একজোড়া চোখ খোঁজে আরেক জোড়া চোখকে" বইটিতে লেখা শেষের কথা: মফস্বলের বস্তিতে গা ঢাকা দেয়া লেখক মােহাম্মদ আসগর আলী চায়ের দোকানে এক অদ্ভুত গল্প শােনেন। সেই গল্পের সুলুক-সন্ধানে মােটর-পার্টস দোকানি সাচ্চুকে নিয়ে পরাবাস্তব এক অভিযানে নেমে পড়েন তিনি। তার অভিযাত্রায় আরাে সঙ্গি হন ইউনিভার্সিটি’র লেকচারার রেহমান সিদ্দিক ও তার রগচটা বােন ফারহানা। তারা কী পারবে আদ্রত এ গল্পের সফ যবনিকা টানতে? পরাবাস্তবতা কী বাস্তবে এসে মিশবে? নাকি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে সব? এ কাহিনী জনপ্রিয় লেখক মােহাম্মদ আসগর আলীর, এ কাহিনী বনশ্রী’র মক্ষীরাণী অ্যালিসের, এ কাহিনী সাইবেরিয়ার ললনা নাতাশা’র, এ কাহিনী খোঁড়া ক্রিমিনােলজিস্ট রেহমান সিদ্দিকের-সর্বোপরি এ কাহিনী ত্রীতের! ত্ৰীৎ! যারা ছিল, যারা আছে, যারা থাকবে... এক রাতে ব্রিগুদা গ্রামে জুডিথ ডারহাম অদ্ভুত এক স্বপ্ন দেখে। প্রথম প্রথম কেউ পাত্তা দেয়নি। স্বপ্ন তাে অনেকেই দেখে, তাতে অত পাত্তা দেয়ার কী আছে! কিন্তু বিগুদার সবাই যখন ঐ একই স্বপ্ন দেখা শুরু করে তখন সবার টনক নড়ে। তারপর এক ভয়াল রাতে গ্রামটি তছনছ হয়ে যায়, পড়ে থাকে স্রেফ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন কিছু দেহ। গ্রামের একমাত্র গির্জায় কে জানি এক জোড়া চোখের ছবি এঁকে রেখেছে। নিচে লেখা-পীংক্রী রীট্রিক্রা ক্রেয়ীৎ স্পাক্রা লিক্রিৎ...।
মন মেজাজ ভালাে থাকলে মােড়ের চা-দোকানি মান্নান মিয়া গল্প জুড়ে দেয়। গল্পটা এই মান্নান মিয়ার কাছ থেকেই শােনা। অনেক অনেক দিন আগের কথা, দুর্গম অরণ্যে এক দয়ালু সন্ত বাস করতেন। উনি ছিলেন এক ধন্বন্তরি চিকিৎসক। যে কোন রােগ সারাতে পারতেন। অসুস্থ কেউ উনার কাছে এসে খালি হাতে ফিরে যেত না। কিন্তু একটা জিনিস উনি সারাতে পারতেন না, সেটা হলাে মৃত্যু। মানুষের মরণশীলতা তাকে পীড়িত করতাে, ব্যথিত করতাে। জানতেন, মত্যর কাছে সবাই অসহায়। এক রহস্যময় গাছ খুঁজে পান তিনি। সন্তের মতে, গাছটি সহস্রাব্দ-প্রাচীন। মানবজাতির অভ্যুদয়ের আগে থেকেই আছে। কিন্তু কী সেই রহস্যময় গাছের মাহাত্ম? ঢাকা শহর জুড়ে কে জানি মানুষ খুন করে দেয়ালে এ্যাফিত্তি এঁকে যাচ্ছে-দুধ চা খেয়ে তােকে গুলি করে দেব। পত্রপত্রিকা উদ্ভট এক লেবেল সেঁটে দেয় খুনির-দুধ চা কিলার। পুলিশের সিনিয়র গােয়েন্দা রফিকুল ইসলামের কাছে খুনগুলাে এক বিরাট রহস্য। কে এই খুনি? কী চায় সে? এই দুর্বোধ্য এ্যাফিত্তির মানেই বা কী? বিদগ্ধ পন্ডিত ড. মেহবুব আরেফীন চৌধুরী হইচই ফেলে দেন দ্য ইকোনমিস্ট-এ চা বিষয়ক একটি আর্টিকেল লিখে-দ্য টি অব শ্যানং। সবার ধারণা ডক্টরের কাছে বিশাল এক রহস্যের চাবি আছে। চাবি নাও, খুলে যাবে অফুরন্ত সম্পদের ভান্ডার!
এই কাহিনীর শুরু কয়েক হাজার বছর আগে। প্রখ্যাত শিল্পপতি আজমত উল্ল্যাহ’র একমাত্র ছেলে ওয়াসিফ উল্লাহকে নৃশংসভাবে খুন করা হলাে। লাশ ঘিরে বিচিত্র সব আঁকিবুকি, একপাশে রাখা সুদৃশ্য চেয়ার,সামনে গামলা ভর্তি মানবরক্ত! কেসটার দায়িত্ব পড়ে সিআইডি’র ডিপার্টমেন্ট অব এক্সট্রাঅর্ডিনারি কেসেজ-এর উপরে। আড়ালে আবডালে সবাই আবজাব ডিপার্টমেন্ট বলে নাক সিঁটকায়। এই ডিপার্টমেন্টেরই একরােখা গােয়েন্দা রহমান জুলফিকার খুনির খোঁজে গলিঘুপচি খোঁজে বেড়ায়, তার সঙ্গি ক্ষ্যাপাটে কনসালটেন্ট শাহজাহান ভূঁইয়া। এ আখ্যানের আরেক চরিত্র বিলুপ্তপ্রায় ধর্মীয় সংঘটন অ্যানশিয়েন্ট অর্ডার অব দ্য সেক্রেড মাউন্টেনের প্রধান ধর্মগুরু হাইঞ্জ বেকারের উপর কালাে আলখাল্লাধারীরা হামলা চালায়, রক্তবন্যা বয় আশুগঞ্জের এক হােটেলে। হােটেলের দেয়ালে আঁকা দুর্বোধ্য সিম্বল আর তারচেয়েও দুর্বোধ্য কিছু কথা। সুপ্রাচীন এক বইয়ের খোঁজে হন্য হয়ে ঘুরছে এক গােলাপি টাইধারি। পরনে স্যুটকোট, কাঁধে গলফ ব্যাগ। যেখানেই যাচ্ছে বইয়ে দিচ্ছে রক্তের নহর। এদিকে একের পর এক খুন করে যাচ্ছে ম্যাড উগ নামের এই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার। হাজার বছর আগে যে কাহিনীর গুরু তার সফল সমাপ্তি কী করা ঘটবে? নাকি আঁধারে ছেয়ে যাবে ধরণী?
প্রতিশােধের রং কি? এটা কি লাল, নাকি নীল না আগুনরঙা? প্রখ্যাত রহস্যরােমাঞ্চ লেখক ওবায়েদ রহমানের একমাত্র ছেলে ইশতিয়াক রহমান অফিস থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। তার অন্তধানের এক সপ্তাহ পর দোরগােড়ায় হাজির হয়। রহস্যময় এক ভিডিও ও একটি কাটা আঙুল! ভিডিওতে কী জানি বিড়বিড় করে যায় হেলমেটধারি উন্মাদ এক লােক। ডাক পড়ে সেচ্ছানির্বাসনে থাকা মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স অফিসার আলী রেজা বখতিয়ারের, সাথে ইশতিয়াকের দুই বন্ধু ইফতি ও রােমেল। তারা তিনজন মিলে কী পারবে উন্মাদটাকে থামাতে? ইশতিয়াককে ঘরে ফিরিয়ে আনতে?
৩৫ বছর আগে যে ঘটনার শুরু তার জের কী আজো রয়ে গেছে? নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন অভিনেতা জশুয়া আহমেদ চৌধুরী। খুনের পদ্ধতি বিস্ময়করভাবে মিলে যায় আগের কিছু হত্যাকান্ডের সাথে। তবে কী চৌদ্দ বছর আগে ঢাকা ভার্সিটির ইরিত্রা-জামসেদ হত্যা এবং সাত মাস আগের এক্সট্রিম নেটের সিরাজ-অহনা হত্যার সাথে এর কোন যোগসূত্র আছে? নাকি এর মাঝে আছে অন্য কিছুর ইঙ্গিত? কে এই মনোবিকারগ্রস্ত খুনি? কী তার উদ্দেশ্য? তার প্রতিশোধইবা কার ওপর? ডিবি অফিসার ইমন আহমেদের পাল্লায় পড়ে তদন্তে নামেন তার শিক্ষক সাইকোলজির প্রফেসর ড. মাসরুর আবরার হোমস, সাথে তার বন্ধু প্রফেসর অপু পিউরিফিকেশন ওরফে ওয়াটসন। তারা কী পারবে খুনির মুখোশ উন্মোচন করতে? অন্ধকার টানেলের শেষ মাথায় আলোর রেখা দেখতে? তারা কী পারবে বিরুদ্ধ¯্রােত সাঁতরে তীরে উঠতে? নাকি তীরে এসে তরি ডুববে?