‘আরবি রস’ একটি মজার বই। আরবি সাহিত্যে কত অসাধারণ রস। লুকিয়ে আছে তার সাথে বাঙলাভাষী পাঠককে পরিচিত করার প্রয়াস । আরবি সাহিত্য শুধু নয়, আরবি ভাষাটাও খুবই মজার৷ এই মজাটা । আয়ত্তে আনার কিছু কলকজা এই বইয়ের গল্প থেকে পাওয়া যাবে । ‘আরবি রস’ সবার জন্যে। এই রস আস্বাদনের জন্যে আরবি ভাষা জানা। কিংবা আরবি ভাষার শিক্ষার্থী হওয়া আবশ্যক নয়৷ ‘আরবি রস’-এর। হাঁড়ি সবার জন্যে উন্মুক্ত৷ এ কথাও স্মর্তব্য, সবার উপযােগী করে । রচিত হলেও এটি কোনাে চটুল কৌতুকগ্রন্থ নয়। ভাষা-সাহিত্যের বিচিত্র-বর্ণাঢ্য স্বাদ উপভােগে অভ্যস্ত বা আগ্রহী পাঠকবৃন্দ ‘আরবি। রস’-এর সাথে বেশ সুন্দর সময় কাটাতে সক্ষম হবেন।
‘তারাফুল’ বইয়ের কিছু অংশঃ ঘটনাস্থল শাহজালাল বিমানবন্দরের লাউঞ্জ। রাত সাড়ে এগারোটা। কুয়ালালামপুরগামী ফ্লাইটের জন্যে অপেক্ষারত যাত্রীরা টার্মিনাল গেইটের আগে অপেক্ষাসনগুলোতে বসে আছেন। তাঁদের অনতিদূরে মোটামুটি নিরিবিলি একটা আসনে বসে স্যামুয়েল বাটলার পড়ছি। হঠাৎ ঝড়ের বেগে হাজির হলেন এক দম্পতি। এসেই আমার মুখোমুখি আসনে বসে গেলেন। তারপর শুরু হলো এক পশলা ঝগড়া। আশেপাশের সবাই হতভম্ব। মানুষটা মোটামুটি উচ্চৈঃস্বরে স্ত্রীকে বকছেন, তবে একটুচাপা কণ্ঠে। উভয়ের কথা কাটাকাটি থেকে যা বুঝলাম, এই নবদম্পতি হানিমুনে যাচ্ছেন। ফিরবেন তিনদিনের মধ্যে; কিন্তু তিনি স্ত্রীকে বলে রেখেছেন, কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে ‘কয়দিন থাকবেন?’, তাহলে উত্তর যেন ‘সাতদিন’হয়। স্ত্রী সেকথা ভুলে গিয়েছেন। লাউঞ্জে বসে আরেক মহিলা তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তারা কোথায় এবং কয়দিনের জন্যে যাচ্ছেন। ভদ্রমহিলা সত্য কথাটাই বলে ফেলেছেন। এজন্যে হাজব্যান্ড মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তার কথা হচ্ছে, তিন দিনের জন্যে বিদেশ যাওয়া হচ্ছে, এটা বললে বোঝা যায়, তার টাকা-পয়সা কম, এতে লোকজন আন্ডার স্টিমেইট করবে। সেজন্যে কয়েকদিন বাড়িয়ে বলতে চেয়েছেন, যাতে প্রশ্নকর্তা বোঝেন, ‘বাহ এরা তো বিত্তশালী!’ এতে তার প্রেস্টিজ বাড়ত; কিন্তু স্ত্রীর কারণে সেই প্রত্যাশা পূরণ হলো না। তাই একটু নিরিবিলিতে এসে ঝগড়াটা সেরে নিলেন... একাত্তর হলে একই ব্লকের বাসিন্দা একজন ভাই, বিজনেস ফ্যাকাল্টির কোনো এক সাবজেক্টে পড়েন, মাঝেমধ্যে জামাআতে শরিক হন। হঠাৎ লক্ষ করলাম, তিনি প্রতি ওয়াক্তের জামাআতে একদম নিয়মিত হয়ে গেছেন। সুসম্পর্কের খাতিরে তাঁকে বেশ হার্দিক সুরেই বললাম, আপনাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালোবাসি, হয়তো সেইজন্যেই আপনাকে নিয়মিত মসজিদে দেখে অনেক খুশি লাগছে। তিনি নিজের আকস্মিক পরিবর্তনের পেছনকার অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে মোবাইল ফোন বের করলেন। একটা স্ক্রিনশট দেখালেন, যেখানে লেখা আছে- ‘কবরস্থানে নীরবে নিভৃতে শুয়ে আছেন এমন অনেক মানুষ, যাদের আগামীকাল নামাজ শুরু করার কথা ছিল।’ কী ‘পাওয়ারফুল’ কথা! একেবারে কলিজায় গিয়ে ধাক্কা লাগে। এই একটা কথাই তাঁকে পরিবর্তন করেছে, সালাতে অন্তঃপ্রাণ বানিয়েছে। একটা বাক্যও মানুষকে পরিবর্তন করে দিতে পারে! একটি বাক্য, শুধু একটি বাক্য। সুবহানাল্লাহ!