বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন শিল্পী মুর্তজা বশীর। ভাষাশহীদ বরকত মারা যান তাঁর চোখের সামনে। হাসপাতালে দেখেছিলেন রফিকের খুলি উড়ে যাওয়া লাশ। তিনি তখন আর্ট কলেজের ছাত্র। মার্ক্সবাদী রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখছেন। মনে শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন। ভাষা আন্দোলন হয়ে উঠল তাঁর আজীবনের প্রেরণা। পরের বছর হাসান হাফিজুর রহমানের একুশে ফেব্রুয়ারী সংকলনে প্রধান দুই রেখাচিত্রশিল্পীর একজন। সেই থেকে শুরু। এ বই ভাষা আন্দোলন নিয়ে মুর্তজা বশীরের স্মৃতি ও স্বপ্নভরা লেখা এবং শিল্পকলার সমারোহ।
বাবা বহুভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, ছেলে শিল্পী মুর্তজা বশীর। বাবা খ্যাতিমান। ছেলেও কম নন। কিন্তু দুজনের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য একেবারেই বিপরীতমুখী। বাবা কমনীয়, পণ্ডিত ও ধার্মিক। ছেলে বিদ্রোহী, শিল্পী, কমিউনিস্ট। বাবা চেয়েছেন ছেলে বেড়ে উঠুক পরিশীলিত সামাজিক হয়ে। ছেলে চাইলেন বাবার প্রভাবের গণ্ডির বাইরে নিজের পরিচয়ে উঠে দাঁড়াতে। দুর্বিনীত সন্তান মুর্তজা বশীর শেষ বয়সে আবার প্রবলভাবে ফিরেও এলেন বাবা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কাছে। নিজেদের চিঠিপত্র, লেখা আর ড্রয়িংয়ে এ বই তুলে ধরেছে দুই বিখ্যাত পিতা-পুত্রের সম্পর্কের সজীব রসায়ন।