‘তারাফুল’ বইয়ের কিছু অংশঃ ঘটনাস্থল শাহজালাল বিমানবন্দরের লাউঞ্জ। রাত সাড়ে এগারোটা। কুয়ালালামপুরগামী ফ্লাইটের জন্যে অপেক্ষারত যাত্রীরা টার্মিনাল গেইটের আগে অপেক্ষাসনগুলোতে বসে আছেন। তাঁদের অনতিদূরে মোটামুটি নিরিবিলি একটা আসনে বসে স্যামুয়েল বাটলার পড়ছি। হঠাৎ ঝড়ের বেগে হাজির হলেন এক দম্পতি। এসেই আমার মুখোমুখি আসনে বসে গেলেন। তারপর শুরু হলো এক পশলা ঝগড়া। আশেপাশের সবাই হতভম্ব। মানুষটা মোটামুটি উচ্চৈঃস্বরে স্ত্রীকে বকছেন, তবে একটুচাপা কণ্ঠে। উভয়ের কথা কাটাকাটি থেকে যা বুঝলাম, এই নবদম্পতি হানিমুনে যাচ্ছেন। ফিরবেন তিনদিনের মধ্যে; কিন্তু তিনি স্ত্রীকে বলে রেখেছেন, কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে ‘কয়দিন থাকবেন?’, তাহলে উত্তর যেন ‘সাতদিন’হয়। স্ত্রী সেকথা ভুলে গিয়েছেন। লাউঞ্জে বসে আরেক মহিলা তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তারা কোথায় এবং কয়দিনের জন্যে যাচ্ছেন। ভদ্রমহিলা সত্য কথাটাই বলে ফেলেছেন। এজন্যে হাজব্যান্ড মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তার কথা হচ্ছে, তিন দিনের জন্যে বিদেশ যাওয়া হচ্ছে, এটা বললে বোঝা যায়, তার টাকা-পয়সা কম, এতে লোকজন আন্ডার স্টিমেইট করবে। সেজন্যে কয়েকদিন বাড়িয়ে বলতে চেয়েছেন, যাতে প্রশ্নকর্তা বোঝেন, ‘বাহ এরা তো বিত্তশালী!’ এতে তার প্রেস্টিজ বাড়ত; কিন্তু স্ত্রীর কারণে সেই প্রত্যাশা পূরণ হলো না। তাই একটু নিরিবিলিতে এসে ঝগড়াটা সেরে নিলেন... একাত্তর হলে একই ব্লকের বাসিন্দা একজন ভাই, বিজনেস ফ্যাকাল্টির কোনো এক সাবজেক্টে পড়েন, মাঝেমধ্যে জামাআতে শরিক হন। হঠাৎ লক্ষ করলাম, তিনি প্রতি ওয়াক্তের জামাআতে একদম নিয়মিত হয়ে গেছেন। সুসম্পর্কের খাতিরে তাঁকে বেশ হার্দিক সুরেই বললাম, আপনাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালোবাসি, হয়তো সেইজন্যেই আপনাকে নিয়মিত মসজিদে দেখে অনেক খুশি লাগছে। তিনি নিজের আকস্মিক পরিবর্তনের পেছনকার অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে মোবাইল ফোন বের করলেন। একটা স্ক্রিনশট দেখালেন, যেখানে লেখা আছে- ‘কবরস্থানে নীরবে নিভৃতে শুয়ে আছেন এমন অনেক মানুষ, যাদের আগামীকাল নামাজ শুরু করার কথা ছিল।’ কী ‘পাওয়ারফুল’ কথা! একেবারে কলিজায় গিয়ে ধাক্কা লাগে। এই একটা কথাই তাঁকে পরিবর্তন করেছে, সালাতে অন্তঃপ্রাণ বানিয়েছে। একটা বাক্যও মানুষকে পরিবর্তন করে দিতে পারে! একটি বাক্য, শুধু একটি বাক্য। সুবহানাল্লাহ!
আদর্শ পরিবার সিরিজের ৬ষ্ঠ বই ‘সন্তানকে বইমুখী করার কৌশল’। যে কারণে আমরা এ বইটি পড়ব— ১. আপনার সন্তান কি স্মার্টফোন আর ভিডিও গেমসে আসক্ত? সে কি একদমই বই পড়তে চায় না? পড়ার কথা বললেই কি তার মাথা ঘুরায়, পেট ব্যথা করে? তাহলে তো এই বইটি পড়া আপনার জন্য ফরজ! ২. বইয়ের প্রতি শিশুদের ভালোবাসা বাড়িয়ে দিতে, বইয়ের সাথে পরম বন্ধুত্ব তৈরি করতে, বইপাঠের গুরুত্ব এবং জ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা ওদের সামনে মেলে ধরতে, সর্বোপরি একটি শিশুকে পরিপূর্ণভাবে বইমুখী করে গড়ে তুলতে হলে এমন একটি বই আপনার সংগ্রহে থাকতেই হবে। ৩. কিন্তু বাবা-মা হিসেবে সন্তানের হাতে আপনি কোন বইটি তুলে দেবেন? কেমন গল্প শুনিয়ে তাকে প্রতি রাতে ঘুম পাড়াবেন? কোন বইটি তাদেরকে সত্যের পথে নিয়ে যাবে আর কোন বই তাদেরকে আঁধারে নিমজ্জিত করবে—এ ব্যাপারে সঠিক দিকনির্দেশনা পাবেন বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিতে।
আদর্শ পরিবার সিরিজের ৪র্থ বই ‘সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালের মনস্তত্ত্ব’। যে কারণে আমরা এ বইটি পড়ব— ১. এ বইটি পড়লে কিশোর-কিশোরীদের চিন্তাজগতের সাথে পরিচিত হওয়া যাবে। সেই সাথে তাদের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়বস্তু সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ধারণা মিলবে। ২. কিশোর-সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে এবং তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এ বই আপনাকে উপহার দেবে চমৎকার সব কৌশল আর কার্যকরী পদক্ষেপ। ৩. কৈশোর মানবজীবনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত সন্তানের পাশে থাকা, তার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করা এবং ভালো কাজের ব্যাপারে তাকে উৎসাহ জোগানো। ৪. যেসব কিশোর-কিশোরী খারাপ বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে বিপথে চলে গিয়েছে কিংবা ইন্টারনেটের ভয়ংকর জগতে নিমজ্জিত রয়েছে তাদেরকে সুন্দর জীবনে ফিরিয়ে আনতে এ বইটি হতে পারে এক মোক্ষম দাওয়াই।
আদর্শ পরিবার সিরিজের ১ম বই ‘সুখী পরিবার নির্মাণের রূপরেখা’। যে কারণে আমরা এ বইটি পড়ব— ১. সহজ ভাষায় ও গল্পের ছলে ‘সুখী পরিবার নির্মাণের রূপরেখা’ বইটি আপনার সামনে মেলে ধরবে সুখী পরিবার গড়ে তোলার চমৎকার সব কৌশল। ২. এ বইটি নিঃসন্দেহে আমাদের হিংসা-বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্ব-কলহের অবসান ঘটিয়ে পারিবারিক বন্ধন আরো মজবুত করে তুলবে। ৩. জীবনঘনিষ্ঠ আলোচনা ও হৃদয়ছোঁয়া গল্পে মুখরিত এ বই আপনার জীবনে এনে দেবে সুখ, সমৃদ্ধি, প্রাচুর্য আর অনাবিল আনন্দ। ৪. পরিবারকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে সুস্থ-সুন্দর সমাজ। আমাদের পরিবারগুলো সুখী হলে, সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার, পাপ-পঙ্কিলতা সব দূর হয়ে যাবে। তাই সুন্দর সমাজ ও পরিবার গঠনের লক্ষ্যে এ বইয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।
কোনো বই পড়ে কি আপনার ঈমান বেড়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়েছে? মনে হয়েছে—মাত্রই কেউ আপনার হৃদয় বিধৌত করে গেছে অপার্থিব করুণাধারায়? পাঠক, ঈমানের ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার মতো তেমনই এক অভূতপূর্ব রচনার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন আপনি। ‘বিশ্বাসের জয়’ এমনই একটি বই যা পড়লে আপনি অব্যশই ঈমানের দৃঢ়তা উপলব্ধি করবেন, ইনশাআল্লাহ। বইটির মূল বিষয়বস্তু একজন মুমিন ও একজন সংশয়ীর মধ্যকার আন্তরিক আলাপন। তবে সংশয়ীর খোরাকের চেয়ে ঈমানদারদের কাঙ্ক্ষিত উপঢৌকনই বেশি এই বইয়ে। একপাঠে কিছু বইয়ের আবেদন শেষ হয়ে যায় না; কিছু বই তাই বারবার পড়তে হয়। এটি তেমনই একটি বই। আল্লাহর একত্ববাদ আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে আগমনের সত্যতার প্রমাণগুলো মমতা ও আন্তরিকতা দিয়ে অকাট্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এই বইয়ে। বইটির বিষয়বস্তু তৃষ্ণার্ত ও আন্তরিক হৃদয় নিয়ে অধ্যয়ন করলে আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাস কালিমার সত্যায়ন এবং আল্লাহর প্রতি একান্ত আত্মসমর্পণে উৎসর্গ করা ছাড়া গত্যান্তর থাকবে না, ইনশাআল্লাহ।