বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন আহমেদের প্রথম বই স্মৃতির পাতায় মুক্তিযুদ্ধ ও সোনাকান্দা'। এটি কোনো রোমান্টিক উপন্যাস নয়, একাডেমিক ইতিহাসের বইও নয়, সেটা তিনি লিখেননি, লিখেছেন জীবনেরই ঘটে যাওয়া কিছু গল্প, কিছু সত্য ঘটনা। অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায় লিখেছেন। এমন কিছু স্মৃতির কথা, যা তিনি ভুলতে পারেননি। ঘুরেফিরে তিনি বলেছেন তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম অর্জন মুক্তিযুদ্ধের কথা, বলেছেন প্রিয় জন্মভূমি সোনাকান্দার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেছেন তার প্রিয় ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা, পাশাপাশি খোলামেলাভাবে। লিখেছেন তার চোখের দেখা, প্রাণের কথার নানা স্মৃতিপুঞ্জ। নাসির উদ্দিন আহমেদ দেশ ও মানুষের প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন, বিভিন্ন সময় মানুষের বিপদে-আপদে সহযোগিতা করেছেন। জন্মভূমি সোনাকান্দায় গড়ে তুলেছেন নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। নিজের স্বপ্ন, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়কে সম্বল করে রাজধানীতে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। জীবনচলার পথে অসংখ্য বাধা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সাধারণ থেকে অসাধারণ এক মানুষে পরিণত হয়েছেন। যার ফলে তার সংগ্রামী আত্মকথা হয়ে উঠেছে আমাদের সবারই অনুপ্রেরণার গল্প।
বিশ্ব ফুটবলের এক চমকপ্রদ ও মজার ইতিহাস এই বই। বইটি পড়তে পড়তে আপনি কখনো হারিয়ে যাবেন মিং যুগের চীন দেশে, আবার কখনো কয়েক শ বছর আগের ইংল্যান্ডে। সেখান থেকে নেমে আসবেন বর্তমানকালের ফুটবলের তীর্থভূমি লাতিন আমেরিকায়। দেখবেন কেমন করে সাহেবদের চালু করা খেলায় তাদের এককালের শাসিতরাই আজ তাদের হারিয়ে দিচ্ছে। খেলা হয়ে উঠছে মুক্তির লড়াইয়ের হাতিয়ার। এদুয়ার্দো গালিয়ানোর সকার ইন সান অ্যান্ড শ্যাডোকে ক্রীড়াসাহিত্যের এক শ্রেষ্ঠ কীর্তি বলে গণ্য করা হয়। যার পাতায় পাতায় উঠে এসেছে ফুটবল নিয়ে লেখকের আবেগ। সেই সঙ্গে খেলাটির ইতিহাস, নানা কলাকৌশল এবং মাঠ ও মাঠের বাইরের জানা-অজানা সব গল্প। পেলে, ক্রুইফ, ইউসেবিও, গুলিত, বাজিও, বেকেনবাওয়ার ... ফুটবলের এসব কিংবদন্তি নায়ককে নিয়ে চমকপ্রদ ও অজানা গল্প পাঠক পাবেন এই বইয়ে। জানবেন খেলার মাঠেই কেন একজন ফুটবলার আত্মহত্যা করেছিলেন? কিংবা কত অদ্ভুত সব সংস্কার কাজ করে জেতার অদম্য বাসনায় আক্রান্ত ফুটবল দলগুলোর মধ্যে! ফুটবল নামের এক হৃদয়বিদারক উন্মাদনার উপভোগ্য পাঠ এই বইটি বিশ্বব্যাপী নন্দিত হয়েছে।
এই বই প্রয়াত দুই কবির অমর বন্ধুতার গল্প, যে গল্পের কোনো সীমান্ত নেই। বেলাল চৌধুরীর প্রিয় সুনীলদা বইয়ে সুনীল আকাশে হারিয়ে যাওয়া সোনালি সময়ের দুই কবিমানুষকে নতুনভাবে আবিষ্কার করবেন পাঠক।
আমাদের জাতিরাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবকে নিয়ে মৌলিক লেখালেখি ও তথ্য উপাত্ত খুব একটা পাওয়া যায় না। বঙ্গমাতা নিজেও অন্দরে থেকে ঠিক সময়ের ঠিক ভূমিকা পালন করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। লোকচক্ষুর আড়াল ভেঙে জনসম্মুখে আসার ব্যাপারে তাঁর ছিল দারুণ অনীহা। যদিও বাংলাদেশের জন্মের মহাকাব্যিক ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি তিনি মহাকাব্যের কেন্দ্রের একজন অবশ্যম্ভাবী মনীষা। বঙ্গমাতা সম্পর্কে যথাসাধ্য পাঠ পরিক্রমা,কল্পনা আর ইতিহাসের প্রাপ্য সূত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানব ইতিহাসের বিরল এ মহিয়সী নারী আমাদের বঙ্গমাতাকে নিয়ে আনিসুর রহমানের লেখা এ মহাকাব্যিক স্বগত-সংলাপ বা এপিক মনোলোগ ‘আমাদের বঙ্গমাতা’। এই এপিক মনোলোগ কিশোর তরুণদের উদ্দেশে লেখা,একই সঙ্গে বেতার ও থিয়েটারে প্রযোজনা উপযোগী একক চরিত্রের একটি পূর্ণাঙ্গ নাটক।
সরদার ফজলুল করিমের ভাবনা, সংগ্রাম ও সাধনায় প্রভাব রেখেছেন—এমন ১৮ ব্যক্তিকে নিয়ে তাঁর লেখার সংকলন এ বই। তাঁদের কেউ জন্মেছেন অন্য কালে অন্য দেশে, কেউবা ছিলেন তাঁর সমসাময়িক ও সহযোদ্ধা। মনুষ্যত্ব প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাই তাঁর প্রিয় মুখ। মানবিক সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে সারা জীবন নিজের মধ্যে ধারণ করেছেন সরদার ফজলুল করিম। প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে শুরু করে শিক্ষকতা ও লেখালেখি—সব কাজের মধ্য দিয়ে সারা জীবন চেষ্টা করেছেন সমাজে শুভ চিন্তার প্রসার ঘটাতে। এই পথে তিনি যেমন সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন দূর দেশের ও কালের সক্রেটিস কিংবা রুশোকে, তেমনি স্বদেশের ও সমকালের রণেশ দাশগুপ্তের মতো কাউকে কাউকে। দেশ আর কালের গণ্ডি পেরিয়ে এমন সব মানুষকে তিনি ভালোবেসেছেন, করেছেন তাঁর মানসসঙ্গী। লেখালেখির মধ্য দিয়ে তিনি বারবার তাঁদের স্মরণ করেছেন, বলে গেছেন তাঁদের কথা। প্রিয় এমন কিছু মুখ নিয়েই সরদার ফজলুল করিমের লেখার সংগ্রহ এ বই।
১৯৫১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের কাছে লেখা চিঠিপত্রের সংকলন এ বই। স্বজন-বন্ধু থেকে শুরু করে বিখ্যাত সব ব্যক্তিদের এই পত্রাবলির মধ্য দিয়ে উঠে এসেছে একটি জাতির জাগরণ, নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, সংগ্রামে বিজয় এবং সেই বিজয়কে ধরে রাখার প্রয়াসের ইতিহাস।