বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকদিন পর দেখা হয়ে যায় পুরনো বন্ধুদের, দুই বন্ধু নৃতাত্ত্বিক মারুফ এবং পত্রিকার ফিচার এডিটর রুমি কথা প্রসঙ্গে জানতে পারে তাদেরই আরেক বন্ধু পেশা হিসেবে নিয়েছে ভেন্ট্রিলোকুইজম। কৌতূহলী হয়ে সেটার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ওরা জড়িয়ে পড়ে দারুণ রহস্যময় এক অনুসন্ধানে, বেরিয়ে আসে ভয়ংকর আর শিউরে উঠবার মত সব সত্য, সাধারণ মানুষকে কখনোই জানতে দেয়া হয় না এমন সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক সম্প্রদায়ের কথা। যার পদে পদে ওদের জন্য ওৎ পেতে আছে মৃত্যুগামী বিপদ, অভাবনীয় বিস্ময়, জড়িত আছে ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষের জীবন, এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্র । ভেন্ট্রিলোকুইস্ট শুধু একটি উপন্যাসই নয়, পাঠকদের জন্য ইতিহাস, স্থাপত্য, গণিত, ধর্মতত্ত্ব আর বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব যাত্রা।
ব্যালকনি থেকে আছড়ে পড়ে মারা গেলেন রিয়েল স্টেট মােঘল ম্যাথু স্টার। খুন নাকি আত্মহত্যা—প্রশ্নটার জবাব পাওয়ার আগেই ঘটতে শুরু করল একের পর এক নাটকীয় ঘটনা। তদন্তের দায়িত্ব পড়ল ডেটেক্টিভ নিকি হিটের ওপর। পেছনে ছায়ার মত লেগে রইল বিখ্যাত সাংবাদিক জেমসন রুক। পুরােদমে তদন্ত এগিয়ে যেতে থাকে। পরিপূর্ণ পুলিশওয়ার্ক বলতে যা বােঝায়, তাই করে চলল ডিটেক্টিভ হিট। ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকল সত্য আর মিথ্যের ফারাক। পার্সন অফ ইন্টারেস্ট হিসেবে চিহ্নিত মানুষগুলাে মিথ্যে বলছে কেন? ম্যাথু স্টারের প্রকৃত পরিচয় কি? ব্যবসায়িক কারণে খুন হয়ে গেলেন, নাকি এর পেছনে আরও কিছু কারণ আছে? পার্সন অব ইন্টারেস্টদের সাথে ভিক্টিমের সম্পর্ক কি ছিল? এক্ষেত্রেও প্রশ্নগুলাের উত্তর পাওয়ার আগেই ডিটেক্টিভ হিট এবং জার্নালিস্ট রুকের সম্পর্কে এল নাটকীয় পরিবর্তন। সত্য অনুসন্ধানের লক্ষ্যে রেইড চলছে, চলছে একের পর এক ইন্টারভিউ, হাতকড়া উঠছে একের পর এক অপরাধীর হাতে, বাতাসে শিস কাটছে বুলেট, কিন্তু প্রমাণ জুটছে না। নাগালের বাইরেই রয়ে যাচ্ছে খুনি। নিকি হিট কি পারবে সত্যিকারের খুনিকে ধরতে?
এক রাতে আমেরিকার সুপৃমকোর্টের দু’জন বিচারক খুন হলে তদন্ত কাজ শুরু হয়। আইনের এক ছাত্রি নিতান্তই কৌতুহল আর একাডেমিক কারণে জড়িয়ে পড়ে সেই ঘটনায়। তার পিছু নেয় ভয়ঙ্কর এক খুনি। নিজের জীবন বিপন্ন দেখে আত্মগোপনে চলে যায় সে। আরো অনেকগুলো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। কিন্তু শেষে পাঠক যা জানতে পারবে তা একেবারেই ভিন্ন একটি ঘটনা।
ব্যাপারটা কাকতাল বা হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা নয়। এই ষড়যন্ত্রের জাল বিছানো আমেরিকা থেকে আফ্রিকা হয়ে সুদূর বাংলাদেশ পর্যন্ত। আর এই জালে ফেঁসে গেল আটপৌড়ে এক বাঙালি যুবক। বাধ্য হয়ে পা বাড়াতে হলো অসম্ভবের পথে। শ্বাপদসংকুল দুর্গম জঙ্গলে প্রাণটা হাতে নিয়ে শুরু হল পথচলা। অচেনা দেশ, অজানা জনপদে চারপাশে কেউ নেই যার কাছ থেকে মিলতে পারে বিন্দুমাত্র সাহায্য, সহানুভূতি। শত্রুপুরীতে একেবারেই একা। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে বলির পাঠা হওয়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। আন্তর্জাতিক এই চক্রের হাতের পুতুল হয়েই কি তাকে অংশ নিতে হবে ইতিহাসের জঘন্যতম প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে? প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর তপ্ত নিশ্বাস অনুভব করছে ঘাড়ের উপর। সীমাহীন লালসা, ক্ষমতা দখলের তীব্র আকাঙ্ক্ষা আর বিশ্বাসঘাতকতার কুৎসিত রূপটাও প্রত্যক্ষ করতে হল খুব কাছে থেকে। অক্টোপাসের মতো চারদিক থেকে জড়িয়ে থাকা চক্রান্তের হাত থেকে মুক্তির কোনো পথই কি খোলা নেই!
ক্রাইম রিপাের্টার জন ম্যাকেভয়ের কাজ আবর্তিত হয় মৃত্যুকে ঘিরে। কিন্তু তার পুলিশ অফিসার যমজ ভাই যখন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় তখন অবসাদ থেকে মুক্তি পাবার জন্যই ভাইয়ের মৃত্যু আর পুলিশ অফিসারদের আত্মহত্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করে সে। অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে ভয়ঙ্কর একটি সত্য আবিস্কৃত হয়-তার ভাইয়ের মৃত্যুর ধরণের সাথে বেশ কিছু পুলিশ অফিসারের আত্মহত্যার ঘটনার মিল রয়েছে-সবগুলাে কেসেই সুইসাইড নােট হিসেবে এডগার অ্যালান পােয়ের কবিতার পংক্তি লেখা! তাহলে কি কোন এক সিরিয়াল কিলার বেছে বেছে পুলিশ অফিসারদের খুন করে যাচ্ছে? খুনির শিকারে পরিণত না হলে এ রকম একটি রহস্যের সমাধান বদলে দিতে পারে তার সাংবাদিক জীবনকে। কিন্তু কাজটা মােটেও সহজ নয়। ধীরে ধীরে উন্মােচিত হতে থাকে এক ভয়ঙ্কর অন্ধকারের গল্প। ‘কনেলি তার গ্লারে আসল সারপ্রাইজটা সমাপ্তির আগপর্যন্ত জামার আস্তিনের নীচে লুকিয়ে রাখেন। ‘আগ্রহােদ্দীপক একটি প্রােটাগনিস্ট...কনেলি শুধুমাত্র পােয়েট-এর গল্পটা বলেননি, তিনি লিখেছেনও বেশ কাব্যিকভাবে।