অভিজাত পরিবারে জন্মেছিলেন কল্যাণী রায়। বাবা ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি। কল্যাণী ভালোবেসে একজনকে বিয়ে করেছিলেন, নাম বদলে হয়েছিলেন মমতাজ বেগম। তাঁর রায়বাহাদুর বাবা বিয়েটা মেনে নেননি। ফলে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর। দেশভাগের পর শিশুকন্যাকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে পূর্ববঙ্গে চলে এসেছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের মর্গান গার্লস স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে। ভাষা আন্দোলনের শুরুতেই নিজ স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে মিটিং-মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। ফলে সরকারের রোষানলে পড়ে জেলে যেতে হয় তাঁকে। স্বামীর কথামতো দাসখত দিয়ে কারামুক্ত হতে চাননি। কারাগারে তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্রের সঙ্গে একই সেলে ছিলেন মমতাজ। এই কারাবাসের অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনদৃষ্টি ও চেতনাকে এমনভাবে গড়ে দেয় যে ৪৪ বছরের আয়ুর বাকি দিনগুলো তিনি ব্যক্তিগত জীবনযাপনের ঊর্ধ্বে উঠে সমষ্টির কল্যাণব্রতে উৎসর্গ করেছিলেন। মমতাজ বেগমের জীবনে রয়েছে একই সঙ্গে এপিকের বিস্তার ও গভীরতা। তাঁর সেই অসাধারণ জীবন নিয়ে লেখা এই উপন্যাসটিকে আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবময় সময়ের দলিলও বলা যায়।