আমাদের মেঘবাড়ি ‘আর ওই পেছনে দেখ, কেমন জমাট বেঁধে আছে তুলোর মতো! মনে হচ্ছে মেঘের উপর একটা প্রাসাদ!’ ‘ওই প্রাসাদে কারা থাকে, আম্মু?’ ‘পরীরা থাকে...আর তোমার মতো পরীর বাচ্চারা থাকে।’ লামিয়া মুখে আঙুল দিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে বলল, ‘ওখানে কি আমরা যেতে পারব, আম্মু?’ মীরা নিচু হয়ে লামিয়ার গালে চুমু খেয়ে বলল, ‘নিশ্চয়ই যেতে পারব, মা। যখন তুমি অনেক বড় হবে, তোমার যখন দুটো পাখা হবে, তখন তুমি উড়ে উড়ে ওই মেঘের ওপর বাড়িটাতে উড়ে চলে যেতে পারবে!’ ‘তখন ওটা আমাদের বাড়ি হবে?’ ‘হ্যাঁ, আম্মু! আমাদের মেঘবাড়ি!’ প্রতিটি মানুষই শৈশবে অযুত নিযুত স্বপ্ন নিয়ে জীবন শুরু করে। মীরাও করেছিল। শ্যামাঙ্গী, নতমুখী, শান্ত মেয়ে মীরা। ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান মীরা। জীবনের কাছে, বাস্তবতার কাছে পরাজিত মীরা। জীবন মীরার প্রতি সুবিচার করেনি। এ নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হওয়ার মতো, নিজের অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য লড়াই করার শক্তিও তার নেই। তবে জীবনের এক পর্যায়ে এসে নিজের সন্তানের সামনে দাঁড়িয়ে মীরা ভাবে: সে কি তার সন্তানের সামনে মুখ বুজে অন্যায় মেনে নেওয়ার, সহ্য করে যাওয়ার উদাহরণ তৈরি করে রেখে যাচ্ছে না? সব মানুষই গোপনে এমন একটা আকাশ খুঁজে বেড়ায়, যেখানে তার স্বপ্নগুলো ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে পারে! যারা খুঁজে পায়...তারা ভাগ্যবান... ...আর যারা পায় না, তাদের মতো দুর্ভাগা আর নেই। ‘আমাদের মেঘবাড়ি’ আত্ম-অনুসন্ধানের গল্প। নিজেকে হারিয়ে আবার খুঁজে পাওয়ার গল্প। হার না মেনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, উঠে দাঁড়ানোর গল্প। সাধারণ কারো অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প। এই গল্প একই সাথে ভালোবেসে দূরে যাওয়ার আর ফিরে আসার, এই গল্প হেরে গিয়ে জিতে যাওয়ার, সব স্বপ্ন ভেঙে-চুরে চুরমার হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে জোড়া দেওয়ার।
বাবাকে হারানোর পর বিপর্যস্ত শ্যামল আরও দিশেহারা হয়ে পড়ে নিখোঁজ হওয়া একমাত্র ছোটো ভাইয়ের খোঁজ পেয়ে। জানতে পারে, সে নাকি এক কাপালিক সাধুর শিষ্য হয়ে ভারতের পথে পথে ঘুরছে! ভয়ংকর সেই কাপালিকের হাত থেকে ভাইকে ফিরিয়ে এনে বিধবা মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পথে নামল শ্যামল; সঙ্গী হলেন পিতার বন্ধুসম এক রহস্যময় চরিত্র ভবতোষ বাবু। ভাইকে উদ্ধার করতে ভারতের পথে পথে ঘুরতে হয় শ্যামলকে, কিন্তু কাপালিকের নাগাল পাওয়া কি এতই সহজ! মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূরের ‘বেতাল’ কেবলমাত্র এক অতিপ্রাকৃত উপাখ্যান নয়—এ যেন ভারতীয় ঐতিহ্য, প্রাচীন মন্দির আর পূজার্চনার এক সুবিশাল আখ্যান। পিতাকে হারানোর পর বিপর্যস্ত শ্যামল আরও দিশেহারা হয়ে পড়ে নিখোঁজ হওয়া একমাত্র ছোটো ভাইয়ের খোঁজ পেয়ে। জানতে পারে, সে নাকি এক কাপালিক সাধুর শিষ্য হয়ে ভারতের পথে পথে ঘুরছে! ভয়ংকর সেই কাপালিকের হাত থেকে ভাইকে ফিরিয়ে এনে বিধবা মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পথে নামল শ্যামল; সঙ্গী হলেন পিতার বন্ধুসম এক রহস্যময় চরিত্র ভবতোষ বাবু। ভাইকে উদ্ধার করতে ভারতের পথে পথে ঘুরতে হয় শ্যামলকে, কিন্তু কাপালিকের নাগাল পাওয়া কি এতই সহজ! মুহাম্মদ আলমগীর তৈমূরের ‘বেতাল’ কেবলমাত্র এক অতিপ্রাকৃত উপাখ্যান নয়—এ যেন ভারতীয় ঐতিহ্য, প্রাচীন মন্দির আর পূজার্চনার এক সুবিশাল আখ্যান।
মর্গ উপন্যাসের একটি চরিত্র। বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া মৃত্যুর ঘটনা কখনও ব্যক্তিগত শোককে ছাড়িয়ে রাষ্ট্রের কাছে জিজ্ঞাসা চিহ্ন হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। মৃত্যুর পরে মর্গই তো সেই জায়গা যেখানে শব হয়ে ঢুকতে হয়, যখন মৃত্যু আর স্বাভাবিক মৃত্যু থাকে না। আইনের নিয়মে এখানে শব-ব্যবচ্ছেদ সম্পন্ন হয়, কিন্তু মেটে না জীবনের মূল্য। এই উপন্যাসের একদল ছেলেমেয়ে মর্গের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে নিজেদের বয়স্ক হতে দেখেছে। অভিজ্ঞ হয়েছে। নানা ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখেছে কতভাবে সংঘটিত হয় মৃত্যুর মতো বেদনাবহ ঘটনা। কখনও ব্যক্তিগত শোক মর্গের ছোট ঘরটিকে বদলে দিয়েছে। কখনও পরিবারের প্রবল ব্যবচ্ছেদের পর বেওয়ারিশ হয়ে গেছে লাশ। ছেলেমেয়েরা বদলে দিচ্ছে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা। বলছে, রাষ্ট্র নিজেই বেওয়ারিশ লাশ বহনকারী আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের গাড়ি। এতকিছুর ভেতর ছেলেমেয়েরা বেঁচে থাকার অর্থ খোঁজে। ওরা জীবনকে সহজ করে নেয়, বিচিত্র অভিজ্ঞতার তিক্ততা ওদেরকে দমাতে পারে না। এই উপন্যাসের চরিত্ররা ছোট ছোট চাওয়া-পাওয়ার ভেতরে দিন যাপন করে। বড় কিছু করার সাধ্য ওদের নেই। তেমন কিছু করার চিন্তাও ওদের নেই। ওরা ব্যক্তিগত জীবন-যাপনের মাধ্যমে শুধু দু'পা ফেলার মতো পরিসর দেখতে পায়। সেই ছোট পরিসরকে অর্থবহ করার জন্য জীবন ও মৃত্যুকে সমান্তরালে রাখে।
দ্য অ্যালকেমিস্ট - জাদু আর জ্ঞানের পূর্ণ এক এ্যাডভেঞ্চার, মানুষের পরিপূর্ণতা পথে যাত্রার কাহিনি: দ্য অ্যালকেমিস্ট’ বইটির লেখকের কথাঃ পাওলো কোয়েলহো ১৯৪৭ সালের ২৪ আগস্ট ব্রাজিলে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি একাধারে খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক এবং গীতিকার। কোয়েলহো পড়াশোনা শেষ না করেই ১৯৭০ সালে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। মেক্সিকো, পেরু, বলিভিয়া, চিলি সহ ইউরোপ এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ান। তারপরই শুরু করেন লেখালেখি। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য অ্যালকেমিস্ট’ এ পর্যন্ত ৮০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং ১৫০ মিলিয়ন কপির অধিক বিক্রি হয়েছে। দ্য অ্যালকেমিস্ট’ এমন এক জাদুকরী বই যা মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে। কোয়েলহোর লেখা কাব্যমণ্ডিত এবং বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি এ পর্যন্ত বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। পাওলো কোয়েলহোর লেখার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো তাঁর লেখা পড়ে গণমানুষ তার ভাগ্য পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা খুঁজে পায় । প্রচ্ছদ :: অমর্ত্য আতিক । অনুবাদকের পরিচিতিঃ রাকিবুল রকি ১৯৮৫ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে জন্ম গ্রহণ করেন। আ. আউয়াল এবং রানু বেগমের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। পড়াশোনা করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। স্কুলে পড়াকালীন সময় লেখালেখি শুরু। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় রয়েছে সমান পদচারণা। ইদানীং অনুবাদ সাহিত্যেও তার উপস্থিতি লক্ষণীয়। এই লেখকের অন্যান্য অনুদিত গ্রন্থগুলো হলো ‘কাজুও ইশিগুরোর গল্প’ এবং ‘দি পাওয়ার অব ইউর সাবকনশাস মাইন্ড। ফটোক্রেডিট :: মারজান আক্তার
গৃহযুদ্ধের বিভীষিকা শেষ হতে না হতেই বোস্টন শহরে ঘটতে থাকে ভয়ঙ্কর সব হত্যাকাণ্ড-অভিনব আর বীভৎসভাবে হত্যা করা হয় শহরের গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে। ক্রমশ স্পষ্ট হতে থাকে সবগুলো হত্যাকাণ্ডই মহাকবি দান্তের ইনফার্নো’র অনুপ্রেরণায় করা হয়েছে। মারাত্মক এক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায় দান্তের সাহিত্যকর্ম। এ দিকে হারভার্ড কেন্দ্রিক দান্তে ক্লাবের কয়েকজন পণ্ডিত ব্যক্তি এবং বিখ্যাত কবি লংফেলো এই রহস্যের জট খুলতে নেমে পড়েন এক অভিযানেÑকে খুন করছে, আর কেনই বা করছে, সেই প্রশ্নের জবাব পাবার জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা।