"ফোরটি এইট আওয়ার্স" বইটিতে লেখা শেষের কথা: পুলিশের সিনিয়র এএসপি মারুফের সাথে তুচ্ছ কারণে ঝগড়া হবার কিছুক্ষণ পরই খুন হয়ে যায় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জাকির আদনান। সমস্ত দোষ গিয়ে পড়ে মারুফের ওপর। ডিপার্টমেন্ট, মিডিয়া থেকে শুরু করে খােদ হােমমিনিস্টারও উঠে পড়ে লাগে তাকে খুনি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। এমন পরিস্থিতিতে বড়কর্তা তাকে সাসপেন্ড না করে আটচল্লিশ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয় খুনিকে খুজে বের করার জন্যে। তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে ডিপার্টমেন্টের এক জুনিয়র এবং একজন আইটি এক্সপার্ট। একাজ করার জন্য তাদের হাতে সময় আছে মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টা। অসম্ভব এই কাজটি করতে গিয়ে নতুন এক সত্যের মুখােমুখি হতে হলাে তাদেরকে। কি সেই সত্য জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ফোরটিএইট আওয়ার্স শেষ হবার আগপর্যন্ত।
অত্যন্ত সাধারণ জীপনযাপনে অভ্যস্ত ইফতির জীবনটা আকস্মিক বদলে যায় একটি ঘটনায়। সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাবার পথে সাক্ষি হয়ে যায় ভয়ঙ্কর এক অপরাধের। কী করবে সেটা ঠিক করার আগেই জড়িয়ে পড়ে সে। একদিকে নষ্ট রাজনীতির ক্ষমতায় মদদপুষ্ট ক্ষমতাবান প্রতিপক্ষ, অন্যদিকে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার দুশ্চিন্তা-এমন অবস্থায় সবকিছু নির্ভর করছে একজন সাধারণ সাইকেল আরােহীর ব্রেক, পেডাল আর গতির ওপরে। আরােহীর আসনে আপনাকে স্বাগতম। দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের একমাত্র ছেলেকে ব্ল্যাকমেইল করতে গিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনে দুই যুবক। ঘটনার ধারবাহিকতায় তাদের সাথে জড়িয়ে পড়ে আরাে অনেকেই। একটি অপরাধের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় আরাে অপরাধ। কিছু মানুষের ভুল-ভ্রান্তি, লােভ-লালসা আর অপরাধের বিস্তৃত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয় এক জটিল সমীকরণের-যে-সমীকরণের সমাধান নিহিত আছে অন্ধ প্রহর-এ।
বিরক্তির সাথে আরেকবার ঘড়ি দেখলাে তুলি। ডিউটি শেষ হতে আরাে প্রায় একঘন্টা বাকি। সময়টা যেন কিছুতেই কাটতে চাইছে না আজ। এই সময়ে ইমার্জেন্সিতে রােগির ভিড় কমই থাকে কিন্তু আজ একেবারেই নেই। বিগত পাঁচঘণ্টা ধরে বসে বসে বই পড়া ছাড়া অন্য কোন কাজই ছিল না। ওর। আজ দু-সপ্তাহ ধরে ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাও ডি-অ্যাকটিভ করে রেখেছে, তাই ফেবুতেও ঢােকার কোন ইচ্ছে নেই। ইমার্জেন্সিতে ডাক্তারদের রুমে একটা এলসিডি টিভি থাকলেও ওটা ছাড়তে এতােটুকু ইচ্ছে করছে না। ওর সাথে একজন দেখা করতে আসার কথা, সে-ও আসেনি। ভেবেছিল মানুষটা এলে, কথা বললে, ভালাে লাগবে। এমনিতেই গত কয়েকদিন ধরে মনটা অসম্ভব খারাপ, তার ওপর বিরক্তিকর সময় কাটানাের কারণে অসহ্য লাগছে। বইটা ডেস্কের ওপর উল্টে রেখে রুমের এক কোনায় রাখা ইলেকট্রিক কেটলিটা অন করে দিলাে ও। বয়াম থেকে দু-চামচ কফি মগে নিয়ে তার সাথে এক চামচ চিনি নিলাে। এই মুহূর্তে মন খারাপের একমাত্র ঔষধ-কড়া কফি। তুলির অন্য কোন নেশা নেই কিন্তু সে ভয়াবহ কফি আসক্ত। দিনে অন্তত ছয়-সাত কাপ কফি না হলে ওর চলে না। কফিটাও হতে হয় মনমতাে, একটু কড়া। মেশিনের কফি কখনােই খায় না সে, সুযােগমতাে নিজেই বানিয়ে নেয়। বাসায় অফিসে সবখানে ওর কফি বানানাের ব্যবস্থা আছে।