মাথার চুল খাড়া হয়ে গেল তরুণের। চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ওটাকে। মড়াটা। ধীরে ধীরে তারই দিকে এগিয়ে আসছে। অথচ একটু আগেও কফিনের ভিতরে শুয়ে ছিল। এখন উপায়? ইংল্যাণ্ডের হাইগেট গোরস্তানে উদয় হয় ভীতিকর এক আগন্তুক। ওখানে নিয়মিত মেলে শিয়াল-কুকুর এমনকী তরুণীদের রক্তশূন্য লাশ। এসব কি তবে ভ্যাম্পায়ারের কাজ? আইসল্যাণ্ডের এক পাদ্রীর বাড়িতে হানা দিচ্ছে ভয়ঙ্কর এক অশরীরী। কিন্তু শুধু তরুণ ম্যাগনাসই কেন দেখতে পায় তাকে? বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গেলেন এক লর্ড। রাতে হঠাৎই ঘুম ভেঙে গেল। দেখলেন সামনের বাগানে কাঁধে কফিন নিয়ে হাঁটছে এক লোক। লোকটার মুখের দিকে তাকিয়েই চমকে উঠলেন লর্ড। কেন? পাঠক, আমাদের এই চিরচেনা জগতের আড়ালে আছে অচেনা আরেক দুনিয়া। অন্য সেই ভুবনে আপনাকে স্বাগতম। এ তো কেবল কয়েকটি নমুনা পাবেন এমন ১৩০টির বেশি রোমাঞ্চকর কাহিনী। আর হ্যা, এগুলো কিন্তু গল্প নয়, সত্যি।
আশ্রয় ভোরের দিকে এরিখের তাবুর ক্যানভাসে ধীর লয়ে ড্রাম বাজিয়ে বৃষ্টির ফোটা। পাতলা হয়ে এসেছে ঘুম। আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরতে গিয়ে হঠাৎ সতর্ক হয়ে উঠল সে। তাঁবুর বাইরে ঝোপের ভেতর অস্পষ্ট নড়াচড়ার শব্দ ধরা পড়েছে ওর কানে। অস্ত্রটা বাগিয়ে ধরে সন্তর্পণে তাঁবুর বাইরে মাথা বের করল এরিখ। অস্ত্র ফেলে দাও!’ গম্ভীর কণ্ঠস্বর ভেসে এল, চার-চারটে অস্ত্র তোমার দিকে তাক করা। এই হলো গল্পের শুরু। জ্বালা সাওলো। হাফ-ব্রীড। বাবা অ্যাপাচি সর্দার, মা শ্বেতাঙ্গ। সৎ ভাই কুরিয়াপো ঘৃণা করে ওকে-গালি দেয় নীল চোখে বেশ্যার ছেলে বলে। আবার পদে পদে টের পায় ও শ্বেতাঙ্গদের তীব্র ঘূণা-মানুষ বলে গণ্য করে না ওরা ওকে। তা হলে? কোনদিকে যাবে সাওলো? কাদের প্রতি থাকবে অনুগত? ও কি অ্যাপাচি, না শ্বেতাঙ্গ-কাদের হয়ে যুদ্ধ করবে? নিজের মত চলবে বলে স্থির করল সাওলো, ন্যায়ের পথে। অবশ্য তার আগে খুন করবে সে কুরিয়াপোকে।
প্রহসন অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ফ্রেসনো সিটির সেলুনে প্রচণ্ড মার খেল কার্ল বোর্ডার। পরদিন শহরে স্টেজ থেকে নামল সশস্ত্র এক আগম্ভক-ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড। খুনের দায়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হলো তাকে, ওকে কি মরতে হবে বিনা অপরাধে? দূরের পথ চলেছে চব্বিশশো অভিযাত্রী। দুহাজার মিসৌরি থেকে অরিগনে মাইল দীর্ঘ পথ। দুর্গম। তার ওপর রয়েছে ইণ্ডিয়ানদের আক্রমণের ভয়। বাবা-মার সাথে ব্রায়ান ও তার ছোট ছয় ভাই-বোন চলেছে এই দূরের যাত্রায়। পথে হলো বিপর্যয়। পরিবারের সবার দায়িত্ব এসে পড়ল তেরো বছর বয়সী ব্রায়ানের ওপর। কী করবে সে? ফিরে যাবে? পরবাসী গৃহযুদ্ধের দু’বছর পর মনের ভিতর অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিয়ে নিজের এলাকায় ফিরল জেসন মার্কাস। দেখল, বদলে গেছে সবই। প্রতিবেশী আর বন্ধুবান্ধব ওকে এড়িয়ে চলে, তাদের ধারণা ও বিশ্বাসঘাতকদের একজন। হেরে যাওয়া বঞ্চিত একদল টেক্সানের পক্ষ নিতে হলো ওকে। তারপর শুরু হলো সত্যিকার বুনো সেই কক্ষ কিন্তু অবারিত পশ্চিমের এক শ্বাসরুদ্ধকর, মর্মস্পর্শী কাহিনী।
গৃহযুদ্ধ শেষে বাড়ি ফিরে এল কার্ল শেকেড। দেখল ততদিনে পরপারে চলে গেছে মা-বাবা। ভিটে ও জমি-জমা বেদখল হয়ে গেছে। ফিরে পেতে হলে নিশ্চিত সংঘর্ষে জড়াতে হবে নামের সঙ্গে। মন চাইল না কার্লের। ব্যস, এখানে আর থাকা কেন? চলো পশ্চিমে। ওয়াইওমিং এসে গড়ে তুলল একটা র্যাঞ্চ। চোখে সোনালি ভবিষ্যতের স্বপ্ন। হঠাৎ ঘোড়া ছুটিয়ে দলবল নিয়ে হাজির হলো জস ফিলবি। কার্লকে বলল র্যাঞ্চ তুলে নিতে, কারণ জায়গাটা নাকি তার। কেন এ কথা মানবে কার্ল? মগের মুল্লুক পেয়েছে? বাধল সংঘাত। লিবির ষণ্ডারা পুড়িয়ে দিল কার্লের কেবিন। অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে গেল ও। যার সহায়তায় সুস্থ হলো, সুযোগ পেয়ে সেই রহস্যময়ী ডেবি সিম স র্যাঞ্চ অর্ধেক মালিকানা দাবি করে বসল । উপায়ান্তর না-দেখে রাজি হলো কার্ল, তবে মনে মনে কঠোর শপথ নিল: দেখে ছাড়বে মেয়েটাকে! কিন্তু সবার আগে জস ফিলবির থাবা থেকে রক্ষা পেতে হবে; এবং একইসঙ্গে র্যাঞ্চও বার্চাতে হবে। সফল হতে হলে এক অসম লড়াইয়ে জিততে হবে ওকে-একা!
কারসাজি জ্যাক কার্মডি তার নিউ মেক্সিকোর পুরানো শহরে ফিরে এসেছে বুনো ঘোড়া বিক্রি করবে বলে। প্রচুর টাকার প্রশ্ন জড়িত এ কারবার। সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করবে ঘোড়া। কিন্তু শহরের কেউ কেউ পছন্দ করতে পারল না জ্যাকের প্রত্যাবর্তন। গর্ডন হার্কার এদের একজন। এক যুগ আগে জ্যাকের পরিবারের প্রতি তার চরম অন্যায় আচরণের জন্যে মনে মনে ভয় পাচ্ছে সে। প্রতিশোধ নিতে এল নাকি যুবক? লালসা মাত্র একটা ভুল করেছে বার্ট গ্যাভিন। অ্যামুশই যখন করবে, নিশ্চিত হওয়া উচিত ছিল বুলেটটা যাতে টমাস লোগানের মগজে ঢাকে, যাতে সিধে হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে। অথচ সবাইকে অবাক করে দিয়ে ঠিকই ফিরে এসেছে টমাস, যার লাশ এতদিনে পচে গলে যাওয়ার কথা! মরতে মরতে বেঁচে গেছে টমাস, এখন আর নৃশংস খুনী বার্ট গ্যাভিন বা জাতগোক্ষুর স্কট ট্যাবেটের পরোয়া করে না, কিংবা মর্ট লিয়াণ্ডের নেকড়ের দলকেও গোনায় ধরে না। শুধু পালের গোদা ম্ট লিয়াগুকে চাই ওর। আর লিয়াও চায় ওর সবকিছু… ভবঘুরে চির ভবঘুরে জিম ওয়েলডন, বুনো পশ্চিমের শেষ প্রজন্ম। ভাইয়ের হোমস্টিডে দেখা করতে এসে আটকে গেল সে। মহা বিপদে পড়েছে ওর ছোট ভাই। পাশে গিয়ে দাঁড়াল জিম ওয়েলডন, চক্রান্ত রুখতে সাধ্যমত সাহায্য করল ভাইকে। আবারও কি অজানার পথে পা বাড়াবে জিম? নাকি আটকে যাবে স্প্রি টার্নারের ভালবাসার বাঁধনে?
থাগস অভ হিন্দুস্থান: মেয়ে আডাকে হারিয়ে উন্মাদ হয়ে উঠেছেন ক্যাপটেন ম্যাকফারসন। ধুলোয় মিশিয়ে দেবেন এর জন্য দায়ী ধর্মাদ্ধ, খুনে দস্যুদের-এই তার অগ্নিশপথ। ভারতবর্ষ কাঁপিয়ে দেয়া লুটেরাদের গোপন আস্তানার খোঁজ পেতেই এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করলেন না ব্রিটিশ অফিসার। ফোর্স আনতে ছুটলেন ফোর্ট উইলিয়াম-এ। পাইকারি খুনে হাত রাঙাবেন ফিরে এসে। …ঘুণাক্ষরেও যদি বুঝতে পারতেন: কোন খেলা খেলতে যাচ্ছে নিয়তি তাঁকে নিয়ে। দ্য বডিগার্ড: প্রিয় পাঠক, আপনি যদি স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, আগাথা ক্রিস্টি, রাফায়েল সাবাতিনি, এইচ. পি. লাভক্র্যাফট, নীল গেইম্যান, রবার্ট ব্লক, সাকি, লী চাইল্ড, হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যাণ্ডারসন, গী দ্য পাছা, এরিখ কেস্টনার, জেফরি আর্চার, লরেন্স ব্লাক, জ্যাক রিচি প্রমুখ বিখ্যাত লেখকদের ভক্ত হয়ে থাকেন; তবে দ্য বডিগার্ড বইটি আপনারই জন্য।