টাইম বম গনগনে তপ্ত নিউ ইয়র্ক। বিখ্যাত ডিপার্টমেণ্টাল স্টোর ধসে পড়ল শক্তিশালী এক বোমার আঘাতে। জড়িয়ে পড়ল রানা। কারণ, হুমকি দিয়েছে টেরোরিস্ট, ওকে ডেকে না আনলে আরও অনেক বোমা ফাটবে শহরে। ডিটেকটিভ চিফ ক্যাপ্টেন জেরেমি জনসনের সনির্বন্ধ অনুরোধ রাখতে গিয়ে হারলেমের ক্রাইম জোনে যেতে হলো রানাকে। ডাক পিওনের মত ছুটছে ও শহরের এদিক থেকে ওদিক! এখানে-ওখানে-সেখানে ভয়ানক সব বোমা পেতে রেখেছে লোকটা! উড়িয়ে দিতে চাইছে কমিউটার ট্রেন, স্কুলের কচি শিশু ও নিরীহ জনসাধারণকে! ঠেকাতে গিয়ে অসহায়ভাবে বন্দি হলো রানা ও তার কালো বন্ধু জো মাইনার। এবার মরতে বসেছে দুজনই। বাইনারি বোমা দিয়ে ওদের সহ লোকটা উড়িয়ে দিল মস্ত জাহাজ। কালো কুয়াশা রেডিওতে শোনা গেল সাহায্যের আবেদন। অকুস্থলে জীবন্মৃত হয়ে আছে বিসিআই-এর পাঁচ এজেণ্ট। শুরুতে যা ছিল একটা এক্সপেডিশন কোর্স, তা শেষপর্যন্ত রানা-সোহেলের জন্য হয়ে দাঁড়াল বিপজ্জনক অ্যাসাইনমেণ্ট। কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে দেখা মিলল ফ্যানাটিক হুসাইন আখতারের, যে প্রয়োজনে খুন করতে দ্বিধা করে না নিজের লোকদেরও। ওর পেছনে আছে সারওয়ার বিন জামালÑউত্তর আফ্রিকাকে পানিশূন্য করে সেটার রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে দিতে চায়। কয়েকবার মরণছোবল হানল ওরা রানা-সোহেলের উপর, বিফল হয়ে শেষে ফাঁদ পাতল মাটির নিচের এক শবপ্রকোষ্ঠে।
রানার কমান্ডো ট্রেইনার দুর্ধর্ষ রিটায়ার্ড যোদ্ধা বেন হ্যানন হারিয়ে গেছেন স্কটল্যান্ডে। সাহায্য চাইল তাঁর ক্রন্দনরতা স্ত্রী, মিরাণ্ডা। রানা কি জানে, ওই দেশে গেলেই জড়িয়ে যাবে একদল বাজে লোকের জটিল প্যাঁচে? সোনার মোহরের জন্য সেখানে চলছে তুমুল লোভের ঝড়! সেই প্রবল হাওয়ায় যখন-তখন দপ্ করে নিভে যাচ্ছে মানুষের জীবন-প্রদীপ। রানা অবশ্য শপথ নিয়েছে, যেভাবে হোক খুঁজে বের করবে ওর স্নেহশীল ওস্তাদকে। পাশে এসে দাঁড়াল সৎ পুলিশ অফিসার জেসিকা। কিন্তু প্রতিপক্ষের চোখে পড়ে গেছে ওরা। লেলিয়ে দেয়া হয়েছে একদল হিংস্র হায়েনা। যেখানে নিজেই বাঁচে কি না সন্দেহ, সেখানে রানা কী করে উদ্ধার করবে আর কাউকে? চলুন, পাঠক, কী ঘটছে দেখি গিয়ে!
কাজী আনোয়ার হোসেন সহযোগী: ডিউক জন বিতর্কিত সার্বিয়ান বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা-র আবিষ্কারের সাহায্যে এক দল ষড়যন্ত্রকারী চাইছে পৃথিবীর বুকে ভয়াবহ বিষাক্ত ছোবল বসাতে। তাদের প্রলয়নেশায় ধস নামল পাহাড়ে, ফুঁসে উঠল সমুদ্র, ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেল আস্ত এক শহর। উদ্দেশ্যটা কী এদের? পুরানো বন্ধু সেলেনার সাহয্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ কাউণ্টার ইণ্টেলিজেন্সের মাসুদ রানা গিয়ে পড়ল প্রচণ্ড এই আবর্তের মধ্যে। ধীরে ধীরে খুলতে লাগল ভয়ঙ্কর এক চক্রান্তের গিঁট।
কাজী আনোয়ার হোসেন সহযোগী: ইসমাইল আরমান সাগর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে একের পর এক জাহাজ। কীভাবে, কেউ জানে না। বাংলাদেশি একটা জাহাজও যখন একইভাবে উধাও হয়ে গেল, রানাকে পাঠানো হলো খোঁজ নিতে। একটু একটু করে ভয়ঙ্কর এক ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে গেল ও। ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখছেন আফ্রিকার এক দরিদ্র দেশের স্বৈরশাসক, হতে চাইছেন দুনিয়ার অধীশ্বর। ভয়ের কথা হলো, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবার মত বিধ্বংসী এক হাতিয়ার রয়েছে তাঁর হাতে। এর সঙ্গে যুক্ত হলো সাগরতলের এক অদ্ভুত বিস্ময়, আর সত্তর বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক বিমানের রহস্য। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দৃশ্যপটে উদয় হলো রানার পুরনো এক শত্রু, প্রতিশোধ নেবার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে। রানার এখন শনির দশা। একাকী কতদিক সামলাবে ও? পারবে তো?
রানা ভেবেছিল কাজটা হবে খুব সহজে! যে ছিল ওর গভীর প্রেম, সেই মেয়েটিকে নিরাপত্তা দেবে, আর জেনে নেবে কেন খুন হয়েছে ওর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে রানা একটু দেরিতে টের পেল, জড়িয়ে গেছে অদ্ভুত গভীর এক জটিল রহস্যের জালে! এরা কারা? কেন এভাবে নরহত্যা করছে হাসতে হাসতে? এক দেশ থেকে অন্য দেশে গেলেও মাথার ওপর ঘনিয়ে আসছে নিশ্চিত মৃত্যুর ঘনঘটা! তবে কি এদের হাতেই খুন হয়েছিলেন সুরের যাদুকর মোযার্ট? ধাঁধার গভীর সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে রানা। নিজেই বাঁচবে না, তো কী করে বাঁচাবে প্রাণপ্রিয় লিয়াকে?
বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত দুঃসাহসী স্পাই গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে। বিচিত্র তার জীবন। অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি। কোমলে-কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর-সুন্দর এক অন্তর। একা। টানে সবাইকে, কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না। কোথাও অন্যায় অবিচার অত্যাচার দেখলে রুখে দাঁড়ায়। পদে পদে তার বিপদ শিহরণ ভয় আর মৃত্যুর হাতছানি। আসুন, এই দুর্ধর্ষ চির-নবীন যুবকটির সঙ্গে পরিচিত হই। সীমিত গণ্ডিবদ্ধ জীবনের একঘেয়েমি থেকে একটানে তুলে নিয়ে যাবে ও আমাদের স্বপ্নের এক আশ্চর্য মায়াবী জগতে। আপনি আমন্ত্রিত। ধন্যবাদ।