বাংলাদেশের অত্যন্ত ঘটনাবহুল সময়ে এ কে এম শহীদুল হক পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বত্রিশ বছর কর্মজীবনের নানান পর্যায়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে দাগি অপরাধীদেরকে কাছ থেকে দেখেছেন, সাক্ষী হয়েছেন ঐতিহাসিক সব ঘটনার। এসব ঘটনার কোনোটির যেমন রয়েছে জাতীয় স্তরে তাৎপর্য, কোনোটি আমাদের সমাজবাস্তবতাকে গভীরভাবে চিনতে সাহায্য করবে। পুলিশ বিভাগের সাথে জনপ্রতিনিধি, জনপ্রশাসন, সামরিক বাহিনী এবং বিচার বিভাগের সম্পর্ক, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং ব্যক্তিত্বের সংঘাতের মুখোমুখি হওয়ার অকপট বিবরণও তিনি এই গ্রন্থে দিয়েছেন। বিশেষ করে জঙ্গিদের ভয়ংকর আত্মপ্রকাশ ও দমনের পর্বটিতে তিনি পুলিশের প্রধান হিসেবে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনাপ্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করে জঙ্গিদমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। লেখকের কর্মজীবনের অর্জনের মাঝে রয়েছে কমিউনিটি পুলিশিংসহ বহুবিধ সফল ও সৃজনশীল উদ্যোগের কৃতিত্বও। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ তাঁরই উদ্যোগে চালু হয়েছে। এসব অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। পুলিশসদস্যরা তো বটেই বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি ও প্রশাসন বিষয়ে উৎসুক যে-কোনো সচেতন পাঠক গ্রন্থটি আনন্দ নিয়ে পাঠ করতে পারবেন।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরের দশকগুলিতে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যে ব্যাপক অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে, সেই বিশাল ক্যানভাসের কয়েকটি খণ্ডচিত্র এই প্রবন্ধ সংকলনে তুলে ধরা হয়েছে। মূল আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে গ্রামের অর্থব্যবস্থা, সমাজগঠন ও ক্ষমতাবিন্যাস, দুর্নীতির সংস্কৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি, ভূমি সংস্কার ও ভূমি বেদখলের কলাকৌশল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতিরোধ সংগ্রামের দৃষ্টান্ত হিসাবে যশোর-খুলনার বিল ডাকাতিয়া, আদিবাসী-অধ্যুষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম, এবং নোয়াখালির চরাঞ্চলে গণআন্দোলনের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বইটির আলোচনায় দেখানো হয়েছে যে নগরায়ণ, শিল্পায়ন, উন্নয়ন কার্যক্রম, এবং দেশবিদেশে শ্রমিকদের অভিবাসন এসব বহুমুখী প্রক্রিয়ার ফলে গ্রামবাসী মানুষের জীবিকায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। একইসাথে শহুরে জীবনযাত্রার রুচি ও প্রবণতা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে। ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছাড়াও জাতিসত্তা ও ভাষাগত ভিন্নতার ওপর ঝোঁক দিয়ে নবতর সাম্প্রদায়িকতার উদ্ভব ঘটেছে। তবে লক্ষণীয় যে, এভাবে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিস্তার ঘটানো হলেও তার আড়ালে শ্রেণিভিত্তিক ক্ষমতাবিন্যাস এবং শোষণের ভূমিকা প্রচ্ছন্নভাবে কাজ করে চলেছে। কিছুটা গল্পের আকারে বলা হলেও এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো নিতান্ত বর্ণনামূলক নয়। প্রতিটি অধ্যায়েই কোনো সুনির্দিষ্ট সূত্র বা সমস্যাকে তুলে ধরা হয়েছে, এবং রাজনীতি, অর্থনীতি বা সমাজতত্ত্বের যুক্তিবিন্যাস দিয়ে তার বিশ্লেষণ দাঁড় করানো হয়েছে। এর জন্য যেসব তাত্ত্বিক ধারণার প্রয়োজন, সেগুলোও প্রাসঙ্গিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ: 'জনগণের বিজ্ঞান, নয়াউদারবাদী বিশ্বায়ন, ধনতান্ত্রিক রূপান্তরের সম্ভাবনা ও অসম্পূর্ণতা, এবং প্রিমিটিভ অ্যাকিউমুলেশন বা আদি ধনার্জনের ধারণাগুলি বাস্তব ঘটনাবলির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যে কৌতূহলী পাঠক বিষয়ের আরও গভীরে প্রবেশ করতে চান তাঁর জন্য প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে তথ্যনির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
আলাস্কার ধু-ধু প্রান্তর, জনমানবহীন দুর্গম পথ আর পরিত্যক্ত সব শহর অভিযাত্রীদের জন্য রেখে দিয়েছে রোমাঞ্চ আর দুর্গমকে জয় করার হাতছানি। সাইকেলে বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে তিন বন্ধু (দুজন পুরুষ ও একজন নারী) সাড়া দিয়েছিলেন সে আহ্বানে। আলাস্কা থেকে টরোন্টো অভিযানের এই কাহিনি মুগ্ধ করবে পাঠকদের। অনায়াস গদ্যে তিনি বর্ণনা করেছেন এখনো অনেকটাই বুনো রয়ে যাওয়া এই অঞ্চলগুলোর কথা। সেখানে খাবারের লোভে ক্যাম্পের আশেপাশে ঘুরঘুর করে বিশালদেহী হিংস্র গ্রিজলি ভাল্লুক, প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে আমিষের চাহিদা মেটানো হয় মুজ শিকার করে। পাঠক প্রতিটা পাতায় ঘরছাড়া সব মানুষ আর বুনো প্রকৃতির ছোঁয়া পাবেন। ঘাসের মাঝে উবু হয়ে জংলি স্ট্রবেরি খোজা যে মানুষটা সেই গহীন অরণ্যে দুবছর ধরে পায়ে হেঁটে ঘুরছেন, কিংবা জঙ্গল থেকে তুলে আনা শক্তি জোগানো বুনো ব্লুবেরি যে মানুষটি যেচে উপহার দিলেন অভিযাত্রীদের, তাঁদের কাহিনি পড়তে গিয়ে যে-কোনো পাঠকই পৃথিবীর পথে-পথে ছড়িয়ে থাকা এই আপনজনদের সন্ধানে নেমে পড়তে চাইবেন। জনমানবহীন প্রান্তরে এ অভিযানের টুকরো টুকরো সব গল্পে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিনয় আন্তরিকতার গভীর সব উপলব্ধি আমাদের হবে। সব বয়েসি পাঠকের ভালো লাগার মতো একটি বই পৃথিবীর পথে বাংলাদেশ: সাইকেলে আলাস্কা থেকে টরোন্টো।
রাষ্ট্র-মেশিনের কোলে পাতা তুলতুলে লিবেরেল মাথা - বইটি পাঠকের চিন্তাপ্রণালির অনেকগুলো আরামকে বিঘ্নিত করতে পারে। কারণ, যেসব ধারণার ওপর সমাজ-রাজনীতির প্রচলিত বিশ্লেষণগুলো প্রায়শই দাঁড়ানো থাকে, এ বইটি সেসব অনুমানকেই দুর্বল সাব্যস্ত করে এগিয়েছে। বরং, বইটি সেসব অনুমান-অনুসিদ্ধান্তগুলোর প্রতি মারাত্মক চ্যালেঞ্জ। বইটিতে ছয়টি খন্ড আছে। প্রথম খণ্ডে ‘শিক্ষায়তন ও শিক্ষাশাসন’ মুখ্যত উচ্চশিক্ষায় রাষ্ট্রীয় অভিঘাতগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় খণ্ডে ‘সংবাদ-নিয়ন্ত্রণ ও প্রপাগান্ডাচর্চা’তে সংবাদ-পরিবেশনপ্রণালি আর সংবাদসংস্থাগুলোর সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক বিশ্লেষিত হয়েছে। ‘শ্রেণিবিদ্বেষের রাষ্ট্রকৃত্য’ খণ্ডে আলোকপাত করেছে কীভাবে বিধিবদ্ধ সব শ্রেণি-আচরণ সংগঠিত হচ্ছে সেদিকে। চতুর্থ খণ্ডে ‘সংস্কৃতি-সত্তার সংঘাত আর স্বার্থ’ এমন কিছু রচনাকে একত্রিত করেছে, যেখানে পরিচয়-নির্মাণের প্রবণতাগুলো আর সেখানকার লড়াইকে পাঠ করা হয়েছে। পঞ্চম খণ্ডে ‘প্রহরীর শাসনব্যবস্থা আর ভীতির কারিগরি’ বর্তমান সময়ের পদ্ধতিগত ভীতিমূলক পরিচালন-ব্যবস্থার দিকে আঙুল তুলেছে। শেষ খন্ডটিতে জাতীয়তাবাদকে কঠোরভাবে শ্লেষ করা হয়েছে 'জাতীয়তাবাদী জজবা' নামে । সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাষ্ট্রকাঠামো আর এর বাসিন্দাদের বিষয়ে এ বইটি পাঠকদের নতুনভাবে ভাবাতে সক্ষম।
This volume intends to cast hitherto unfocused light on the emergent literary sensibilities shown by four Muslim women in pre-modern India. Gulbadan, Jahanara and Zeb-un-Nessa belonged to the Mughal zenana, which was an enigmatic liminal space of qualified autonomy and complex equations of gender politics. Conversely, Habba Khatoon, famously known as ‘the Nightingale of Kashmir’, was a common woman who married into royalty, but her happiness was short-lived with her husband being treacherously exiled by Emperor Akbar. While the subjective selves of these women never much surfaced under extant rigid conventions, their indomitable understanding of ‘home-world’ antinomies determinedly emerged from their works. This monograph explores the literary-political imagination of these women that was constructed through statist interactions of their royal fathers, brothers or husbands, and how such knowledge percolated through the relatively cloistered communal life of the zenana.
জনস্বাস্থ্য একটি কম্পোজিট ডিসিপ্লিন, অর্থাৎ এটি কোনো একক বিষয় নয়, বরং এর মধ্যে পড়ে সংক্রামক ও অসংক্রামক মহামারিবিদ্যা, জৈব-পরিসংখ্যান, জনপুষ্টি, স্বাস্থ্য-অর্থনীতি, চিকিৎসা-নৃবিজ্ঞান, আচরণগতস্বাস্থ্য ও যোগাযোগবিদ্যা, স্বাস্থ্য-প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যনীতি ইত্যাদি। বাংলাদেশের সামষ্টিক উপলব্ধিতে ‘স্বাস্থ্য’ বলতে মানুষ ‘চিকিৎসা’ই বুঝে থাকে। প্রতিকারমূলক চিকিৎসার ঊর্ধ্বে উঠে স্বাস্থ্যকে জনগণের অধিকার হিসেবে দেখতে পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে স্পষ্টতই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জনস্বাস্থ্য এমন একটি ডিসিপ্লিন যা স্বাস্থ্য অধিকার অর্জনে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের কথা বলে, বিশেষ পেশাজীবিশ্রেণির বৈষয়িক করালগ্রস্ততার বদলে সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের দাবি তোলে। জনস্বাস্থ্যের মূল বক্তব্য হলো, মানুষের দারিদ্র্য, তার সমাজ-বাস্তবতা, তার সংস্কৃতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে তার স্বাস্থ্যসন্ধানকে প্রভাবিত করে। ওষুধ, চিকিৎসা, সেবাপ্রদানকারী--এগুলোকে জনগণের স্বাস্থ্য তথা জনস্বাস্থ্যের একমাত্র অথবা প্রধানতম চাহিদা হিসেবে বিবেচনা করাটা খর্বিত দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। কোভিড-১৯ অতিমারি যেন আতশী কাঁচের মতো বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের দুর্দশার চিত্রটি বিবর্ধিত করে দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনস্বাস্থ্যে ডক্টরেট সম্পন্ন করা ড. তৌফিক জোয়ার্দার ময়নাতদন্তের মতো কেটেকুটে উদ্ঘাটন করেছেন বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের বাস্তবচিত্র।
কৃষি অর্থনীতি অনেকগুলো পৃথক জ্ঞানের একটি সমন্বিত শাখা। কৃষির উৎপাদন, বিপণন, প্রতিষ্ঠান ও আধুনিকায়নের বিভিন্ন অর্থনৈতিক দিকে নিয়ে তাত্ত্বিক ও তথ্যভিত্তিক আলোচনা নিয়ে বাংলাভাষায় উল্লেখযোগ্য খুব বেশি প্রকাশনা নেই। অথচ বিশ্বব্যাপী জাতীয় বিকাশের স্বার্থে কৃষি অর্থনীতি বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পাঠ করা হয়। বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি: বিষয় ও বিশ্লেষণ গ্রন্থটি বাংলাদেশে কৃষির উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে প্রবন্ধের একটি সুনির্বাচিত সঙ্কলন। বইটিতে কৃষি অর্থনীতি শিক্ষার ইতিহাস, পাঠক্রমের ক্রমবিকাশ ও গবেষণার সুযোগ সম্পর্কে তথ্যনির্ভর আলোচনা করা হয়েছে, একই সাথে বাণিজ্যিক কৃষির আলোচনায় প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, ডেইরি, ধানের সঙ্গে মাছের চাষ, কৃষি সুরক্ষা, সেচ ও সৌরশক্তি ইত্যাদির প্রসঙ্গে মাঠ পর্যায়ের গবেষণাভিত্তিক বিশ্লেষণও তুলে ধরা হয়েছে। কৃষি ও কৃষকের অগ্রগতির জন্যে অপরিহার্য প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন যেমন, কৃষি পণ্য বিপণন ও মূল্য সহায়তা ব্যবস্থা, কৃষি বীমার অবস্থা, পারিবারিক খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির অবস্থা, কৃষিতে নারী শ্রম ও মজুরি এবং কৃষকদের উৎপাদন সংগঠন প্রভৃতি বিষয়ে বিশদ আলোচনাও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতি: বিষয় ও বিশ্লেষণ বইটি কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক, নীতিনির্ধারক, গণমাধ্যমকর্মী, উন্নয়ন সংস্থা, পরামর্শক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীসহ সবার কাজে আসবে।
বাংলাদেশের মানুষের পরিচয়, ভাষা ও সংস্কৃতির বর্ণনা নিয়েই গ্রন্থটির সূচনা। বাংলা ভাষা ও জাতি এক ধরনের ঐক্য তৈরি করলেও পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য পরস্পরকে স্বতন্ত্র করে রেখেছে। পূর্ববঙ্গে কৃষি নির্ভর জীবন একটি উপজাপালিক চেতনাকে বিকশিত করেছিল। ইতিহাসের জটিল স্রোতে এ চেতনা কখনই বিলুপ্ত হয়নি বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন হাত ধরাধরি করে এগিয়ে গেছে, আবেগ ও ভালবাসায় সিক হয়ে ১৯৫২-১৯৭১ কালপর্বে বাঙলি জাতীয়তাবাদের মহাসমুদ্রে মিলিত হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ববঙ্গে অনন্য অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্ম হয়, যার অমোঘ পরিণতি ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। ইতিহাসের ক্রমধারা অনুধাবনের জন্যে এখানে আলোচিত হয়েছে। দেশ ও জনগোষ্ঠির পরিচয়, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উদ্ভব ও বিকাশ, অনন্ত বাংলা গঠনের প্রয়াস, পাকিস্তানি রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বৈষম্য, ভাষা আন্দোলন ও বাঙালির আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠা, সামরিক শাসন, জাতীয়তাবাদের বিকাশ, স্বাধিকার আন্দোলন, সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন, অসহযোগ আন্দেলন ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা প্রবাহ, বাংলাদেশের মৃত্যুদয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল।
কম্পিউটার পরিচয় সিরিজটির প্রধান উদ্দেশ্য হলো প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিমূলক কম্পিউটারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। এই সিরিজের পরবর্তী বই 'তৃতীয় ভাগ' রচিত হয়েছে মূলত দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য। বাংলাদেশে যোগাযোগপ্রযুক্তির বিপুল প্রসারের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশের আগেই শিশুরা কম্পিউটার ও নানাবিধ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের সংস্পর্শে আসে। তবুও এই বইয়ের বিষয়বস্তু অনুসরণে অভিভাবক বা শিক্ষক-শিক্ষিকারা সহায়ক ভূমিকা গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। বইটি পঠন শেষে শিক্ষার্থীরা নানারকম কম্পিউটার ও এগুলোর নানাবিধ ব্যবহার, কম্পিউটারের প্রধান অংশসমূহ, বিট, বাইট, প্রোগ্রাম ও ইন্টারনেট সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ এবং কি-বোর্ড ও মাউসের ব্যবহার-সম্পর্কে জানতে পারলে শিখন-উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যাবে।
ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি এবং স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশ সমূহের রাষ্ট্রনীতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত অর্ধ শতকে বিষয়টি নিয়ে তাত্ত্বিক পর্যায়ে যেমন আলোচনা হয়েছে অনেক, তেমনি বিবর্তন ঘটেছে উন্নয়ন সম্পর্কে মূল ভাবনাতেও। দারিদ্র্য হ্রাস, অসাম্য এবং কর্মসংস্থান এসব বিষয়ে সাফল্য নিয়েও বিতর্ক হচ্ছে। অন্যদিকে বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে এবং বিশ্বায়নের প্রক্রিয়াও দ্রুততর এবং ঘনিভূত হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই প্রক্রিয়া কি অবদান রাখছে সে প্রশ্ন এসে যাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। তবে পাশাপাশি রয়ে গেছে উন্নয়নের গোড়ার প্রশ্নঃ কৃষি ও শিল ।