এই উপন্যাস প্রবীণদের নিয়ে। যাঁরা পার করছেন অবসরজীবন। মৃগাঙ্ক ব্যানার্জি নামকরা এক কলেজের প্রিন্সিপাল। আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি কখনো। সন্তানদের উচ্চশিক্ষিত করেছেন। অন্যজন শিশির ঘোষ। থানার ওসি। তাঁর চাকরিজীবন কেটেছে চোর-ডাকাত-বাটপারদের সঙ্গে। আদর্শের দিক দিয়ে তিনি সৎ নন। সন্তানদের মানুষ করতে পারেননি ঠিকমতো। পেশা ও চিন্তার জায়গায় দুই প্রবীণের সামাজিক অবস্থান ভিন্ন, কিন্তু পরিণতি যেন এক! একটা সময়ে যে সমাজে এবং যে পরিবারে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন, সেখানে আজ তাঁরা বাতিলের খাতায়। বৃদ্ধ বয়সে মানুষ কেন নিরালম্ব হন? কেন হন উন্মূলিত? কোন প্রলোভনে মানুষ তার শৈশবকে ভোলে? অস্বীকার করে পিতা-মাতার বাৎসল্যকে? সেই প্রলোভনের নাম কি নারীদেহ? না অন্য কিছু? হরিশংকর জলদাস এসব প্রশ্নের উত্তর খঁুজেছেন একটু দাঁড়াও উপন্যাসে।
লাভ লেন শব্দ দুটি ব্রিটিশদের দেওয়া। এই লাভ লেনের একটি বাড়ি ঘিরে উপন্যাসটির কাহিনিবৃত্ত। মানুষের জীবনে প্রেম মহার্ঘ। তারপরও কেন নর-নারীকে অপ্রেমের সঙ্গে জীবন কাটাতে হয়? এই প্রশ্নটির উত্তর খোঁজা হয়েছে এই উপন্যাসে।
রবীন্দ্রনাথের সহধর্মিণী মৃণালিনীর আত্মকথনের ভঙ্গিতে লেখা এই উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর বিয়ের রাত থেকে শুরু করে নিজের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্বামী রবিবাবুর সংগোপন জীবনের নানা কথা অকপটে তুলে ধরেছেন মৃণালিনী। সবলতা-দুর্বলতায় মেশা রবীন্দ্রনাথের জীবনের এক দীর্ঘ অধ্যায় আটপৌরে ভাষায় উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। পাশাপাশি উঠে এসেছে ভবতারিণী থেকে মৃণালিনীতে পরিণত হওয়া রবি ঠাকুরের সহধর্মিণীর চাওয়া-পাওয়া, পূর্ণতা-অপূর্ণতা এবং তাঁর নারীজীবনের হাহাকার-দীর্ণতার কথাও। এই উপন্যাস আমাদের কথাসাহিত্যের এক মাইলফলক-স্বরূপ সাহিত্যকৃতি।
নাম দেখে মনে হবে, এ বুঝি এক প্রেমের উপন্যাস। আসলে এটি এক অপ্রেমের বৃত্তান্ত। বাদামি-জীবন আমাদের। এক খোসার ভেতর দুটো আলাদা ঘরে দুটো বাদাম। আমাদের দাম্পত্যজীবনও ঠিক বাদামের মতন। এক ঘরে এক বিছানায় শুয়েও আলাদা জীবন আমাদের। কাকে যেন পাওয়ার ছিল, কে যেন অধরা থেকে গেল! তিশা সিরাজের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিল, পারেনি। লম্বা বেঢপ চেহারার নিখিল ভৌমিকের সঙ্গে রূপসী তিশাকে সংসার করতে হলো। ভালোবেসে বিয়ে করেছিল জয়দীপ। দাম্পত্যজীবনটা সুখকর ছিল না। এই উপন্যাসের শরীরজুড়ে না পাওয়ার ক্ষতচিহ্ন। স্নিগ্ধমধুর এক স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকে ‘১৬/১৭ লাভ লেনে’।