মানববিদ্যার প্রধান অলিন্দগুলির সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত, সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অংশেই আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর অধিবাস। এ বিদ্যার স্তরূপে স্বীকৃত হয়ে আছে মানববিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের সামাজিক ভূগোল । আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর আজন্ম সাধনা মানবকল্যাণ। এবং এই কামনার ব্যবহারিক উদ্যান মানুষের জীবন-তিনি এই জীবনের স্বাচ্ছন্দ্যসাধনের লক্ষ্যে এক নিবেদিত হৃদয়। আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরীর বিচিত্রতর বহুবর্ণ জীবন বয়ে গেছে অসংখ্য স্রোতধারায়, সব স্রোত এক ও অলঙ্ঘ লক্ষ্যের দিকে মানবহিতৈষণা। ভাষা, দেশ, জাতি, শিক্ষা, প্রশাসন কূটনীতি—জীবনের সকলক্ষেত্রেই ছিলেন অক্লান্ত সংশপ্তক, দ্ব্যর্থহীন অধিনায়ক। তিনি আজন্ম বিশ্বাসী একটি শোষণহীন, সমতাভিত্তিক ন্যায়ধর্ম-সমন্বিত মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রাষ্ট্রব্যবস্থায়। পীড়িত জনতার আর্তনাদ, অতএব, তাঁর জীবনজিজ্ঞাসায় বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে-আলোড়ন তুলেছে তাঁর কর্ম ও জীবন-যাপনে। মসৃণ ও বন্ধুর—উভয় জীবনপথেই তিনি ভ্রমণশীল এক অক্লান্ত পথিক; দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী অকুতোভয় আত্মমর্যাদা ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব-বিশ্ববীক্ষা ও সমাজচেতনার ।
রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত লেখা ছিল এলিয়েনদের নিয়ে। কয়েকজন বিজ্ঞানী ১৯৫০ সালে দুপুরের খাবার খেতে বসে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তারা কোথায়? স্টিফেন হকিং স্পষ্ট মানা করে দিয়েছেন এলিয়েনদের সঙ্গে যেকোনো যোগাযোগের প্রচেষ্টাকে। কেন? আমাদের ছায়াপথে তারা আদৌ আছে কি? ড্রেক ইকুয়েশন কী বলে? আমরা কি একা? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজাই এই বইয়ের উদ্দেশ্য।
মৃতপ্রায় পৃথিবী। চাঁদ ততদিনে গ্রহটি থেকে আরো অনেক দূরে চলে গেছে। জলভাগে বিশাল পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ প্রতিকূল। আগে থেকেই পৃথিবী ছেড়ে এ্যান্ড্রোমিডার দূর গ্রহগুলোতে রিকান কিংবা রায়নার মতো পাড়ি জমিয়ে ফেলেছে অনেকে। বাকি যারা, তারা পৃথিবীতে পড়ে থাকে একরকম ভাগ্যহত হয়ে। এমন প্রায় পরিত্যক্ত এক পৃথিবী আর তার সূর্যের দিকে দৃষ্টি পড়ে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির। পৃথিবীকে সত্তাটি নিজের আবাস বানাবে আর সূর্যের চারপাশে ডাইসন স্ফিয়ার তৈরি করে মেটাবে নিজের জ্বালানী চাহিদা। নিজেদের শেষ সম্বল একটি রকেট নিয়ে এই অসম্ভব ক্ষমতাধর সত্তাটিকে থামাতে অভিযান শুরু করে পৃথিবীর চারজন আনকোরা তরুণ তরুণী – নোরা, কিরা গ্রুস আর ক্রিক। সাথে থাকে একেবারেই অদক্ষ একজন পাইলট— উরু। ব্যর্থ হবার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে এগোতে থাকা দলটি একটা সময়ে গিয়ে মেশে রিকান আর রায়নার ঘটনাপ্রবাহে। বুদ্ধিমান রিকান আর দুঃসাহসী রায়না ততদিনে নাম লিখিয়েছে আন্তঃনাক্ষত্রিক চুরি-ডাকাতির খাতায়। দলটি বুঝতে পারে যে পৃথিবীর দিকে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সত্তাটির শুরু করা ধ্বংসযাত্রা থামাতে রিকান আর রায়নাকে তাদের অনেক বেশি প্রয়োজন ।তারা সবাই মিলে কি শেষমেশ পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবে?
বিজ্ঞানকে সামগ্রিকভাবে যতই দেখেছি ততই একে একটি ব্যতিক্রমী মহাকাব্যের মত মনে হয়েছে। বিজ্ঞানের সঙ্গে কাব্যের মিলটি খুঁজে পাই উভয়টিতেই কল্পনার ও সৃষ্টিশীলতার গুরুত্ব থাকার মধ্যে- যদিও উদ্দেশ্য আলাদা। বিজ্ঞানের নানা তত্ত্বের উদাহরণে আমরা দেখবো বিজ্ঞান কেন মহাকাব্যিক। মহাকাব্যের পরিধি বড়,তার সবকিছুই বড় বড় মানুষ,বড় নীতি,বড় সাধনা বড় যুদ্ধ,বড় হতাশা,বড় ট্র্যাজেডি। নানা খণ্ডে এলেও বিজ্ঞানও আসলে একটানা একটিই কাহিনী,যার শেষ নেই। এক প্রান্তে ক্ষুদ্রতম মৌলিক কণিকা ও অন্য প্রান্তে সর্ব-সমষ্টি প্রসারমান বৃহৎ মহাবিশ্বকে নিয়ে পরম বাস্তবতার এই কাহিনী,যার সবকিছুর সঙ্গে সবকিছু সাযুজ্যপূর্ণ হতে হয়। বিজ্ঞানীর ভাবনায় তৈরি তত্ত্ব আর বাস্তবের কষ্টিপাথরে পরীক্ষা- এই দুইয়ের যুগলবন্দীতে ক্রমান্বয়ে চলে বিজ্ঞানের সঙ্গীত,যা প্রকৃতির চরম জটিলতার মধ্য থেকে সরল ও সুন্দর নিয়ম নিংড়ে আনতে পারে । বৈজ্ঞানিক কল্পনায় সৃষ্ট কণিকা,তরঙ্গ,চার্জ ইত্যাদির মত একই অদৃশ্য জিনিস যখন এক চাবিতে শত দরজা খোলার মত প্রকৃতির সব দিকের দৃশ্যমান বাস্তবের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে তখন সেই কল্পিত চাবিকেও বাস্তব বই অন্যকিছু ভাবার সুযোগ রাখেনা। সেই সঙ্গে এই মহাকাব্য জীবনকে সচ্ছন্দ করার জন্য নিত্য নতুন প্রযুক্তিরও সৃষ্টি করছে। এই মহাকাব্যের লেখক-পাঠকদের নিয়ে বিশ্ব-বিজ্ঞান-সমাজই পারে সেই প্রযুক্তিকে কল্যাণকর রাখতে।
বহুকাল আগে পৃথিবী আর গ্রহগুলো সূর্যের অংশ ছিল। সূর্য ছিল জলন্ত অগ্নিকুণ্ড আর প্রচণ্ড গরম। একদিন গ্রহগুলো সূর্য থেকে ছিটকে ছোটো ছোটো টুকরো হয়ে আকাশে ছড়িয়ে পড়ল। কিন্তু ছিটকে পড়া টুকরোগুলো পরস্পরকে ছেড়ে গেল না। এরা সূর্যের চারপাশে ঘুরে বেড়াতে থাকল। পৃথিবী তখন ছিল আগুনের ফুলকির মতো। উত্তপ্ত সূর্য ঠান্ডা হতে শুরু করল। তখন পৃথিবীও শীতল হতে থাকল। সূর্যের চেয়ে পৃথিবী ছোটো। তাই তার ঠান্ডা হতে সময় কম লাগল। ধীরে ধীরে পৃথিবী যথেষ্ট ঠান্ডা হয়ে গেল। যখন পৃথিবী অনেক বেশি ঠা ্ডা হয়ে এলো, বাতাসের জলীয়বাষ্প তখন পানিতে রূপান্তরিত হলো। তারপর বৃষ্টি এলো। একটানা দীর্ঘসময় বৃষ্টি হলো। একসময় পৃথিবী আরও বেশি ঠান্ডা হলো। ঠান্ডা হতে হতে পৃথিবী হিমশীতল হয়ে গেল। পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে পরম শূন্যের কাছাকাছি চলে এলো। একসময় পৃথিবীর তাপমাত্রা স্থায়ী হয়ে গেল হিমাঙ্কের নিচে।
কালের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে নিজের বোধ-বুদ্ধির সম্পর্ক স্থাপন করতে পারলে প্রতিটি শিশুই তার নিজেকে নতুন করে চিনতে শুরু করে এবং তার নিজের বিকাশের দিগন্ত তার সামনে একেবারে অনাবৃত হয়ে উঠে। সেরকম কয়েকটি শিশু তার পরিবারের অনান্য সদস্যদের কাছ থেকে কিভাবে প্রতিদিন তার পারিপার্শ্বিক এবং নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে পারে,এই বইটিতে সুচারু রূপে তারই অবস্থার বর্ণনা করা হয়েছে। আর তার সাথে কিভাবে আমাদের এই পৃথিবীতে উড়োজাহাজ আবিষ্কার হলো তার বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে। আশা করি এই বইয়ের পাঠক জানতে পারবে কিভাবে কোথা থেকে উড়োজাহাজ আমাদের পৃথিবীতে আবিষ্কার হলো।