সোনার হরিনের খোঁজে বইটি একটি গবেষণামূলক বই। চাকুরী এবং অধ্যাপনার জন্য আমি ২০১২ সালের পহেলা জানুয়ারী থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছি। এই দীর্ঘসময় আমি সহস্রাধিক বাংলাদেশী শ্রমিকের সংস্পর্শে এসে তাদের কাছ থেকে শুনেছি ওদের জীবনের করুণ ইতিহাস। শ্রমিকদেরকে 'রেমিটেন্স যোদ্ধা' হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও, দেশের মাটিতে তারা বড়ই অবহেলিত এবং উপেক্ষিত। আর মধ্যপ্র্যাচে তাদেরকে ডাকা হয় 'মিসকিন' বলে। এই বীর শ্রমিকরা নিজেদের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে দৈনিক ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ছয় দিন বা কেউ কেউ মাসে ২৯ দিন কাজ করে দেশ ও পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৬ সালে প্রতিবেশী বাড়ির গৃহকর্মী 'হোসেনের' সংস্পর্শে এসে আমি জেনে নেই তাদের দৈনন্দিন জীবনের বিস্তারিত তথ্য। হোসেনকে কাছ থেকে দেখে আর তার অজানা জীবন কাহিনি জানার পর আমার মনে সুপ্ত বাসনা জেগে ওঠে যে এই শ্রমিকদের অজানা অধ্যায়টি পৃথিবীবাসীকে জানানো দরকার। তখন থেকেই আমি মূলত একটু-একটু করে বিভিন্ন জনের কথাগুলো লিপিবদ্ধ করা শুরু করি এবং সেটা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। বইটিতে শুরু শ্রমিকদের জীবন কাহিনিই নয়, সেই সাথে পাঠকদের মধ্যপ্রাচ্যের সাথে পরিচিত করার জন্য স্কেহানকার ভৌগোলিক এবং সামাজিক বিভিন্ন বিষয় বর্ণনা করা আছে। অনেকেই আমার লেখাগুলোর প্রশংসা করেছেন। আমি উৎসাহ বোধ করেছি এবং লিখে গেছি। বইটিতে বিদেশে, বিশেষ করে কাতারে চাকুরীর ক্ষেত্রে কী কী তথ্য জানা দরকার তার ওপর একটি প্রবন্ধ সংযোজন করা হলো। লক্ষ-লক্ষ বাংলাদেশী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত এই বইটি পড়ে যদি একজন মানুষও উপকৃত হোন, তাহলে লেখক হিসেবে পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করবো।
বিশ্বখ্যাত দুই মহাকাব্য—ইলিয়াড এবং ওডেসি। এই দুই মহাকাব্যের কতটুকু ইতিহাস-নির্ভর? আর কতটুকুর জন্ম হয়েছে মানব কল্পনার গহীন থেকে? যদি কল্পনাই হয়ে থাকে, তাহলে কেন বরফের রাজ্যে আটকা পড়া আরব বজরায় পুরাণের দানোদের হাতে খুন হতে হবে একজন বিজ্ঞানীকে? যদি বাস্তব হয়, তাহলে কোথায় সেই সাইক্লপস? কোথায় সারবেরাস? মিনেটর? অন্য সব দানো? বজরা-রহস্য সমাধানে গ্রিনল্যান্ডে গিয়ে অপহৃত হলো ড. ইলেনা কারগিল। আরেকটা পরিচয় আছে ওর—সে সিনেটর কারগিলের মেয়ে। বান্ধবীকে উদ্ধার করতে সেখানে পা রাখল মারিয়া, সঙ্গে কোয়ালস্কি। ওদের সঙ্গে যোগ দিল গ্রে এবং শেইচানও। বনু মুসা নামের রহস্যময় এক সঙ্ঘ দেখা দিল দৃশ্যপটে। ওদের ধারণা-ওডিসিয়াসে বর্ণিত গল্পের অনেকটাই সত্যি। মহাপ্রলয়কে ত্বরান্বিত করার মানসে সেই দানবদেরকে হাতে পেতে চায় তারা। মুখোমুখি দুই আদর্শ নিয়ে খাড়া হলো সিগমা আর বনু মুসা। কিন্তু গ্রেরা জানে না, এই নাটকের রয়েছে আরো অনেক কুশীলব। টারটারাস কি সত্যি? নাকি হোমারের কল্পনা? সেই প্রশ্নের উত্তর লেখা আছে দ্য লাস্ট ওডিসির পাতায়।
কাহিনী সংক্ষেপ রহস্যের রানি খ্যাত আগাথা ক্রিস্টি বিশ্বের ইতিহাসে সবচাইতে জনপ্রিয় রহস্য লেখিকাদের মাঝে একজন। নাটক, ছোট গল্প, উপন্যাস-সবখানেই রয়েছে তার সদর্প পদচারণা। এরকুল পোয়ারো এবং মিস মার্পল নামের বিশ্বখ্যাত দুটি চরিত্রের জন্মদাত্রী তিনি। আমেরিকান পিতার ঔরসে ও ব্রিটিশ মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন আগাথা মেরি ক্লারিসা মিলার। ইংল্যান্ডের টর্কুই নামক স্থানে, ১৮৯০ সনের ১৫ সেপ্টেম্বর তার জন্ম। পারিবারিক ভাবে স্বচ্ছল ছিলেন, তবে ধনী ছিলেন না কখনো। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে একা-একা পড়তে শেখেন তিনি। ১৯১৪ সনে কর্নেল আর্চিবল্ড ক্রিস্টির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আগাথা। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হবার পর, তিনি পুনরায় বিয়ে করেন ম্যাক ম্যালোওয়ানকে...১৯৩০ সনে। ১৯৭১ সনে ভূষিত হন ব্রিটিশ সরকারের ডেম কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার অভ ব্রিটিশ এম্পায়ার উপাধিতে। কিন্তু এই বছর থেকেই আস্তে আস্তে খারাপ হতে থাকে তার শরীর। অবশেষে ১৯৭৬ সনের ১২ জানুয়ারি, বার্ধক্য জনিত কারণে মৃত্যবরণ করেন তিনি। তার লিখিত বিখ্যাত বই থেকে তিনটি বই নিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের আগাথা ক্রিস্টি সমগ্রের ১ম খণ্ড। বইগুলো হলো: অ্যাপয়েন্টমেন্ট উইথ ডেথ দ্য বিগ ফোর পোয়ারো ইনভেস্টিগেটস
আমাদের মেঘবাড়ি ‘আর ওই পেছনে দেখ, কেমন জমাট বেঁধে আছে তুলোর মতো! মনে হচ্ছে মেঘের উপর একটা প্রাসাদ!’ ‘ওই প্রাসাদে কারা থাকে, আম্মু?’ ‘পরীরা থাকে...আর তোমার মতো পরীর বাচ্চারা থাকে।’ লামিয়া মুখে আঙুল দিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে বলল, ‘ওখানে কি আমরা যেতে পারব, আম্মু?’ মীরা নিচু হয়ে লামিয়ার গালে চুমু খেয়ে বলল, ‘নিশ্চয়ই যেতে পারব, মা। যখন তুমি অনেক বড় হবে, তোমার যখন দুটো পাখা হবে, তখন তুমি উড়ে উড়ে ওই মেঘের ওপর বাড়িটাতে উড়ে চলে যেতে পারবে!’ ‘তখন ওটা আমাদের বাড়ি হবে?’ ‘হ্যাঁ, আম্মু! আমাদের মেঘবাড়ি!’ প্রতিটি মানুষই শৈশবে অযুত নিযুত স্বপ্ন নিয়ে জীবন শুরু করে। মীরাও করেছিল। শ্যামাঙ্গী, নতমুখী, শান্ত মেয়ে মীরা। ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান মীরা। জীবনের কাছে, বাস্তবতার কাছে পরাজিত মীরা। জীবন মীরার প্রতি সুবিচার করেনি। এ নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হওয়ার মতো, নিজের অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য লড়াই করার শক্তিও তার নেই। তবে জীবনের এক পর্যায়ে এসে নিজের সন্তানের সামনে দাঁড়িয়ে মীরা ভাবে: সে কি তার সন্তানের সামনে মুখ বুজে অন্যায় মেনে নেওয়ার, সহ্য করে যাওয়ার উদাহরণ তৈরি করে রেখে যাচ্ছে না? সব মানুষই গোপনে এমন একটা আকাশ খুঁজে বেড়ায়, যেখানে তার স্বপ্নগুলো ডানা মেলে উড়ে বেড়াতে পারে! যারা খুঁজে পায়...তারা ভাগ্যবান... ...আর যারা পায় না, তাদের মতো দুর্ভাগা আর নেই। ‘আমাদের মেঘবাড়ি’ আত্ম-অনুসন্ধানের গল্প। নিজেকে হারিয়ে আবার খুঁজে পাওয়ার গল্প। হার না মেনে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প, উঠে দাঁড়ানোর গল্প। সাধারণ কারো অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প। এই গল্প একই সাথে ভালোবেসে দূরে যাওয়ার আর ফিরে আসার, এই গল্প হেরে গিয়ে জিতে যাওয়ার, সব স্বপ্ন ভেঙে-চুরে চুরমার হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে জোড়া দেওয়ার।
আগাথা ক্রিস্টি সমগ্র ২ দ্য মার্ডার অন দ্য লিঙ্কস (অনু. মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ): সাহায্যের আবেদন শুনে ফ্রান্সে ছুট লাগালেন পোয়ারো। কিন্তু তিনি পৌঁছতে পৌঁছতে দেরি হয়ে গেছে অনেক, খুন হয়ে গেছেন আর মক্কেল; তার লাশ পড়ে আছে গলফ কোর্সের অগভীর এক কবরে। কিন্তু মানুষটার পরনে কেন তার ছেলের ওভারকোট? সেই কোটের পকেটে থাকা চিঠিটা কার? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার আগেই, আরেকটা সমস্যায় পড়লেন পোয়ারো... ...হুবহু একই রকম আরেকটা লাশ আবিষ্কৃত হয়েছে যে! দ্য থ্রি অ্যাক্ট ট্রাজেডি (অনু. মারুফ হোসেন): আনন্দঘন এক ডিনার পার্টিতে এসে মারা গেলেন একজন যাজক! তেরোজন অভ্যাগত এসেছেন বিশিষ্ট অভিনেতার বাড়িতে। বিশেষ এই সন্ধ্যা অশুভ হয়ে দেখা দিল শান্ত স্বভাবের যাজক, স্টিফেন ব্যাবিংটনের জীবনে। ককটেল কিন্তু মার্টিনির গ্লাসটা পরীক্ষায় পাঠিয়ে জানা গেল-বিষের ছিটেফোঁটাও নেই এখানে... ...ঠিক যেমনটা আন্দাজ করেছিলেন পোয়োরা। তারচেয়ে বড় ব্যাপার, খুনের পেছনে আপাতদৃষ্টিতে নেই কোনো মোটিভ। তাহলে কার হাতে...এবং কেন খুন হতে হলো যাজককে? দ্য হলো (অনু. মো. ফুয়াদ আল ফিদাহ): লুসি অ্যাঙ্গকাটেলের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে লাঞ্চে এলেন এরকুল পোয়ারো। বিখ্যাত গোয়েন্দাকে খোঁচাবার জন সুইমিং পুলের পাশে নকল হত্যাকাণ্ড ঘটাল তার অতিথিরা। কিন্তু আফসোস, একদম বাস্তবে পরিণত হলো সেই নাটক। রক্ত মিশে যাচ্ছে পানিতে, এমন সময় শেষ শব্দটি উচ্চারণ করল জন ক্রিস্টো: হেনরিয়েটা। প্রেমের জালের এক জটিল জটলায় ফেঁসে গেলেন পোয়ারো। মনে হচ্ছে, এই নাটকের সব কুশীলবই সন্দেহভাজন, এবং প্রত্যেকে শিকার প্রেমের যাতনার!
একটি পুরোনো কোদাল . . . একটি প্রাচীন কয়েন . . . একটি কালো পাথর . . . কী সম্পর্ক এদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক খান মুহাম্মদ ফারাবির? মহাবীর আলেকজান্ডার, মুহাম্মদ বিন কাসেম, ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি-ইতিহাস প্রসিদ্ধ বড় বড় নাম। এসব প্রসিদ্ধ বিজেতাদের দেশজয়ের পেছনের কারণ কি শুধুই তাদের শৌর্যবীর্য? একটি কালো পাথরের পেছনে উঠেপড়ে লেগেছে কেন আমেরিকাফেরত বিদুষী যুবতী লিয়া? উদ্ভট সব হ্যালুসিনেশন হচ্ছে কেন খান মুহাম্মদ ফারাবির? কেনই বা তিনি যা দেখছেন, তাই হয়ে উঠছে ভবিতব্য? এসব প্রশ্নের উত্তর কি লুকিয়ে আছে কোনো প্রাচীন ইতিহাসের পাতায়? উত্তর জানার নেশায় শেষতক না জানটাই না খুইয়ে বসতে হয় ফারাবিকে!