বার্ট্রান্ড রাসেলের অন্য অনেক পরিচয় যেমন রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, অ্যাকটিভিস্ট, গণবক্তা, শিক্ষক, শান্তিসংগ্রামী, গল্প-রচয়িতা ইত্যাদি থাকা সত্ত্বেও তিনি মূলত বিংশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ দার্শনিক হিসেবেই পরিচিত। তাঁর সকল পুস্তক, প্রবন্ধ-নিবন্ধকে তাই দার্শনিক রচনা বললে অযথার্থ হয় না। কিন্তু আমরা এই সংকলনটিতে, তথা দর্শন নিয়ে বার্ট্রান্ড রাসেল’-এ তাঁর রচনাবলি তুলে ধরার বদলে বরং ‘খোদ দর্শন’ নিয়ে তিনি যেসব কথা বলেছেন তার একটি নির্বাচন তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। কোনো একটি বিদ্যাবিভাগের গোড়ায় যেমন তুলে ধরা হয়—বিষয়টি কী, তার প্রয়োজনীয়তা কী, ফলাফল কী, তারই উদ্যোগ এটি। রাসেলের কাছে দর্শন হলো ধর্ম থেকে বিজ্ঞানের পথে যাত্রার একটি মধ্যস্থল। যেমন তিনি বলেছেন, ‘আমরা যা জানি তা হলো বিজ্ঞান আর যা জানি না তা হলো দর্শন। তাহলে দর্শনের প্রয়োজনীয়তা কী? তা হলো ‘যেসব জিনিস বৈজ্ঞানিক জ্ঞানে লভ্য নয় তাদের সম্পর্কে কল্পনাকে জাগ্রত রাখা’ এবং ‘যা কিছু জ্ঞান বলে মনে হয় তার কতটা যে জ্ঞান নয় বিনয়ের সঙ্গে তা নিয়ে নিজেদেরকে সচেতন রাখা। রাসেলের এই কথা আমাদের পৃথিবীর আরেক শ্রেষ্ঠ দার্শনিক সক্রেটিসের দর্শনের কথা মনে করিয়ে দেয়, যিনি বলেছেন ‘আমি বেশি কিছু জানি না। কিন্তু কোনো কিছু না জেনে ভাবি না যে, আমি জানি।’ এই বিনয়, এই পরিপ্রেক্ষিতই যে দর্শনের মূল কথা, তা আমরা আবার বার্ট্রান্ড রাসেলের মধ্যে খুঁজে পাই।
‘দশজন দিগম্বর একজন সাধক’ ধ্রুপদী কোনো গল্পের বই নয়, বরং সম্পূর্ণ নতুন স্টাইলে লেখ্য বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, মিথ ও মানবিক অনুভূতির নিখুঁত সমন্বয়- যা মননশীল পাঠককে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে। ৩১টি অনবদ্য কাহিনী নিয়ে সাজানো হয়েছে শাহাব আহমেদের ‘দশজন দিগম্বর একজন সাধক’ বইটি। বইটি যেন একটি তথ্যভাণ্ডার। প্রতিটি কাহিনীর সঙ্গে উঠে এসেছে ইতিহাসের বিখ্যাত সব চরিত্র। অধিকাংশ কাহিনী রূপকধর্মী, ‘দশজন দিগম্বর একজন সাধক’ তার মধ্যে অন্যতম। ‘কুকুর ও উপমানবের গল্প’তে সেরগেই ইয়েসিনিনের ‘একটি কুকুর বিষয়ক গান’ কবিতার সারমর্ম করেছেন লেখক।
আমাদের স্মৃতির ভেলায় রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ' গ্রন্থটি লেখক সুনীল সাহার কিশোরবেলার স্মৃতি-আলেখ্য। ১৯৫৯ সালে কিশোরগঞ্জের নিকলী জি.সি. হাইস্কুলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবদুল হামিদ ছিলেন লেখকের সহপাঠী। স্কুলের দশম শ্রেণিতে নতুন সহপাঠী হামিদের আগমন, তাঁর সঙ্গে অন্য সহপাঠীদের পরিচয়-ঘনিষ্ঠতা, শিক্ষকদের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠা-সহ কী করে দিনে দিনে একজন ছাত্রনেতা হয়ে উঠলেন—তারই অন্তরঙ্গ বয়ান এই গ্রন্থ। বলতে পারি, লেখকের ছেলেবেলার বহুবিচিত্র ঘটনাস্মৃতির মণিমালা এ বই। লেখক গল্পচ্ছলে এই বইয়ে তুলে এনেছেন তাঁর কিশোরবেলার ফেলে আসা রোমাঞ্চকর দিনগুলোর কথা-কাহিনি। এই বই পড়ে পাঠক একদিকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ছেলেবেলার দুরন্তপনাকে যেমন খুঁজে পাবেন, অন্যদিকে পাবেন সেই সময়ের ব্যক্তি তথা সমাজজীবনের টুকরো টুকরো চিত্র।