অত্যুক্তি হবে না যদি আমরা গত শতাব্দীটিকে মার্ক্সীয় শতাব্দী বলে উল্লেখ করি। আজকের পৃথিবী যে অবস্থায় আছে, তাতে কার্ল মার্ক্সের চিন্তার প্রভাব ও প্রাসঙ্গিকতা অনস্বীকার্য। মার্ক্সীয় রাজনীতির আগের চেহারা বর্তমানে অনেক বদলে গেলেও রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তার ক্ষেত্রে মার্ক্সের তত্ত্ব ও বিশ্লেষণের গুরুত্ব কিংবা তার যৌক্তিকতার ধার কিন্তু কমেনি। বিশ্বব্যপী সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার পতনের পর মার্ক্সের দর্শনের প্রায়োগিক সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে প্রায় অতিলৌকিক চরিত্র বা বিগ্রহের জায়গা থেকে সরিয়ে মার্ক্সকে বরং একজন মানুষ হিসেবে দেখার এবং তাঁর চিন্তা বা দর্শনের তাৎপর্যকে পরিবর্তিত সময়ের প্রেক্ষাপটে অনুধাবন করার চেষ্টা। মার্ক্স এবং মার্ক্সবাদের এই নতুন মূল্যায়ন প্রচেষ্টার সঙ্গে বাংলাভাষী পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়াই এই বইয়ের লক্ষ্য। বইটির প্রথম অংশে আছে মার্ক্সের জীবন এবং তাঁর দর্শন নিয়ে আলোচনা। আর দ্বিতীয় অংশে স্থান পেয়েছে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মার্ক্সবাদের প্রায়োগিক সম্ভাবনার বিষয়টি।
এই বইয়ে আছে ইরানের বিপ্লবের জটিল ঘটনাপ্রবাহের বিস্তৃত আলোচনা। বিপ্লবে ধর্মের আধ্যাত্মিকতার ভূমিকা, ইরানের কমিউনিস্ট তুদেহ পার্টিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতা আর রক্ষণশীল বনাম সংস্কারপন্থার দ্বন্দ্ব কীভাবে ইরানের ভাগ্য নির্ধারণে সংগ্রামরত, তার বর্ণনা তুলে ধরেছে এই বই।
এ বইয়ে বিশাল ক্যানভাসে আঁকা হয়েছে সোভিয়েত রাশিয়াকে। এতে রয়েছে ইতিহাস কাঁপানো রুশ বিপ্লব, আনকোরা নতুন সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন, বিভীষিকাময় দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, স্নায়ুযুদ্ধের শীতল তিমিরাচ্ছন্ন পঞ্চাশ বছর। রুশ আত্মার সন্ধানে জারতন্ত্রের আদি থেকে শেষ ইতিহাস, তার শিল্প, সাহিত্য, চিত্রকলা, সিনেমা, সংগীত আর দর্শনের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। কোনোটাই এখানে বাদ পড়েনি। আছে সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙনের ইতিবৃত্ত, রাজনৈতিক উত্থান–পতন, ব্রেজনেভ, গর্বাচেভ, ইয়েলেৎসিন, পুতিনের মতো রাষ্ট্রনায়কদের গল্প, দুর্নীতি আর অলিগার্কদের উত্থান পবের্র সোজাসুজি বর্ণনা। সব মিলিয়ে বইটি হয়ে উঠেছে যেন নানা বর্ণের মিশ্রণে রুশ সমাজ ও ইতিহাসের রামধনতুল্য।