু মুহূর্তকে কখনো গদ্যে, কখনো পদ্যে, কখনোবা স্বপ্নের ভাষায় লেখার চেষ্টা করেছি। জেগে থেকে ইস্তাম্বুলের যা কিছু দেখেছি, তার পাশাপাশি এই শহরে ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্নগুলোর কদর না করলে এই স্মৃতিকথা অপূর্ণ থেকে যেত। বিশেষ করে এই পাঁচ বছরের প্রায় অর্ধাংশ আমাকে চলনশক্তিহীন জীবন যাপন করতে হয়েছে, এখনো তা-ই। হুইলচেয়ারে করে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ ইদানীং আর খুব একটা হয় না। তাই লুসিড ড্রিমিং অনেকটা ভরসা…