পাইন রিজ নামের ছোট্ট ছিমছাম গ্রামে সত্যিই কি ভ্যাম্পায়ার হানা দিয়েছে? বিশ্বাস করে না অয়ন-জিমি। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। নিজ চোখে দেখল ওরা, গভীর রাতে গাঁয়ের আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে অতিকায় এক বাদুড়। ঘুম থেকে জেগে উঠছে মানুষ রক্তশূন্য শরীর নিয়ে। তাদের গলায় পাওয়া যাচ্ছে সূক্ষ্ম দুটো কামড়ের দাগ। এখন কী করবে ওরা? গোয়েন্দা দিয়ে কি আর ভ্যাম্পায়ার তাড়ানো যায়? দেখাই যাক।
ম্যারিয়ট ম্যানশন… প্রাসাদের মত বিশাল এক পরিত্যক্ত প্রাচীন বাড়ি। একটা খেলার আয়োজন করা হয়েছে সেখানে, গোয়েন্দাগিরির খেলা। এক রাতের জন্য ভেতরে আটকা পড়বে কয়েকজন মানুষ, তাদের ভেতর থেকে ‘খুন’ হবে একজন, বাকিরা বুদ্ধি খাটিয়ে খুনিকে খুঁজে বের করবে। অনেকের মত অয়ন, জিমি আর রিয়াও চলল খেলায় অংশ নিতে। কিন্তু ওরা জানত না, বাড়িটা অভিশপ্ত। প্রতিশোধের নেশায় অতৃপ্ত আত্মারা ঘুরে বেড়াচ্ছে বাড়ির আনাচে-কানাচে। বাড়িতে ঢুকতেই সত্যি সত্যি উধাও হয়ে গেল একজন। শুরু হয়ে গেল রোমহর্ষক কান্ড-কারখানা। খেলা আর খেলা রইল না, হয়ে উঠল প্রাণ বাঁচানোর লড়াই।
নেভাদার এক র্যাঞ্চে বেড়াতে গিয়ে নতুন রহস্যের জালে জড়িয়ে গেল অয়ন-জিমি। প্রথম রাতেই আগুন লাগল গোলাঘরে, ওদের মাথায় বাড়ি দিয়ে পালিয়ে গেল এক মুখোশধারী লোক। বাধ্য হলো ওরা তদন্তে নামতে। জানল, পুরো র্যাঞ্চ জুড়ে চলছে পানির হাহাকার, আর তা নিয়েই নোংরা ষড়যন্ত্রে মেতেছে কেউ। সেই ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে গিয়ে মস্ত বিপদে পড়ল দু’বন্ধু। হাড়ে হাড়ে বুঝল, জল নিয়ে রহস্য মানেই জলের মত সোজা নয়। কখনও কখনও তা পাথরের চেয়েও কঠিন হতে পারে।
প্রাসাদ বাড়ির রহস্য সদ্যপ্রয়াত এক পাগলাটে পরিচালকের উইলে পাওয়া গেছে অদ্ভুত এক ধাঁধা,ভেদ করতে পারলে মিলবে গুপ্তধন। রিয়াকে নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রাচীন এক প্রাসাদ বাড়িতে ঢুকল অয়ন-জিমি। আধপাগল কেয়ারটেকার আর লোভী আত্মীয়ের দল ভিড় জমিয়েছে ওখানে, রয়েছে অদৃশ্য এক প্রতিপক্ষও। বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলল প্রাসাদ বাড়িরর আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াতে থাকা এক মৃত দাসী! তারপর? বিপদের ছয়টি আঙুল অদ্ভুত একটা হাতমোজা কুড়িয়ে পেল অয়ন আর জিমি- পাঁচটার জায়গায় ছ’টা আঙুল! কৌতুহলের বশে মালিকের খোঁজে বেরুতেই পড়ে গেল মহা বিপদে। প্রথমে এল হুমকি, তারপর আক্রমণ। কেউ একজন চাইছে না ওরা মানুষটাকে ওরা খুঁজে বের করুক। কারণটা কী? রোখ চেপে গেল দু’বন্ধুর, রহস্যটা ভেদ করেই ছাড়বে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে একটা হারানো মুকুট যে পুরো ব্যাপারটাকে এভাবে জট পাকিয়ে তুলবে, সেটা তদন্ত শুরুর সময় কল্পনাও করতে পারেনি ওরা! পাথরপিশাচ চমকে উঠলেন বৃদ্ধ হিউ মিচাম। তাঁর পাশের বাড়ির ব্যালকনিতে জ্যান্ত হয়ে উঠেছে একটা পাথরের তৈরি পিশাচমূর্তি! টিকটিকির মত ওঠানামা করছে দেয়াল বেয়ে। অবিশ্বাস্য! তদন্ত করতে গেল অয়ন-জিমি। আঁতকে উঠল রাত দুপুরে জানালায় গারগয়েলের মুখ দেখে। শুরু হয়ে গেল একের পরে এক রহস্যময় কাণ্ড। কে ঘটাচ্ছে একের পর এক রহস্যময় কাণ্ড? কেন?
বনের ভেতর থেকে এমিলি নামের ছোট্ট এক মেয়েকে উদ্ধার করল অয়ন, জিমি আর রিয়া। ওকে নাকি ড্রাগন আক্রমণ করেছিল। এমিলির মা বললেন, তাঁর মেয়ে বড্ড কল্পনাবিলাসী। ওর জগৎ্টা রাজকন্যা-রাজপুত্র, দত্যি-দানো, পরী-জাদুকর আর রূপকথার সব প্রাণী দিয়ে ভরা। তা-ই যদি হবে, এমিলিকে আক্রমণ করল কে? অদ্ভুতদর্শন এক পাখি নিয়ে কে ঘুরে বেড়াচ্ছে উপত্যকায়? অলোকদর্শী অ্যালথিয়াই বা অমঙ্গলের আশঙ্কা করছে কেন? কেনই বা হামলা আসছে অয়ন-জিমি-রিয়ার ওপর… বার বার? রহস্যের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে গোয়েন্দারা। শেষে বুঝল, এই রহস্যের সমাধান করতে চাইলে এমিলির চোখ দিয়ে দুনিয়াটা দেখতে হবে ওদের। উকি দিতে হবে রূপকথার জগতে।